শাহ শরীফ উদ্দিন

২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০১:১৯

ভাই না পুত্র- কাকে বেছে নেবেন ভোটাররা?

সিলেট-১ আসনকে বলা হয় মর্যাদাপূর্ণ আসন। এই আসনে এবার বিএনপির প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এদের প্রথমজনের পিতা এই আসনের সাংসদ ছিলেন। আর দ্বিতীয়জনের ভাই এখনও এই আসনের সাংসদ। অনেকদিন ধরে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থাকলেও এখনো ভোটারদের কাছে তাদের পরিচয় বাবা আর ভাইয়ের নামে। ভোটেও প্রভাব ফেলবে এই দুইজনের বাবা আর ভাইয়ের কীর্তি।

প্রচারণায়ও মিলছে এর প্রমাণ। মোমেন ভাইয়ের করা উন্নয়ন আর সুনাম কাজে লাগিয়ে আর মুক্তাদির প্রয়াত বাবার সুনাম ব্যবহার করে চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণা।

এ আসনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোট মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে প্রথম বারের মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী ও ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই। অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রথম বারের মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। তিনি খন্দকার আব্দুল মালিকের ছেলে। খন্দকার আব্দুল মালিক ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের আমলে ওই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

ড. এ কে আব্দুল মোমেন তার ভাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের বিভিন্ন সভা সমাবেশের মাধ্যমে পরিচিতি পান অপর দিকে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির তার প্রয়াত বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত খন্দকার মালিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এ আসনে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে পরিচিতি অর্জন করেন।

সদর উপজেলার ভোটার রাহেল আহমদ বলেন, দুই প্রার্থীই নতুন, তাই তারা দুজনই নির্বাচনী প্রচারণায় নিজের ভাইয়ের নাম আর বাবার নাম ব্যবহার করেই প্রচারণা চালাচ্ছেন। যদিও তাদের নিজেদের খুব একটা পরিচয় নেই তবুও ভাই এবং বাবার পরিচয়েই তারা পরিচিত। এটা নির্বাচনের মাঠে কিছুটা সহায়ক। তবে ভোটার ব্যক্তির ইমেজকেই বেশি প্রাধান্য দিবে বলে মনে করছেন তিনি।

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলে, হজরত শাহজালাল (র.), হজরত শাহপরান (র.) মাজার এ আসনে অবস্থিত সুতরাং অবশ্যই এ আসন গুরুত্বপূর্ণ এবং সর্বোচ্চ মর্যাদার। এসব বিষয় মাথায় রেখেই আমরা এবার এমন একজন প্রতিনিধি দিয়েছি যিনি ভালো ব্যবহারের অধিকারী, শিক্ষিত, তরুণ সমাজের প্রতিনিধি এবং তৃনমূলের কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য। সুতরাং এবারের নির্বাচনে জনগণ তাকে ভোট দিয়ে জয়ী করে প্রমাণ করবে তারা কোন প্রবাসীকে তাদের প্রতিনিধি চায় না।

বিএনপির এ সাধারণ সম্পাদক তাদের প্রার্থীর নির্বাচনী কাজে বিভিন্ন রকম বাধার অভিযোগ করে বলেন, প্রতিনিয়ত আমাদের কর্মীদের আটকের মাধ্যমে হয়রানী করা হচ্ছে, বিভিন্ন মামলায় তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। এতে করে কর্মীরা নির্বাচনী কাজে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের এ প্রার্থীকেও নানা ভাবে হয়রানী করা হচ্ছে এবং তাকে তোলে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে আলী আহমদ বলেন, গত পরশুদিন আমাদের প্রার্থীকে ঘেরাও করেছিলো পুলিশ, এমনকি আমাদের নির্বাচনী কার্যালয় 'নূরেআলা' কমিউনিটি সেন্টারে সাদা পোশাকে পুলিশ ঘেরাও করে রাখে এতে করে আমাদের প্রার্থীসহ কর্মীরা ভয়ের মধ্যে আছেন।

তবে জনগণ তাদের সাথে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিকূলতার মাঝেও জনগণ আমাদেরকে যে সহযোগিতা করছে তাতে এটাই বোঝা যাচ্ছে জয় আমাদের হবেই।

এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এটিএম হাসান জেবুল বলেন, প্রার্থী হিসেবে আব্দুল মোমেন নতুন হলেও তিনি গত প্রায় ৩ বছর থেকেই মাঠে কাজ করছেন সে ক্ষেত্রে আমরা উনাকে নতুন হিসেবে বিবেচনা করছি না। তাছাড়া জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সব সময়ই সংগঠিত থাকে। এবারও আমরা একতাবদ্ধ। আশা করি জনগণের ভোট নৌকা প্রতীকে দিয়ে তারা আব্দুল মোমেনকে জয়ী করবে বলে প্রত্যাশা তার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত