প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল | ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
বিশ্বের কোনো দেশের সেনাবাহিনী নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার কারো নেই। এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।সকল নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে আল জাজিরা যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার কোনো সুযোগ নেই। আল জাজিরা মূলত স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে।
কোনো দেশের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে মিলিটারি-মিডিয়া সম্পর্কের মাঝে নির্দিষ্ট ব্যারিয়ার থাকে। সীমিত আকারে যে সম্পর্ক হয় সেখানে মিডিয়ার ভূমিকা হয় ইমেজ বিল্ডিংয়ের এবং জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লো ইনটেনসিটি কনফ্লিক্ট (LIC) এ সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে। মিডিয়া বিপরীত ভূমিকা পালন করে শুধুমাত্র শত্রু দেশের বিরুদ্ধে অর্থাৎ ফোর্স মাল্টিপ্লায়ার হিসেবে প্রতিপক্ষের মনোবল ধ্বংস করার জন্য।
বাংলাদেশ কি আল জাজিরার কাছে শত্রু দেশ? যারা আল জাজিরাকে সমর্থন করছে তারা কি আসলেই জানে তারা কি করছে?
সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা জড়িত। এ কারণে সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা তাদের নিজস্ব আইনে পরিচালিত। গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে আমি/আপনি ক্যান্টনমেন্টে ফুটবল খেলতে পারি না। তেমনিভাবে বাক স্বাধীনতা বা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নামে সেনাবাহিনী নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনও প্রকাশ করতে পারি না; তাদের বিরোধিতায় মাঠ গরম করতে পারি না। সচেতন নাগরিক হিসেবে আমরা শুধু তখনই প্রতিবাদ করতে পারি যদি সামরিক শাসন জারি করা হয়। এ প্রতিবাদের অধিকার শাশ্বত এবং এমন প্রতিবাদের ক্ষেত্রেও আমরা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করি না।
কোনো দেশের সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা জাতিসংঘের বিধানের পরিপন্থী। তাই মিডিয়া যখন শত্রু দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে তখনও নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে থেকে খবর প্রকাশ করে, কোনো সেনাসদস্যকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হয় না। ভারত-পাকিস্তানের চরম বৈরি সম্পর্কের সময়ও কারো চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয় না, স্ট্র্যাটেজিক বিরোধিতা করা হয়।
সেনাবাহিনী কি ক্রয় করেছে, কোন দেশ থেকে কি প্রযুক্তি গ্রহণ করছে, কোথায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, কোন খাতে কত খরচ করছে - এসব বিষয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার আমাদের বা মিডিয়ার নেই। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই সকল তথ্য পাবলিক করা হয় না। এছাড়া একজন সেনাপ্রধানের চরিত্রহনন বা তার পরিবার নিয়ে প্রশ্ন তোলা, কারো ব্যক্তিগত ভিডিও প্রচার করা ইত্যাদি কর্মকাণ্ড শিষ্টাচার বহির্ভূত, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পরিপন্থী এবং ফৌজদারি অপরাধ।
একজন সেনাপ্রধানের সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হচ্ছে নিয়মতান্ত্রিকভাবে মেয়াদ সম্পন্ন করা। কাউকে ক্ষমতায় বসানোর বা ক্ষমতা থেকে সরানোর দায় কোনো বাহিনীর নয়। সুশৃঙ্খলভাবে দায়িত্ব পালনের কারণেই বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ সক্ষমতা অর্জন করে সর্বাধুনিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। এটাই কি নব্য রাজাকারদের ক্ষোভের কারণ? সেনাপ্রধান তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন - এটাই কি রাজাকার শাবকদের দৃষ্টিতে অপরাধ।
বিএনপি জামায়াত দীর্ঘদিন যাবত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সেনাবাহিনীর প্রতি সহানুভূতির দাবি করে যদি সেনাপ্রধানের চরিত্রহননের অপচেষ্টা করা হয়, তখন তাকে আর যাই হোক দেশপ্রেম বলা যায় না। তাই আল জাজিরা ইস্যুতে বিএনপি জামায়াতের অবস্থান কি তা সামনে আনা উচিত। এছাড়া যারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে মূলত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করতে সকল দলকে সম্পৃক্ত করা উচিত। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির ঘৃণ্য তৎপরতা বন্ধে আল জাজিরা নিষিদ্ধ ঘোষণা সহ কার্যকর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য