আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

Advertise

ব্রেক্সিট টু ট্রাম্প, এটাই বাস্তবতা

জুয়েল রাজ  

মানবতা, গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতার স্বর্গ হিসাবেই খ্যাতি ছিল পশ্চিম বিশ্বের। হঠাৎ করেই সেই চিত্রটা পাল্টে যাচ্ছে, এবং খুব দ্রুত ঘটছে। আর সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি এসেছে আমেরিকা থেকে। প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ নেয়ার পরদিন থেকে সারাবিশ্বেই এর ঢেউ লেগেছে। ট্রাম্প যেন রাজনীতিতে এক সুনামি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন।

পাল্টে যাওয়া এই বিশ্ব রাজনীতি বিগত কয়েক বছর ধরেই একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়ে আসছিল। স্বীকার করি আর না করি, যার প্রধান প্রতিপক্ষ হিসাবে সামনে ছিল ইসলামী জঙ্গিবাদ। নয়-এগারোর পরে থেকেই এই প্রক্রিয়া চলে আসছিল। কিন্তু সেই প্রক্রিয়াটি ছিল ভিন্নমাত্রায়। এর পিছনে যুক্তি হিসাবে মধ্যপ্রাচ্যের তেলের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, আমেরিকা ব্রিটেনের অস্ত্রের ব্যবসা বহু হিসাব নিকাশ, যুক্তিতর্কের অবকাশ আছে, কিন্তু গিনিপিগ হয়েছে সারা বিশ্বের মুসলমানেরা।

ব্রিটেনের রাজনীতি বুঝা বড় দায়, উদার নীতির প্রথম ধাক্কাটা ব্রিটেনের ব্রেক্সিট দিয়েই শুরু। তারা নিজেদেরকে ইমিগ্রেশন নীতির দোহাই দিয়ে ইউরোপ থেকে বের করে নিয়ে এসেছে। লেবার পার্টি ব্রেক্সিটের বিরোধিতা করলেও আদালত পর্যন্ত গড়িয়ে পার্লামেন্টের সর্বোচ্চ ভোটে আর্টিকেল ফিফটি বাস্তবায়নের বিল অনুমোদন পেয়েছে। ভিসা নীতেতে আরো কঠোর হবে যা ইতোমধ্যে বুঝা গেছে।

গত সপ্তাহে অষ্ট্রিয়া তাঁদের দেশে বোরকা নেকাব নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর নেদারল্যান্ডসের ইসলাম বিদ্বেষী রাজনীতিক খ্রীট উইল্ডার্স তার উল্লাস চেপে রাখতে পারেননি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুকরণে তিনি টুইট করেছেন, "উই উইল মেক নেদারল্যান্ডস গ্রেট এগেইন"।

আগামী ১৫ই মার্চ নেদারল্যান্ডসে নির্বাচন। মিস্টার উইল্ডার্স বলছেন, তিনি নেদারল্যান্ডসকে তার দেশের জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে চান। জনমত জরিপে বলা হচ্ছে, নির্বাচনে তার ফ্রিডম পার্টি ২৭ টি আসন জিততে পারে। এর মানে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক রাটের উদারপন্থী দলের সঙ্গে তাদের হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে।

ফ্রান্সের রাজনীতি পাল্টে দিচ্ছে মারিন ল পেনের ন্যাশনাল ফ্রন্ট। মে মাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অনায়াসে দ্বিতীয় রাউন্ডে চলে যাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। গত ডিসেম্বরের নির্বাচনে তার ন্যাশনাল ফ্রন্ট ২৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে। যদিও কোন আঞ্চলিক সরকারের নিয়ন্ত্রণই তারা পায়নি। এর আগে ন্যাশনাল ফ্রন্টের বিজয় ঠেকাতে বামপন্থী আর ডানপন্থী দলগুলো একাট্টা হয়েছিল। এবারও তারা সেই কৌশল নিতে পারে। মারিন ল পেন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর টুইট করেছেন, এক নতুন বিশ্ব তৈরি হচ্ছে, বিশ্বে ক্ষমতার ভারসাম্য পাল্টে যাচ্ছে। ফ্রান্সে তার দল একই রকম বিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে। তাদের এই স্বপ্ন একেবারে অবাস্তব নয়। কারণ প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অল্যাঁদের সমর্থন এখন একেবারে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।

জার্মানিতে পার্লামেন্টারি নির্বাচন আগামী সেপ্টেম্বরে। সেখানেও উত্থান ঘটছে উগ্র জাতীয়তাবাদী দলগুলোর। দ্য ন্যাশনালিস্ট অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) এরকম একটি দল। আঞ্চলিক নির্বাচনে তারা ইতোমধ্যে এঙ্গেলা মেরকেলের দলের বিরুদ্ধে সাফল্য দেখিয়েছে। এঙ্গেলা মেরকেল যেভাবে অভিবাসী এবং রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য তার দেশের সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন, তা অনেকে পছন্দ করেনি। সেই ক্ষোভকে কাজে লাগাচ্ছে এই দল। তারা পার্লামেন্ট নির্বাচনে অন্তত দশ শতাংশ আসন জিতবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইসলাম বিরোধী এবং অভিবাসন বিরোধী কথা বলে তারা দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এর দায়ভার কোনভাবেই মুসলিম বিশ্ব এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। সম্প্রতি সময়ে ইউরোপ জুড়ে বড় বড় যে হত্যাকাণ্ডগুলো সংগঠিত হয়েছে তাতে ইসলামি বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

আজকে ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে যেভাবে লাখো লাখো মানুষ রাজপথে মিছিল সমাবেশ করে প্রতিবাদ করছে, আইএস কিংবা অন্যান্য ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠির হত্যাকাণ্ডের বিপরীতে মুসলিম বিশ্ব ততোটাই নীরব থেকেছে। ট্রাম্পের দেখাদেখি কুয়েতও ৫টি মুসলিম রাষ্ট্রকে তাদের দেশে নিষিদ্ধ করেছে।

প্রসঙ্গগুলো এই জন্যই আলোচনায় আসছে, কারণ উগ্রবাদ আসলে সবাই লালন করে, সেটা ধর্মীয় কিংবা জাতিগত। ইউরোপ আমেরিকা কিংবা ব্রিটেন জাতিগত উগ্রবাদকেই প্রাধান্য দিচ্ছে হয়তো। যেমন করে বাংলাদেশ গুরুত্ব দিচ্ছে ধর্মীয় আগ্রাসনকে । ব্রিটেনে বা ইউরোপে যিনি ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিসাবে দাবী আদায়ে সোচ্চার, সেই একই ব্যক্তি বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র হিসাবে দেখতে চান। আর্থিক সহায়তাও করে থাকেন। বাংলাদেশের পাঠ্যবইকে এককেন্দ্রিক ধর্মীয় পাঠ্যবইয়ে রূপদান, ধর্মীয় অনুভূতির নামে ভিন্ন ধর্মের মানুষের উপর দমন, নির্যাতন সব কিছুতেই নীরব থাকেন। আজকে সরব হয়েছেন ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু সময়টা ভুল। আগে নিজের ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন। আগে সেই আগুন নিভানো জরুরী। পরে অন্যের ঘরের সাহায্যে এগিয়ে যান।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের মসজিদ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। মসজিদ কর্তৃপক্ষ মসজিদটি পুনর্নির্মাণের জন্য সাহায্যের আবেদন করেছিলেন। তাদের সেই আহবানে সাড়া দিয়ে লক্ষিত বাজেটের চেয়ে ও বহূবেশী অর্থ সংগৃহীত হয়েছে। সেখানে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এমন একটি উদাহরণ কি বাংলাদেশে আছে?

ছোট দুইটি ব্যক্তিগত ঘটনা দিয়েই শেষ করছি, লন্ডনের আলতাব আলী পার্কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর বাঙালিদের আন্দোলন সংগ্রাম প্রতিবাদের কেন্দ্রস্থল এখন। কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবীতে যেমন গর্জে উঠে ঠিক তার বিপরীতে কাদের মোল্লা, কাসেম আলী, মুজাহিদের ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে অন্যপক্ষ এখানে এসেই মিছিল-সমাবেশ করে।

কয়েকমাস আগে একইদিনে প্রায় একই সময়ে আলতাব আলী পার্কে যুক্তরাজ্য যুব ইউনিয়ন, গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ঘরবাড়ি পুড়ানো ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এক মানববন্ধন করে। পাশেই অন্য একটি ইসলামী সংগঠন, মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। পাশাপাশি দুইটা সমাবেশ চলাকালে এক ভদ্রলোক যুব ইউনিয়নের সমাবেশে এসে দশ পাউন্ড দান করেন। কিন্তু কিছু সময় পরে তার ভুল ভাঙে। উনি ফিরে এসে তার দেয়া দশ পাউন্ড ফেরত চেয়ে নেন। দাতা ভদ্রলোকের বক্তব্য ছিল আমি বাসা থেকে নিয়ত করে এসেছি টাকাটা রোহিঙ্গাদের জন্য দান করব। ভুলে আপনাদের এখানে দিয়ে দিয়েছি। যুব ইউনিয়নের ভদ্রলোক পাউন্ডগুলো ফেরত দিয়ে দেন। পাউন্ড ফিরিয়ে নেয়াটা ভুল বা অপরাধ নয়। ভদ্রলোকের দান করার মানসিকতা অবশ্যই শ্রদ্ধার যোগ্য।

গত সপ্তাহে আমি নিজে একটা ট্রেনিং সেশনে অংশ নিয়েছিলাম ১৪ জনের দলে একমাত্র আমিই ছিলাম এশিয়ান। দ্বিতীয় দিনে ট্রেইনার একটু চিন্তায় পড়ে গেল একজন অংশগ্রহণকারীর অনুপস্থিতি নিয়ে, সে হাজিরা শিট দেখে বলল, খুব সম্ভবত একজন আসে নাই, সবাই জিজ্ঞাসা করল কে আসে নাই? আমরা তো সবাই আছি, পরক্ষণে সে আমার পুরো নাম বলল। আমি বললাম আমি তো আছি তোমার চোখের সামনে! ট্রেইনার বলল আমি তো তোমার নামের আগে মোহাম্মদ খুঁজছি!

ইউরোপ আমেরিকার মানুষ এভাবেই আমাদের চিন্তা করে। মুসলিম নারীদের উপর, বিশেষ করে বোরকা হিজাব পরিহিতদের, ব্রিটেনের বাসে ট্রেনে রাস্তায় হেনস্থা হওয়ার মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। যা দুই বছর আগেও এমন ছিল না। এর থেকে উত্তরণ খুব সহজ হবে বলে মনে হচ্ছে না।

ঘটনাগুলো উল্লেখ করার কারণ হচ্ছে, মানবতা আমরা মুখেই যতোই বলছি না কেন, সাম্প্রদায়িক মানবতার বাইরে কোন ভাবেই আমরা বের হতে পারিনি। ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে লাখো মার্কিন নাগরিক রাস্তায় মিছিল করেছে। ব্রিটেনের ইতিহাসের বৃহৎ প্রতিবাদ মিছিল করেছেন দেশটির সাধারণ মানুষ পিটিশন স্বাক্ষর করেছেন ১৪ লাখের ও বেশী মানুষ। পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী দেশের প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের বিপক্ষে, বিশ্বজুড়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছেই, তার নিজ দেশেই চলছে বিক্ষোভ। কিন্তু আমরা নিজেরা ঠিকই ঝুঁকছি একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থার দিকে। আর এটাই বাস্তবতা।

জুয়েল রাজ, সম্পাদক, ব্রিকলেন; যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি, দৈনিক কালেরকন্ঠ

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬২ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৫ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ