আজ বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

অমরত্ব কি সম্ভব?

এনামুল হক এনাম  

অমরত্ব লাভ কি সম্ভব? বিজ্ঞান কি পারে মানুষকে আজীবন বাঁচিয়ে রাখার ক্ষমতা দিতে?

উত্তর: এখন পর্যন্ত না। মৃত্যুকে বিজ্ঞান ঠেকাতে পারে না, কিন্তু বিলম্ব করতে পারে।

গত শতকের শুরুতেও যেসব দেশে গড় আয়ু ছিল ২৫-৩০ বছর, সেইসব দেশেই এখন গড় আয়ু ৭০ বছরের উপরে। ২৫-৩০ বছর গড় আয়ু-কাল ঝাড়ফুঁক বা পানি পড়াতে ৭০ বছরে আসেনি, বিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনের ফলেই হয়েছে।

বিজ্ঞানে যে শাখায় স্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা হয় তা হলো চিকিৎসা বিজ্ঞান, যা এখনো একটি অসম্পূর্ণ বিজ্ঞান শাখা। তাই এই মুহূর্তেই বলা যাচ্ছে না কখন মানুষ ভবিষ্যতে মৃত্যুকে জয় করতে পারবে কি না, তবে চিকিৎসা বিজ্ঞান গত একশ বছরে যে পরিমাণ উন্নতি লাভ করেছে, আগামী একশ বছর পর তা কোথায় আমাদের নিয়ে যাবে, কিংবা এক হাজার বছর পর তা কি হবে এসবই কল্পনাতীত।

মানুষের অমরত্ব লাভের প্রধান অন্তরায় শরীরের কোষগুলো বিভাজন হতে হতে এক সময়ে বিভাজনের ক্ষমতা হারানো। মানুষ একটি বহু কোষী প্রাণি, মানুষের দেশের প্রত্যেকটি কোষই স্বাধীনভাবে বিভাজিত হওয়ার ক্ষমতা রাখে, যা জন্মের পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের শারীরিক সক্ষমতা প্রদানে সহায়তা করে। পুরনো কোষ মরে গিয়ে নতুন কোষকে জায়গা করে দেয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এক সময় যে মেটাবলিক প্রসেসে এই কোষ বিভাজিত হয়ে কাজ করে তা ব্যাহত হয়, প্যাথলজিক্যাল ডেট ঘটে। এছাড়াও ডিএনএ ক্ষয় বা ক্ষতিগ্রস্ত, ক্যান্সার, মেটাবলিক ডিজিজ, মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা হারানো এসবই মৃত্যুর অন্যতম কারণ সমূহের মধ্যে পড়ে। অর্থ শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কার্য ক্ষমতা হারালে আপনাকে এক সময় মরতেই হবে।  

তারপরও মানুষ যদি শারীরিক অমরত্ব লাভ করে তবে সেই অমরত্ব লাভ কখনোই সুখকর হবে না। ৮০-৯০ বছরেই যেখানে অসুস্থতা না থাকলেও জীবন একঘেয়ে হয়ে যায়, সেখানে অমরত্ব লাভ করে হাজার বছর বেঁচে থাকা মৃত্যুর মেনে নেয়া থেকেও বেশি কঠিন হবে। তারপর প্রযুক্তি, বিজ্ঞান যেভাবে দ্রুত এগুচ্ছে, অমরত্ব লাভ করা ব্যক্তি যুগের সাথে তাল মেলাতে না পেরে খুব দ্রুতই সেকেলে হয়ে যাবেন। তার জন্য জীবন দুঃসহ যন্ত্রণার হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে আত্মহত্যার পরিমাণ বেড়ে যাবে।    
 
তবে বিজ্ঞান যদি ভবিষ্যতে মানুষের মস্তিষ্ককে স্ক্যান সফট-কপি বা সফটওয়্যারে রূপান্তর করতে পারে তবে মানুষ অমরত্ব লাভ করতে পারবে।

দেখা গেল আপনার মৃত্যুর পর বা পূর্বে আপনার মস্তিষ্কের সকল স্মৃতি একটি পেনড্রাইভে বা ইন্টারনেট স্পেসে আপলোড করে দেয়া হল, ভার্চুয়ালি বেঁচে রইলেন আজীবন, নাতিপুতিদের সাথে আজীবন কথা বলতে পারলেন। এটা খুবই সম্ভব একটি প্রক্রিয়া, শুধু মানুষের মস্তিষ্ক বায়োলজিক্যাল এক্সেস প্রয়োজন হবে।

কোন যুবকের মস্তিষ্কে যদি সেই স্ক্যান করা কপি আপলোড করে দেয়া হয়, তখন সেই অমরত্ব চাওয়া ব্যক্তি অন্যের দেহে বেঁচে থাকারও সুযোগ পেয়ে যাবেন। সেক্ষেত্রে দেখা যাবে, ল্যাবরেটরিতে ক্লোনিং করে শরীর সর্বস্ব মানুষ বানানো হচ্ছে, বৃদ্ধ ব্যক্তি তাগড়া জোয়ান দেহে ঢুকে যাচ্ছেন।

গাঁজাখোরে গল্প মনে হচ্ছে? মনে রাখবেন, মাত্র একশ বছর আগেও কুষ্ঠ রোগকে ঈশ্বরের অভিশাপ মনে করা হত, আর মিউজিয়ামে ঠাই নেয়া রেডিও-ও ছিলো গাঁজাখোরে গল্পের মত কল্পকাহিনী।

কী হবে একশ বছর পর... আর একহাজার বছর পর?

এনামুল হক এনাম, কলামিস্ট, সাহিত্যিক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ