প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ | ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১
বর্তমান বিশ্বে একটি রাষ্ট্র কতোটা সামরিক অস্ত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ শুধু তা দিয়েই সেই রাষ্ট্রের শক্তিমত্তা প্রকাশ পায় না, বরং একটি রাষ্ট্র অর্থনৈতিকভাবে কতোটা স্বয়ংসম্পূর্ণ তা দিয়েও সেই রাষ্ট্রের শক্তিমত্তা প্রকাশ পায়।
উপরের বক্তব্যের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে পাকিস্তান। পারমাণবিক শক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পরও শুধুমাত্র অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারণে পাকিস্তান আজ এক ব্যর্থ রাষ্ট্রের নাম। কোন রাষ্ট্রই আজ পাকিস্তানকে গুনতিতে ধরে না!
আমরা যদি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই তাহলে আমাদেরকেও সবার আগে অর্থনৈতিক শক্তিতে শক্তিমান হতে হবে। বলছি না যে, সেটা আগামী দশ/বিশ বছরের মধ্যেই সম্ভব তবে চেষ্টাটা শুরু করা উচিৎ এখনই।
গার্মেন্টস বা পোশাকশিল্প আমাদের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত। দুর্ভাগ্য আমাদের যে এখন পর্যন্ত আমরা উল্লেখ করার মতো আর কোন বড় রপ্তানিখাত তৈরি করতে পারিনি। আরও দুর্ভাগ্য যে আমাদের এই বড় রপ্তানি খাতের (পোশাকশিল্প) সবচেয়ে বড় বাজার হলো ইউরোপ-আমেরিকা। তাই আমাদের অর্থনীতির একটা বড় অংশ ইউরোপ-আমেরিকার উপর নির্ভরশীল।
এই নির্ভরশীলতাটাকে কাজে লাগিয়েই ইউরোপ বা আমেরিকা আন্তর্জাতিক সার্বভৌমনীতির কোনরকম তোয়াক্কা না করে যখন তখন আমাদের উপর ছড়ি ঘোরায়!
চরম হতাশার ব্যাপার হলো- রাষ্ট্র ও সরকারকে জিম্মি করতে এদেশের পোশাকশিল্পের মালিকরাও কম যায় না! বিগত সময়ে বিশেষ করে গত করোনার ক্রান্তিকালে সরকারের লকডাউন পরিকল্পনায় পোশাকশিল্পের মালিকরা কিভাবে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই করোনার সময়েও কিভাবে তারা পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের সাথে স্বেচ্ছাচারিতা করেছে সেটা আমরা সকলেই দেখেছি।
প্রণোদনাপ্রাপ্তির জন্য তাদের দৌড়ঝাঁপও আমরা কম দেখেনি, মোটকথা রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় রপ্তানিখাত হওয়ার সুবাদে যা যা সুবিধা সরকারের কাছ থেকে নেওয়া যায় তার একচুলও তারা কখনো ছাড় দেয়নি! সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত হওয়ায় সরকারও তাদের এড়িয়ে যেতে পারেনি। যতদ্রুত সম্ভব আমাদেরকে দেশের বাইরের ও ভিতরের এই নির্ভরশীলতার গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
পোশাকশিল্পের পাশাপাশি কৃষি ও মৎস্যখাত এবং আইটি ও চামড়া খাতের মতো আরও বেশি বেশি রপ্তানিখাত তৈরি করতে হবে যা পোশাকশিল্পকেও টেক্কা দিয়ে সমানতালে এগিয়ে যেতে পারবে এবং তার বাজারও শুধু ইউরোপ-আমেরিকা নয় বরং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারবে। এতে করে একক একটিমাত্র খাতের উপর নির্ভরশীলতা যেমন কমবে তেমনি প্রচুর বেকারের কর্মসংস্থান হবে।
যেহেতু আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছি সেহেতু রপ্তানিখাতের এই ডাইভার্সিফিকশনের আর কোন বিকল্প নেই।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য