এসএম স্বপন, বেনাপোল

২১ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ১৫:৩৭

মাতৃভাষা দিবস পালনে বেনাপোলে দুই বাংলার মিলন মেলা

“একুশে ফেব্রুয়ারি আমার আলো আমার চোখ” এই স্লোগানে বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দুই বাংলার ভাষা প্রেমী মানুষের মিলন মেলায় পালিত হলো ভাষা দিবস। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এপার বাংলা-ওপার বাংলার মানুষের ভাষার দাবিতে আন্দোলনে শহীদদের সম্মিলিত শ্রদ্ধা জানাল ভারত-বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী শ্রী জ্যোতি প্রিয় মল্লিক ও বনগাঁ পৌর মেয়র শংঙ্কর আঢ্যর'র নেতৃত্বে ভারত থেকে আসা শতশত বাংলাভাষী মানুষ বাংলাদেশিদের ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে নেয় একে অপরকে। পরে সীমান্তের নো-ম্যান্সল্যান্ডে অস্থায়ী শহীদ বেদি ঢাকে ফুলের চাদরে। বেনাপোল চেকপোস্ট নো-ম্যান্সল্যান্ডে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারো ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানানো হয়।

নোমান্সল্যান্ডে অস্থায়ী শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ভারতের পক্ষে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বনগাঁও পৌর সভার মেয়র শংঙ্কর আঢ্য, উত্তর ২৪ পরগনা মেন্টর জেলা পরিষদের  গোপাল শেঠ, দমদম পৌরসভার সি.আই.সি রিঙ্কু দে দত্ত।

দিনটি যথাযথ ভাবে পালনের লক্ষ্যে দেশের আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোলে প্রায় দুইযুগ ধরে বাংলাদেশ এবং ভারতের দুই বাংলার বাংলা ভাষাভাষী মানুষ একত্রে মাতৃভাষার এই দিনটি উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নো-ম্যান্সল্যান্ডে উদযাপন করে থাকে।

দিবসটি উদযাপনের শুরু থেকে নিজ নিজ দেশের উদ্যোগে নিজ দেশের সীমানায় পালিত হয়ে আসছিল,এরপর গত পরপর দুটি বছর ইন্দো-বাংলার যৌথ উদ্যোগে ভারতের সীমানায় দিবসটি পালিত হয়। এবার ভারতের অভ্যন্তরীণ কিছু সম-সাময়িক ঘটনাবলীর কারণে দুই বাংলার একুশ উদযাপন কমিটির সিদ্ধান্তে এবার নিজ নিজ দেশের সীমানায় নিজ উদ্যোগে দিবসটি পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের লক্ষ্যে শার্শা উপজেলার একুশ উদযাপন কমিটি’র প্রধান তথা ৮৫,যশোর-১শার্শা আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন এর নেতৃত্বে বেনাপোল সীমান্ত এলাকায় অনেক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।

সরগম সংগীত একাডেমির উদ্যোগে সর্ব প্রথম দুই বাংলার মিলনমেলা শুরু করে। ভারতের বিশ্বজিৎ ও বাংলাদেশের সত্যজিৎ দত্তের সমন্বয়ে ১৯৯৯ সালে সরগম সংগীত একাডেমি বেনাপোলের এই মিলন মেলার সূচনা হয়।

প্রায় একশো বছর ধরে দাড়িয়ে থাকা শিশু গাছটির তলদেশে বিশাল আকৃতির একুশে মঞ্চ তৈরি করা হয়,যেখানে দুই বাংলার প্রতিনিধিবর্গ অংশ নেন। এর আগে সকাল ৮টার দিকে দুই দেশের প্রতিনিধিবর্গ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নো-ম্যানস ল্যান্ডে নির্মিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান,এরপর তারা নিজ নিজ সীমানার মঞ্চে আলোচনায় অংশ নেন।

বাংলাদেশ সীমানায় আলোচনার আয়োজনে মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জনাব স্বপন ভট্টাচার্য, বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন-৮৫, যশোর-১ শার্শা আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন, বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী, যশোর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফিউল আরিফ, যশোর জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, পিপিএম, শার্শা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মণ্ডল, ৪৯ ব্যাটালিয়ন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) যশোর অধিনায়ক, যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু, শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান।

ভারতের প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন প্রধান অতিথি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী, শঙ্কর আঢ্য, পৌর প্রধান, বনগাঁ পৌরসভা, গোপাল শেঠ, মেন্টর জেলা পরিষদ, উত্তর ২৪ পরগুনা ভারত, রিঙ্কু দে দপ্ত, সিআইসি, দমদম পৌরসভা।

এদিকে, বাংলা ভাষার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ সকালে বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় সীমান্ত প্রেসক্লাব বেনাপোল এর সাংবাদিকবৃন্দ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত