আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

ধর্ষণ বিষয়ক কাল্পনিক আলাপ

ইমতিয়াজ মাহমুদ  

একটা কাল্পনিক ঘটনা কল্পনা করেন। মনে করেন কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে ঝিলম নদী হয়ে যেতে দুই ঘণ্টা লাগে এরকম একটা গ্রামে এক রাতে জঙ্গিবিরোধী একটি তল্লাশি চালাচ্ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি দল। তল্লাশির সময় এক হতদরিদ্র মুসলিম চাষি পরিবারের ১৮/১৯ বছরের একটি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হলো। সাথে থাকা ওর ছোট বোনটিকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে। কেউ কেউ অভিযোগ করছে যে ইন্ডিয়ান আর্মির একজন বা দুজন সদস্য এই মেয়েদের উপর অত্যাচার করেছে।

আপনি এই খবরটি জানলেন। আপনি কি এটার প্রতিবাদ করবেন? যদি করেন, তাইলে প্রতিবাদ করতে গিয়ে কি মেয়েটির ‘মুসলিম’ পরিচয়টি উল্লেখ করবেন? ঘটনা যেখানে ঘটেছে সেই জায়গাটার কথা মানে ‘কাশ্মীরের’ কথা উল্লেখ করবেন? অভিযোগটি যে ইন্ডিয়ান আর্মির সদস্যদের বিরুদ্ধে সেকথা কি আপনার প্রতিবাদে গুরুত্ব পাবে? নাকি কেবল বলবেন যে ভারতে ঘটে যাওয়া সকল ধর্ষণের ঘটনার মতো এটিও একটি কেবলই ধর্ষণের ঘটনা- বিচার চাই?

কল্পনায় ঘটনাটি আরেকটু বিস্তৃত করেন। ধর্ষণের ঘটনার পর দেখা গেল যে মিলিটারির লোকেরা মেয়েটিকে প্রায় মাসখানেক ধরে ঘিরে রেখেছে। পুলিশ কোন মামলা করছে না, শ্রীনগরের পুলিশ কেবল একটি সাধারণ ডাইরি করে সেই ডাইরিটি নিয়ে নানারকম কেরামতি দেখাচ্ছে। যে হাসপাতালে মেয়ে দুটি আছে, সেখানে ওরা কাউকে মেয়ে দুটির সাথে দেখা করতে দিচ্ছিল না। কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক মেয়ে দুটির সাথে থাকছিল পালা করে, ওদের দেখাশুনা করছিল, একদিন পুলিশ মিলিটারি মিলে সেইসব ভলান্টিয়ারকে হাঁকিয়ে দিয়ে মেয়ে  দুটিকে নিয়ে গিয়ে সরকারের অনুগত একজন বিজেপি নেতার বাসায় আটকে রাখল। সেই বাসায়ও মেয়ে দুটির সাথে কাউকে দেখা করতে দিচ্ছে না। পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। মানবাধিকার কর্মীরা গেলেও বলা হচ্ছে মেয়ে দুটির সাথে দেখা করতে চাইলে নাকি থানার ওসির অনুমতি নিতে হবে। এবার বলুন। আপনার প্রতিক্রিয়া কি হবে?

দেখেন ধর্ষণ কেউ কেবল যৌন পরিতৃপ্তির জন্যে করে না। ধর্ষণ হচ্ছে নারীর উপর পুরুষের ক্ষমতা প্রদর্শন। সেই অর্থে ধর্ষণ একটি রাজনৈতিক ব্যাপার- লৈঙ্গিক রাজনৈতিক অপরাধ। কিন্তু এটি কেবল শুধু নারী পুরুষের মধ্যে যে জেন্ডার সংঘাত তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। যুগে যুগে এই অপরাধটি যুদ্ধের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার হয়ে এসেছে। আর জাতিগত নিপীড়ন বা সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের ক্ষেত্রে তো ধর্ষণ একটি প্রধান হাতিয়ার।

এই যে ধর্ষণের সাথে জাতিগত বা সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের যোগ, সেটি আমাদের চেয়ে, মানে বাঙালিদের চেয়ে ভালো আর কে জানে। এইজন্যে যখনই ধর্ষণ বা নির্যাতনের শিকার নারীটি নৃতাত্ত্বিক বা জাতিগত পরিচয়ে বা ধর্মীয় পরিচয়ে সংখ্যালঘুদের একজন হয়, তখন মানুষের মনে সন্দেহ খোঁচা দেয়, এটি আবার জাতিগত নিপীড়নের অংশ নয় তো? আর যেখানে ধর্ষণটা হয়েছে সেই দেশে বা সেই অঞ্চলে যদি জাতিগত বা সাম্প্রদায়িক সংঘাতের কোন ইতিহাস থাকে, যেমন মনে করেন ভারতের কাশ্মীর বা পাকিস্তানের বেলুচিস্তান, তাইলে তো সন্দেহটা প্রবল হয়।

আর ধর্ষণকে যখন একটি পক্ষ জাতিগত নিপীড়নের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে তখন আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর মনে এই হাতিয়ারটির আঘাতের তীব্রতা যে কিরকম হয় সেটা আমাদের চেয়ে বেশী কে জানে? রুয়ান্ডার মানুষ বসনিয়ার মুসলমান এরা তো এইধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে এই সেদিন মাত্র। আমরা জানি এই আঘাত একটি জাতিকে সম্প্রদায়কে বা জাতিসত্তাকে কতোটুকু তীব্রভাবে দংশন করে।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের নারীরা এইরকম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আপনারা বলেন, এইসব ধর্ষণের অপরাধ কি এমনিতে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া একেকটা ধর্ষণের মতো সাধারণ কোন অপরাধ? না। এটা বলার জন্যে আপনাকে আইনে বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নাই বা গবেষক হওয়ার দরকার নাই। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার নারীদের ওপর হওয়া এইসব নির্যাতন সাধারণ কোন অপরাধ নয়। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী যুদ্ধকৌশলের অংশ হিসেবেই এই অত্যাচারগুলি করেছে। আমাদের নারীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কেবল নারী বলেই নয়, ওরা বাঙালি নারী বলেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এইটাকে তো আপনি সাধারণ আর দশটা ধর্ষণের সাথে মেলাতে পারবেন না। এইগুলি ছিল মানবতাবিরোধী অপরাধ ও ওয়ারক্রাইম।


সেসময়ে, মানে ১৯৭১ সনে যুদ্ধ সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ে যেসব আন্তর্জাতিক বিধিবিধান ছিল তাতে ধর্ষণ ব্যাপারটাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসাবে বিবেচনা করা হতো না। আপনার হয়তো জেনে থাকবেন যে ন্যুরেমবার্গ ট্রায়াল বা টোকিয়ো ট্রায়ালে নারী নির্যাতনের জন্যে কোন অভিযোগের বিচার হয়নি। কোরিয় নারীদের ওপর জাপানের যে অত্যাচার- সেটার জন্যে জাপানিদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগও আনা হয়নি বা তার বিচারও হয়নি। কিন্তু সময় পালটেছে। দুনিয়া জুড়ে মানুষের অধিকার সম্পর্কে, নারীদের অধিকার সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বেড়েছে, আইন কানুনেরও পরিবর্তন হয়েছে অনেক। এখন কোন যুদ্ধ বা সামরিক সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে মিলিটারিরা যদি বেসামরিক নারীদের উপর অত্যাচার করে সেটাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসাবেই বিবেচনা করা হয়। যুদ্ধাপরাধ নিয়ে যেসব ট্রাইব্যুনাল এখন কার্যকর আছে, সেগুলি খোঁজ খবর যদি নেন, তাইলে জানতে পারবেন।

ধর্ষণকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসাবে বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক একটি আদালতে প্রথম সাজাটা হয়েছিল সম্ভবত ২০০১ সনে। বসনিয়ার যুদ্ধে মুসলমান নারীদের ওপর ধর্ষণ ও ঐ ধরনের অন্যান্য অপরাধের জন্যে ইউরোপে গঠিত একটা আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে। ওটা ছিল ভূতপূর্ব যুগোস্লাভিয়ার জন্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গঠিত হয়েছিল ১৯৯৩ সনে। এখনো এটা কাজ করে যাচ্ছে। (স্মৃতি থেকে বলছি বলে সম্ভবত বলছি। বিস্তারিত মনে নাই, তবে ঐ বিচারটাতেই প্রথম স্বীকৃত হয়েছিল যে ধর্ষণও একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট এইধরনের অপরাধের বিচার করতে পারবে, অপরাধ যেখানেই হোক না কেন।) বসনিয়া আর রুয়ান্ডার এইসব রায়ের পর এখন মোটামুটিভাবে আন্তর্জাতিকভাবে সর্বত্রই প্রতিষ্ঠিত যে যুদ্ধ বা যুদ্ধ ধরনের সামরিক সংঘর্ষের সময় সামরিক বাহিনীর এইসব ধর্ষণ বা অন্যান্য নারী নির্যাতনকে যুগপৎ মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ দুই হিসাবেই বিবেচনা করা হবে।

আপনারা অনলাইনে খুঁজে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২০০৮ সনে পাশ হওয়া ১৮২০ নম্বর রেজুলিউশনটা দেখে নেবেন একটু মেহেরবানি করে। আর এই রেজুলিউশনের উপরে বিশেষজ্ঞদের কমেন্টারি যদি পড়ে নিতে পারেন তাইলে তো খুবই ভালো হয়। কি সিদ্ধান্ত পৌঁছেছে নিরাপত্তা পরিষদ এখানে? এখানে নিরাপত্তা পরিষদ বলছে ধর্ষণ ও অন্যান্য ধরনের যৌন সন্ত্রাস যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে, এবং এইটা গুরুত্বপূর্ণ, এই ধরনের অপরাধ গণহত্যারও একটি উপাদান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তাইলে কি বুঝতে পারছেন জাতিগত নির্যাতন বা সন্ত্রাসের অংশ হিসাবে ধর্ষণ বা যৌন হয়রানিকে আধুনিক দুনিয়ায় কিরকম ঘৃণ্য একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসাবে দেখা হচ্ছে?

সময় এগিয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর বেশীরভাগ মানুষ শান্তির পক্ষে। আমরা এখন আর সেই যুগে নেই যে একটি দেশ মিলিটারি অভিযান চালিয়ে চট করে আরেকটি দেশকে দখল করে ফেলবে। এখন পাশাপাশি দেশের মধ্যেও ফটাফট যুদ্ধ লেগে যায়না। সভ্যতা খানিকটা অগ্রসর হয়েছে। সাথে অগ্রসর হয়েছে মানুষের অধিকারের পরিধি, নারীর অধিকারের স্বীকৃতি এরকম নানা কিছু। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। পৃথিবীর এক কোণায় একটি ঘটনা ঘটলে মুহূর্তের মধ্যে সারা দুনিয়া জেনে যায়। কাশ্মীরের বিশাল পর্বতের আড়ালে ছোট্ট একটি গ্রামেও যদি একটু মেয়েকে কেউ অত্যাচার করে, আল্পসের গায়ে ছোট্ট আরেকটি গ্রামের আরেকটি মেয়েও হয়তো সেটি জেনে সেদিনই প্রতিবাদ করতে পারে। আর এরকম একটি ছোট্ট প্রতিবাদও সারা দুনিয়া তোলপাড় করে ফেলতে পারে।

একদল মিলিটারি একটি এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে বা তল্লাশি চালাচ্ছে সেই সময় একটি মেয়ে ধর্ষিত হচ্ছে, এটা আজ থেকে বিশ পঁচিশ বছর আগে যেরকম ভাবে দেখা হতো আজকে সেরকমভাবে দেখা হয় না। আজকে সকলেই প্রত্যাশা করে সারা দুনিয়া জুড়ে যে মিলিটারির লোকেরা বেসামরিক নাগরিকদের বিশেষ করে নারীদেরকে সম্মান করবে। আর বিশ বছর আগে হলে এইরকম ঘটনা অনেক সময় ধামাচাপাও দেওয়া যেত। এখন তো সেটিও সম্ভব না। এখন ঠিকই ন্যায়বিচার দাবি করবে সবাই।


এই কথাগুলি কেন বলছি? বলছি তার কারণ হচ্ছে কাশ্মীরের যে কাল্পনিক ঘটনার উদাহরণ দিলাম, সেরকম ঘটনা যদি আসলেই ঘটে তাইলে ইন্ডিয়ান আর্মিকে আমরা সকলেই সারা দুনিয়ার শান্তিকামী মানুষ চেপে ধরবো। এটা কি রে ভাই, তোমাদের অভিযানের সময়ে এইরকম ঘটনা কেন ঘটবে। টেররিস্ট খুঁজতে গেছো, ভালো কথা, টেররিস্ট ধর। সন্দেহভাজন লোকজনকেও গ্রেপ্তার কর, সে তো হতেই পারে। কিন্তু মেয়েদের উপর অত্যাচার কেন করবে? সেরকম যদি ঘটতো তাইলে আমরা ইন্ডিয়ান আর্মিকে ভয় দেখতাম- দেখ, এইসব অভিযোগ কিন্তু খুবই গুরুতর। এটি কেবল একজন পুরুষ কর্তৃক একটি নারী ধর্ষণের অভিযোগ নয়। অভিযোগের যা ধরন সেটা জাতিগত নিপীড়নের অভিযোগে রূপ নিতে পারে, মানবতাবিরোধী অপরাধ বলতে পারে কেউ কেউ। এটা তো কাঁধ ঝাঁকি দিয়ে, ‘ওয়েল, ঘটনাটা খারাপ হয়েছে কিন্তু এইরকম ঘটনা হতেই পারে, দুঃখিত’ এরকম কিছু বলে পার পাওয়ার ব্যাপার না। এটার জন্যে দুনিয়া জুড়ে ভারত রাষ্ট্র এবং ভারতের সেনাবাহিনী সকলেরই নিন্দা হতে পারে। পারে না?

অভিযোগটি সত্যি কিনা সেটি অবশ্যই প্রমাণের বিষয়। বিচার হলে, তদন্ত হলে তারপর আমরা সকলেই নিশ্চিত করে বলতে পারবো অভিযোগটি সত্যি কিনা। তদন্ত ও বিচারের আগে এটি একটি অভিযোগ মাত্র। কেবলই অভিযোগ বটে, কিন্তু গুরুতর অভিযোগ। কাশ্মীরের মতো পরিস্থিতিতে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে অভিযোগটা বা সন্দেহের তীরটা যখন থাকে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের দিকে, তখন নির্যাতনের শিকার নারীটির জাতিগত বা ধর্মীয় পরিচয় খুবই প্রাসঙ্গিক। কেবল প্রাসঙ্গিকই নয়, জরুরি একটি তথ্য। এই অভিযোগটি যদি সত্যি হয় তাইলে দুনিয়াব্যাপি যারা নারী বা আদিবাসী বা সংখ্যালঘু বা এইরকম অন্য যে কোন ভালনারেবল জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে কাজ করে ওরা ভারতকে কী বলবে? ভয়াবহতাটা অনুমান করতে পারেন? ভারতের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ এইরকম অভিযোগ উত্থাপনের সুযোগ পাক সেটা কি ভারতের নাগরিকরা চাইবেন? কেন চাইবেন? অবশ্যই চাইবেন না।

তাহলে ভারত রাষ্ট্র, তার পুলিশ মিলিটারি আদালত এদের করনীয় কী? ধর্ষণের শিকার মেয়ে দুটিকে গুম করে দেওয়া? না। সে তো আরেকটা বড় অপরাধ হয়ে গেল। গায়ের জোরে সবাইকে চুপ করিয়ে দেওয়া? সেটা কি সম্ভব? সেটা যে সম্ভব না সে তো সকলেই জানেন। আর এসব কাজ ভারত করবেই বা কেন? এইরকম কিছু করতে গেলে তো লোকে বলবে যে ঐসব অভিযোগ সত্যি। সত্যি না হলে ওরা ধামাচাপা দিতে চাইছে কেন? সুতরাং ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা কোন কার্যকর সমাধান না।

কার্যকর সমাধান কি? যথাযথভাবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সেটাই কি সবচেয়ে কার্যকর সমাধান নয়? প্রথমে ব্যাপারটা নিয়ে প্রকাশ্য তদন্ত করুন। বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত। আমরা তো সকলেই জানি তদন্তকারীদের বিশ্বাসযোগ্যতা কত গুরুত্বপূর্ণ। তদন্তে যদি দেখা যায় যে সেনাবাহিনীর কেউ এটাতে জড়িত ছিল না। তাইলে তো ল্যাঠা চুকে গেল। সাধারণ আর দশটা ধর্ষণ যেভাবে বিচার হয় সেইভাবে এইটিরও বিচার হবে। আর যদি দেখা যায় যে আসলেই সেনাবাহিনীর একজন বা দুইজন সদস্য জড়িত ছিল, তাইলে ওদেরকে কঠিন শাস্তি দেন। মিলিটারিদের নিজেদের কায়দায় দেন বা সাধারণ আমাদের যে সিভিল কোর্ট আছে সেইখানে দেন- আইনে যেটাই অনুমোদন করে সেটাই করেন। তাইলে তো ভারতীয়রা সারা দুনিয়ার কাছে বুক ঠুকে বলতে পারবে যে না, আমরা এই ধরনের অপরাধের প্রশ্রয় দিই না- এই যে দেখো সুষ্ঠু তদন্ত করে, বিচার করে অপরাধীর শাস্তি দিয়েছি। আর সেটা না করলে সকল ভারতীয় নাগরিকই নৈতিকভাবে সেই ধর্ষণের দায়টা বহন করবে।

আর এটা নিয়ে এতো প্যাঁচানোর দরকারটাই বা কি? ধর্ষণ একটা অতি ঘৃণ্য অপরাধ। এর বিচার করতে হবে। অপরাধী যেই হোক। এই সরল কথাটার মধ্যে নানাপ্রকার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের কি আছে? ধর্ষককে রক্ষা করতে হবে কেন? অপরাধের দায় কেন পুরো ভারতের সকল নাগরিক কাঁধে তুলে নিবে?


ঐ যে প্রথমেই প্রশ্ন করেছিলাম- আপনার প্রতিক্রিয়া কি হবে? সেটা কি ভেবেছেন? ভেবে রাখুন এমনিই। আমি তো কাল্পনিক ঘটনা নিয়ে কাল্পনিক গল্প কাহিনী বানাই! আমার কথার বেশী গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নাই। বিনোদন হিসেবে পড়েন। পরে ভুলে গেলেও হবে।

কিন্তু কাশ্মীরে বা বসনিয়ায় বা রুয়ান্ডায় বা প্যালেস্টাইনে বা মিন্দানাওয়ে বা অন্যত্র যে কোন জায়গায় যখন এইরকম ঘটনা ঘটবে, তখন তো প্রতিবাদ করবেন, নাকি? তখন প্রতিবাদের লাইনটা কিরকম হতে পারে!

ইমতিয়াজ মাহমুদ, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ইমেইল: [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ