প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
রণেশ মৈত্র | ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
ভারত উত্তাল। ভারত অগ্নিগর্ভ। উগ্র হিন্দুত্ববাদী, ঘোর সাম্প্রদায়িক বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার সম্প্রতি এন.আর.সি ও সি এ বি নামক ভারতবাসীর মধ্যে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িকতার বিষ নতুন করে দেশময় ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে যে আইন জারি করেছে ভারতের সমগ্র জনগণ, একটি ক্ষুদ্রাংশ বাদে, সংগ্রাম মুখর হয়ে উঠেছেন, মিছিলে মিছিলে প্রতিবাদী জনতা, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে, রাজপথ প্রকম্পিত করে তুলেছেন, পুলিশের বন্দুকের নলের সামনে বীরের মত বুক উঁচিয়ে ধরছেন, পাখির মত মোদির পুরুষেরা গুলি করে মানুষ মারছেন, আন্দোলন তবুও অপ্রতিহত গতিতে এগিয়ে চলছেন এ এক অভাবনীয় অনুপ্রেরণার দৃশ্য।
মনে পড়ে পঞ্চাশের দৃশকে কলকাতায় এক পয়সা ট্রাম ভাড়া বৃদ্ধি করা মাত্র কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে বিপুল গণ-আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন কলকাতাবাসীরা। ডেকেছিলেন হরতালও। পুলিশের গুলিতে মারাও গেলেন একজন। আন্দোলন উঠে গেল তুঙ্গে অবশেষে কংগ্রেসি সরকার পিছু হঠতে বাধ্য হলেন প্রত্যাহৃত হলো ট্রামভাড়া এক পয়সা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত। তখন ঐ এক পয়সার মানে ছিল এক টাকার ৬৪ ভাগের একভাগ।
তারপরেও নানা ইস্যুতে ভারতে শ্রমিকেরা আন্দোলন করেছেন, আন্দোলনে নেমেছেন সে দেশের কৃষক সমাজ। কিন্তু আজকের ভারত জুড়ে মিছিল, গুলি, আত্মদান (এ যাবত প্রায় ২০ জন) প্রভৃতি লাগাতারভাবে ভারতের পূর্বে, পশ্চিমে, উত্তরে, দক্ষিণে স্বত:স্ফূর্তভাবে ছড়িয়ে পড়তে কদাপি দেখিনি। দেখছি নতুন শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক সমাপ্তির লগ্নে এসে। এই দুটি আন্দোলনের মধ্যে গুণগত পার্থক্য এবং পরিমাণগত পার্থক্য উভয়ই বর্তমান।
প্রথমটি ছিল পশ্চিম বাংলার প্রাদেশিক সরকারের সিদ্ধান্ত আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন কলকাতার ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিক সমভাবে। দাবিটিও ছিল অর্থনৈতিক যা সকল ধর্মবিশ্বাসী মানুষকেই আঘাত করেছিল। আর এবারের আন্দোলন, বিজেপি’র ভাষায়, ভারতের সর্বাধিক শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার, জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের মন্ত্রিসভা, পার্লামেন্ট বা লোকসভার জারি করা সাম্প্রদায়িক আইন। এই আইনের বেনিফিশিয়ারি, সংকীর্ণ অর্থে হলেও, হিন্দু সম্প্রদায়েরা মানুষেরা যারা ভারতবর্ষের মোট জনসংখ্যার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ। তার সাথে খৃষ্ট, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মাবলম্বীরাও বেনিফিশিয়ারি হবেন। বেনিফিশিয়ারি হবেন বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টান সমাজ অবশ্য যদি তাঁরা এন.আর.সি, সি এ বি নামক বর্বর, অসভ্য আইনের ফাঁদে পা দেন। অর্থাৎ ঐ আইনে বলা হয়েছে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ঐ তিনটি প্রতিবেশী দেশের মুসলমানদের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে যে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টানেরা ভারতে গিয়ে বসবাস করছেন তাঁদেরকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু মুসলমানদেরকে কোনক্রমেই ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।
গত ২২ ডিসেম্বরের সংবাদের শেষ পৃষ্ঠায় “নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে ভারতে এক সপ্তাহে নিহত ১৫” শিরোনামে প্রকাশিত খবরটির অংশ বিশেষ তুলে ধরছি: “নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে গত এক সপ্তাহে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নিহত হয়েছেন ১৬ জন এবং আহত হয়েছেন ৩২ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করছে সে দেশের গণমাধ্যম।
ভারতের সংবাদ মাধ্যম কলকাতা ২৪ এর খবরে বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে দেশের নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বিগ্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং। শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরানোর লক্ষ্যে শনিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের এক জরুরি বৈঠক ডেকেছেন তিনি।
এক সরকারি আধিকারিক বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সব মন্ত্রীদের নিয়ে এদিন বৈঠকে বসবেন নরেন্দ্র মোদি। দেশের শান্তি এবং সুরক্ষার বিষয়ে আলোচনা করা হবে এই বৈঠকে।
অপরদিক ২১ ডিসেম্বর সকাল থেকেই উত্তর প্রদেশের কামপুরে বিক্ষোভ শুরু হয়। জনগণকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়ে পুলিশ। শুক্রবার বিভিন্ন জেলায় জনতা পুলিশ সংঘর্ষ হয়। শনিবারও চলে বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভ এখনও চলছে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, পুলিশের গুলিতে মারা গেছে অনেক মানুষ। এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে পুলিশ-বিদ্রোহকারীদের সংঘর্ষ চলাকালীন পুলিশই গুলি চালিয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা ১৬ জন। অন্যদিকে উত্তর প্রদেশের পুলিশ প্রধান ওসি সিং বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, এ সময়ে আরও অন্তত: ৩২ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়া সংঘর্ষের সময় পাথর ছোঁড়া ও পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সংঘর্ষে অন্তত: ছয় জন পুলিশও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
শুক্রবার সকাল থেকে দিল্লির জামে মসজিদে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। কিন্তু উত্তর প্রদেশের মত উত্তপ্ত পরিস্থিতি না হলেও শনিবার সকালেও দিল্লিতে উত্তেজনা রয়েছে। এদিকে রাজ্যে বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর শুক্রবার রাত থেকেই বিজনৌর, মিরাট ফৈজাবাদ, কানপুর, সম্বাল, মোরাদাবাদ, আলীগড় এলাহাবাদ সহ রাজ্যে বিভিন্ন জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রাচীন একটি দৈনিকে গত ২২ ডিসেম্বররে “উত্তর প্রদেশে বিক্ষোভকারী পুলিশ সংঘর্ষ” শিরোনামে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে: ভারত জুড়ে ক্রমশ:ই প্রবল হচ্ছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভ। নতুন করে বিক্ষোভ দানা বাঁধে দিল্লির জানিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। উত্তর প্রদেশের রামপুর একজন বিক্ষোভকারী ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পরই এ অঞ্চলে মুঠো ফোন ইন্টারনেট এবং ব্রডব্যান্ড পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে চেন্নাইয়ে ট্রেন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করায় প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে গত রাত শুক্রবারেও উত্তর প্রদেশ ও দিল্লিতে বিক্ষোভ সংঘর্ষ হয়। উত্তর প্রদেশে নাগরিকত্ব বিষয়ে সংশোধিত আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গিয়ে এযাবৎ ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে পশ্চিম বঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের চার সদস্যের এক প্রতিনিধি দল লক্ষ্ণৌয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন দীনেশ ত্রিবেদী।
অপর দিকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা একে একে বিবৃতি দিয়ে জানাচ্ছেন, তাঁরা তাঁদের রাজ্যে সি এ এ বা এন আর সি কার্যকর করবেন না। ফলে বস্তুত: বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ক্রমশ:ই এক ঘরে হয়ে পড়ছেন। এমন পরিস্থিতি ভারতের রাজনীতিতে এবারই প্রথম ঘটলো অতীতে কদাপি ঘটে নি। বস্তুত: তিন চতুর্থাংশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা নানা দলের প্রতিনিধিত্ব করলেও নাগরিকত্ব ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে ভিন্ন মত প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। প্রতিদিনই নতুন করে কোন না কোন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন আর সি, সি এ বি প্রভৃতি তাঁর রাজ্যে কার্যকর করবেন না বলে অভিমত প্রকাশ করছেন। এঁদের মধ্যে বিজেপি দলীয় মুখ্যমন্ত্রীও আছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তো নিজেই প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কলকাতায়। তবে মুসলিম অধিবাসীর সাথে একত্রে অনেকেই একে ভণিতা বা বাড়াবাড়ি বলে মনে করছেন।
একটি নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যখন, দিন কয়েক আগে, নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করায় ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি জন নন্দিত প্রণব মুখার্জীর কন্যাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেছেন, সংখ্যা গরিষ্ঠতা থাকলেই যা খুশী তাই করা যায় না, করলে তাকে গণতন্ত্র বলা যায় না। সর্বভারতীয় বামফ্রন্ট ভারত জুড়ে এই সাম্প্রদায়িক নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। প্রতিদিনই ভারতের কোন না কোন রাজ্যে বামফ্রন্ট আয়োজিত প্রতিবাদ মিছিল প্রতিবাদ সমাবেশ প্রভৃতি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে পুলিশ সিপিএম এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জননেতা সীতারাম ইয়েচুরীকেও গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছে। কিন্তু আন্দোলন কমছে না দিন দিন তা আরও বেগবান হয়ে উঠেছে। সারা দেশে আন্দোলন করার অভিযোগে কয়েক হাজার আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এভাবে গ্রেপ্তার ১৪৪ ধারা জারি, টেলিফোন ও ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড পরিষেবা বন্ধের মাধ্যমে মোদি সরকার কোটি কোটি ভারতবাসীর নাগরিক অধিকারই হরণ করছে না-বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদি তাদেরকে গণতন্ত্রের মুখোশধারী হিসেবেও চিহ্নিত করছেন। তাঁদের প্রকৃত চেহারা কি গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতবাসীর কাছে তা যথার্থই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
স্বভাবতই ভারতের মুসলিম সমাজ ভয়ানকভাবে ক্ষুব্ধ। আন্দোলনে তাঁরাও ব্যাপকভাবে অংশ গ্রহণ করছেন। নানা অসাম্প্রদায়িক দলের সাথে হাত মিলিয়ে তাঁরা অগ্রসর হচ্ছেন। জেল-জুলুম লাঠি, টিয়ারগ্যাস কোন কিছুতেই তাঁরা দমছেন না। “স্বদেশে বিদেশি হতে” তাঁরা রাজী নন। নিজ মাতৃভূমি তাঁরা ছাড়বেন না। শেষ পর্যন্ত তাঁরা বিজেপি ও মোদি সরকারের এই বর্বর আইনের বিরুদ্ধে তাড়ালে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। রাজপনের আন্দোলন ছাড়াও ঐ আইনকে অবৈধ দাবি করে উচ্চাদালতের দ্বারস্থও তাঁরা হয়েছেন।
এখানে উল্লেখ্য ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক নীতি হিসেবে বর্ণিত রয়েছে। নতুন এই নাগরিকত্ব আইন তাই রাষ্ট্রীয় মৌলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক। এমন দাবি করে মুসলিম সংগঠনগুলি বামফ্রন্ট, অন্যান্য বেশ কিছু রাজনৈতিক দল ও উচ্চাদালতে ঐ আইনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। সবগুলি মামলাই বিচারাধীন রয়েছে এবং জানুয়ারি মাসে সেগুলির নিষ্পত্তি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনেরও অনেক উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারত সরকারের এই আইনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অভিমত প্রকাশ করেছেন। মার্কিন আইন প্রণেতারা এ আইনের প্রত্যাহার দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন। অপরদিকে সংবাদপত্রে গত ২২ ডিসেম্বর তারিখে প্রকাশিত অপর এক খবরে জানা গেল। খবরটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
সাড়ে তিন হাজার হিন্দু ও শিখকে নাগরিকত্ব দিল আফগানি কাগজপত্র ছাড়াই বসবাস করভেস্তান নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে জ্বলছে ভারত। এরই মধ্যে এক ঐতিহাসিক নজির স্থাপন করলো আফগানিস্তান। দেশটি পূরোদস্তুর একটি মুসলিম রাষ্ট্র। ভারত যখন সে দেশের সংখ্যালঘু মুসলিমদের নাগরিকত্ব না দেওয়ার আইন পাশ করলো তখন আফগান সরকার সাড়ে তিন হাজার হিন্দু ও শিখকে (উভয় সম্প্রদায়ই সে দেশে সংখ্যালঘু) নাগরিকত্ব দিল। আফগানিস্তানের যে নাগরিকরা ভারতে কোন কাগজপত্র ছাড়াই বসবাস করছেন তাদেরই নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে, জানিয়েছে বিবিসি।
আফগান দূতাবাসের মাধ্যমে এরই মধ্যে ঐ শরণার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ‘তাজকেরা’ খা বা আফগানিস্তানের জাতীয় পরিচয়পত্র। এক আফগান কর্মকর্তা বলেন, “আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির বিশেষ ঘোষণাপত্র অনুযায়ী এটা করা হয়েছে। তারা তো আফগানিস্তানেরই নাগরিক। বহুদিন ধরেই তারা ভারতে বসবাস করে আসছেন। তাদের এ নাগরিকত্বের প্রয়োজন ছিল, এতে তারা পাসপোর্ট তৈরির মত বিভিন্ন কাজ সহজেই করতে পারবেন।
ভারত সরকার এ থেকে কোন শিক্ষা নেবেন কি?
মোদি সরকার বা দেশ বিদেশে তাঁদের অন্ধ সমর্থক ও স্তাবকেরা যাই। বলুন খা কেন ভারতে বিজেপির বিদায় ঘণ্টা বাজার আওয়াজ বেজে উঠছে। ভারতের অন্যতম রাজ্য ঝাড়খণ্ডে বিধান সভা নির্বাচন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। ক্ষুদ্র হলেও এ নির্বাচনকে দেশি বিদেশি সাংবাদিকও পর্যবেক্ষকেরা গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁরা জানান, বুথ ফেরত জরিপে বিজেপির হাবভাবের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। একাধিক জরিপ প্রতিষ্ঠানের জরিপের ফলাফলে কিছুটা ভিন্নতা লক্ষিত হলেও সকলেই বিজেপি সরকার গঠনের উপযুক্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না এ প্রশ্নে একমত। সেখানে কংগ্রেস ও তার মিত্ররাই সম্ভবত: অধিক সংখ্যক আসন পেয়ে সরকার গঠনের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছেন। ভারতের রাজনীতির এই বিশেষ মুহূর্তে তার ক্ষুদ্র রাজ্য ঝাড়খণ্ড বিধান সভার নির্বাচন বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে।
ভারতবর্ষের মানুষ তাঁদের দেশে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খৃষ্টান নির্বিশেষে দেশের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র বজায় রাখার জন্য যে প্রবল গণ-আন্দোলন গড়ে তুলেছেন তার জন্যে তাঁদেরকে অভিবাদন জানায়।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য