জুয়েল রাজ, লন্ডন থেকে

০৭ এপ্রিল, ২০২০ ১৮:১৪

সেবাদানকারীদের সম্মান জানাতে ❛ক্ল্যাপ ফর দ্য হিরোজ❜

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে পৃথিবীজুড়ে চলছে জরুরি অবস্থা। করোনা থেকে জীবন বাঁচাতে স্বেচ্ছাবন্দি মানুষ। কিন্তু কিছু মানুষ মৃত্যুভয়কে জয় করে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। যারা এই দুর্যোগকালে আমাদের জাতীয় বীর।

আগামী ১০ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশের এই বীরদের সম্মান জানাতে আয়োজন করা হয়েছে ❛ক্ল্যাপ ফর দ্য হিরোজ❜।

আয়োজকরা জানান, আমাদের জানালার পাশে অথবা বারান্দায় নিরাপদে অবস্থানে থেকে দেশের সকল ডাক্তার, নার্স, গবেষকবৃন্দ, পুলিশ বাহিনী, সেনাবাহিনী, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, ব্যাংকার, সেবাদানকারী কর্মী, পরিচ্ছন্ন কর্মী এবং সেচ্ছাসেবীদের সম্মানে করতালি দিয়ে সম্মান জানাই। তাদেরকে জানিয়ে দেই, আমরাও আছি তোমাদের পাশে। সোশিয়াল ল্যাব নামের ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান এই উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ এবং লন্ডন থেকে শাফি মোদ্দাসের খান, জ্যোতি, স্মৃতি আজাদ এবং সুজন ঢালী সমন্বয়ক হিসাবে কাজ করছেন।

❛ক্ল্যাপ ফর দ্য হিরোজ❜ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে দেশে বিদেশে বাংলাদেশি তারকা, সাংবাদিকসহ অনেকেই ভিডিও বার্তা দিয়ে উদ্যোগটি সফল করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

উদ্যোক্তাদের একজন লন্ডন প্রবাসী স্মৃতি আজাদ জানান, এই পৃথিবীটা আমাদের। পৃথিবীর অসুখে এখন আমরা সবাই অসুখী। আপনার, আমার শহরের মতই পৃথিবীর প্রতিটা শহর এখন নিস্তব্ধ। এই নিস্তব্ধতা মৃত্যুর মতই কঠিন। আশা করছি এই মুহূর্তে সবাই যে যার জায়গায় নিরাপদে আছেন। যারা বাসায় অবস্থান করে নিজ নিজ মাতৃভূমির প্রতি কর্তব্য পালন করছেন তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রইলো। আর যারা এই দুঃসময়ে সামনে থেকে যুদ্ধ করছেন তাদের জন্যে কি আমাদের কিছুই করার নেই?

তিনি বলেন, যারা ভাবছেন তারা টাকা কিংবা চাকরি বাঁচাতে দায়িত্ব পালন করছেন এবং জনগণের টাকা দিয়ে তাদের বেতন দেওয়া হয়, তাদের কাছে একটা প্রশ্ন: কত টাকা হলে আপনি আপনার পরিবারকে ভুলে গিয়ে COVID-19 আক্রান্ত একজনকে ছোঁবেন? এর ঠিক পেছনেই আছেন একদল স্বেচ্ছাসেবী, যারা প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে পৌঁছে যাচ্ছে নমুনা সংগ্রহ এবং অসহায় মানুষদের খাদ্য বিতরণের জন্যে। আর সেন্ট্রাল জোনে আছেন আমাদের গবেষকগণ যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এখন পর্যন্ত আপনার, আমাদের মত হাজার হাজার মানুষ আশা নিয়ে বসে আছে এক ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন থেকে বের হওয়ার প্রত্যাশায়। সামান্য এই প্রেরণাটুকুও কি তাদের প্রাপ্য নয়? তাই এই উদ্যোগটি আমরা নিয়েছি। আশা করি দেশে বিদেশে বাঙালি যারা আছেন তারা একযোগে তাদের বীরদের সম্মান জানাবেন।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে তাদের যোগাযোগ মাধ্যমের বার্তায় বলা হয়, পৃথিবীর অনেক কঠিন একটা সময় এটি। ভাইরাস কোনো দেশের সীমানা চিনে না, কোনো ধর্ম বুঝে না, কোনো জাতি মানে না। পৃথিবীর সমস্ত জ্ঞান বিজ্ঞানকে চূর্ণবিচূর্ণ করে একের পর এক চালিয়ে যাচ্ছে এর মৃত্যুর তাণ্ডবলীলা। এর মাঝেই অকুতোভয় কিছু যোদ্ধা যুদ্ধ করে চলছে প্রতিনিয়ত, তারা জানেনা এই যুদ্ধের শেষ কোথায়?

এতে আরও বলা হয়, যুদ্ধ করে চলছে পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যে। এই যুদ্ধে আপনিও আছেন, যার যার ঘরে অবস্থান নেয়াটা এই যুদ্ধের কৌশল। এখন সময় হয়েছে এক হওয়ার। সকল দোষ ত্রুটি একটু দূরে রেখে দলমত নির্বিশেষে যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন, আসুন তাদের উৎসাহ দেই। আসুন আমরা একসাথে যুদ্ধটা করি। আসুন যারা সামনে থেকে যুদ্ধ করছেন তাদের ঠিক পেছনে দাঁড়াই।

আগামী ১০ এপ্রিল শুক্রবার ঠিক সন্ধ্যা ৭টায় আমাদের জানালার পাশে অথবা বারান্দায় নিরাপদে অবস্থান নেই এবং সকল ডাক্তার, নার্স, গবেষকবৃন্দ, পুলিশ বাহিনী, সেনাবাহিনী, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, ব্যাংকার, সেবাদানকারী কর্মী, পরিচ্ছন্ন কর্মী এবং সেচ্ছাসেবীদের সম্মানে করতালি দেই। তাদেরকে জানিয়ে দেই, আমরাও আছি তোমাদের পাশে। পুরো দেশ করতালিতে মুখর করে দেই ঐসব যোদ্ধাদের প্রতি, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে এখনও পর্যন্ত ওই ভয়ঙ্কর ভাইরাসটি আপনার দরজায় টোকা দেয়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত