শাহাব উদ্দিন শিহাব, অস্ট্রেলিয়া থেকে

০৬ এপ্রিল, ২০২০ ০২:৩৩

করোনাভাইরাসে অস্ট্রেলিয়ায় ৩৪ জনের মৃত্যু

অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৩৪ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে নিউ সাউথ ওয়েলসের বাংলাদেশি অধ্যুষিত লাকেম্বা এলাকায় দুজনসহ ১৬, ভিক্টোরিয়ায় ৮, কুইন্সল্যান্ডে ৩, ক্যানবেরায় ২, তাসমানিয়ায় ২ ও ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় তিনজন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত আক্রান্তে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭৭৫ জনে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহতদের অধিকাংশই ক্রুজ জাহাজ ডায়মন্ড প্রিন্সেসের যাত্রী বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।

বাংলাদেশি অধ্যুষিত লাকেম্বা এলাকায় করোনায় দুজন আক্রান্তের খবরে চলছে সুনসান নীরবতা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছেন না বাসা-বাড়ি থেকে। অনেকটা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন তারা। দেশে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ফোনে কথা বলা আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চেটিং করে পার করছেন সময়। অনেকে আবার নিজ নিজ ধর্ম-কর্মে মনোযোগী হয়েছেন। নামাজ-কালাম করে পার করছেন সময়।

এদিকে অস্ট্রেলিয়ায় কর্মহীন মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন কমিউনিটির নেতারা। তারা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রসহ কর্মহীন মানুষকে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী দিয়ে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

এদিকে নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ রুবি প্রিন্সেস ফাইস্কো নিয়ে অপরাধ তদন্ত শুরু করেছে। নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ কমিশনার মিক ফুলার রবিবার নিশ্চিত করেছেন যে রুবি প্রিন্সেসের হতাশার বিষয়ে একটি অপরাধমূলক তদন্ত হবে।

তিনি জানান, এতে জড়িত প্রতিটি এজেন্সির কার্যক্রম এবং ক্রুজ শিপ অপারেটরের দিকে নজর রাখবে।

ফুলার বলেন, “কোভিড -১৯ করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের যে জাহাজ থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে তার স্পষ্ট প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। কি কারণে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া নামিয়ে আনা হলো তারও বিস্তর তদন্ত করবে পুলিশ। অস্ট্রেলিয়ায় আসা ক্রুজ জাহাজ ডায়মন্ড প্রিন্সেসের যাত্রীরা সকলেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন বলেও নিশ্চিত হয়েছে নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ। এই জাহাজের অন্তত ১০ জন যাত্রী এ পর্যন্ত মারা গেছেন।

নিউ সাউথ ওয়েলসের শীর্ষ এই কর্মকর্তা আরও জানান, আমাদের জাতীয় বায়োসিকিউরিটি আইন এবং আমাদের রাষ্ট্রের আইন এই জাহাজটি ভেঙেছিল কিনা তারও তদন্ত করা হবে।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যে জেমস কোয়ান পার্থ নামের ৭৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি যিনি কোভিড-১৯-তে শনাক্ত হওয়ার পর মারা যান। ৭৮ বছর বয়সী পার্থ ছিলেন ফেব্রুয়ারিতে জাপানের বন্দরের ইয়োকোহামায় পৃথকীকরণ করতে বাধ্য করা ক্রুজ জাহাজ ডায়মন্ড প্রিন্সেসের যাত্রী।

এরপর ২৬ মার্চ ড্যানিয়েলস নামে অপর এক মহিলা কোভিড-১৯ শনাক্তকরণের পরে জোন্ডালাপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা যান। মারা যাওয়া ওই মহিলা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের দিকে সিডনিতে সেলিব্রেটি সল্টিস ক্রুজ জাহাজ থেকে নামেন।

সর্বশেষ ৩ এপ্রিল এক জার্মান পর্যটক মারা যান। ৭০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি আর্টানিয়া ক্রুজ জাহাজে যাত্রী ছিলেন এবং এক সপ্তাহ আগে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত