আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প: বিপর্যয় ও পরিস্থিতি

আশরাফ মাহমুদ  

আমরা জানি যে সরকার রামপাল প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে রামপাল প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে। যে দেশে একেকটি প্রকল্প বছরের পর বছর ফাইলের নিচে চাপা পড়ে থাকে সেই দেশে রামপাল প্রকল্পের কাজ চলছে ঘোড়দৌড়ের মতন। আমরা এই-ও জানি যে দীর্ঘমেয়াদিভাবে রামপাল প্রকল্প অর্থনৈতিকভাবে অলাভজনক, এবং ভৌগলিক ও পরিবেশগত দিক থেকে সুন্দরবন ও সংলগ্ন জনপদের জন্য ক্ষতিকর।

এই বিষয়ে আমি বাংলা ট্রিবিউনে পূর্ববর্তী একটি লেখায় আলোচনা করেছি মোটের উপর, এছাড়া অনেক পরিবেশবিদ, প্রকৌশলী, সচেতন ব্যক্তি অনেক লিখেছেন; এই লেখা তাই যতোটা না কেনো রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প হওয়া উচিত নয় বিষয়ে, বরং এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রবল উৎসাহের কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা, বর্তমান পরিস্থিতি কী, এবং জনমত ও নানা উপাত্ত সমীক্ষা উপেক্ষা করে সরকারের কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে কী করা যায় এইসব বিষয়ে আলোকপাতের চেষ্টা।


মূলত তিনটি কারণে রামপাল প্রকল্প ভয়ংকর:
১) এটি কয়লাভিত্তিক; সবচেয়ে সহজলভ্য ও সস্তা জ্বালানি-উৎস হিসেবে কয়লা অনেক দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু অধিকাংশ দেশ ক্রমে পুরাতন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে (পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাবের কথা বিবেচনা করে) অথবা দূষণ কমানোর জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে, এবং নতুন কেন্দ্র স্থাপনে বিধিনিষেধ জারি অথবা কঠোর সমীক্ষা করছে অথবা অনুমতি দিচ্ছে না; সেই তুলনায় আমাদের দেশে হচ্ছে উল্টো। সারাবিশ্ব ক্রমে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে; নবায়নযোগ্য শক্তি অনেক সহজলভ্য ও সস্তা আধুনিক প্রযুক্তির কারণে; নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য দরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও দূরদর্শিতা, যা আমাদের দেশের অনেক প্রকল্পে পাওয়া যায় না।

২) এর অবস্থান সুন্দরবনের নিকটে। আমাদের দেশের জলবায়ু (যেমন- দীর্ঘ বর্ষা) ও আবহাওয়ার (যেমন- বাতাসের গতিপথ ও বেগ) কথা মনে রেখে বলতে হয় যে রামপাল প্রকল্প সুন্দরবনের ১৪ কিমি দূরে হলে-ও এই কেন্দ্র-উৎপন্ন দূষণ অনায়াসে সুন্দরবনকে ক্ষতি করবে। যেমন, উৎপন্ন ক্ষতিকর গ্যাস ও ক্ষতিকর পদার্থে দূষিত বায়ু রামপালের আকাশে স্থির থাকবে না, চক্রের কারণে এটি সুন্দরবন ও সংলগ্ন স্থানে গিয়ে অ্যাসিড রেইন ঝরাবে, এছাড়া দূষিত পদার্থ, ভারী ধাতু নির্গমনের মাধ্যমে নদী ও পানিপথে সুন্দরবনে গিয়ে মিশবে (পৃথিবীতে এমন কোনো সহজলভ্য ও সস্তা প্রযুক্তি নেই যা কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র-জাত দূষণকে পুরোপুরি ফিল্টার করতে পারে); ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে সুন্দরবনের ইকোসিস্টেমে জল বিশেষ উপাদান, ফলে অন্যান্য ইকোসিস্টেমের তুলনায় এখানে সহজে দূষণ ছড়িয়ে পড়বে অনেক জায়গায়।পরিবেশ বিপর্যয়ের ব্যাপারটি একদিনে ঘটে না, বছরের পর বছর ধরে তিল তিল করে ধূমপানে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার মতো নীরবে ঘটে; যেমন- ১৯৬০ দশকের দিকে লন্ডনে (ইংল্যান্ড) কারখানা স্থাপন ও শিল্প বিপ্লবের কারণে লন্ডনে পরিবেশ দূষিত হয় প্রচুর, পরবর্তীতে এই দূষণ কমানো হলে-ও সাম্প্রতিক কালের অনেক রোগ-বিষয়ক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে বর্তমানে (প্রায় ৫০-৬০ বছর পরে) অনেকে যেসব নিউরোডিজেনারিটিভ (স্নায়ুকোষের মৃত্যু বা বিকলতার কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন রোগ, যেমন, পারকিনসনের রোগ, আলঝেইমারের রোগ ইত্যাদি) রোগে ভুগছেন তাদের অনেকে এই পরিবেশ দূষণের সংস্পর্শে এসেছেন অথবা এই দূষণে বড় হয়েছেন; অর্থাৎ, এই সব পরিবেশ বিপর্যয় প্রভাব ফেলে দীর্ঘমেয়াদে।

আজ রামপাল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এর প্রভাব পেতে পারেন আগামী ২০-৩০ বছরে। এছাড়া আমাদের দেশে মোট আয়তনের তুলনায় মাত্র ৯% বনাঞ্চল আছে (২৫% থাকা উচিত), সুন্দরবন ও সংলগ্ন বনাঞ্চল যার বিরাট অংশ, এই সুন্দরবনের ক্ষতি হলে বৈশ্বিক উষ্ণতা ও আবহাওয়া বৈরিতার এই সময়ে বাঙলাদেশ আরো বেশি বন্যা, ঝড় ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হতে থাকবে।

এছাড়া যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের ফিল্টার ব্যবহৃত হবে নির্গমনের মাধ্যমে দূষণ কমাতে, এবং তদারকি করা হবে নিয়মিত- এই বিষয়ে আস্থা নেই, এই দেশে প্রকল্পের নিয়মিত তদারকি হয় না বলেই এক রাস্তা একই বছরে দুইবার নির্মাণ করতে হয়, দূষণ রোধ হয় না বলেই আজ বুড়িগঙ্গার এই অবস্থা। সমস্যা সমাধানের চেয়ে সমস্যার জন্ম দেয়া রোধ করা দরকার।

৩) রামপাল প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার পার পেয়ে গেলে এইরকম পরিবেশ অবান্ধব ও অলাভজনক প্রকল্পকে উৎসাহ দেয়া হবে কেবল; এরপর সরকার কী করবে? ঢাকা শহরে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় পারমাণবিক চুল্লী বসাবে?রামপাল প্রকল্পের মতো বিপদজনক প্রকল্পের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সরকারকে জানিয়ে দেয়া দরকার যে জনগণ বিদ্যুৎ চায় তবে ক্ষতিকরভাবে নয়।


অন্যান্য দেশের মতো ভারত সরকার-ও কয়লাভিত্তিক প্রকল্পের অনুমোদন দিচ্ছে না, দিলে-ও তা বন্ধ করে দিচ্ছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে পানির অভাব (কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রচুর পানির প্রয়োজন পড়ে), এবং পরিবেশের কথা। যেমন, ভারত সরকার ১০ জুন, ২০১৬ তারিখে চারটি প্রদেশে পূর্বপরিকল্পিত ও অনুমোদিত(Chhattisgarh, Karnataka, Maharashtra এবং Odisha) কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থগিত করে পরিবেশ-বান্ধব নয় বলে (ও জনমত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিপক্ষে), এবং জ্বালানি কাজে কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য।

যেখানে স্বয়ং ভারত সরকার কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন বাতিল করছে সেখানে বাঙলাদেশে এসে কেনো সুন্দরবনের মতো নাজুক এলাকায় কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে এতো উৎসাহ? বাংলাদেশ সরকার মেনে নিচ্ছে-ও কেনো জনমত ও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে? কতো লবিং হলে অথবা দুর্নীতির কতো টাকা লুফে নিয়েছেন জ্বালানি মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট আমলাগণ?

অর্থমন্ত্রী বলেছেন যেভাবেই হোক রামপাল প্রকল্প হবেই; কেনো এতো মরিয়াভাব? সার্বিকদিক বিবেচনা করলে (দ্বিগুণ দামে বিদ্যুৎ উৎপন্ন ও ক্রয়; জনমতের বিরুদ্ধে; সুন্দরবনের মতো সংবেদনশীল ম্যানগ্রোভ বনের ক্ষতির সম্ভাবনা; মানব স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ইত্যাদি) প্রতীয়মান হয় যে শুধুমাত্র নিজেদের আখের গোছানো ও রাজনৈতিক কারণে সরকার রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য এতো বেশি তৎপর।

একটি মুখরোচক তথ্য হচ্ছে পৃথিবীর যাবতীয় কয়লা মজুদের (ভূগর্ভস্থ ও খনি) ৭% আছে ভারতে। ভারত যদি নিজেদের পরিবেশ ও মানবসম্পদের জন্য কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র না বানায় তবে এই কয়লা রপ্তানি করতে পারে অবলীলায়। খটকার বিষয় হলো প্রস্তাবিত রামপাল চুক্তিতে সঠিকভাবে বলা হয় নি কোন কোম্পানি অথবা দেশ থেকে কয়লা আমদানি হবে রামপাল প্রকল্পের জন্য, দায়সারাভাবে বলা হয়েছে কয়লার রপ্তানি হতে পারে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া অথবা ভারত থেকে।

তবে কি ভারত সরকার জ্বালানি-উৎস কয়লা বিক্রি করার স্থান হিসেবে দেখছে রামপাল ও অন্যান্য কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে? উল্লেখ্য, মাত্র ১৫% বিনিয়োগ করে ভারতীয় এনটিপিসি ৫০% মালিকানা পাবে, এবং পিডিবিকেএনটিপিসি থেকে বিদ্যুৎ কিনতে হবে। অর্থাৎ, আমাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ আমাদের পরিবেশ ও জনপদ নষ্ট করে উৎপাদিত বিদ্যুৎ অন্যের কাছ থেকে আমাদের কিনতে হবে!


কয়লাভিত্তিক প্রকল্পের পক্ষের লোকেরা সুপারিশ করে থাকেন “ক্লিন কোল” (clean coal) সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূষণ রোধ অথবা কমানো যায়। মূলত এইগুলো কিছু মুখরোচক শব্দগুচ্ছ ছাড়া অন্য কিছু নয়, কারণ কয়লা-কেন্দ্রিক দূষণ কমানোর প্রযুক্তি থাকলে-ও সেইসব প্রযুক্তি এতো বেশি ব্যয়বহুল ও এর জন্য যে অবকাঠামোর প্রয়োজন তা বাঙলাদেশের জন্য বহন করা অবাস্তব অথবা সম্ভব নয়। যেমন, উৎপন্ন কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে ধরে তা ভুগর্ভস্থ (অথবা সমুদ্রের মাটির নিচে) স্থানে সংরক্ষণ করতে প্রয়োজন হয় একটি কেন্দ্রের উৎপাদিত ৩০% শক্তি, এই শক্তি যেহেতু বাড়তি হিসেবে আসতে হবে তাই আরো বেশি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে হবে, আরো বেশি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে গিয়ে আরো বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হবে; অর্থাৎ পুরো ব্যাপারটি একটি অশুভ চক্রের মতো।

এছাড়া, বিভিন্ন ধাতু যেমন মার্কারি, অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের পরিশোধনের কাঁচামাল (যেমন সালফার-ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইডের) অনেক ব্যয়বহুল, এবং বাঙলাদেশকে এগুলো নিয়মিতভাবে বাড়তিভাবে আমদানি করতে হবে। যেমন, বুশ ও ওবামা সরকার আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র জাত দূষণ কমানোর জন্য গত দেড় দশকে প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করলে-ও কোনো উল্লেখযোগ্য লাভ হয়নি; ফলে আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র পরিবেশ সমীক্ষা কমিটির সুপারিশ অনুসারে পুরাতন কেন্দ্রগুলোর যন্ত্রাংশ হালনাগাদ করছে, নতুন কেন্দ্র স্থাপনে উৎসাহী নয় ও নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের দিকে ঝুঁকছে।

রামপাল (ও বাঁশখালি) যেহেতু কয়লাকেন্দ্রিক এবং প্রয়োজনীয় কয়লা যেহেতু আমদানি করতে হবে তাই এগুলো নদী বা জলপথ সংলগ্ন স্থানে স্থাপিত হচ্ছে (আমরা জানি যে জলপথ নির্ভর আমদানি সহজ ও সস্তা)। সরকার যদি এই দোহাই দিয়ে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে চায় তবে অনায়াসে কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন করে তেল-নির্ভর অথবা বারোমাস নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে পারে।

পরিশোধিত তেল-নির্ভর কেন্দ্র কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে কম পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করে, মার্কারির ঝামেলা নেই, এবং অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের নির্গমন-ও অনেক কম; অর্থাৎ, তেল-নির্ভর কেন্দ্র মন্দের ভালো। অন্যদিকে, বায়োমাস নবায়নযোগ্যশক্তি-উৎস, ও সংশ্লিষ্ট দূষণ তেল ও কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রের তুলনায় কম। যেমন, একটি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে (রামপালের মতো বড়সড়) বছরে প্রায় ৫০ টন মার্কারি নির্গমিত হয়, বায়োমাসে যার পরিমাণ শূন্য।

অন্যদিকে রামপালের কয়লাভিত্তিক প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত অবকাঠামো ব্যবহার করেই বারোমাস ও তেল-নির্ভর বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন সম্ভব, যেহেতু এইসব কেন্দ্রে মূলত জ্বালানি পুড়িয়ে বাষ্প সৃষ্টি করে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়; কিছু বাড়তি বিনিয়োগ অথবা কাঠামো পরিবর্তন করেই জ্বালানি হতে পারে বারোমাস অথবা তেল। হতে পারে বায়ুকল-ভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র।


মূলত সদিচ্ছা ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প থাকলে অনেককিছুই হতে পারে। আমাদের লড়তে হবে এর জন্য। সরকার সবকিছু তোয়াক্কা করে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে মরিয়া, তাই আন্তর্জাতিক সংঘটনগুলোর (যেমন, ইউনেস্কো, গ্রীনপিস পরিবেশ সংগঠন) মাধ্যমে সরকারকে চাপ দিতে হবে চুক্তি বাতিলের। এই বিষয় সংশ্লিষ্ট ব্যাপারগুলো আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও সংগঠনের নজরে আনতে হবে দ্রুত।

আশার কথা  কিছু বিদেশি সংগঠন (Friends of the Earth, the Sierra Club এবং 350.org) স্বাক্ষর সংগ্রহ করে ইউনেস্কোর কাছে সুপারিশ ও আবেদন করেছে সুন্দরবনকে পৃথিবীর যেসব ঐতিহ্য বিপন্ন সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে এবং তারা লবি করছেন চুক্তি বাতিলের জন্য। তবে মনে রাখা দরকার যে ইউনেস্কো ও অন্যান্য বিদেশি সংগঠন আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করলে-ও তাদের ক্ষমতা সীমিত, বাঙলাদেশের মতো একটি সার্ভভৌম রাষ্ট্রের একটি সরকারি চুক্তি বাতিলে তাদের সরাসরি হস্তক্ষেপ আশা করা যায় না, উচিত-ও নয়; তাই আমাদের লড়াই আমাদের লড়তে হবে। সরকারকে সর্বোচ্চ আদালত ও আন্তর্জাতিক পরিবেশ-বিষয়ক আদালতে জবাবদিহির জন্য পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। আর দেশিয় বিভিন্ন পরিবেশ সংগঠন, সচেতন নাগরিকদের সভা ও অন্যান্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

যদি সবকিছু উপেক্ষা করে সরকার এই প্রকল্প চালু রাখতেই চায় (এখন পর্যন্ত আমলাদের বক্তব্য ও সরকারের কর্মকাণ্ডে তাই মনে হয়) আমাদের উচিত কীভাবে ক্ষতি কমানো যায় সেদিকে নজর দেয়া (জিরো নির্গমনের জন্য সোচ্চার হওয়া, সরকার থেকে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলা হলে-ও সঠিক কী ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হবে সেই বিষয়ে দিকনির্দেশনা নেই; গ্যাস ও বিষাক্ত ধাতুর নির্গমনের জন্য অত্যাধুনিক ফিল্টার ব্যবহার; পানি ও বায়ু দূষণ না করার জন্য চাপ দেয়া ও নজরের ব্যবস্থা করা;সার্বিক তদারকির জন্য স্বাধীন নির্বাহী দল গঠন ইত্যাদি)। একই সঙ্গে, দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ ও জ্বালানি চাহিদা মেটানোর জন্য আমাদের পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের জন্য সুপারিশ ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রয়োজন।

(ব্যবহৃত তথ্য উপাত্তের সূত্রের জন্য যোগাযোগ [email protected])

আশরাফ মাহমুদ, গবেষক, কবি ও লেখক

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ