আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

আমরা নিজের যুদ্ধ রেখে অন্যের লড়াই লড়ছি

দেব দুলাল গুহ  

সামনে ঘোর বিপদ দেখি। বলতে পারেন অমানবিক, আমি হতাশাবাদী। কিন্তু মনে করি আমি বাস্তববাদী, উচিত কথাটা রাখ-ঢাক না করে বলে দেই। সেই হিসেবেই বলি, এই যে মানবতা দেখিয়ে যাদের জায়গা দিলাম, তারাই নিকট ভবিষ্যতে হয়তো আমাদেরকে বিপদে ফেলবে।

ওদেরকে মিয়ানমার নাগরিকত্ব দেবে না, ফিরিয়েও নেবে না। কারো কোনও চাপেই নেবে না। প্রতিদিন হুমকি দিয়েও উত্তর কোরিয়া টিকে আছে না বুড়ো আঙুল দেখিয়ে? ওরাও থাকবে। শুধুই সবার হাতে-পায়ে ধরে নিজেদের ছোট করছি আমরা। তারচেয়ে বড় কথা, ওরা ফিরে যাবার জন্য এসেছে বলেও মনে হয় না। ওদের কেউ কেউ এইডস আক্রান্ত। আর আমরা, নিজেদের নানামুখী যুদ্ধ রেখে এখন ব্যস্ত অন্যের লড়াই লড়তে!

ওরা দিব্যি খাচ্ছে-দাচ্ছে ঘুরে বেড়াচ্ছে, বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ছাড়াই সিম কিনে ফোনে কথা বলছে, ইচ্ছা হলে চলে যাচ্ছে দেশের যেকোনো প্রান্তে। এদের ফেরার মানসিকতা নেই। আমাদের মতো এদের আলাদা কোনও সরকার নেই, বঙ্গবন্ধু বঙ্গতাজের মতো নেতা নেই। এরা ছন্নছাড়া, সুশিক্ষাহীন। এদের দেশ স্বাধীন করার মতো প্রবল ইচ্ছাশক্তিও কি আছে? থাকলে এভাবে ফাইট না করে কেউ চলে আসে?

শুরুতে আমরা কার্যকরভাবে বাধা দেইনি, বরং উপরে না করলেও আসলে প্রবেশাধিকার দিয়েছি। ওদের পুরুষরা ভেবে দেখেছে, আমাদের তো মিয়ানমার থাকতে দেবে না, বাচ্চা-বউ রেখে সেনা চৌকিতে শেষ কামড় দেই। পালটা আক্রমণ হলে বাংলাদেশ তো আছেই। মিয়ানমারও দেখে, ধাওয়া দিলেই ওদের পালানোর জায়গা আছে।

চুক্তিমতে বাংলাদেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে অনেকটাই বাধ্য। ড্রোন এবং হেলিকপ্টার পাঠিয়ে, গুপ্তচর মারফত ঐ দেশের সরকার জেনেছে, আমরা ধর্মীয় বিবেচনায় হোক আর মানবিক দিক থেকেই, ওদের আশ্রয় দিয়েছি ও দিচ্ছি। তাই ওরাও দ্বিগুণ উৎসাহে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

ওদিকে রোহিঙ্গাদের রাখতে চায় না ওখানে কেউ। কোনও কারণ ছাড়াই? নোবেলজয়ী সু চির মনটা যে কাঁদে না, তাঁর যে লজ্জা লাগে না, তা নয়। কিন্তু এখনও সেনাবাহিনীর হাতে দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল গণতন্ত্র চলে যাওয়ার ভয় আছে। তাছাড়া গৌতম বুদ্ধের অহিংস মতাদর্শের বৌদ্ধরাও মার খেয়ে জেনেছে, টিকে থাকতে হলে লড়াই করতে হয়। এসব ভেবেই সু চি চুপ আছেন। রোহিঙ্গাদের অপরিকল্পিত বংশবৃদ্ধি তাদের দেশের জাতিগত ও ধর্মীয় প্রাধান্য রক্ষার জন্য হুমকি, মনে করছেন তারা।

আর এদিকে, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ, যেখানে শনিবারের প্রথম আলোর শিরোনাম অনুযায়ী 'আড়াই কোটি মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে', কেবল একটু এগিয়ে যাচ্ছিলো দেশটা, তখনই মানবতার খাতিরে বাড়তি আনুমানিক ৫ লক্ষকে জায়গা দিতে হলো।

আগেও এরা ইয়াবা পাচার করেছে, আমাদের আনসার ক্যাম্পে হামলা করে আনসার মেরেছে অস্ত্র লুট করেছে, আমাদের দেশের পাসপোর্টে বিদেশে গিয়ে দেশের সুনাম নষ্ট করেছে, আগামীতেও করবে। চালের দাম আকাশছোঁয়া, জঙ্গিদের প্রধান টার্গেট। নির্বাহী ও বিচার বিভাগীয় দ্বন্দ্ব, বন্যা। এর মাঝে এই বিপদ সরকারকে বড় ধাক্কা দিয়েছে।

আমিতো আশু কোনও সমাধান দেখি না। চালের দাম ১০০ হলেও অবাক হবো না। অন্যের উপকার করতে গিয়ে নিজের অস্তিত্বই হুমকিতে আর কী!

আমার কথাগুলো একান্তই নিজস্ব ভাবনা, জানি ভালো লাগবে না অনেকের। কিন্তু, কিছুদিন গেলেই আপনারা কথাগুলোর মর্ম বুঝবেন। কষ্ট লাগবে, তখনও অনেকেই নিজের ভালো না বুঝে বোকামি করে অন্ধবিশ্বাসের চশমা পড়ে বসে থাকবেন।

কিছু এলাকা অনেক সম্পদ ততদিনে আমাদের হাতছাড়া হয়ে যাবে। নিজ দেশের সংখ্যালঘুরা, কারো বন্ধু কারো সহকর্মী পালানোর পথ পাবে না। আসলেই অনেকটা উন্নয়নের দিকে হাঁটছিলাম আমরা, এভাবে হঠাৎ থমকে যেতে চাই না। কাজেই, যা করার এখনই করতে হবে।

দেব দুলাল গুহ, প্রভাষক, লেখক ও কলামিস্ট। ইমেইল: [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ