আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

কাশ্মীর আঘাত-প্রত্যাঘাত: সমাধান পলাতক

রণেশ মৈত্র  

প্রায় দু’সপ্তাহ হলো কাশ্মীর পুনরায় মৃত্যুকূপ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হলো। বিগত ১০ ফেব্রুয়ারি যে মর্মান্তিক ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছিল জম্মুর নিকটবর্তী পুলওয়ারায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিশাল কনভয়ের আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে তার বদলা নিতে বালাকোট এলাকায় ১০ টি জঙ্গি ঘাঁটিতে একযোগে আক্রমণ চালালো ভারতীয় বিমান বাহিনী ১০ টি জেট বিমান নিয়ে। জানা যায়, ভারতীয় বিমান বাহিনী রাতের বেলায় অতর্কিতে বিমান হামলা চালানো কালে ১০০০ কে.জি বোমা নিক্ষেপ করে। এ দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করে ভারতীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হচ্ছিল যা দেখে এই প্রতি আক্রমণ যে কত ভয়াবহ ধরণের তা অনুমান করা গেল।

সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে দৃশ্যত: শান্ত কাশ্মীরের পুলওয়ারায় চলমান ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশাল কনভয়ের উপর দিবাভাগে যে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে প্রায় অর্ধশত জওয়ান ও অফিসারের মৃত্যু ঘটানো হয়েছিল ও অর্ধশতাধিক জওয়ানকে আহত করা হয়েছিল বিগত ১৪ ফেব্রুয়ারিতে তখনই ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্পষ্টভাষায় ঘোষণা করেছিলেন “বদলা লেঙ্গে কোইকো ছোড়েঙ্গে নেহি”। অর্থাৎ অবশ্যই এর প্রতিশোধ নেওয়া হবে কাউকেই ছাড়া হবে না।

ভারতের রাজনৈতিক মহল সমূহ এবং সে দেশের সংবাদ মাধ্যম সমূহে তাৎক্ষণিক ভাবে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানায় ১৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণের দুদিন আগে পাকিস্তানের জঙ্গি বাহিনী জঈশে মোহাম্মদ ভারতের সেনাবাহিনীকে প্রবল আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্ভবত: ঐ হুঁশিয়ারিকে তেমন গুরুত্ব দেয় নি। কিন্তু পুলওয়ারায় ঐ নির্মম হত্যালীলার পরও “জঈশে মোহাম্মদ” ঐ হত্যালীলার দায় স্বীকার করেছিল।

অত:পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, জঙ্গশে মোহাম্মদ একটি পাকিস্তানী জঙ্গিবাহিনী, যারা সশস্ত্র। তাদের জন্ম আই.এস.আই এর গর্ভে ও তাদের চিরকালের লালন-পালনকারী হলো পাকিস্তানী সেনাবাহিনী। একথা বলে তাঁরা পরোক্ষভাবে জানান দিলেন পাকিস্তান সরকার এই মর্মান্তিক ঘটনার দায় স্বীকার না করে পারেন না।

এ ধরণের ক্রমাবনতিশীল অবস্থায় পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ক্রিকেটার ইমরান খান নিজে থেকেই হুঁশিয়ারি দিলেন, “ভারত যদি পাকিস্তান আক্রমণ করে তবে তাঁরা বসে থাকবেন না। সামরিক বাহিনীকেও নির্দেশ দিলেন প্রস্তুত থাকতে যাতে দ্রুতই প্রত্যাঘাত হানা যায়। তিনি আরও বললেন, পাকিস্তান আদৌ পুলওয়ারা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয় তবে তার সম্পৃক্ত থাকার কোন তথ্য থাকলে এবং পাকিস্তানকে সেগুলি সরবরাহ করলে পাকিস্তান সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দ্বিধাবোধ করবে না। ভারতের নানা মহল তখন উল্লেখ করেন “জঈশে মোহাম্মদ” পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর দ্বারা লালিত, পাকিস্তানের মাটিতে বসেই তারা পওলয়ারার মত ভয়াবহ হত্যালীলা ঘটিয়েছে এবং তাঁরা পাকিস্তানের মাটিতেই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। সেখানে তারা মিছিল করে জয়োল্লাস করেছে। এর চাইতে বড় প্রমাণ আর কী হতে পারে? এর পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আর কোন কিছু না বলে চুপচাপ থেকেছেন। অপরদিকে ভারত জুড়ে কাশ্মীরিরা হামলা শিকার হয়েছেন নির্দোষ হয়েও হামলার হুমকির হাত থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কাশ্মীরা ভর্তি উৎপত্তি তারা সোচ্চার হয়েছিল।

এরই মুখে ২৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে (ভারতীয় সময় রাত ৩:৩০ মি.এ) ভারতীয় বিমান বাহিনী ১২ টি জেটবিমান উড়ে গিয়ে ২১ মিনিটের এক অভিযান শেষে ফিরে আসে নিরাপদে। এতে তারা ১০০০ কে.জি. বোমা নিক্ষেপ করে তিনটি এলাকার (বালাকোট চকেটি ও মুজাফফরাবাদে অবস্থিত দশটি জঙ্গি শিক্ষণ শিবিরে। ভারতীয় বিমান বাহিনী প্রদত্ত তথ্যমতে ২০০/৩০০ জঙ্গি এই অভিযানে নিহত। বিস্তারিত তথ্য এই নিবন্ধ লেখা অবধি পাওয়া যায় নি। প্রশিক্ষণ শিবিরগুলি পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারত সীমান্তে অবস্থিত।

ভারতীয় বিমান বাহিনী ১২ টি জেটই সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা দৃশ্যত: অতিক্রম করে ২১ মিনিটের অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বোমা নিক্ষেপ করে অত্যন্ত নিরাপদে আবার সীমান্ত পেরিয়ে নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে আসে। ভারতের প্রদত্ত প্রাথমিক হিসেবে ২০০-৩০০ জঙ্গি ঐ অভিযানে নিহত হয়েছে।

এর আগে পুলওয়ারা হত্যালীলার পরে নতুন করে পাকিস্তান বিরোধী উগ্র আবহাওয়া চাইতে শুরু করে সমগ্র ভারত জুড়ে। পাল্টা আঘাতের দাবীও উঠতে থাকে। পরিস্থিতি দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলে ওঠেন, “আমরা জানি শীঘ্রই ভাতের লোকসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এবং ঐ আবহের পরিণতিতে বর্তমান সরকারি দল ভোটে জয়ী হয়ে আসতে চাইছে।

পাকিস্তান এমনিতেই উগ্র জঙ্গি আবাদের এবং চর্চার দেশ। জন্ম থেকেই দেশটি সামরিক বাহিনীর অঙ্গুলি হেলানেই পরিচালিত। মাঝে মধ্যে সে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তার ফলাফল নিয়ন্ত্রণ করে অলক্ষ্যে পাকিস্তানী জেনারেলরা। কে হারবে কে জিতবে তাও নির্ধারণ করে দেওয়ার মালিকও ঐ জেনারেলরাই। তাই তারা যে ভারতীয় প্রত্যাঘাতকে চুপচাপ হজম করে যাবে তা খুব একটা আশা করা যায় না বিশেষ করে আমেরিকা, চীন, সৌদি আরব তাদের পক্ষে থাকায় এবং আমেরিকার (সি.আই.এ) অর্থে ও মদদে সৃষ্ট ঐ দেশি জঙ্গিবাহিনী তাদের অপ্রকাশ্য মদদেই টিকে আছে।

ফলে ভারতের এই অভিযানের মাধ্যমেই ভারত-পাকিস্তানের কাশ্মীর নিয়ে বহু যুগ আগে-১৯৪৮ সাল থেকে উত্থাপিত দাবীরও পরিসমাপ্তি ঘটবে তা আশা করা দুরূহ। কারণ পাকিস্তান যেহেতু সেনাবাহিনী নির্ভর একটি রাষ্ট্র সেখানে জনগণের সার্বভৌমত্বের ন্যূনতম স্বীকৃতিও নেই সেখানে স্বভাবত:ই উগ্রবাদ মাথা চাঁড়া দিয়ে ওঠে। আর এক্ষেত্রে তো রাষ্ট্রীয় উদ্যোগেই পাকিস্তান জঙ্গি ও জঙ্গিবাদের চাষাবাদে লিপ্ত।

পাকিস্তানের অন্যতম বৃহৎ প্রদেশের কোটি কোটি মানুষও বাংলাদেশের মত পাকিস্তানী স্বৈরসেনা শাসনের অতিষ্ঠ হয়ে কয়েক বছর হলো “স্বাধীনতার দাবীতে আন্দোলন করছেন। ইয়তো বা কোন না কোন সময় তারা আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণা করে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাইবেন। ফলে একদিকে সেটা যেমন সুখবর হবে তেমনিই পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী ও সামরিক বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা আরও শঙ্কিত ও ক্ষিপ্ত হয়ে বেলুচিস্তান ও কাশ্মীরে জঙ্গি আক্রমণে লিপ্ত হবে এমন আশংকা অবাস্তব নয়।

যা হোক, এভাবে আঘাত পালটা আঘাত, শত শত হাজার হাজার ভারতীয় পাকিস্তানীরা মৃত্যু ডেকে আনতে তাই নয়, এর ফলে গোটা উপমহাদেশ জুড়ে নতুন করে ঘৃণা, বিদ্বেষ ও শত্রুতামূলক পরিবেশের সৃষ্টি হবে সাম্প্রদায়িক হানাহানির আশংকাও সমগ্র উপমহাদেশব্যাপী তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠবে যেমন তা ঘটেই চলেছে ১৯৪৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত।

আমরা এই সংকটের বেদনাদায়ক ইতিহাস হয়তো অনেকেই ভুলে গিয়ে থাকতে পারি। তাই সংক্ষেপে অতীত চারণ এই নিবন্ধের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে মনে করছি।

১৯৪৭ সালে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয় দেশে ইসলাম ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার ঘোষিত লক্ষ্য নিয়ে। এ ব্যাপারে ইংরেজ, মুসলিম লীগ, কংগ্রেস একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হলো সেই অনুযায়ী ভারতের পশ্চিমের ৪ টি মুসলিম অধ্যুষিত প্রদেশ, সিন্ধু-পাঞ্জাব বেলুচিস্তান; উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ ও বাংলা মুসলিম অধ্যুষিত হিসেবে পাকিস্তানে পরিণত হয়। তবে সমগ্র অখণ্ড বাংলা পাকিস্তান হয় নি হলো পূর্ব বাংলা (অধুনা বাংলাদেশ)। পশ্চিম বাংলা ভারতের একটি প্রদেশে পরিণত হলো কোন যুক্তিতে তা দুর্বোধ্য কিন্তু তাই হলো। আবার দেখা যায় পশ্চিম বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার অধিকাংশ মানুষ মুসলিম হলেও জেলাটি ভারতের অংশভূক্ত তেমনই আবার তেমনই আবার খুলনা জেলার তৎকালীন বাসিন্দাদের সিংহভাগ হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত হলেও জেলাটি পড়লো পাকিস্তানের ভাগে। এগুলি মাজেজা খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ততোধিক আশ্চর্যের বিষয় ছিল কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ সহ পাঁচটি অঞ্চল রাজা-বাদশার সামনে থাকাবস্থায় দেশ বিভাগ কালে ঐ শাসনে থাকাবস্থায় দেশ বিভাগ কলে ঐ অঞ্চলগুলি শাসকেরা যে দেশে যেতে চাইবেন ভরত বা পাকিস্তানের তাঁরা সেই দেশে অধিভুক্ত হবেন। অর্থাৎ তখন নির্ধারিত হলো না কোন রাজ্য কোন দেশের অন্তর্ভুক্ত হবে। কাশ্মীর হয়ে গেল ব্যতিক্রম। অন্য অঞ্চলগুলির যেভাবেই হোক সমাধান হয়েছে কয়েক বছরের মধ্যেই। হয় নি কাশ্মীরের ভাগ্য নির্ধারণ। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে কেউ উঠতে পারেও নি। জোর জবরদস্তিও চলেছে।

কাশ্মীরের রাজা ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত। রাজা সিদ্ধান্ত নিলেন কাশ্মীর ভারতে অংশীভূত হবে কিন্তু অধিকাংশ মুসলিমরা বাধ সাধলেন। তাঁরা চাইলেন পাকিস্তানের সঙ্গে যেতে। পাকিস্তান তার ফলে দাবী করে বসলো কাশ্মীর পাকিস্তানের অবিচ্ছেদ্য অংশ (integral part)। লাগলো দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে মরণপণ যুদ্ধ। দুই যুধ্যমান দেশ। অবশেষে পাকিস্তান বেশ খানিকটা দখল করে নিল যাকে বলা হয় পাক-অধিকৃত কাশ্মীর। অপর অংশ থাকলো ভারতের সাথে। বিভক্ত হলো বিশ্বের অত্যন্ত আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র কাশ্মীর যার প্রাকৃতিক দৃশ্যও ছিল অবর্ণনীয় ভাবে আকর্ষণীয়। প্রতিবছর হাজারে কাশ্মীর নিয়ে রক্ত ঝরছে শুধুই কি কাশ্মীর? না তা সত্য নয় আদৌ। কাশ্মীর গেল, কাশ্মীর চাই বলে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশে অসংখ্যবার দাঙ্গা ঘটেছে তার শিকার হয়েছে হিন্দু-মুসলমান সবাই। হিন্দুদের দেশ ত্যাগী হতেও বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার নারী পুরুষ আসতেন এই পর্যটন রাজ্যে। বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উৎস ছিল রাজ্যটি। এ ছাড়া কাশ্মীরী উল বিশ্বের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়, মূল্যবান। ঐ উলের তৈরি শাল কিনতে আজও মানুষ এ পায়ে খাড়া।

সেই সুন্দর কাশ্মীর আজ বহু বছর মানুষের ভয়াল মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত। এ যাবত কত লক্ষ মানুষ যে প্রাণ হারালেন তার কোন হিসেব নেই। ভয়ে এমন কি ভারতের অপরাপর রাজ্যেও মানুষও পর্যটনের লক্ষ্যে, দেখতে, বেড়াতে, স্বাস্থ্য উদ্ধার করতে, অবসর কাটাতে কাশ্মীর ভ্রমণের কথা মনে ঠাঁইও পাননা “রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলু খাগড়ায় প্রাণ যায়”। এ মৃত্যুও আর শেষ নেই। সীমা পরিসীমা কিছু নেই।

দ্বন্দ্বটি একাধিকবার জাতিসংঘের আলোচনায় স্থান পেয়েছে। জাতি সংঘ বহু তর্ক বিতর্কের পর palliates বা গণভোটের পরামর্শ দিলেও ভারত তাতে সম্মত হয় নি। ফলে একাধিকবার কাশ্মীর বিরোধকে কেন্দ্র করে উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে।

বস্তুত: বিরোধটিকে কেন্দ্র করে মনস্তত্ত্বিকভাবে সমগ্র উপমহাদেশ জুড়ে ঘটেছে এক অনাকাঙ্ক্ষিত সাম্প্রদায়িক বিভাজন। হিন্দুরা সর্বত্র মোটামুটিভাবে কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলেই মনে করেন তেমনই আবার মুসলিম সম্প্রদায় সাধারণভাবে পাকিস্তানের কাশ্মীর ভুক্তিতেই সমাধান দেখতে চান। তবে এই ভাবনাটা আজ আর তাদের মধ্যে তেমন নেই। কারণ স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে পাকিস্তান একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে পাকিস্তানের সর্বাঙ্গে সন্ত্রাস ও সামরিক বাহিনীর নির্যাতন, প্রাণহানি, ধর্ষণ, অত্যাচার আর নির্যাতন। উন্নয়নের বার্তা, মানুষের মৌলিক অধিকার, গণতন্ত্র, জনগণের সার্বভৌমত্ব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে হনুজ দূর অস্ত। তাই যে নিরাপত্তা পাকিস্তানের চারটি মূল প্রদেশের মানুষেরই নেই সেখানে কাশ্মীর পুরোপুরি যুক্ত হলে তাঁদেরও নিরাপত্তা সংশয়াচ্ছন্ন থাকবে। আর এ জন্যে প্রয়োজন সাম্প্রদায়িক নয় গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক দায়িত্বশীল, মানববান্ধব চেতনার বিস্তার কিন্তু তারও বাস্তবে কোন সম্ভাবনা আজও পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

কাশ্মীরের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন আজকের বিরান ভীতিকর কাশ্মীর এক মুহূর্তেও আর নয়। কয়েটি প্রজন্ম এই দীর্ঘ ৭২ টি বছর ধরে, কি পাকিস্তান অধিকৃত অঞ্চলে কি ভারতের, অংশীভূত এলাকায় রাতের ঘুম হারাম করে আতংকে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে সম্পূর্ণ নিরপরাধ হওয়া সত্বেও। তাদের শিক্ষা জীবন, সামাজিক জীবন, আর উপার্জনের জন্য শান্তিপূর্ণ অনুকূল পরিবেশ সব কিছুই হারিয়ে তাদের এই অনিশ্চিত যাত্রার অবসান ত্বরান্বিত করতে মানবিক বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে। দ্রুতই এবং কালক্ষেপ না করে।

মোদির নির্বাচনী বিজয় শত শত প্রাণের বিনিময়ে তার দু:স্বপ্নে পরিণত হোক। ফিরে আসুক ভারতের বুকে অসাম্প্রদায়িক শক্তির সম্মিলিত উত্থান।

কাশ্মীর সমস্যার স্থায়ী সমাধান এগিয়ে আসুক তা যেন পলাতক না থাকে।

রণেশ মৈত্র, লেখক, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক; মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। ইমেইল : [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ