আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৮ নভেম্বর, ২০২০ ১১:৫৪

শারীরিক উচ্চতা কম হলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি: গবেষণা

কম শারীরিক উচ্চতার মানুষের ক্ষেত্রবিশেষে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি বলে জানিয়েছে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা।

ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির পর ড্রপলেটের গতিপথ পর্যবেক্ষণ করেন সিঙ্গাপুরের একদল গবেষক। হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরই ড্রপলেট ও ভাইরাস পার্টিকেল বাতাসে ভাসতে ভাসতে ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হয়ে মাটিতে পড়ে। ড্রপলেটের এই নিম্নমুখী গতির কারণে কম উচ্চতার ব্যক্তিদের বাতাসে ভেসে আসা ড্রপলেটের মাধ্যমে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

শিশু, কিশোর ও কম উচ্চতার সকলকে দুই মিটারের বেশি সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পরামর্শ দেন তারা।

বিজ্ঞাপন

যদিও গবেষণাটি অ্যানিমেশন ব্যবহার করে করা হয়েছে, তাই এতে বাস্তব অবস্থার চিত্র পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি। শিশুরা তুলনামূলক বেশি ঝুঁকিতে থাকবে বলেও জানান গবেষকরা। তবে ইতোপূর্বে আরও কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে তুলনামূলক কম।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাইরাসটি মানবকোষে প্রবেশের জন্য যে রিসেপ্টরের প্রয়োজন হয়, শিশুদের দেহে তা কম থাকায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কিছুটা কম।

সিঙ্গাপুরের অ্যাজেন্সি অব সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড রিসার্চের ফিজিক্স অব ফ্লুইড জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।

গবেষকরা জানান, কিশোর-কিশোরী ও কম উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্কদের দুই মিটারের বেশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করা উচিত। হাঁচি-কাশির ড্রপলেটের নিম্নমুখী গতির কারণে শিশুরা তুলনামূলক বেশি ঝুঁকিতে থাকে। ড্রপলেট সাধারণত ৫ থেকে ৫০০ মাক্রোনের হয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন

দুজন ব্যক্তি এক ও দুই মিটার দূরত্বে অবস্থানের সময় ড্রপলেটের গতির একটি মডেল বানান গবেষকরা। বড় আকারের ড্রপলেট অভিকর্ষের কারণে দ্রুতই মাটিতে পড়ে যায়, তবে ছোট আকারের ড্রপলেট তুলনামূলক বেশি সময় বাতাসে ভেসে থাকে। এ কারণেই কোনো আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির পর এক মিটারের কম দূরত্বে অবস্থানরত শিশু ও কম উচ্চতার ব্যক্তিদের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।

তবে গবেষণাটির কোনো প্রায়োগিক পরীক্ষা করা হয়নি।

গবেষণাটিতে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের নির্ধারিত সামাজিক দূরত্ব ২মিটারের বেশি দূরেও ভেসে বেড়াতে পারে আক্রান্ত ব্যক্তির ড্রপলেট। গবেষণায় যুক্ত ড. হংইং জানান, ছোট কণা বাতাসে বেশি সময় ভেসে বেড়াতে পারে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় দেহে প্রবেশের ঝুঁকিও বেশি। সেকেন্ড প্রতি ২ মিটার বাতাসের গতিতেই ১০০ ম্যাক্রনের কণাও ৬.৬ মিটার (২১.৬ ফুট) পর্যন্ত ভেসে বেড়াতে পারে।

বিজ্ঞাপন

গবেষণাটি প্রায়োগিক পরীক্ষা নির্ভর না হওয়ায় এর কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। বাতাসের নির্দিষ্ট গতি, আর্দ্রতা ও তাপমাত্রায় করোনাভাইরাস পার্টিকেলের গতিবিধি পরিমাপ করা হয়েছে প্রায়োগিক পরীক্ষা ছাড়া, এর ওপর ভিত্তি করেই মডেলটি বানানো হয়েছে।

তবে ইতোপূর্বের অনেক গবেষণায় জানা যায়, ড্রপলেট বাতাসে নির্ধারিত সামাজিক দূরত্বে বেশি ভেসে বেড়াতে পারে। ফিজিক্স অব ফ্লুইড জার্নালে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণা বলছে, ১৮ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত বাতাসে ভেসে বেড়াতে পারে ড্রপলেট।

সূত্র: ডেইলি মেইল

আপনার মন্তব্য

আলোচিত