নিজস্ব প্রতিবেদক

০৬ এপ্রিল, ২০২০ ২০:০৬

আজ থেকে সিলেটে করোনা পরীক্ষা, ঢাকা থেকে রিপোর্ট প্রকাশ

অবশেষে আজ (মঙ্গলবার) থেকে সিলেটে শুরু হচ্ছে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পলিমেরেজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে। ধারণক্ষমতা অনুযায়ী একদিনে ৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে।

তবে সিলেটে শনাক্তকরণ পরীক্ষা হলেও প্রথমদিকে পরীক্ষার ফলাফল সিলেট থেকে দেওয়া হবে না। পরীক্ষার ফল ফলাফল পাঠানো হবে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর)-এ। তারা প্রাত্যহিক ব্রিফিং এই রিপোর্টগুলো প্রকাশ করবেন।

প্রবাসীবহুল সিলেট অঞ্চল করোনা সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হলেও এখানে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষার সুযোগ ছিলো না। এতে ক্ষোভ ছিলো এই অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে। এ অবস্থায় গত ১ এপ্রিল সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিসিআরসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আনা হয়। মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি ও ভাইরোলজি ল্যাবকে পিসিআর মেশিন স্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

এদিকে, রোববারই সিলেটে প্রথম কোনো ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। পেশায় চিকিৎসক ওই ব্যক্তি ওসমানী হাসপাতালেই কর্মরত ছিলেন। এছাড়া মৌলভীবাজারের রাজনগরে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি ও ভাইরোলজি বিভাগের ল্যাবের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখানে স্থাপনকৃত পিসিআর মেশিনের একটি সিঙ্গেল সাইকেলে প্রতিদিন ৯৪টি নমুনা সনাক্ত করা যাবে। এই পরীক্ষা করতে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ও সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টার মতো সময় লাগতে পারে। পরীক্ষার জন্য ল্যাবে মেডিকেল কলেজের ৪ জন অধ্যাপক ও ১০ জন টেকনিশিয়ান প্রতিদিন কাজ করবেন। এই পরীক্ষা করাতে কোনো ফি দেওয়া লাগবে না।

তবে এই পরীক্ষা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। চিকিৎসকরা যাদের পরীক্ষার প্রয়োজন মনে করবেন এবং সিলেট বিভাগের ৪টি জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে যে নমুনাগুলো আসবে সেগুলো এখানে পরীক্ষা করা হবে।

এ ব্যাপারে ওসমানী মেডিকেল কলেজের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য আমরা ওসমানী মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি ও ভাইরোলজি ডিপার্টমেন্টে ল্যাবের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। যদি মেশিন ফাংশনাল হয়ে যায় তবে মঙ্গলবার থেকেই এই ল্যাবে করোনাভাইরাস শনাক্ত কার্যক্রম শুরু হবে।

তিনি বলেন, নমুনা প্রিপারেশনের উপর নির্ভর করে দিনে একদিনে কতটি পরীক্ষা করা যাবে। তবে মেশিনের একটি সিঙ্গেল সাইকেলে প্রতিদিন ৯৪টি নমুনা শনাক্ত করা যায়। এই পরীক্ষার জন্য কোনো ফি দিতে হবে না। তবে কেনো রোগী এই ল্যাবে প্রবেশ করতে পারবে না। এবং কেউ ল্যাবে এসে নমুনা দিতে পারবেন না। এই চিকিৎসকরা যাদের প্রয়োজন মনে করবেন এবং বিভিন্ন উপজেলা থেকে যে নমুনাগুলো আসবে সেগুলোই আমরা পরীক্ষা করবো। এছাড়া কারো বাসাবাড়ি থেকে বলা হলে আমাদের যারা এই দায়িত্বে আছেন তারা গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবেন। এ ব্যাপারে আমাদের একটি চেইন ডেভলাপ হয়েছে। সেভাবেই আমরা নমুনা সংগ্রহ করবো।

ডা. হিমাংশু লাল রায় আরও বলেন, এই পরীক্ষার ফলাফল আমরা স্থানীয় ভাবে জানাবো না। আমরা আইইডিসিআরকে এই পরীক্ষার ফলাফল জানাবো। এতদিন কেন্দ্রীয়ভাবে আইইডিসিআর যেভাবে তথ্য জানিয়েছে সেভাবেই এই ল্যাবের রিপোর্টের তথ্য সেখানে যাবে। পরবর্তীতে যদি আমাদেরকে বলা হয় স্থানীয়ভাবে ফলাফল প্রকাশের তখন আমরা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত