নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ এপ্রিল, ২০২০ ১৩:২৯

১০ দিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে ফেরেন করোনা আক্রান্ত নারীর স্বামী

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুনামগঞ্জের এক প্রসূতি নারীর দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্ত ওই নারীর স্বামী ১০ দিন আগে তার কর্মস্থল নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে ফেরেন।

রোববার ওসমানী মেডিকেল কলেজে তার শরীরের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, করোনা আক্রান্ত ওই নারীর বয়স ২৫। বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায়। আক্রান্ত ওই নারীর স্বামীর নাম মুসলিম। তিনি নারায়ণগঞ্জে চাকরি করতেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার কর্তৃক সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিনি বাড়ি চলে আসেন।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার জানান, ১০ দিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়িতে ফেরেন করোনা আক্রান্ত ওই নারীর স্বামী।

গর্ভবতী ওই নারী ওসমানী মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগে ভর্তি ছিলেন। শুক্রবার সিজার হওয়ার পর সন্তান জন্মদানের পর প্রসূতি ওই নারীর শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ পাওয়া যায়। তখন তার শরীরের নমুনা নিয়ে রোববার ওসমানী মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার ফলাফলে তার শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

সোমবার সকালে ওই নারীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) সুশান্ত কুমার মহাপাত্র বলেন, সকাল নয়টায় করোনা আক্রান্ত ওই নারীকে করোনা আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সুনামগঞ্জের এক প্রসূতি নারীর শরীরে রোববার পরীক্ষার পর করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে।

যেহেতু আক্রান্ত নারী ওসমানী মেডিকেলের গাইনি বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন তাই এ বিভাগ ১৪ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হতে পারে বলেও তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, ‘হটস্পট’ (অতি ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত নারায়ণগঞ্জ এখন দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোর কেন্দ্রে (এপিসেন্টার) পরিণত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

শিল্পকারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন জেলার মানুষের বসবাস। নারায়ণগঞ্জ থেকে সংক্রমণ ছড়ানো ঠেকাতে ৮ এপ্রিল বুধবার পুরো জেলা লকডাউন (অবরুদ্ধ) করা হয়, কিন্তু সেটা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। লকডাউনের মধ্যেই শত শত মানুষ নারায়ণগঞ্জ থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের অনেকেই বিভিন্ন জেলায় করোনায় আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত