আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

বঙ্গবন্ধু ও পররাষ্ট্র নীতি

অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী  

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল বাংলাদেশকে স্বাধীন করেই ক্ষান্ত হননি, তিনি এদেশের কূটনৈতিক গঠনমালার ভিত্তিভূমিও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর অনুসৃত পথ ধরে ভূ-রাজনৈতিক কর্মকৌশলে কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়, বরং সবার সঙ্গে সমগুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে তিনি একজন প্রথম সারির বৈশ্বিক কূটনৈতিক জ্ঞানসম্পন্ন উঁচুদরের শীর্ষস্থানীয় নেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি এখন পর্যন্ত এদেশের জন্য সর্বাত্মক গুরুত্বপূর্ণ নীতি হিসেবে বিবেচিত হয়। মাঝখানে একুশ এবং পরবর্তী সাত বছর খালেদা-জামায়াত ও ফখরুদ্দীন সরকার বাদ দিলে স্বাধীনতা পরবর্তী একুশ বছর বঙ্গবন্ধু অনুসৃত কূটনৈতিক নীতিমালায় পরিচালিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত কূটনৈতিক ধারার মূল উপজীব্য ছিল সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। বঙ্গবন্ধুর যে কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও জ্ঞান এবং অনুসৃত নীতি তা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অনুসরণ করছেন। বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনার মৌল উৎসভূমি ছিল বাংলাদেশ এখন একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হয়ে গড়ে উঠবে এবং অগ্রগতির ক্ষেত্রে বৈশ্বিক পটভূমিতে তার সামগ্রিক কর্মকাণ্ডকে পরিচালিত করবে, যাতে অন্য কোন দেশের অযথা হস্তক্ষেপ বন্ধ থাকে। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের অগ্রগতি-উন্নয়ন-রাষ্ট্র পরিচালনায় অযথা অন্য কোন রাষ্ট্রের নাক গোলানো বন্ধ থাকবে।
মোড়লিপনা কোন দেশের তিনি কখনও সহ্য করতেন না। প্রতিটি রাষ্ট্রেরই কিছু অভ্যন্তরীণ বিষয় থাকে- থাকে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা। এই সমস্যা-সীমাবদ্ধতা যাতে দ্বিপক্ষীয় রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনরূপ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না করে, সে জন্য সতর্ক থেকেছেন এবং অন্য রাষ্ট্রও যাতে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিকভাবে কোন ধরনের অন্যায় অন্যায্য কর্মকাণ্ড করতে না পারে, সে জন্য সতর্ক থেকে বাংলাদেশের স্বকীয়তা, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারণেই বাংলাদেশের পক্ষে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ার পথ সুগম হয়েছিল। তিনি সব সময় বলতেন : বিশ্ব আজ দুটো শিবিরে বিভক্ত রয়েছে-একটি শিবির হচ্ছে নিপীড়িত ও অত্যাচারিতের এবং অন্য শিবিরটি হচ্ছে শোষকের। বঙ্গবন্ধু শোষকের শিবিরকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে সব সময়ে নিপীড়িত ও অত্যাচারিত শিবিরের পক্ষে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু প্রত্যক্ষভাবে ভারত, রাশিয়া, পূর্ব ইউরোপ, নিরপেক্ষ জোট, ওআইসির সঙ্গে সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছিলেন। পাশাপাশি কমনওয়েলথ রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নত করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর সৌহার্দ্যপূর্ণ নীতির কারণে সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, আলজিরিয়া এবং সিরিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়। ১৯৭৪ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ ওআইসি সম্মেলনে অংশ নেয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে সকল দেশের সঙ্গে সম্পর্ক সুন্দরভাবে বজায় রেখে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে চলার ক্ষেত্রে অবিরাম কাজ করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনের অস্তিত্ব প্রত্যাশা করতেন। বঙ্গবন্ধু আঞ্চলিক উন্নয়নে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সমতা ও ন্যায়সঙ্গত উন্নয়ন ভাবনায় সদা সতর্ক থাকতেন। দেশে সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদে বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতিতে জাতীয় সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার জন্য এবং বিশ্বব্যাপী সুসম্পর্কের লক্ষ্য অর্জনের জন্য জাতীয় সংবিধানের গৃহীত কৌশল এখনও বিদ্যমান ও বলবত রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার অত্যন্ত সুচারুরূপে চীন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক যুদ্ধ এবং চীন ও ভারতের বিভিন্নমুখী সম্পর্ক সুন্দরভাবে ভারসাম্যপূর্ণ উপায়ে বজায় রাখতে চেষ্টা করছেন। পূর্বতন সরকারগুলো যেখানে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত, তা এখন জিরো টলারেন্স নীতির কারণে শূন্য।

বিতাড়িত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন এবং মিয়ানমার যেভাবে বাংলাদেশকে বিভিন্নভাবে ফাঁদে ফেলে যুদ্ধের দামামা বাজানোর চেষ্টা করে-নানামুখী উস্কানি সত্ত্বেও নীরবে সহ্য করছেন দেশের বৃহত্তর মঙ্গলের জন্য। সৌদি আরব রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিতে অনুরোধ না করে বরং মিয়ানমারকে তাদের দেশের নাগরিক হিসেবে পাসপোর্ট দিতে বললে যথাযথ হতো। আসলে নিজের দেশের মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর যে সুগভীর ভালবাসা ছিল, তা ক্রমপ্রসারিত হয়েছিল বিশ্বের সকল দেশের মানুষের জন্য। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু ‘শান্তির জন্য জুলিও কুরি’ পদকে ভূষিত হয়েছিলেন-যা ছিল শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, ক্ষুধা থেকে মুক্তি, অশিক্ষা থেকে মুক্তি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ। বৈদেশিক নীতিমালা অনুসরণ করতে গিয়ে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের মর্যাদা বঙ্গবন্ধু অনন্য উচ্চতায় স্থাপন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতার কারণেই ১৯৭২ সালের ৮ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং সে সময়ে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক সাহায্য দিয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন স্বীকৃতি দিয়েছিল ২৫ জানুয়ারি ১৯৭২। বাংলাদেশ যখন জাতিসংঘে ১৯৭২ সালে সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল তখন প্রথমবার ভেটো দিয়েছিল চীন। চীন ১৯৭৫ সালের ৩১ আগস্ট বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ ভুটান এবং ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। পূর্ব জার্মানি স্বীকৃতি দিয়েছিল ১১ জানুয়ারি, ১৯৭২। পোল্যান্ড স্বীকৃতি দিয়েছিল ১২ জানুয়ারি, ১৯৭২। বুলগেরিয়া স্বীকৃতি দিয়েছিল ১২ জানুয়ারি ১৯৭২। তৎকালীন বর্মা স্বীকৃতি দিয়েছিল ১৩ জানুয়ারি ১৯৭২ এবং নেপাল দিয়েছিল ১৬ জানুয়ারি ১৯৭২।

বঙ্গবন্ধুর অনন্য কীর্তিসমূহের মধ্যে ছিল, জাতিসংঘে ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ ঐতিহাসিক ভাষণ। সাধারণ পরিষদে দেয়া তার এ ভাষণটি ছিল আমাদের মাতৃভাষা বাংলায় প্রদত্ত। বিশ্বের ৭ম বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর ভাষা বাংলা। তিনি তাঁর এ বক্তৃতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বাংলাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আরেকটি মাইলফলক স্থাপন করেছিলেন। এর আগে অবশ্য ১৯৭৪ সালের ১০ জুন নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের সদস্য পদের আবেদন গৃহীত হয়। এক্ষেত্রে চীন বিরোধিতা না করলেও ভোটদানে বিরত ছিল। বঙ্গবন্ধু তার অনবদ্য বক্তৃতায় বলেছিলেন, আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের পূর্ণতা চিহ্নিত করে বাঙালী জাতির জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। তিনি তার বক্তৃতায় যারা দেশ স্বাধীন করার কাজে সহযোগিতা করেছিলেন তাদের কথা স্বীকার করেছেন অকুণ্ঠ চিত্তে। এ কারণেই বলেছেন, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ বিশ্ব সমাজে স্থানলাভ করেছে এ সুযোগে আমিও তাদের অভিবাদন জানাই। তার এই কৃতজ্ঞতা আমাদের ত্রিশ লাখ শহীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনাদের প্রতি সুগভীর শ্রদ্ধার প্রকাশ। সেদিনের সে বক্তৃতায় তিনি এদেশের মানুষের অবস্থা পাকিস্তানীদের কারণে কি ভয়াবহ হয়েছে তা বলতে ভুলেননি। এ জন্যই তিনি বলেছিলেন, বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বিবেচনায় শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য যে সর্বনিম্ন সামগ্রীর প্রয়োজন তার চেয়েও কম ভোগ করছে যেসব মানুষ, তারা আজ অনাহারের মুখে পতিত হয়েছে।... শিল্পোন্নত দেশগুলোর রফতানি পণ্য, খাদ্যসামগ্রীর ক্রমবর্ধমান মূল্যের দরুন তা আজ ক্রমশ তাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বিষয়টি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং বাস্তবসম্মত ছিল। বঙ্গবন্ধু সাধারণ মানুষের কথা ভেবেছেন, শোষিতের পক্ষে সারাজীবন কাজ করে গেছেন। মানুষের যাতে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হয়, সে জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তিনি সেদিন জাতিসংঘের বক্তৃতায় যথার্থই প্রত্যাশা করেছিলেন, শুধু মানবিক সংহতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলা এবং পারস্পরিক স্বনির্ভরতার স্বীকৃতি এ পরিস্থিতির যুক্তিযুক্ত সমাধান আনতে পারে এবং এ মহাবিপর্যয় পরিহার করার জন্য জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক। তার এ উক্তি অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত, এ আহ্বান বাস্তবায়ন হলে মানুষের মধ্যে অমিত লোভ ও ভেদাভেদ থাকত না।
সমাজে ও রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলাকারীরা মনুষ্যত্ববোধে উজ্জীবিত হতো। তিনি সেদিনের সেই ঐতিহাসিক বক্তৃতায় ভারত মহাসাগরীয় এলাকা সম্পর্কে শান্তি এলাকার ধারণা-যা এ পরিষদ অনুমোদন করেছে, তাকে সমর্থন করেন। তার এ বক্তব্য আজও আরও বেশি করে তাৎপর্যমণ্ডিত। কোন রাষ্ট্রই যেন ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আধিপত্যবাদ সৃষ্টি করতে না পারে। তিনি তার স্বভাবসুলভ কণ্ঠে ঘোষণা করেন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং অন্যের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রতিবেশী সকল দেশের সঙ্গে সৎ প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক বজায় রাখবে। তার সে ঘোষণা আজও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে বহাল তবিয়তে বর্তমান সরকার ধরে রেখেছে। তিনি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুদ্ধবিধ্বস্ত করে রেখে যাওয়া অবস্থায় পাকিস্তানীদের হিংস্রতার কথা শোভন উপায়ে উল্লেখ করে জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সম্পর্কে উল্লেখ করেন। তিনি যথার্থই মন্তব্য করেছিলেন, মানুষের অজেয় শক্তির বিশ্বাস, মানুষের অসম্ভবকে জয় করার ক্ষমতা এবং অজেয়কে জয় করার শক্তির প্রতি অকুণ্ঠ বিশ্বাস তার রয়েছে। আসলে মানুষ ন্যায়-সত্যের পথে থাকলে সকল ধরনের অন্যায়-অবিচারের মোকাবেলা করতে পারে বলেই জাতির জনক বিশ্বাস করতেন। দেশ ও জাতিকে ভালবেসে সর্বাগ্রে স্থান দিয়েছেন। সেদিনের ভাষণে তিনি আরও বলেছিলেন যে, জনগণের দৃঢ়তাই চরম শক্তি। আমাদের লক্ষ্য স্বনির্ভরতা। আমাদের পথ হচ্ছে জনগণের ঐক্যবদ্ধ ও যৌথ প্রচেষ্টা। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সম্পদ ও প্রযুক্তিবিদ্যার শরিকানা মানুষের দুঃখ-দুর্দশা হ্রাস করবে এবং আমাদের কর্মকাণ্ডকেও সহজতর করবে। তার এ বক্তব্য অনেক অব্যক্ত কথা বলে দেয়।

আজ কারিগরি ও প্রকৌশলগত কারণে সমগ্র বিশ্বে ডিজিটালাইজেশন হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির এই বৈশ্বিক বিপ্লব থেকে আমাদের দেশও সুফল পাচ্ছে। ১৯৭৪ সালের সেই কালজয়ী বক্তৃতার স্ফুরণ আজ ২০২০ সালেও বিদ্যমান। সেদিন তিনি কবির মতো মানুষের মধ্যে অমিত তেজের কথা বলেছিলেন, স্বনির্ভরতার কথা বলেছিলেন, লাগসই প্রযুক্তির কথা বলেছিলে। তার অনুসৃত পথ ধরেই আজ দেশের অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য এগিয়ে যাচ্ছে। অশুভ শক্তি মাঝখানে এদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৫ এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দর্শন তার পিতার মতোই দেশকে এগিয়ে নেয়া, ক্ষুধামুক্ত রাখা ও আত্মনির্ভর করা এবং কূটনৈতিকভাবে বলবান করা। তিনি যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা- নিজেকে প্রমাণ করেছেন তার কর্মদক্ষতায়। বঙ্গবন্ধু সেদিনের সেই কালজয়ী ভাষণে বলেছিলেন, আমাদের নিজেদের শক্তির ওপর আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে। আর লক্ষ্য পূরণ এবং সুন্দর ভাবীকালের জন্য আমাদের নিজেদের গড়ে তোলার জন্য জনগণের ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমেই আমরা এগিয়ে যাব। আজ যখন মধ্য পঞ্চাশে পেছন ফিরে তাকাই, তখন দেখি বঙ্গবন্ধু কন্যা সকল কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের কথা বলেন। পররাষ্ট্র নীতিকে মানুষের কল্যাণের অভিধায় কাজে লাগাতে চান। তার পিতার মতোই তিনি তার কর্মের দেদীপ্যমানতায় উজ্জ্বল।

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার একটি উদাহরণ। বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে সম্পর্ক ও উন্নয়ন আরও অধিক হওয়া উচিত। মালয়েশিয়া, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমারের সঙ্গে বন্ধুত্ব জোরালো থাকা দরকার। ব্রেক্সিট পরবর্তী ইংল্যান্ডের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও উন্নত হওয়া বাঞ্ছনীয়। ভারত আমাদের আদি ও অকৃত্রিম বন্ধু দেশ। তবে চীন থেকে ঋণ নেয়ার পূর্বে কস্ট বেনিফিট এনালাইসিস করা উচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও এখন সম্পর্ক উন্নত। রাশিয়া, জার্মানি, ইতালি, সৌদি আরবসহ সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব সমতার ভিত্তিতে হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের কূটনীতির প্রধান স্থপতি। বর্তমান সরকারপ্রধান ১৯৯৬ সালের অক্টোবরে বাংলায় সাধারণ পরিষদে বক্তৃতা করেন। সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতা দেয়ার সময় শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন প্রাপ্তি এবং সবার জন্য প্রাপ্যতার ওপর জোর দিয়েছেন, যা সমগ্র বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।

অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী, ম্যাক্রো ও ফিন্যান্সিয়াল ই৪কোনমিস্ট; শিক্ষাসংক্রান্ত বিদেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত; আইটি ও উদ্যোক্তা বিশেষজ্ঞ; সাবেক উপাচার্য প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ।ইমেইল: [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ