আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

Advertise

আমরা ছুটছি অজানা গন্তব্যে

রণেশ মৈত্র  

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস আক্রমণের তিনমান পেরুতে চলেছে। ২৬ মার্চ থেকে লকডাউন চলছে- আজও তা অব্যাহত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিদিনকার ব্রিফিং আগ্রহ সহকারে টেলিভিশনের পর্দায় দেখছি। দেখছি আর শিউরে উঠছে। আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করা হোক বা না হোক এ আতংক, এ উদ্বেগ সমগ্র জাতিকেই চিন্তিত করে তুলছে নিজ নিজ জীবন, পরিবারের সদস্যদের, প্রতিবেশীদের, নিজ নিজ এলাকা-তথা শহর, উপজেলা, জেলা এবং সামগ্রিকভাবে দেশবাসীর জীবন ও তার সম্পর্কে।

২৬ মার্চ থেকে লকডাউন ঘোষণার সাথে সাথে সড়ক পরিবহন নিষিদ্ধ হয়- আজও নিষিদ্ধই আছে। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয় দফায় দফায়। মানুষজন এক জেলা থেকে ভিন্ন জেলায় চলাচল করতে পারছে না। মানুষকে গৃহবন্দি থাকতে বলা হয়। বেশিরভাগ মানুষ তাবৎ একঘেয়েমি সত্বেও নিজ নিজ গৃহে অবস্থান করতে শুরু করেন। জরুরি কাজ না থাকলে দিবাভাগে কি রাতের বেলায়-কখনও কেউ বাইরে না যাওয়ার নির্দেশনা সরকার এবং সকল শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মহল থেকেই বার বার জানান হচ্ছিল।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু ঐ আবেদন বা নির্দেশনাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী কোন প্রণোদনা সৃষ্টি বা কোন প্রকার জনমত গঠনের জন্যে আদৌ কোন প্রকার সংগঠিত উদ্যোগ নেওয়া না হওয়াতে শহর এলাকায় প্রায় ৩০ ভাগ এবং গ্রামাঞ্চলে প্রায় ৪০ ভাগ মানুষ ঐ নির্দেশনাকে গুরুত্ব না দিয়ে দিব্যি দিনের পুরো সময়টাই রাতেও কিছুটা সময় বাইরে কাটিয়েছেন। শুধু তাই নয়, কোন প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানার- যেমন, মাস্ক ও পিপিই, হ্যান্ডগ্লাভস পরিধান করতেও তাঁদেরকে দেখা যায়নি। এই কথা শুধু গ্রামের নয়-শহরবাসীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

বস্তুত ঢাকায় পাওয়া গেলেও আজও বাংলাদেশের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামাঞ্চলগুলিতে এই অবশ্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সামগ্রীগুলি দুর্লভ। বলতে দ্বিধা নেই শহরাঞ্চলগুলো (জেলা পর্যায়ের) ছাড়া আজও বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কোথাও পিপিই’র নামই অন্তত শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ শুনেননি। আর বাদবাকি যারা শুনেছেন তারা পিপিই পাবেন কোথায়? গ্রামীণ এবং উপজেলা পর্যায়ের বাজারগুলিতে এখনও পিপিই পাওয়া যায় না কারণ তার খদ্দের নেই। পিপিই কাদের ব্যবহার করতে হবে, সর্বসাধারণের নাকি চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের কেই শুধু পরতে হবে-এ নিয়ে একটা সংশয়ও বহু লোকের মধ্যে বিরাজমান। কখনও কোথাও কাউকে কেউ বলেননি, বাইরে যেতে হলে মাস্ক, পিপিই এবং হ্যান্ডগ্লাভস পরে বেরোনো বাধ্যতামূলক- নইলে বিপদ ঘটতে পারে। এই পোশাকগুলি পরিধান করা অবশ্য প্রয়োজন এ কারণে যে সরকার নির্দেশিত শারীরিক (সামাজিক) দূরত্ব হাট বাজার করতে গেলে বজায় রাখা অসম্ভব।

কিন্তু বাধ্যতামূলক বলতেই কি সেগুলি সকালে পরতেন? ঐ তিনটি জিনিষ কিনতে তো কমপক্ষে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা প্রয়োজন। কি গ্রামে কি শহরে ঐ আর্থিক সামর্থ্য শতকরা কতভাগ মানুষের রয়েছে? নিঃসন্দেহে এ ব্যাপারে সক্ষম মানুষের সংখ্যা নিদারুণভাবে কম। তদুপরি মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লাভসের ব্যবহার হওয়া উচিত একবার। তাহলে তো প্রত্যেকের জন্যে কয়েক ডজন করে মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লাভস এবং অন্তত: দুই সেট করে পিপিই প্রত্যেকের জন্য প্রয়োজন। অবশ্য যারা বাইরে যাবেন তাঁদের জন্য। তদুপরি, বারংবার সাবান দিয়ে হাত হাত ধোয়া, পুরো বাড়ি তার সবগুলি রুমসহ জীবাণুমুক্তকরণের জন্যে ডেটল, স্যাভলন, স্যাপলিন, ব্লিচিং পাউডার প্রভৃতি প্রতিটি পরিবারের জন্য মাসে যে পরিমাণে প্রয়োজন তাতেও মাসে পরিবার প্রতি বাড়তি ব্যয় কমপক্ষে তিন চার হাজার টাকায় দাঁড়াবে। এগুলি তো সৌখিনতা নয় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এগুলি প্রতিটি পরিবারের জন্যই অপরিহার্য।

এগুলি প্রয়োজন, করোনা ভাইরাসের আক্রমণ বা সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য। আর প্রতিরোধ যে সর্বদাই প্রতিকার সংক্রমণের পর চিকিৎসার মাধ্যমে আরোগ্য লাভ বা রোগমুক্ত হওয়া অপেক্ষা শ্রেয়-সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রতিরোধের ব্যাপারে যে বেহাল অবস্থা তা উপরে বর্ণিত হলো তার সমাধান সূত্র কোথায়? অপরপক্ষে ভাইরাস সংক্রমণের পর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে যে চিত্র আমরা টেলিভিশন চ্যানেলগুলি মারফত হরহামেশা দেখেছি তা হলো:

এক. ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিদারুণ স্বল্পতা;

দুই. যারাও বা কর্মরত আছেন বা ছিলেন, প্রথমদিকে তাদের কাউকে পিপিই সরবরাহ করা হয়নি। ফলে অল্প দিনের মধ্যেই বেশ কিছু সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রমিত হলেন এবং বেশ কয়েকজন আক্রান্ত উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে মারাও গেলেন। তাদের রোগীরাও হয় মারা গেলেন, নয়তো চিকিৎসা বিভ্রাটের করুন শিকারে পরিণত হলেন। এক্ষেত্রে এই চিকিৎসক-নার্সদের অসহায় মৃত্যু এবং রোগীর অসহায়তা এড়ানোর কোন উদ্যোগই গ্রহণ করা হলো না।

অপরপক্ষে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত কি না তার পরীক্ষার ব্যবস্থাও নিদারুণভাবে সীমিত থাকলো প্রথম সংক্রমণের পর দুই মাস পর্যন্ত। ইদানীং স্যাম্পল পরীক্ষার ল্যাব তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে অতীতের চাইতে বেশিসংখ্যক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে এবং তার ফলেই দেখা যাচ্ছে সহস্রাধিক রোগী সনাক্ত হচ্ছেন এবং গড়ে প্রায় ১৫ জন করে মৃত্যুবরণ করছেন।

এরও পটভূমি বিচিত্র। অকস্মাৎ গত ১০ মে থেকে বাজার হাট, বিপণী মল খুলে দেওয়া হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে। কিন্তু অকস্মাৎ দেখা গেল-ঢাকা ও মফস্বল শহরগুলির রাজপথ অতীতের মতো জনাকীর্ণ এবং গাড়ির চাপে পথচারীদের চলা দুরূহ। বলা হয়েছিল সরকারিভাবে যে সীমিত আকারে সব কিছু চলবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত জানা মাত্র হাজারে হাজারে শ্রমজীবী বেকার নারীপুরুষ পায়ে হেঁটে বা নানাভাবে সকল বিপদ মাথায় নিয়ে ঢাকা শহরে ঢুকছেন। তারা মিল কারখানাগুলিতে কর্মরত ছিলেন অনেকেই। সঠিকভাবে জানি না তারা সকলেই তাদের চাকুরিতে যোগদান করতে পেরেছেন কি না। সে যাই হোক, প্রাসঙ্গিক বিষয়টি হলো ঐ “সীমিত” আকারে খুলে দেওয়ার পরিণতিতে ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশে যেভাবে রাজপথে জনসমাগম ঘটলো তার ফলে সামাজিক দূরত্ব বা শারীরিক দূরত্ব বিধানের আহ্বান যে Collapse করলো এবং তার ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা যেভাবে বাড়তে থাকলো তার জন্যে দায়ী করা হবে কাকে? স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবার বলে ফেললেন, সব কিছু খুলে দেওয়ার ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি উন্নত দেশগুলির চাইতে অনেক ভাল। অবাক কাণ্ড, তুলনা কি খারাপের সাথে হবে নাকি ভালোর সাথে?

মন্ত্রীমহোদয় কি বলবেন, কিউবা, ভিয়েতনাম, কেরালা, ভুটান প্রভৃতি দেশ ও রাজ্যের চাইতে আমরা ভাল আছি? এমনকি, জনসংখ্যা অনুপাতে চীন ও ভারতের চাইতে? কর্তাব্যক্তিদের সুবিধা হলো, বাংলাদেশে জবাবদিহির কোন বালাই নেই। থাকলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয় নিজেই ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়ে পদত্যাগ করতেন- নতুবা ব্যর্থতার দায়ে তাকে পদচ্যুত করা হতো।

বিজ্ঞাপন

করোনা পরিস্থিতি বাংলাদেশের মানুষকে উলঙ্গভাবে দেখিয়ে দিলো আমাদের গোটা স্বাস্থ্যব্যবস্থা কত অসুস্থ কতই না দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। করোনা ভাইরাস সংক্রমণে জর্জরিত বাংলাদেশ দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার সামগ্রিক পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। ১৭ কোটি মানুষের দেশে কয়টি হাসপাতাল, কয় হাজার বেড, কতজন ডাক্তার, কতজন নার্স ও স্বাস্থ্য নিয়োজিত রয়েছেন, জাতীয় বাজেটে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়, কত দুর্নীতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আক্রান্ত, ন্যূনতম গবেষণার ব্যবস্থা আছে কি না, হাসপাতালগুলিতে রোগীর ওষুধের জন্য বরাদ্দকৃত টাকার কত অংশ বাস্তবে রোগীদেরকে সরবরাহ করা হয়, হাসপাতালগুলি ও তার চতুঃপার্শ্ব নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করার ন্যূনতম ব্যবস্থাদি আছে কি না- তা বিশদভাবে উল্লেখ করে অবিলম্বে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা বিদ্যমান ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

প্রিয় পাঠক-পাঠিকারা হয়তো লক্ষ্য করে থাকবেন, চীনে নতুন করে একটি সিটিতে করোনার আবির্ভাব হওয়া মাত্র গোটা শহরকে লক ডাউন, সকল নাগরিকের গৃহে অবস্থান, অফিস আদালত-কলকারখানা-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানাদি বন্ধ ঘোষণা করে এক কোটি মানুষের স্যাম্পল পরীক্ষা করার কর্মসূচি নিয়েছে। ভিয়েতনামে অল্প কয়েকজন আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে কড়াকড়িভাবে সকল নিয়ম বিধি চালু করা হয়-যার ফলে ১০ কোটি মানুষের ঐ কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে একজনকেও মৃত্যুবরণ করতে হয়নি। কিউবার মত অপর একটি কমিউনিস্ট রাষ্ট্রও সম্পূর্ণরূপে করোনামুক্ত। শুধু তাই নয়, ঐ দেশ থেকে ইউরোপের করোনা জর্জরিত বহু দেশ (ইতালিসহ) কিউবা বহুসংখ্যক ডাক্তার, নার্স বড় বড় অনেকগুলি মেডিক্যাল টিম প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সরঞ্জামাদিসহ পাঠিয়েছে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য। পুঁজিবাদী বিশ্বের অপর কোন দেশ এই গৌরবের অধিকারী হতে পারেনি। ভারতের কমিউনিস্ট শাসিত রাষ্ট্র কেরালাতেও আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অতিশয় নগণ্য।

জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষায় দায়িত্ব পুঁজিবাদী বিশ্বের রাষ্ট্রগুলি গ্রহণ করেনি- করেছে চীন, কিউবা, ভিয়েতনাম, নেপাল, কেরালা প্রভৃতি রাষ্ট্র ও রাজ্য। দেশ বিদেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরগুলি তার সাক্ষ্য দেয়।
আমাদের ভাবা এবং স্বীকার করা উচিত যে আমাদের সিদ্ধান্তবলি ও কার্যাবলী দ্বারা করোনা নিয়ন্ত্রণে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছি। যেমন:

এক. চীনে করোনা প্রাদুর্ভাবের দু’মাস সময় পেলেও আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থাদি ঐ স ময়ের মধ্যে গ্রহণ করতে পারি নি। দেশ-বিদেশে বিমান চলাচল বহুদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকায় করোনাক্রান্ত দেশগুলি থেকে আসা লোকদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস বাংলাদেশের মানুষের দেহে প্রবেশের সুযোগ পেলো;

দুই. বিমানবন্দরে, যথেষ্ট সময় পাওয়া সত্বেও, করোনা টেস্টিং এর উপযুক্ত ব্যবস্থা বা করে বিমানবন্দর খোলা রেখে সর্বনাশ সাধিত হয়েছে;

তিন. ২৬ মার্চ সারা দেশ লক-ডাউন ঘোষণা করা কলেও তা যথাযথভাবে সর্বত্র কার্যকর করার ব্যবস্থা নেওয়াহয় নি; পুলিশ, সেনাসদস্যদেরকে পরবর্তীতে মাঠে নামলেও তাদেরকে নিয়মবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি- সম্ভবত তাদেরকে তেমন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। ফলে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখতেই এক শ্রেণির লোকেরা উৎসাহিত হয়েছে। এমনকি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন আলেমের জানাজায় লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত যারা ঘটালো তাদের বিরুদ্ধেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায়, স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনকারীরা ব্যাপকভাবে উৎসাহিত হন;

চার. স্বাস্থ্যবিধি পালন ও তার জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি (মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই প্রভৃতি) ও সাবান, হ্যান্ডওয়াস, স্যানিটাইজার, বাড়িঘর জীবাণুমুক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সকলের দোরগোড়ায় দুর্নীতিমুক্তভাবে পৌঁছানোর দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রের ব্যর্থতা;

পাঁচ. ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহে এবং অধিকতর সংখ্যক ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগে অত্যধিক বিলম্ব ঘটায় রোগীরা যেমন অযথা ভোগান্তির শিকার হয়েছেন তেমনি আবার তারা ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হয়ে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং অনেকে রোগাক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার অব্যবস্থাপনার শিকার হয়েছেন;

ছয়. এমনকি করোনা প্রতিরোধে নিয়োজিত শত শত পুলিশ ও সেনাসদস্য করোনার সংক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বেশ কিছুসংখ্যক মৃত্যুবরণও করেছেন।

এহেন পরিস্থিতিতে, সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশ যেন তীব্র বেগে ছুটছে কি অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবিষ্যতের দিকে- গোটা দেশ, এর পরিণতিতে, হয়ে পড়েছেন এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির অসহায় শিকারে। ২৩ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং নয় মাসের বীরত্বপূর্ণ সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে এমনটি ঘটতে দেওয়া যাবে না- এগুলির দ্বারা সংবিধান বর্ণিত মৌলিক অধিকার ও (স্বাস্থ্য সংক্রান্ত) হরণ করা হয়েছে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে আসন্ন জাতীয় বাজেটের ২৫ ভাগ অর্থ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দিয়ে উপযুক্ত সংখ্যক হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ ও নার্স ট্রেনিং স্কুল ও কলেজ নির্মাণ করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী তৈরি ও নিয়োগের ব্যবস্থা করা হোক; স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন ও দুর্নীতিবাজদের কঠোর শান্তি বিধান করা হোক। সকল নাগরিকের বিনামূল্যে সকল স্তরের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।

রণেশ মৈত্র, লেখক, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক; মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। ইমেইল : [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬২ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৫ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ