প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
মোনাজ হক | ০৫ মে, ২০২০
আজ বিশ্ব নন্দিত অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক কার্ল মার্ক্স এর ২০৩ তম জন্মদিন। ১৮১৮ সালে এই সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির স্রষ্টা জার্মানির ট্রিরা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রমিক আন্দোলনের আর এক পুরোধা ফ্রেডরিক এঙ্গেলস এর সাথে যুক্ত হয়ে পুরো আন্দোলনের আদর্শিক নেতৃত্ব দিয়েছেন এই জার্মান দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ, ইতিহাসবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, রাজনৈতিক তাত্ত্বিক, সাংবাদিক এবং সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী। আজ তাঁর জীবনের ছোট্ট একটা এপিসোড তুলে ধরতে চাই।
১৮৩০ এর দশকে বার্লিন কীভাবে তরুণ কার্ল মার্ক্সকে আকৃষ্ট করেছিল সেটা নিয়েই এই লেখার অবতারণা। কার্ল মার্কস তাঁর যৌবনের পাঁচটি বছর বার্লিনে বসবাস করে ছিলেন (১৮৩৬ থেকে ১৮৪১)। এখানেই তিনি আইন পড়াশোনা বাদ দিয়ে দর্শনে ভর্তি হন, যে জন্যে তাঁর বাবা হাইনরিখ মার্কস খুব মনখারাপ করেন, কারণ কার্ল আইন পেশায় গেলে পরিবারের সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতেন এটাই সকলে ভেবেছিলেন, কিন্তু দর্শন শাস্ত্রে ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখেছেন তার বাবা। বার্লিনে এসে তিনি শ্রমিকদের দুর্দশার বিষয়টি জানতে পারেন।
বিজ্ঞাপন
ছেলেটি কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তর দেয়নি বাবার চিঠির। "আমি প্রত্যাশা করি", অবশেষে রাগান্বিত বাবা লিখেছেন যে তুমি "সাথে সাথে মাকে শান্ত করো"। হাইনরিখ মার্ক্স কেবল তখনই সবচেয়ে সেরাটি চেয়েছিলেন যেমন প্রতিটি বাবা চায়, যখন তিনি তার ছেলেকে বন-বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন - তাঁর নিজের উকিল হওয়া উচিত। আর ছেলেটা কী করে, সেখানে আইন পড়া বাদ দিয়ে বার্লিনে দর্শন পড়তে যায়?
পোস্টকোচে চড়ে পাঁচ দিন পরে - মার্কস ১৮৩৬ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি বার্লিনে পৌঁছেছিলেন। প্রায় পাঁচ বছর ধরে, ১৮৪১ সালের মে মাস পর্যন্ত তিনি এই শহরেই থাকেন, এখানে দর্শনের লেখাপড়া চলে এবং শেষ পর্যন্ত তাঁর ডক্টরাল থিসিস লিখেছেন, এবং বার্লিনে তিনি বেশ কয়েকবার, প্রায় প্রতিটি সেমিস্টারে নতুন ছাত্রাবাসে চলে আসেন, যা তখনকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচলিত ছিল। সব মিলিয়ে কার্ল মার্ক্সের ছাত্রাবাস ও বাসা মিলিয়ে সাতটি ঠিকানা পাওয়া যায় বার্লিনে, যদিও বাড়ির সংখ্যা সেসময় আজকের তুলনায় খুব কমই ছিলো, অবশ্য লোকজন ও কম ছিলো।
এভাবেই ১৮ বছর বয়সী কার্ল মার্কস তাঁর যাত্রা শুরু করেছিলেন বার্লিনে - এবং এটি কোনও আইনজীবী হিসেবে নয় বরং দর্শন ও অর্থনীতিবিদ হিসেবে। এরই মধ্যে তার শৈশবের বান্ধবী জেনি'র সাথে পরিচয়টা আরও গাড় হয় চিঠির যোগাযোগের মাধ্যমে।
জেনি তার জীবনের দুর্দান্ত প্রেম ছিল। জেনি ভন ওয়েস্টফালেন একজন সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে ছিলেন, তিনি পুরানো শহরে সালসওয়েডেলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ট্রিয়াতেই বেড়ে ওঠেন: তার বাবা একজন উদার অভিজাত ছিলেন, তাঁর মা মধ্যবিত্ত থেকে এসেছিলেন। জেনি শিক্ষিত, দার্শনিক পাঠ্য পড়তেন, ইংরেজি এবং গ্রীক শিখতেন। পরিবারটি ট্রিয়াতে সামাজিক জীবনে অংশ নিয়েছিল এবং সুন্দরী জেনি একসময় পরিবারের আদরেই ছিলেন। জেনির চেয়ে চার বছরের ছোট কার্লের সাথে শৈশবের পরিচয় থেকে ভালোবাসা এবং অবশেষে প্রণয়ে আবদ্ধ হলেন দুজনের ১৮৪৩ সালে।
তারা গোপনে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এটি ১৮৩৬ সালে এবং যদিও জেনির বাবা কার্লের সাথে সম্পর্কের বিরুদ্ধে ছিলেন, তাই তাঁর মৃত্যুর পরই দুজন বিয়ে করেছিলেন। কার্ল তার সুন্দরী স্ত্রীর জাঁকজমকপূর্ণ সোনালি চুল পছন্দ করতেন। এই দম্পতির সাতটি সন্তান ছিল; তিন কন্যা প্রাপ্তবয়স্কতায় পৌঁছেছিল বাঁকিরা কিশোর বয়সেই মারা যায়: জেনি, লরা এবং এলেনোর এই তিন কন্যাই কার্ল মার্ক্সের শেষদিকেও বেঁচে ছিলেন।
হেগেলের দর্শনের সমালোচনা (Kritik an Hegels Philosophie) ১৮৪৪ সালে জার্মান রাজনৈতিক দার্শনিক কার্ল মার্ক্সের লেখা একটি পাণ্ডুলিপি।
তাঁর জীবদ্দশায় অপ্রকাশিত, এটি একটি পাণ্ডুলিপি যেখানে মার্কস তাঁর দার্শনিক জর্জ উইলহেলম ফ্রেডরিখ হেগেলের ১৮২০ সালের 'এলিমেন্টস অফ দ্য ফিলোসফি অব রাইট' অনুচ্ছেদে ডক্টর থিসিস এর একাংশ লিখেছিলেন। দলিলটিতে হেগলের উপর মার্কসের অন্যতম প্রধান সমালোচনা হ'ল তাঁর বহু দ্বান্দ্বিক যুক্তি বিমূর্ততায় শুরু হয়।
এই কাজটিতে মার্কসের বিশেষ বিচ্ছিন্নতা তত্ত্বের সূত্র রয়েছে, যা লুডভিগ ফেয়ারবাখের কাজ দ্বারা অবহিত করা হয়েছিল। রচনার বর্ণনার সূচনায় ধর্মের কার্যকারিতা নিয়ে মার্কসের সর্বাধিক বিখ্যাত ভাষ্য সহ সুশীল সমাজ এবং রাজনৈতিক সমাজের মধ্যে সম্পর্কের বিশ্লেষণের চারদিকে বিকাশ ঘটে।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য