সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ জুন, ২০২০ ০২:৫২

অর্ধেক মানুষই জানে না সে করোনায় আক্রান্ত

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা নূপুর রাজের স্বামী মার্চের মাঝামাঝি সময়ে কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তখনো তিনি সন্দেহ করতে পারেননি যে তিনি নিজেও আক্রান্ত হতে পারেন। পরবর্তী সময়ে পিসিআর পরীক্ষা করে তার ফল পজিটিভ এলে হতবাক হয়ে যান।

নূপুর রাজে বলেন, আমার স্বামী গুরুতর অসুস্থ হয়ে একদিন আইসিইউ এবং ১০ দিন হাসপাতালে ছিলেন। তবে আমি যখন পরীক্ষায় সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হলাম, তখন পর্যন্ত কোনো লক্ষণই ছিল না। আমি জানিও না যে কেন আমাদের দুজনের আলাদা প্রতিক্রিয়া হলো।

রাজের সুস্থ হতে প্রায় দুই মাস সময় লেগেছিল। প্রতি পাঁচদিন অন্তর পরীক্ষা করে দেখা যায় রাজের শরীরেও ভাইরাসটি দুই মাস স্থায়ী ছিল। আর এ সময়ে রাজে পুরোপুরি লক্ষণহীন ছিলেন। আরো একটি বিষয় আশ্চর্যজনক যে দীর্ঘদিন তার শরীরে ভাইরাসটি সংক্রমিত থাকলেও তার শরীরে শনাক্তযোগ্য প্রতিরোধ প্রক্রিয়াও দেখা যায়নি। মে মাসের শুরুতে তারা যখন অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করেন তখন রাজের স্বামীর শরীরে উচ্চস্তরের অ্যান্টিবডি দেখা গেলেও রাজের শরীরে কোনো প্রতিক্রিয়া ছিল না।

মহামারী নিয়ে গবেষণাগুলো দেখাচ্ছে, ভাইরাসটির লক্ষণহীন বাহকের সংখ্যা পুরোপুরি অজানা রয়েছে, যা ধারণার চেয়ে অনেক বেশি। যদিও বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত জানেন না যে লক্ষণযুক্ত মানুষদের তুলনায় লক্ষণহীন মানুষেরা ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে বেশি ভূমিকা রাখছে কিনা।

ইতালির ভো শহরে একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, কভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ মানুষই লক্ষণহীন ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী থিওডর রুজভেল্টে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের ওপর সিডিসির প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, সেখানকার ৫৮ শতাংশ নাবিকই লক্ষণহীন। এছাড়া শার্ল দ্য গল বিমানবাহী রণতরীতে ৪৮ শতাংশ এবং ডায়মন্ড প্রিন্স ক্রুজশিপের ৪৬ শতাংশ ক্রু লক্ষণহীন ছিলেন।

লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ রেইন হউবেন বলেন, প্রায় সব প্রমাণই বিস্তৃত পরিসরে প্রায় ৪০ শতাংশ লক্ষণহীন সংক্রমণের দিকে ইঙ্গিত করে। অনুপাতটি আবার বয়সের সঙ্গে পরিবর্তনশীল। যেমন প্রায় সব শিশু লক্ষণহীন, অন্যদিকে বয়স্কদের লক্ষণযুক্ত দেখা যায়।

দ্য গার্ডিয়ান

আপনার মন্তব্য

আলোচিত