আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

Advertise

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সমর্থন নয়, আরসা’র সমর্থন দরকার

আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল  

বার্মিজদের গ্রেপ্তার এড়াতে ১৭৯৯ সালে পঁয়ত্রিশ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা এদেশে এসেছিল। সেই শুরু, অব্যাহত আছে অদ্যাবধি। তাই রোহিঙ্গাদের প্রতি সত্যিকারের সহানুভূতি থাকলে আমাদের উচিত যুগ যুগ ধরে এদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠিয়ে 'আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি' (আরসা)-এর আন্দোলনকে শক্তিশালী করা। প্রয়োজনে তাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে কৌশলগত সহযোগিতা দেয়া যায়। পরকালের পরোয়া না করে ইহকালের মোহ মায়ায় যারা জিহাদ থেকে পালিয়ে এসেছে, সেই মুনাফেকদের আশ্রয় না দিয়ে শুধু লড়াইয়ের অপশন রাখা আমাদের ধর্মীয় কর্তব্য। মুসলিম দেশগুলোও রিফুজিদের ক্ষেত্রে তা-ই করেছে।

কেউ জাতীয়তাবাদী চেতনার ধারক হলে তথাকথিত মানবতার বুলি না ছুঁড়ে উপলব্ধি করা উচিত যে, রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি, আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন। তাদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে সীমান্তে বৈদ্যুতিক কাঁটাতারের বেড়া দেয়া সময়ের প্রয়োজন।

যীশু খ্রিস্টের দৃষ্টান্ত দেয়া যায়। তিনি অলৌকিক ক্ষমতা দিয়ে একজনের খাবার বহুজনকে খাইয়েছেন। তেমনি অন্যদের কি করা উচিত তাও দেখিয়েছেন। তাঁর কাছে পার্শ্ববর্তী এলাকার এক নারী খাবার চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘শিশুর মুখ থেকে খাবার কেড়ে নিয়ে কুকুরকে দেয়া নিশ্চয়ই উচিত নয়!’ (ম্যাথিউ)

রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ নতুন কোনও ঘটনা নয় যে একে মানবতার মোড়কে বন্দি করে রাখবো। বর্তমানে যতজন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে আছে তারচেয়ে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপেছে।

১৭৯৯ সালে প্রথম অনুপ্রবেশ করে বলে জানা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু হলে ২২,০০০ রোহিঙ্গা এদেশে আসে। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বার্মা ও জাপানের যৌথ আক্রমণের সময় ৪০,০০০ রোহিঙ্গা চট্টগ্রামে চলে আসে।

১৯৭৮ সালে ড্রাগন রাজার অভিযানের সময় প্রায় দুই লক্ষ এবং ১৯৯১-৯২ সালের দাঙ্গার সময় প্রায় আড়াই লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

লন্ডন থেকে প্রকাশিত গার্ডিয়ানের হিসাবে ২০১৬-এর অক্টোবরের দাঙ্গার পর থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা এদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

২০১২ ও ২০১৬ সালের দাঙ্গা এবং সাম্প্রতিক ঘটনায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা এসেছে।

দালালদের মাধ্যমে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে গেছে প্রায় পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এরা বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত হয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। এদেশে রয়েছে অন্তত ছয় লাখ। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চোরাচালান, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী তৎপরতার অভিযোগ আছে।

আইএসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।

সবচেয়ে বড় কথা আমাদের শক্তি, ক্ষমতা ও সামর্থ্যের কথা বিবেচনা করলে ছয় লাখ রোহিঙ্গা এদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবন যাত্রার মানোন্নয়নকে স্থবির করে দিবে। আমাদের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে রোহিঙ্গা ও আটকে পড়া পাকিস্তানীরা।

কথিত মানবতাবাদী সুশীলরা মূলত এ ইস্যুতে ভণ্ডামি করে আসছে। তারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেয়ার পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়ে এই মর্মে একটি শর্ত জুড়ে দেয় - "এ আশ্রয় যেন স্থায়ী না হয়... তাদের ফেরত পাঠাতে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।"

রোহিঙ্গা সমস্যা ছিটমহলের মত কোনও সমস্যা নয় যা সফল কূটনৈতিক দক্ষতা দিয়ে সমাধান করা যাবে। সুশীলরা খুব ভালোভাবেই জানে যে রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো একটি অসম্ভব বিষয়। এর মাধ্যমে মূলত রাজনৈতিক সুবিধা সন্ধান করে।

কিছু এনজিও এর পক্ষে অবস্থান নেয় দেশী-বিদেশী অনুদানে নিজের পকেট ভারী করার জন্য। এর ফলে মূলত দেশের সাধারণ মানুষকে তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গারা একবার অনুপ্রবেশ করতে পারলে, তাদের ফেরত পাঠানো যাবে না এবং ফল ভোগ করতে হবে আমাদেরকেই। তাই রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধের পাশাপাশি এদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা যেন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিতে যোগ দিয়ে স্বাধীন আরাকান রাজ্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রাখে সেই লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবা উচিত।

আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল, সাবেক ছাত্রনেতা ও তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬২ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৫ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ