প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
মোনাজ হক | ১২ নভেম্বর, ২০১৬
ডোনাল্ড ট্রাম্প এর সাম্প্রদায়িক উস্কানি “আমেরিকা থেকে অভিবাসী মুক্ত করার অঙ্গীকার” অথবা “আমরা আমেরিকার দক্ষিণ সীমান্ত বরাবর এক বিশাল প্রাচীর নির্মাণ করবো” ঘোষণায় উস্কে দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন বটে, তবে ট্রাম্প নিজেও জানেন যে, এই সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছিল নিতান্তই ভোটে জয়লাভের জন্যে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাসপ্রথার বিরুদ্ধে ১৮৬১ এর আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পরে আর এই একবিংশ শতাব্দীতে বাস্তবে সেটি কার্যকর করা মোটেও সম্ভব না, তা ডোনাল্ড ট্রাম্পও ভালো করেই জানে।
ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে না পারলেও বাংলাদেশে তা শুরু হয়ে গেছে গত ৩ সপ্তাহ আগেই, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে শতাধিক হিন্দু পরিবারের বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ ও ১৫ টি মন্দিরে ভাংচুর এর মাধ্যমে, হিন্দুদেরকে বাংলাদেশ ছাড়ার পরিকল্পনা। বাঙালিরাই পারে সহিংসতার নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে।
আর গত সপ্তাহে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল গ্রামে আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা।
একবার চোখ বন্ধ করে ভেবে দেখুন ও ভয়াবহতা কল্পনা করুন তো - ২০ জানুয়ারিতে ট্রাম্প যখন ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়ে হোয়াইট হাউসে ঢুকবেন তার সাথে সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ২ লক্ষ বাঙালির বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে তাদেরকে সে দেশ থেকে উচ্ছেদের জন্যে ট্রাম্পের অনুসারীরা সন্ত্রাসের রাজত্ব চালাতে শুরু করলো। ভাবছেন তা সম্ভব নয়?
ঠিকই ভাবছেন আমেরিকায় যা সম্ভব নয় বাংলাদেশে তা সম্ভব হচ্ছে কেন? আমরা তো ৭% অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হারে উন্নতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ, কয়েক বছরের মধ্যেই আমেরিকার মতো দেশ হয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছি জনগণকে, তাহলে সেটাও কি ট্রাম্পের উস্কানির মতো শোনায় না?
তাই আমার ভাবনায় আজ যেটি আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে তাহলো - আমরা কি হিন্দু, সাঁওতাল, আদিবাসী, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদেরকে হত্যা করে ভয় দেখিয়ে জমি কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করে মৌলবাদী মুসলিম সমাজ তৈরির করার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি আর ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর দিকে অঙ্গুলি তুলে বলছি - তুমি খারাপ, তুমিই যত নষ্টের মূল, তুমি সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়িয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছ।
তার মানে কি দাঁড়ালো যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক কি নারী-বিদ্বেষী, অভিবাসন-বিদ্বেষী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হিলারির বিকল্প হিসেবে নিয়েছে?
আমার মনে হয়, হিলারির নয় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ট্রাম্পকে বেছে নিয়েছে মৌলবাদী আইসিস-এর বিকল্প হিসেবে।
একথাও স্পষ্ট যে ক্লিনটন-ওবামারাই মধ্যপ্রাচ্যে আইসিস-এর জন্ম দিয়েছে। আর আমরা কি - হিন্দু, সাঁওতাল, আদিবাসী, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদেরকে হত্যা করে ভয় দেখিয়ে জমি কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করে মৌলবাদী মুসলিম সমাজ তৈরির করার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি?
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য