বেনাপোল প্রতিনিধি

২৯ এপ্রিল, ২০২০ ২০:১৪

বেনাপোলের নো-ম্যান্সল্যান্ডে আমদানি পণ্য লোড-আনলোডের সিদ্ধান্ত

পণ্যবাহী ২২১৪ ট্রাক প্রবেশের অপেক্ষায়

বেনাপোল চেকপোস্টের নো-ম্যান্সল্যান্ডে ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য লোড আনলোডের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত-বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।

বুধবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১ টার সময় চেকপোস্ট নোম্যান্সল্যান্ডে এক জরুরী বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, অতি প্রয়োজনীয় ও পেরিশেবল পণ্য দিয়ে ভারত রপ্তানি শুরু করবে, পরে অন্যান্য আইটেমও বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হবে।

বাংলাদেশের পক্ষে, বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সহসভাপতি কামাল উদ্দিন শিমুলের নেতৃত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন এসোসিয়েশনের সদস্য আমিনুর রহমান আনু, বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান তাজিন, কার্গো সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রাকিব। ভারতের পক্ষে সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তীর নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন, বনগাঁ আমদানি-রফতানি কারক সমিতির সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাসসহ ১০/১২ জন।

বিজ্ঞাপন

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, করোনার কারণে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি রপ্তানি চালু করতে পারছে না পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় পেট্রাপোল বন্দরের সেন্ট্রাল পার্কিং থেকে বসগাঁ পৌরসভার কালীতলা পার্কিং পর্যন্ত ২২১৪ টি রপ্তানি পণ্য বোঝাই ভারতীয় ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য সরকারের মতপার্থক্যের জন্য পূর্বের ন্যায় বাণিজ্য চালু হচ্ছে না। ফলে পাটবীজসহ বিভিন্ন প্রকার পচনশীল পণ্য ও শিল্প-কলকারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল আটকে পড়ায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দু‘দেশে প্রায় ৩০/৪০ হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। আমদানি-রপ্তানি চালু হলে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে কর্মচঞ্চল্যতা ফিরে আসবে। করোনা থেকে রক্ষা পেতে বন্দর ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে।

ভারতের পেট্রাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, করোনাভাইরাসের জন্য ভারত সরকার দফায় দফায় লকডাউন বৃদ্ধি করায় আমদানি-রপ্তানি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। লকডাউন ঘোষণার পর গত ২২ মার্চ থেকে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সকল প্রকার আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ভারতীয় ট্রাক চালকরা বাংলাদেশে গেলে চালককে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখবে পেট্রাপোল পুলিশ তাই ভারতীয় ট্রাক নোম্যান্সল্যান্ড পর্যন্ত যাবে। বাংলাদেশি ট্রাক ও শ্রমিকরা সেখান থেকে মালামাল লোড আনলোড করে নেবে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, অতি প্রয়োজনীয় ও পেরিশেবল পণ্য দিয়ে রপ্তানি শুরু করা হবে। পরে অন্যান্য আইটেম ও দেয়া যাবে। পরিস্থিতি ভাল হলে পূর্বের ন্যায় কাজ করা যাবে।

বেনাপোল আইসিপি বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার আব্দুল ওয়াহাব বলেন, নোম্যান্সল্যান্ড ব্যবহার করতে হলে বিজিবির উপরমহল থেকে অনুমতি নিতে হবে।

বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সহসভাপতি কামাল উদ্দিন শিমুল বলেন, করোনাভাইরাসের জন্য দু‘দেশে লকডাউন চলছে। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ও একটি বিষয় আছে। প্রবেশের অপেক্ষায় ২/৩ শ পণ্য বোঝাই ট্রাক পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় দাঁড়িয়ে আছে। রোজার সময় ফল, পিঁয়াজের প্রয়োজন, তাই নোম্যান্সল্যান্ড ব্যবহার করেই কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার মধ্যে থেকেই কাজ করতে হবে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার বলেন, ভারত যদি পণ্য রপ্তানি করে, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা যদি নোম্যান্সল্যান্ডে করে তাহলে বন্দরের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত