আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

সংযম শিক্ষা যখন প্রশ্নবোধক

দেবজ্যোতি দেবু  

সুমন, ভার্সিটিতে পড়ে,হোস্টেলে থাকে। রোজ ছাত্র পড়িয়ে, কোচিং-এ কিছুটা সময় দিয়ে রুমে আসতে আসতে অনেক রাত হয়ে যায়। অনিয়ম করতে করতে পেটে আলসার বাঁধিয়ে বসে আছে। ডাক্তার বলেছে আর অনিয়ম করা চলবে না। সব সময় কিছু না কিছু খেতে হবে আর ঔষধ মিস করা যাবে না। সেদিনও রীতিমত আসতে দেরি করেছে।



সারাদিন এত চাপের মাঝে ছিল যে রুমে এসে হালকা খাবার খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ে। মাঝ রাতে রুমমেটরা অনেক ডাকাডাকি করেছে কিন্তু বেচারা উঠতে পারেনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে যথারীতি খাবার খোঁজা শুরু করেছে। সবাই বললো আজ থেকে রোজা শুরু। খাবার নাই। ঔষধতো খেতে হবে। কি করবে এখন সে? রোজার সময় পর্দা দেওয়া কিছু রেস্টুরেন্ট খোলা পাওয়া যায়। সেগুলাতে চেষ্টা করা যায়। বের হয়ে প্রায় আধঘন্টা হাঁটাহাঁটির পর একটি দোকান দেখলো। খাবার আছে কিন্তু সে খেতে পারছে না। দোকানের বাইরের কিছু লোক তার রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে আছে।

কাউকেই মূলত দোকানে যেতে দেয়া হচ্ছে না। নিজের অসুস্থতার কথা বলেও লাভ হয় নি। হাট্টাখাট্টা ছেলের আবার কিসের অসুখ! ওসব রোজা ভাঙার মতলব। খাওয়ার হলে ঘরে গিয়ে খাও এখানে না। সুমন বললো, খাবার কিনে নিয়ে যাই রাস্তা দেন। তাতেও ওরা রাজি না। যত সময় বাড়ছে লোকজন জড়ো হচ্ছে, সবাই সুমনের বিপক্ষে। একজন একটু মিউ মিউ টাইপ গলায় বলার চেষ্টা করেছিল অসুস্থদের জন্য রোজার বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু তাকে থামিয়ে দেয়া হয়েছে ধমক দিয়ে। ভেবেছিল অন্য কোন দোকানে গিয়ে খাবার কিনে আনবে। কিন্তু রোজা মাসে সকাল আটটায় কোন খাবারের দোকান খোলা হয় না। বেচারা কোন উপায় না দেখে খালি পেটেই ঔষধ খেয়ে ক্লাসে গেল।



=দুই=
রহমত আলী। গ্রামে থাকেন, বৃদ্ধ মানুষ। এসেছেন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কিছু পরীক্ষা করাতে। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অসহ্য হয়ে নিচে নেমে এসেছেন। পেটে হাতি দৌড়াচ্ছে। কিন্তু রোজার মাস কিছু খাওয়া যাবে না। উনার সাথে উনার মেয়ে এসেছে ঠিকই কিন্তু মেয়েকে পাঠিয়েতো কিছু আনানো যাবে না। মধ্যদুপুরে তাই নিজেই খাবার খোঁজা শুরু করলেন। কয়েকটা দোকানে ইফতারি বানানো হচ্ছে, কিন্তু খাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। একটা দোকানের ভিতরে কিছুটা বসার মত খালি জায়গা দেখে উনি এগিয়ে গেলেন। উনার পুরো শরীর কাঁপছে, দাঁড়ানোর মত যথেষ্ট শক্তি উনার মাঝে আর অবশিষ্ট নেই।



দোকানের ভিতরে গিয়ে বসতেই একজন অতি জ্ঞানী মানুষ এসে জিজ্ঞেস করলেন রোজার দিনে মুরুব্বী মানুষ খাবারের দোকানে কি করেন? রোজা রাখেন নি? উনি উত্তরে বললেন, ভাই আমি অসুস্থ, কিছু পরীক্ষা করানোর জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এসেছি। কিন্তু শরীর এতোই দুর্বল হয়েছে যে আমি দাঁড়াতে পারছি না। কিছু খেতে পারলে শরীরে একটু শক্তি পেতাম। উনি এতোই জ্ঞানী মানুষ ছিলেন যে বৃদ্ধ ক্ষুধার্ত রহমত আলীকে এতোটুকু করুণা করেন নি। বরং অনেক বড় বড় বাণী শুনিয়ে দিয়ে বললেন আপনার ধর্ম কি? যদি রমজানের পবিত্রতা রক্ষা আপনার ঈমানী দায়িত্বের মাঝে পড়ে তাহলে আপনি এখান থেকে বের হয়ে যান। ততোক্ষণে আরো কিছু বেকার পথচারীর আগমন হয়েছে। সবাই নির্বাক শ্রোতা হয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে। কিছু বললে যদি আবার ধর্মের জাত যায়!



একজন লোক একটু দয়া দেখিয়ে এগিয়ে এসে বললেন, চাচা আপনি খাবার নিয়ে ঐ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলে যান। এখানে খাবেন না। আমাদের সমস্যা হবে। বৃদ্ধ মানুষটা যে উঠে দাঁড়াতে পারছে না সেই দিকে কারো খেয়াল নেই। বৃদ্ধ রহমত আলী শেষ পর্যন্ত মেয়েকে ফোন করে ডেকে এনে মেয়ের সাহায্যেই কিছুটা খাবার নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ফিরে গেলেন।



=তিন=
সৈকত, পথকলী শিশু। বয়স আনুমানিক ৭-৮ বছর। সে নিজেও তার জন্মসাল জানে না। জন্মের পরে বাবা মা'কে দেখেনি। কোন এক বৃদ্ধ চাচা তাকে লালন পালন করতেন। বৃদ্ধ লোকটি পেশায় ভিক্ষুক ছিলেন। সৈকতকে সাথে নিয়েই ভিক্ষা করতে বের হতেন। তিনি গত হয়েছেন প্রায় ৭-৮ মাস হয়ে গেছে। তাই সৈকত এখন এতিম। এতোদিন রাস্তায় হেঁটে হেঁটে আবর্জনা কুড়াতো। সাথের কিছু বাচ্চা ছেলে তাকে বুদ্ধি দিয়েছে ভিক্ষা করার। তাই সে এখন আবার তার চাচার পেশায় নেমেছে।



শহরের ব্যস্ততম পয়েন্টে গাড়ি আর পথচারীদের পেছনে পেছনে দৌড়ায় আর ডলার,পাউন্ড ভিক্ষা চায়। কেউ টাকা দেয় কেউ দেয় না। একদিন এক লোক তাকে টাকা না দিয়ে লোকটির বাসায় কাজ করতে বললো। খাবার পাবে, কাপড় পাবে, স্কুলেও যেতে পারবে। বিনিময়ে বাসার টুকটাক কাজ করে দিবে। সৈকত রাজি হলো না। বললো ভিক্ষাই ভাল। ওরা সারাদিন যা ভিক্ষা পায় তা কোন এক সর্দার চাচার হাতে নিয়ে দেয়। সর্দার তাদের মাঝে টাকা ভাগ করে দেয়।



টাকা না দিলে সর্দার এখানে ভিক্ষা করতে দিবে না। লোকটি বললো ভিক্ষা করাতো ভাল না, খারাপ কাজ। সৈকত বললো "সর্দার চাচা বলেছে ভিক্ষা করা খারাপ কিছু না। কষ্টও নাই। হাত পাতলেই সবাই কিছু না কিছু দেয়। বিনা পুঁজির ব্যবসা। মানুষ পুণ্য কামানোর জন্য দান-খয়রাত করে। এখন রোজার মাস। এই মাসে লোকে বেশি বেশি দান খয়রাত করে পাপ ধোয়ে পুণ্য পাবার আশায়। আমরা যদি ভিক্ষা না করি তাহলে মানুষ পুণ্য পাবে কিভাবে ? তাই আমরা মানুষের পাপ নিয়ে পুণ্য পাবার সুযোগ করে দেই। এটা ভাল কাজ।"



=চার=
সালমান, রেললাইনের পাশে বস্তিতে থাকে। বয়স ১২ বছর। তার বাবা নায়ক সালমান শাহ'র ভক্ত ছিলেন। তাই ছেলের নামও সালমান রেখেছেন। চার বোন আর এক ভাইয়ের মাঝে সালমান বড়। মা দিন মজুরের কাজ করেন। সালমানের পিতা মারা গেছেন প্রায় এক বছর হয়েছে। মা সারাদিনে যা রোজগার করেন তাতে সংসার চলে না। রোজ কাজও পাওয়া যায় না। তাই সালমান একটা রেস্টুরেন্টে কাজ নেয়। কিন্তু রোজা মাস শুরু হয়ে যাওয়ায় রেস্টুরেন্ট বন্ধ। সালমান এখন বেকার। সংসারেও খাওয়া দাওয়ার খুব কষ্ট। গরিবের ঘরে বছরের প্রতি দিনই রোজা। সারাদিন এমনিতেই না খেয়ে থাকতে হয়। তাই এতে তার তেমন অসুবিধা হয় না। কিন্তু ছোট বোনরা যে দু'দিন ধরে না খেয়ে আছে। তাই কিছুটা খাবার পাওয়ার আশায় রাস্তায় ঘুরতে থাকে। অনেকেই তো ইফতার কিনতে বাজারে আসে। কেউ যদি কিছু দিয়ে যায় সেই আশায় হাঁটতে থাকে।



একটি নামি দামী রেস্টুরেন্টের ভিতরে দেখে অনেক লোকের ভীর। বুঝতে পারে কোন ইফতার পার্টি আছে। ওদের কাছে তো অনেক খাবার। যদি কিছু দেয় ওকে! একজনকে অনুরোধ করে কিছু খাবারের জন্য। সে বলে কোণায় গিয়ে বসে থাকতে। ইফতার শেষ হলে যা থাকবে তা নিয়ে যেতে। কিন্তু সালমান গরিব হলেও তার যে আত্মসম্মানবোধ খুব প্রখর। সে বলে ছোট বোনদের ইফতার করাবে। তাই ইফতারের পরে উচ্ছিষ্ট নিয়ে কি করবে? লোকটি চটে গিয়ে উলটো সালমানকেই আজে বাজে কথা শুনিয়ে দেয়।

সালমান সামনে এগুতে থাকে আর মনে মনে ভাবে, হাজার টাকা খরচ করে যাদের আছে তাদের জন্য পার্টি দেয়া যায়। কিন্তু গরিবের জন্য এক বেলা খাবার ব্যবস্থা করা যায় না। হয়তো কেউ শুনবে তার কথা। হয়তো কেউ তার প্রতি দয়া দেখাবে। সেই আশায় পথ চলে আর ক্ষুধার্ত বোনদের কথা ভেবে চোখ গড়িয়ে পানি পড়ে...



গত পনেরো দিনে নিজের চোখে দেখা বাস্তব চারটি ঘটনার কথা তুলে ধরলাম। আরো অনেক ঘটনাই আছে যা আমাদের চোখের আড়ালেই থেকে যায় অথবা দেখেও আমরা না দেখার ভান করে এড়িয়ে যাই। হাতে দেখানোর মতো প্রমাণ নেই তাই নিজের চোখের দেখাকে মুখের কথায় প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরলাম।

অফিস আদালতে কোন কাজের জন্য গেলে ঘুষ না দিলে কাজ হয় না এমন দৃশ্য এখন আমাদের নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষেত্রে দুর্নীতি কোন পর্যায়ে আছে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধুমাত্র এই মাসে কোন কাজের জন্য সেই সব দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষদের কাছে গেলে দিতে হয় বাড়তি ঘুষ।



রমযান মাস, খরচ বেশি। সামনে ঈদ, অনেক খরচ। এইসব ধান্দাবাজি কথা বলে বাড়তি টাকা চাইতে তাদের মোটেও দ্বিধা হয় না। আমরাও বিনা প্রশ্নে নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য তাদের হাতে ঘুষের টাকা তুলে দেই। এই মাসে কতো খরচ। টাকা একটু বাড়তিতো লাগবেই। মেনে নিয়েছি বাড়তি ঘুষের অজুহাতকে।



সীমিত বেতনের মানুষের এই মাসে নাভিশ্বাস চলে আসে বাড়তি খরচে। বাজারে জিনিসপত্রের দাম যায় বেড়ে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ইফতার পার্টির নামে খরচ করা হয় হাজার হাজার টাকা। এখন নতুন সংযোজন হয়েছে সেহরি পার্টি। সবকিছুতেই একটি বাড়তি বাড়তি ভাব। সবকিছুই হয় শুধুমাত্র এই একটি মাসকেই কেন্দ্র করে।



যতটুকু জানি কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ ইত্যাদিকে সংযত রাখাই হচ্ছে সংযমের মূল বিষয়। ক্ষতিকর এবং খারাপ রিপুগুলোকে সংযত রেখে উপাসনা করাই হচ্ছে এই মাসের লক্ষ্য। এজন্যই একে সংযমের মাস বলা হয়। কিন্তু আমরা কি আদৌ প্রকৃত সংযম রক্ষা করে চলছি?



কোন অসুস্থ মানুষের জন্য রোজা রাখা বাধ্যবাধকতার পর্যায়ে পড়ে না। কিন্তু উপরে উল্লেখিত দু'টি ঘটনা কি সেই ধর্মীয় শিক্ষার বাস্তবতা প্রমাণ করে? ধর্মের নামে দান-খয়রাত করে কি আমরা মানুষকে কোন ভাল জীবন ব্যবস্থা দিতে পারছি? নাকি কর্মক্ষম একটি জাতিকে পঙ্গু করে রাখছি? কাজ না করে বিনা পরিশ্রমে টাকা উপার্জন করার সুযোগ করে দিয়ে কি আমরা তাদের আরো পঙ্গু করে দিচ্ছি না? পার্টির নামে হাজারো টাকা খরচ না করে পাপ-পুণ্যের হিসাবের বাইরে গিয়ে আমরা কি কোন গরিব ক্ষুধার্ত পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য একবেলা খাবার তুলে দিতে পারি না?

বাড়তি খরচ করে কি আমরা আসলেই সংযমের উৎকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারছি? লোভ লালসাকে সংযত রাখার কথা ধর্মে বলা হলেও আমরা কি আদৌ এই মাসে আমাদের লোভকে সংবরণ করতে পারছি? ঘুষ দেওয়া এবং নেওয়া দু'টোই অন্যায় সেটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এই মাসকে কেন্দ্র করে বাড়টি টাকা ঘুষ নিয়ে কিংবা ঘুষ দিয়ে হাসি মুখে সেটা মেনে নিয়ে আমরা কি এই মাসের পবিত্রতা নষ্ট করছি না?



সারাদিন রোজা রেখে, নামাজ পড়ে ঈমানী দায়িত্ব পালন করি। কাউকে প্রকাশ্যে খাবার গ্রহণ করতে দেখলে নিজে রোজাদার হিসেবে তাকে খাবার গ্রহণে বাধা দেই। নিজের ঘরে কোন ছোট বাচ্চা বা বয়স্ক লোককে খেতে দেখলে আমাদের সমস্যা হয় না। কিন্তু বাইরের কারো বেলায় আমাদের সমস্যার শেষ থাকে না। অথচ ফিরে গিয়েই ঘুষ খাই, ঘুষ দেই, দুর্নীতি করি কিংবা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেই। ক্রোধ দেখাই, কোন জিনিসের প্রতি মোহাচ্ছন্ন হওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারি না। অযথা বাড়তি খরচ করে সংযমের নিয়ম ভঙ্গ করি। সবই হয়। তাহলে কি শুধুমাত্র ক্ষুধার্ত মানুষের মুখের খাবার ছিনিয়ে নেয়ার নামই পবিত্রতা রক্ষা?



কেউ কেউ হয়তো বলবেন কিছু দুষ্ট লোকের দায় সবার উপর না চাপাতে। ভাল কথা। আরো দু'একটা উদাহরণ দেই।

বছর দু'এক আগে সিলেটে ইসকন মন্দিরের তত্বাবধানে থাকা একটি রেস্টুরেন্ট মোল্লারা হামলা করে ভেঙে দেয়। কারণ জানতে চাইলে বলে রোজা মাসে খাবারের দোকান খোলা রাখা যাবে না। কেউ তার প্রতিবাদ করে না। তাহলে কি এই প্রতিবাদ না করাটাকে সকলের সম্মতি হিসেবে ধরে নেয়া যায় না?



কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম কয়েকজন খেলোয়াড়কে নিয়ে ইফতার করতে রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে সৌম্য সরকার ও লিটন দাসও তাদের সাথে ছিলেন। সেই মুহুর্তটি ছবি তুলে ফেইসবুকে নিজস্ব পেইজে আপলোড করেন মুশফিক। কিন্তু আপলোডের পরপরই তাতে বাজে বাজে কমেন্ট আসতে শুরু করে। "হিন্দুদের নিয়ে ইফতার করতে বসলে ইফতার হয় না" টাইপ কমেন্ট অনেকগুলোই এসেছিল সেই ছবিতে। কতোজন তার প্রতিবাদ করেছিল?



রাস্তায় মেয়েরা বোরখা ছাড়া বের হলে শুনতে হয় বাজে মন্তব্য। বোরখা ছাড়া বের হলে নাকি ছেলেদের রোজা হালকা হয়ে যায়। রিকশায় বসে কোন মেয়ে হাসাহাসি করলে নাকি রোজা হালকা হয়ে যায় মুমিনদের।



এমন অজস্র উদাহরণ আছে যা এই এক মাসে অতিরিক্ত মাত্রায় দেখা যায়। কেউ তার প্রতিবাদ করে না। অন্যায় হচ্ছে জেনেও যদি তার প্রতিবাদ না করি, সেটা প্রতিহত না করি তাহলে কি অন্যায়কারীকে প্রশ্রয় দেয়া হয় না? নিরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে দেখাটা কি অন্যায়কে সমর্থন দেয়ার পর্যায়ে পড়ে না?



সকল ধর্মের প্রতিই আমি শ্রদ্ধাশীল। কারো ধর্ম ছোট আর কারো বড় সেই হিসাবে আমি বিশ্বাসী নই। সবারই নিজের ধর্ম পালন করার অধিকার আছে। ধর্মে বিশ্বাসীদের ধর্ম পালনে বাধা দেয়া যেমন উচিত না, তেমনি যারা ক্ষুধার্ত তাদের খাওয়ার অধিকার কেড়ে নেয়াও অনুচিত। সৃষ্টিকর্তা কখনো বলেননি ক্ষুধার্তের মুখের খাবার ছিনিয়ে নিতে। বরং তিনি বলেছেন অন্যায়কে প্রশ্রয় দিও না, অন্যায় করো না। ক্ষুধার্তের মুখের খাবার কেড়ে নিয়ে পবিত্রতা জাহির করার চেয়ে মনে হয় অন্যায় এবং দূর্নীতিকে রুখে দিয়ে পবিত্রতা এবং সংযম রক্ষা করা অধিক পুণ্যের কাজ। তাই আসুন রমযানের পবিত্রতা রক্ষার জন্য ক্ষুধার্তকে নয় বরং দূর্নীতিবাজকে প্রতিহত করি, অন্যায়কারীকে অন্যায় করা থেকে বিরত রাখি।

দেবজ্যোতি দেবু, সংস্কৃতি কর্মি, অনলাইন এক্টিভিস্ট

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ