জাহিদ উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ

২৬ মে, ২০২০ ১৯:৩২

গোলাপগঞ্জে ১২ দিনে ২৩ জনের করোনা শনাক্ত, আক্রান্তরা বেরুচ্ছেন বাইরে

করোনার হটস্পটে পরিণত হয়েছে সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকা। পৌর এলাকায় ১২ দিনে করোনায় আক্রান্ত ২৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তরা প্রায়ই বাইরে বেরুচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

গোলাপগঞ্জ মডেল থানা, উপজেলা পরিষদ, উপজেলার সবচেয়ে বৃহত্তর গোলাপগঞ্জ বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান পৌর শহরে অবস্থিত হওয়ার প্রতিনিয়ত লোক সমাগম হচ্ছে। এতে করে নিশ্চিত করা যাচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। তাই পৌর শহরে আক্রান্ত আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে ও করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গোলাপগঞ্জ পৌর শহরকে করোনার ঝুঁকিপূর্ণ জোন চিহ্নিত করে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণে দাবি তুলেছেন চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের দায়িত্বশীলরা। এছাড়াও পৌর এলাকার টিকরবাড়ি গ্রামের আইলোশনে থাকা অনেক রোগী বাড়ি থেকেও মাঝে মাঝে বের হচ্ছেন বলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা জানান, মাঝে মাঝে টিকরবাড়ি গ্রামের করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাইরে আসতে দেখা যাচ্ছে। এতে করে আমরা করোনা শঙ্কায় রয়েছি।

জানা যায়, গোলাপগঞ্জ উপজেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১ মে। করোনা সংক্রমণের ২৫ দিনে গোলাপগঞ্জ উপজেলায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ৩৬ জন। গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকায় ২৩ জন করোনা রোগীর মধ্যে শুধু পৌর এলাকার টিকরবাড়ি গ্রামে ১৯ জন করোনা আক্রান্ত রয়েছেন। এ গ্রামে প্রথম ১ বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হলে তার সংস্পর্শে এসে ১৯ জন করোনায় আক্রান্ত হন। যত সময় যাচ্ছে পৌর এলাকায় দিন দিন করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সদস্য দেলোয়ার হোসেন মাহমুদ বলেন, গোলাপগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র পৌর শহরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে প্রতিনিয়ত অবাধে চলাফেরা করছে লোকজন। এতে করে পুরো উপজেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পাবে। এখনই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে গোলাপগঞ্জের অবস্থা আরও নাজুক হবে

বিজ্ঞাপন

উপজেলা আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীনুর ইসলাম শাহিন বলেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলায় দিনদিন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এরমধ্যে শুধু পৌর এলাকার ২৩ জন করোনা আক্রান্ত। আমরা এখন থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে আমাদের জন্য সামনে মহাবিপদ অপেক্ষা করছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মনিসর চৌধুরী গোলাপগঞ্জ পৌর শহরকে ঝুঁকিপূর্ণ জোন হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়ে বলেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলার মানুষ অসচেতন থাকায় এ উপজেলায় দিন দিন করোনা বেড়েও চলেছে। এরমধ্যে করোনায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন পৌর এলাকার লোকজন। স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনার হটস্পটে পরিণত হচ্ছে গোলাপগঞ্জ উপজেলা। এখনি পৌর এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে বিশেষ নজরদারিসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রশাসনকে আরও কঠোর না হলে করোনা রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুনুর রহমান বলেন, দু-একদিনের মধ্যেই উপজেলা প্রশাসন পৌর এলাকার করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের সর্তক করা হবে যাতে কোন অবস্থাতেই তারা বের না হয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে প্রশাসন প্রথম থেকেই তৎপর রয়েছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর একটি টিম পুরো উপজেলায় টহলে রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত