আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

Advertise

উপেক্ষিত সম্পদ দেশের তরুণ সমাজ

রণেশ মৈত্র  

অন্তত: দুটি বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে সম্প্রতি শিক্ষিত-অশিক্ষিত বেকার সম্পর্কে নানা গবেষণাধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করায় দেশের সচেতন মানুষেরা দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বোধ করছেন। কারণ বেকারত্ব যদি বেশি পরিমাণে থাকে এবং তা যদি ধীরে ধীরে না কমে উল্টো বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন আর উদ্বিগ্ন না হয়ে উপায় থাকে না।

মাত্র সেদিন “এত শিক্ষিত বেকার কেন” শিরোনামে একটি বহুল প্রচারিত দৈনিক লিড স্টোরি করেছে। তাতে বলা হয়েছে বর্তমানে বাংলাদেশে এম.এ পাশ ৩৪% যুবক-যুবতী বেকার। প্রতি বছর শ্রম বাজারে আসছে ২০ লাখ। চলতি বছরে বেকার ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণীর কাছে চাকরি হয়ে উঠেছে ‘সোনার হরিণ’। শিক্ষার এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিতের হার বাড়ছে, তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা- যা মারাত্মক উদ্বেগের বিষয়। পরিসংখ্যান বলছে শিক্ষিত বেকারদের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের বেকারের হার সবচেয়ে বেশি। স্নাতক ডিগ্রিধারীদের মধ্যে বেকার প্রায় ৩৭ শতাংশ। অপরদিকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের মধ্যে বেকার রয়েছেন ৩৪ শতাংশ।

এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেকারের হার যথাক্রমে ২৭ ও ২৮ শতাংশ। অর্থাৎ কম শিক্ষিতের চাইতে উচ্চ শিক্ষিতদের বেকারের হার বেশি। সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট রিসার্চের (বিআইডিএস) সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই চিত্র উঠে এসেছে। এস এস সি, এই এস সি, বিএ এবং এম এ পাশ প্রায় ৬ লাখের বেশি তরুণ-তরুণীর উপর জরীপ করে এসব উপাত্ত পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও বেকারত্ব তাদের ক্ষেত্রে বেশি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শীর্ষ শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রধানত: শিক্ষার নি¤œ মানই এ জন্য দায়ী। তাঁরা পত্রিকাটিকে বলেছেন, উচ্চ শিক্ষার মান তলানিতে পৌঁছেছে। মানহীনতার পাশাপাশি প্রশিক্ষণের অভাব, দক্ষ জনবলের ঘাটতি, বিশ^বিদ্যালয়গুলিতে চাহিদা অনুযায়ী উপযুক্ত শিক্ষা দিতে না পারা ও শিক্ষাক্ষেত্রে কম বিনিয়োগ প্রভৃতির ফলেই এমনটা ঘটছে।

অর্থনীতিবিদরা বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তথা জি ডি পি যে হারে বাড়ছে, সে অনুযায়ী দেশে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। শ্রম বাজারের তুলনায় চাকরির বাজার ছোট হওয়ায় সর্বোচ্চ ডিগ্রি ধারীরাও চাকরি পাচ্ছেন না। তাঁদের মতে, বিশে^র উন্নত দেশগুলিতে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বেকারত্ব কমাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। অপরদিকে বাংলাদেশের চিত্র অনেকটাই বিপরীত। এদেশে শিক্ষিতরা অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিতদের চাইতে অধিক হারে বেকার।

বিসিএস সূত্রে জানা যায় যে চাকরির বাজারে এখন এমন এক ভয়াবহ মন্দা চলছে যে, প্রতি বছর ২০ লাখের বেশি নতুন মুখ শ্রম বাজারে যুক্ত হচ্ছেন। কিন্তু তার অর্ধেকও কাজ পাচ্ছেন না। আবার যারা কাজ পাচ্ছেন তার হয় অর্ধ বেকার বা ছদ্ম বেকার কারণ। তারা নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী কাজ পাচ্ছেন না। ৪০ তম বিসিএস এ আবেদন জমা পড়েছে মোট ৪ লাখ ১২ হাজার। অথচ পদসংখ্যা প্রায় দুই হাজার মাত্র। অর্থাৎ প্রতিটি পদের জন্য ২০০ জনের বেশি প্রার্থী প্রতিযোগিতা করবেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো সর্বশেষ ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের জরীপ অনুযায়ী দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৮০ হাজার যা ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ছিল ২৬ লাখ। বিবিএস এর তথ্য অনুযায়ী দেশে কর্মরত মোট জনগোষ্ঠী (শ্রম শক্তি) ৫ কোটি ৮০ লাখ এর বড় অংশ অর্থাৎ ৫ কোটিই হকার, ফেরিওয়ালা গৃহ কর্মী, গাড়ি চালক সহ বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক খাতের।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মতে, যারা এক ঘণ্টাও মজুরির বিনিময়ে কোন কাজ পান না তাদের বেকার ধরা হয়। আইএলও প্রকাশিত “ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট এ- সোশ্যাল আউটলুক-২০১৮” শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে কম বেকার ছিল বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে ২০১০ সালে। তখন বেকার ছিল ২০ লাখ। ২০১২ ও ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২৪ লাখ ও ২৮ লাখে। আইএলও তার পূর্বাভাসে জানাচ্ছে, বাংলাদেশে যে হারে বেকার বাড়ছে, তাতে ২০১৯-২০ সালের শেষে তা প্রায় ৩০ লাখে গিয়ে ঠেকবে। তবে বাস্তবে বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বিস্ময়কর ব্যাপারটি হলো প্রবৃদ্ধি যদিও বাড়ছে, কর্মসংস্থান ততই কমছে। কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার যে হারে বাড়ছে, তাকে অনেকেই ‘বিস্ময়কর সাফল্য’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও উচ্চ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে। সরকার আশা করছে, নানা প্রতিকূলতার পরও প্রবৃদ্ধি এ বছরে ৮% ছাড়িয়ে যাবে। স্বাভাবিক নিয়মে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়লে কর্মসংস্থানও বাড়ে। কিন্তু বাংলাদেশে তার উল্টোচিত্র দেখা যাচ্ছে। প্রবৃদ্ধি যে হারে বাড়ছে, কর্মসংস্থান সে হারে বাড়ছে না। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১৩ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে। ঐ সময়ে গড়ে প্রতিবছর কর্মসংস্থান হয়েছে সাড়ে ছয় লাখ। অন্যদিকে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মাত্র তিন লাখ বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে যা আগের চেয়ে অর্ধেকে নেমে এসেছে। অর্থনীতিবিদরা বলেন, প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিনিয়োগ বাড়ছে না। আর বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থানও বাড়বে না।

বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে কর্মসংস্থানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন তেমন একটা হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন তেমন একটা চোখে পড়ছে না। চলতি অর্থ বছরের বাজেটে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে তিন কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ঘোষণা দেওয়া হয় যদিও কোন খাতে কতটি হবে। কিভাবে হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে বাজেট বক্তৃতায় কোন কিছুই বলা হয় নি। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে সরকারি খাতে প্রতি বছর মাত্র ৫ শতাংশ লোক চাকরি পান। বাকি ৯৫ শতাংশ চাকরির উৎসই হলো বেসরকারি খাত। এদিকে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি অনুপাতে বেসরকারি বিনিয়োগ কয়েক বছর ধরে ২৩ শতাংশে এসে স্থবির হয়ে আছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হলে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিকল্প নেই। যদিও দুঃখজনক হলেও সত্য, নানা প্রণোদনা দেওয়ার পরও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে না।

এদিকে তরুণ উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে এবারের বাজেটে স্টার্ট আপ নামে ১০০ কোটি টাকার পৃথক একটি তহবিল গঠন করা হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানাচ্ছে, চলতি অর্থ বছরের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এর কার্যক্রম এখনও সুরু হয় নি। যুব মন্ত্রণালয় সূত্র জানাচ্ছে, চলতি অর্থবছরের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এর কার্যক্রম এখনও সুরু হয় নি। যুব মন্ত্রণালয় সূত্র জানাচ্ছে, দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে সরকার দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে। এর আওতায় মোট যুবশক্তির ২৮ শতাংশকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্ম নির্ভরশীল করা হবে।

এ প্রসঙ্গে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেন বলেন, চাকরির বাজার সবার জন্য খোলা নেই। সুযোগও সীমিত। সরকার যেটা পারে, তা হলো চাকরির সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। এ লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ সহ নানা মুখী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষণের উপর। কারণ, সাধারণ শিক্ষায় লেখাপড়া শিখে চাকরি পাওয়ার সুযোগ কমে আসছে।

বর্তমান সময়ে সাধারণ শিক্ষার চেয়ে বিশেষায়িত ও কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বেশি। কিন্তু বাংলাদেশের বেশির ভাগ উচ্চ শিক্ষিতের সরকারি চাকুরি, বিশেষ করে বিসিএস ক্যাডারের প্রতি ঝোঁক বেশি। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিসিএস ক্যাডারে চাকরি পেলে কম সময়ে অর্থ বিত্তের মালিক হওয়া যায়। ক্ষমতাও প্রয়োগ করা যায় নানাভাবে। সরকারি চাকরিতে বর্তমানে বেতন-ভাতা সহ নানান সুযোগ-সুবিধাও বেশি। সেজন্যই তারা সরকারি চাকরির জন্য বেশি উৎসাহী।

শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক, টি আই বি’র নতুন ন্যায়পাল সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, এদেশের উচ্চ শিক্ষার মান তলানিতে পৌঁছেছে। ভাষা শিক্ষার মানও অত্যন্ত নি¤œ। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে এ খাতে বিনিয়োগ আরও বাড়াতে হবে। মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করতে হবে। এজন্য দশ বছর মেয়াদী মহাপরিকল্পনা নিতে হবে। মান বাড়াতে হলে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে প্রাথমিক শিক্ষায়। প্রতি বছর দুই থেকে তিন শতাংশ হারে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। না হলে কর্মহীনের সংখ্যা আরও বাড়বে।

গণ-স্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ দক্ষিণ এশিয়ার সর্বনিম্ন। এ খাতে বিনিয়োগ আরও বাড়াতে হবে। মানবসম্পদ উন্নয়নে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, দেশের শ্রম বাজারে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল থাকলে বেশি বেতন দিয়ে বিদেশ থেকে লোক আনতে হবে না।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আসিফ ইব্রাহিম বলেন, শিক্ষিত বেকারের হার দেশের জন্য খুবই উদ্বেগ জনক। এর অর্থ, চাকরির বাজারে যে ধরণের দক্ষতা ও যোগ্যতা দরকার, সে ধরণের শিক্ষা সবাই পাচ্ছে না। তাই বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উচ্চ শিক্ষার কারিকুলাম নির্ধারণ করতে হবে। তিনি আরও বলে, দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী কি ধরণের দক্ষ জনবল দরকার, তা নিশ্চিত করার জন্য বেসরকারি প্রতিনিধি ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।

অর্থনীতিবিদ জায়েদ বখত বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার কারিকুলাম বদলাতে হবে। বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষার সঙ্গে বাস্তবতার অসামঞ্জস্য রয়েছে। দেশের অনেক শিল্পোদ্যোক্তাই তাদের প্রতিষ্ঠানে শ্রীলংকা থেকে একাউন্ট্যান্ট নিয়ে এসেছেন। তার মানে এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যারা বের হচ্ছে, তাদের শিক্ষা মানসম্মত নয়। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। জায়েদ বখত আরও বলেন, সাধারণ শিক্ষার চেয়ে এখন বেশি নজর দিতে বিশেষায়িত শিক্ষায়ন কারিকুলাম বদলাতে হবে। আরও বেশি সংখ্যক স্পেশাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট গড়ে তুলতে হবে। বিষয় ভিত্তি শিক্ষা দিতে হবে। জিডিপি বাড়লেও কর্মসংস্থান কমছে কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, একেবারেই বাড়ছে না তা ঠিক না।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লা (সিপিডি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, শ্রম শক্তির তুলনায় চাকরির বাজার ছোট। গ্রাজুয়েট বের হচ্ছে কিন্তু মান নেই। প্রবৃদ্ধি হচ্ছে বিনিয়োগ বিহীন। ভোগ ও সরকারি খাতে বেশি ব্যয় হচ্ছে। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ স্থবির। এখাতে বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে না।

নানা বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের অভিমত দিয়ে লেখাটি সমৃদ্ধ করার পর আরও যা যা অনুভব করছি তা হলো-
এক. যে হারে বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে তাতে রাশ টানতে হবে কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধিই হলো বেকার তরুণ-তরুণীর, কি শিক্ষিত, কি অশিক্ষিত বেকার সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। তাই “এক দম্পতি-একসন্তান” নীতি সরকারিভাবে গ্রহণ করে তার কঠোর প্রয়োগ করতে হবে।

দুই. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে দক্ষ জনশক্তি বৃদ্ধির বিশেষ বিভাগ খুলে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির অতিরিক্ত দায়িত্ব দিতে হবে। এটা হবে বর্তমান টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটগুলি থেকে উন্নততর দক্ষতা তৈরি শিক্ষালয় যাতে দক্ষ জনসংখ্যা দ্রুত আরও বেশি পরিমাণে বাড়ে।

তিন. মাদ্রাসাগুলিতে বিজ্ঞান শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে;

চার. সকল স্তরের শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে এবং সে লক্ষ্যে প্রতি জেলায় উন্নতমানের শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট গড়ে তুলতে হবে;

পাঁচ. উন্নত ঐ শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটগুলিতে অধিকতর সংখ্যক প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকের আবাসিক ব্যবস্থাও গড়ে তুলতে হবে;

ছয়. বিনিয়োগ বান্ধব ব্যাংক ঋণ ও সুদ ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে হবে।

রণেশ মৈত্র, লেখক, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক; মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। ইমেইল : [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬২ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৫ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ