প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
গোঁসাই পাহ্লভী | ১৮ জুন, ২০১৭
বিন্দু তো একটাই। উহা নানান জায়গায় বসিয়া নানান অর্থ উৎপাদন করিয়া চলিতেছে। চন্দ্রের উপরে বিন্দু বসিলে এক কথা আবার বিন্দুই হইলো রেখার গঠনসূত্রের প্রথম নিদর্শন।
আমি তোমার ভেতরে সেই বিন্দুরই অন্বেষণ করিয়া থাকি যাহা না হইলে আমার সিন্ধু অপূর্ণতায় থাকে। বাতাসে তোলা ঢেউ যেন তাসের ঘরের মতোই মাঝপথে ভাঙ্গিয়া পড়ে।
শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ-বর্জনের ভেতরেও একটা বিন্দু আছে। এই বিন্দু হরেক রকম মাত্রা সংযুক্ত। যেমন ধরেন আপনি শ্বাস নিলেন আবার ছাড়লেন এই নেয়া এবং ছাড়ার মধ্যে না গ্রহণ না ত্যাগ একটা অবস্থা আছে। এইখানে অবস্থান মানে আপনার গ্রহণ নাই, বর্জনও নাই।
গ্রহণ-বর্জনের জন্মান্তর থেকে আপনি মুক্ত।
‘আমরা যে বায়ু গ্রহণ করিয়া থাকি, তাহা মূলত অক্সিজেন অর্থাৎ জীবনপ্রবাহ। কিন্তু টানিয়া লইবার পরক্ষণেই উহা মৃত্যুপ্রবাহে পরিণত হইয়া থাকে। সুতরাং উহা (Carbon di Oxide) ত্যাগ করিয়া আমরা বাঁচিয়া থাকি।
জীবন ও মৃত্যু প্রতিনিয়ত আমাদের মধ্যে যেমন কার্য করিতেছে, তেমনি জগতের সকল বস্তুর মধ্যেই এ কার্য প্রতিনিয়ত চলিতেছে। ইহা হইতে এক স্থানেই আমরা দুইটি বিরুদ্ধ শক্তির কার্যকারী ক্ষমতার পরিচয় পাইতেছি।
দৈহিক হিসাবে ইহাদের একটি শক্তি অন্তর্মুখী ও অপরটি বহির্মুখী। এই দুইটি বিপরীত শক্তিকে চালাইতেছে কোন শক্তি? আমি যদি একটি দড়ির এক প্রান্ত ধরিয়া টানি এবং অন্যে যদি অপরপ্রান্ত ধরিয়া টানে, তাহা হইলে দেখা যাইবে যে, দুইটি বিরুদ্ধ শক্তি দুই দিক হইতে টানাটানি করিতেছে। একটু চিন্তা করিলে বুঝিতে পারা যাইবে যে দড়িটির মধ্যে যেটি মধ্যকেন্দ্র (middle point ) তাহা আমাদের দুইজনকে একসঙ্গে টানিয়া রাখিয়াছে।
সুতরাং ধরিয়া নেওয়া যায় যে, ঐ মধ্য কেন্দ্রটি দুইটি বিরুদ্ধ শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করিতেছে।
বিশেষ অনুসন্ধান করিলে দেখা যাইবে যে, আমাদের শ্বাস দেহমধ্যে যতদূর যাইতেছে বলিয়া অনুভব করিতে পারা যায়, সেই স্থানে মেরুদণ্ড মধ্যে একটি মধ্য কেন্দ্র রহিয়াছে-উহাই শক্তিবিন্দু।
এই শক্তিবিন্দুই আমাদের জীবন প্রবাহের উপর কর্তৃত্ব করিতেছে। ঐ শক্তিবিন্দু মূলাধারে এক প্রকার শক্তি বিকাশ করিয়া থাকে (4 dimensions ) এবং এইরূপ স্বাধিষ্ঠানে (6 dimensions) , নাভিচক্রে (10 dimensions ), হৃদয়চক্রে (12 dimensions ) কন্ঠচক্রে (16 dimensions), দ্বিদলচক্রে (2 parallel dimensions) সহস্রারে (Infinite dimensions ) বিভিন্ন শক্তির বিকাশ করিয়া থাকে।
dimensions এখানে কতকটা বিকাশ অর্থে প্রযুক্ত হইয়াছে। এই হিসাবে অর্থে 4 dimensions শক্তির চতুর্মুখী বিকাশ, 10 dimensions অর্থে শক্তির দশর্মুখী বিকাশ এবং Infinite dimensions অর্থে শক্তির অনন্তর্মুখী বিকাশ বুঝিতে হইবে। 2 parallel dimensions অর্থে শক্তির উভয়মুখী ও সমান্তরাল বিকাশ বুঝিতে হইবে।
সেই শক্তিবিন্দু যখন ঊর্ধ্বে উঠিতে থাকে, তখন ক্রমশ শ্বাসপ্রশ্বাসের ক্রিয়া লোপ পাইতে থাকে। যখন সেই শক্তিবিন্দু সহস্রারে ডুবিয়া যায়, তখন শ্বাসপ্রশ্বাসও সম্পূর্ণ লোপ পাইয়া থাকে। (পৃষ্ঠা ৪৮-৪৯, পথহারার পথ ও দ্বাদশ বাণী,বরদাচরণ মজুমদার)। এই সহস্রারকেই নহির সাঁইজী বলেছেন আজরাইল।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য