আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

Advertise

৩ নভেম্বরের করুণ অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা

রণেশ মৈত্র  

সালটা ১৯৭৫। বাঙালি জাতির এক এক করে হারানোর এবং শোকের বছর। ঘটে গেল ১৫ আগস্টের ভয়াবহ হত্যালীলা। আজ আমরা যারা গ্রামে গঞ্জে, শহরে-নগরে-বন্দরে ১৫ আগস্ট এলেই কালো ব্যাজ ধারণ, শোক মিছিল, কালপতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের রেকর্ড দিবারাত্র যত্র তত্র বাজিয়ে বহুক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ ভলিউমের দৌরাত্ম্যে মানুষের মনে বিরক্তি সৃষ্টি করতে পিছপা হই না-তাদের অনেকেই কিন্তু বেঁচে ছিলাম সেদিন।

সেদিনকার আমরা, বিশেষ করে আওয়ামীলীগ দলভুক্তি কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায় নি হাজারো চেষ্টা করেও। কোথায় তাঁরা ডুব মেরেছিলেন আজও তা প্রকাশিত হয় নি। ন্যাপ-সিপিবি চেষ্টা করছিল ঢাকায় তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাকশালের ব্যানারে আওয়ামী লীগ সহ। সে প্রচেষ্টাও তখনকার মত ব্যর্থ হয়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, মিলিটারি পরিবেষ্টিত থাকা সত্বেও, প্রতিবাদ মিছিল বের করেছিল বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। ঐ মিছিলের নেতৃত্ব দানকারী অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকজন আজও জীবিত আছেন।

এবারে বলি পাবনার কথা। ১৫ আগস্ট ভোর। আমি তখনও নিজ বাসায় নিদ্রাচ্ছন্ন। সহধর্মিণী পূরবী চুপিসারে ঘুম থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে এক পেয়ালা চা খেয়ে তাঁর চাকুরী ছিল শালগাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলে যায়। দেখেন জামায়াতপন্থি শিক্ষকেরা উৎফুল্ল। স্কুলে যাবার আগে পূরবী রেডিও না শুনায় ঘটনাটা ছিল তাঁর অজানা উৎফুল্ল জামায়াতী শিক্ষকরাও প্রকাশ্যে কিছু বলছে। না তবে নিজেরা নিজেরা ফিস ফিস করছেন। খানিক পরে স্কুলের মাঠে কয়েকটি জটলা তাদের কথাবার্তায় বিষয়টি জানতে পেরে বাসায় ছুটে আসেন।

এরআগেই প্রতিবেশী একজন (সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা) এডভোকেট এসে আমাকে গুম থেকে ডেকে তুলে জিজ্ঞেস করলেন, দাদা, রেডিও শুনেছেন? ভয়াবহ খবর বলছে বাবরা। তাড়াতাড়ি রেডিও খুলে (তখন টেলিভিশন আসে নি বাংলাদেশের বাজারে) মেজর ডালিমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য শুনে প্রথমে বিশ্বাস না করলেও শেষতক বিশ্বাস না করে পারা গেল না।

পূরবী ও সন্তানদের এক নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে ছুটলাম শহরের ডাক সাঁইতে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে। উদ্দেশ্য তাঁরা রাজী হলে এবং এগিয়ে এলে ন্যাপ-আওয়ামী লীগ যৌথভাবে প্রতিবাদ বা শোক মিছিল বের করবো। কিন্তু কাউকেই পাওয়া গেল না। জানা গেল, তাঁরা কেউ কেউ ডিসির বাংলোতে কেউ কেউ এস.ডি.ওর বাংলোতে আবার কেউ কেউ পুলিশ সুপার বা থানা অফিসে। একজন জানালেন, দাদা অপেক্ষা করুন বিকেলে বের করবো। কিন্তু তাও হলো না। ক্ষুদ্র শক্তির আন্তরিক প্রচেষ্টাটি ব্যর্থ হলো।

কিছুকাল পরে, অক্টোবর মাসে, একটি গোপন ডাক এলো। তাতে জানান হয়েছে ৬ নভেম্বর দেশ জোড়া বঙ্গবন্ধু হত্যায় প্রতিবাদ বাকশালের উদ্যোগে প্রতিবাদ মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিজ নিজ জেলায় এই কর্মসূচি সফল করতে প্রস্তুতি নিন।
ইতোমধ্যে দিন কয়েক আড়ালে আবডালে থেকে সপরিবারে পাবনা সদর থানার পার্শ্ববর্তী আমার তৎকালীন বাসায় ফিরে আসি। ওকালতিও শুরু করি হতাশ চিত্তে। আওয়ামী লীগ দলীয় নেতৃস্থানীয় আইনজীবীরা পর দিন থেকেই আদালতে যাতায়াত শুরু করেছিলেন তাঁরা যে স্বাভাবিকভাবেই জীবন চালাচ্ছেন সেটা প্রদর্শন করতেই সম্ভবত।

যা হোক, ঢাকায় খবর পাওয়ার পর ন্যাপ-সিপিবি নেতৃত্বের গোপন বৈঠকে যথাযথভাবে ৬ নভেম্বরের কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। ছাত্র ইউনিয়ন তখন পাবনাতে বেশ শক্তিশালী গোপনে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাদের ডেকে প্রস্তুতি এমনভাবে নিতে বলা হয় যাতে পুলিশ বা গোয়েন্দারা জানতে না পারে। ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা জানায় তারাও এমন নির্দেশের অপেক্ষায় ছিলেন এবং সাধ্যানুযায়ী ব্যাপক প্রস্তুতিও নেবেন।

হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় ৩/৪ জন ছাত্রলীগ নেতা আমার বাসায় এসে হাজির। ছাত্র ইউনিয়ন তখনও তাদেরকে কিছু জানায় নি। ছাত্রলীগের নেতারা বললো, কাকা, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ সম্পর্কে কি ভাবছেন? বললাম আওয়ামী লীগ যদি নামে তবে আমরাও নামব। তোমরা আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে যোগাযোগ কর। জনাবে তারা বললো আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে কথা বলবেন না যেন।

যাহোক এক পর্যায়ে ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হলো, গোপনীয়তা রক্ষা করে ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে আলাপ করে যাতে যৌথভাবে বৃহত্তম সমাবেশ ঐ দিন ঘটানো যায় তার উদ্যোগ গ্রহণ করা।

এভাবে সাফল্যের সাথেই ন্যাপ সিপিবি ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্রলীগের প্রস্তুতি চলতে চলতে এসে গেল ৫ নভেম্বর। সিদ্ধান্ত মোতাবেক, আমরা যাঁদেরকে বিশ্বস্ত মনে করতাম, তেমনই একজন আইনজীবী ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় অগ্রিম কোন খবর না দিয়ে আগামী দিনের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করতে গেলাম সন্ধ্যাবেলায়। যেতেই কিছুটা সংকুচিত হলেন বলে মনে হলো। গিয়েছিলাম দু’জন। সি.পি.বির কমরেড প্রসাদ রায় ও ন্যাপের পক্ষ থেকে এই নিবন্ধের লেখক রণেশ মৈত্র। প্রসঙ্গটা তুলতেই তিনি বললেন, দাঁড়ান, “অমুককে ডাকি।” তিনি এলেন এবং আলোচনা শুরু করতেই তাঁরা বলে উঠলেন, সর্বনাশ, “দেশে সামরিক আইন, সময়ও নেই আর আমরা তো ঢাকা থেকে কোন খবর পাই নি।” আমরা বললাম, ঢাকা থেকে আমাদেরকে জানান হয়েছে, আওয়ামী লীগকেও জানান হলো। সুতরাং নিশ্চয়ই খবর এসেছে। তা ছাড়া স্থানীয় ভাবে আমাদেরও তো দায়িত্ব আছে এমনিতেই প্রচণ্ড বিলম্বও হয়ে গেছে।

যাহোক, ঘণ্টা দুয়েক ধরে আলোচনা হলেও কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় প্রসাদ রায় বলে উঠলেন” আমাদের দায়িত্ব ছিল আওয়ামী লীগকে জানাবার জানালাম এবং আলাপও করলাম। এখন আমরা উঠবো। আল প্রোগ্রাম হবেই আপনারা স্থির করুন আপনারা যাবেন কি না। বলে আমরা উঠে পড়লাম। তাঁরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলে বলে উঠলেন, রাত্রিটুকু বাকি এর মধ্যে প্রস্তুতি নেওয়া যাবে কীভাবে? বললাম, “প্রস্তুতি সম্পন্ন। বিশাল সমাবেশ ও শোক মিছিল হবে এডওয়ার্ড কলেজ ময়দান থেকে বেলা ১০ টায় বের হবে। তবে কয়টা গোপন রাখবেন এবং আপনারা এলে পুষ্ট হব।

পরদিন সকালে এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে বিশাল সমাবেশ। কমপক্ষে হাজার খানেক ছাত্র ইউনিয়ন ছাত্রলীগ কর্মী ও শ-দেড়েক ন্যাপ-আওয়ামী লীগ-সিপিবির নেতা-কর্মীর জমায়েত। সাথে বিশাল কালোপতাকা। এসে উপস্থিত হলেন আওয়ামী লীগ কর্মী আমার সহপাঠী জ্যোতিরিন্দ্র নারায়ণ মজুমদার (গোদাবাবু-বাস মালিক) বঙ্গবন্ধুর বাঁধানো এক বিশাল বাঁধানো ছবি নিয়েয়। কেউ প্রধান গেট দিয়ে না ঢুকে অন্যান্য দিক থেকে এসে মাঠে সমবেত হয়েছেন কারণ প্রধান গেট ছিল ব্যাপক সংখ্যক পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।
প্রথমেই বঙ্গবন্ধুর গায়েবানা জানাজা অত:পর বের হবে শান্তিপূর্ণ এবং মৌন শোক মিছিল। ঘুরবে শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে হেড পেটি অফিস-অত:পর সেখান থেকে অনন্তবাজার সেখান থেকে ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর বাসভবন এবং ওখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর সমাপ্তি।

মিছিল বের হওয়ার চেষ্টা করতেই মেইন গেটে পুলিশ বাধা দিলো। পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে না বলতেই ছুটে এলেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি বললেন, “দাদা, আমরাও শোকাচ্ছন্ন কিন্তু কিছু তো করার নেই। আইন তো মানতে হবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এই মাত্র শহরে ১৪৮ ধারা জারি করেছেন। তাই আপনারা মাঠের ভেতরেই আলোচনা সভা করে শেষ করুন-তাতে আমরা বাধা দেব না।

বললাম, মিছিল যাবেই। সুশৃঙ্খলভাবে যাবে, নিশ্চিত থাকুন। তবে যেহেতু ১৪৪ ধারার কথা বলছেন, তাই ৪ জন, ৪ জন করে সারিবদ্ধভাবে আমরা মৌন মিছিল নিয়ে গোটা রুট পরিক্রমণ করবো। যদি আপনারা কোন বাধা না দেন তা হলে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও শোক মিছিল হবে। তবে আপনারা উসকানি দিলে কি হবে জানি না-সে দায়িত্ব পুরোটাই আপনাদের। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের আয়োজন আশা করি, সকলে বুঝে শুনেই পদক্ষেপ নেবে। যা হোক, মিছিল বের হলো দুই সারিতে। এক সারির সামনে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহক্ব আবু-তালেব খোন্দকার (তালু হাজি নামে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন) ও অপর সারির সামনে আমি। যে দুই নেতার সাথে আগের রাতে আলোচনা হয়েছিল তাঁরাও ছিলেন। একজন মিছিলের মধ্য খানে অপরজন মিছিল থেকে ২০০ গজ সামনে।

হঠাৎ ছুটে এলো জ্যোতিবিন্দ্র নারায়ণ মজুমদার (গদাবাবু) তার মাথায় বঙ্গবন্ধুর বিশাল ছবি। ঐ ছবি নামিয়ে ফেলার হুকুম দিলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। জবাবে জানানো হলে ঐ ছবি নামাতেগুলি করতে হবে তাতেও নামবে কি না জানা নেই। বিষয়টা আর এগোয় নি ম্যাজিস্ট্রেটের হস্তক্ষেপে।

কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার ছিলো মিছিলটিতে কোন স্লোগান না থাকলেও তার গন্তব্যের দেড় মাইল রাস্তার প্রতিটি মোড়ে থেকে স্বত:স্ফূর্তভাবে ২০/৫০ জন করে মানুষ যোগ দিলেন। নানা পাড়া মহল্লা থেকেও ছেলেরা এলো। ফলে, দেখতে দেখতেই মিছিলটির আকার দ্বিগুণেরও বেশিতে পরিণত হলো। মানুষ যেন এটাই চাইছিলেন পারে নি নেতৃত্বের উদ্যোগের অভাবে।

এভাবে বিকেল হয়ে গেল শেষ গন্তব্য ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর বাসভবনের মাঠে গিয়ে পৌঁছাতে। সেখানে পৌঁছানোর পর দ্রুতই পুলিশ চারিদিক ঘিরে ফেলে। শুরু হয় সমাবেশ। বক্তা একজন। তাঁর বক্তৃতা শুরু হতে না হতেই ঢাকা থেকে আসা এক ছেলে জানানো ক্যাপ্টেন মনসুরকে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে। তাজউদ্দীন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মনসুর সহ চার জাতীয় নেতাকে ৩ নভেম্বর গভীর রাতে কারা প্রকোষ্ঠে (ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে) নির্মমভাবে হত্যা করার কোন সংবাদপত্রে প্রকাশ করতে দেওয়া হয় নি রেডিও টেলিভিশনেও না। ফলে আমরা কেউই জানতাম না এই মর্মান্তিক হত্যালীলার খবর।

খবরটি সমাবেশস্থলে মুখে মুখে প্রচার হয়ে গেলে উত্তেজনায় থাকলে ফেটে পড়ে। এবারে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কিনা ভয়ানক দুশ্চিন্তায় পড়া গেল। কিন্তু উঠে দাঁড়িয়ে খুব কড়া ভাষায় ঘটনার নিন্দা করে বলা হলো-খবরটির সভ্যতা যাচাই করে সত্য হয়ে থাকলে অন্তত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে-একের পর এক হত্যালীলা কিছুতেই মনে নেওয়া হবে না। এখনকার মত সমাবেশ সমাপ্ত। ধীরে ধীরে সবাই ফিরে গেলেন।

সেদিন ৬ নভেম্বর। কিন্তু ৩ নভেম্বরের ঘটনা জানা যায় নি। এমনই নিষ্ঠুর সামরিক শাসনের আওতায় পড়তে হয়েছিল। তবে ঐদিন মনে এ ধারনাও দৃঢ় হয়েছিল যে দেশজোড়া বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে ১৫ বা ১৬ আগস্ট যদি কোন নেতা আহ্বান জানতেন তবে শক্তিশালী গণ প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব ছিলো। আর তা যদি করা যেত, জিয়া এরশাদ গণতন্ত্র হরণও সম্ভবত: এড়িয়ে যাওয়া যেত। আর তা যদি হতো চার জাতীয় নেতাকেও আমরা হারাতাম না এবং তাঁরাই পুনরায় হয়তো মন্ত্রিসভা গঠন করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিজেরদের কাঁধে তুলে নিতে পারতেন।

তা করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। কেন? মাত্র সাড়ে তিন বছর ক্ষমতায় থেকেই ক্ষমতার যে স্বাদ ও বিলাস বহুল জীবনের সন্ধান পেয়েছিলেন এক শ্রেণির নেতারা, তাঁরা নানাভাবে অর্জিত জীবনের সন্ধান পেয়েছিলেন এক শ্রেণির নেতারা, তাঁরা নানাভাবে অর্জিত সম্পদ ও জীবন আপর হারাতে রাজী ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু নিজেই তো আক্ষেপ করে বলেছিলেন, “আমি পেয়েছি চাটার দল”। বাস্তবে তা তখন যেমন সত্য প্রমাণিত হয়েছিল এত বছর পরে আজ আবার তা ততোধিক সত্য হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে। তাই দুর্নীতির সীমাহীন জোয়ার জাতির নজরে আসছে। আও প্রমাণিত, শক্তি কম হলেও বামপন্থীরা নিষ্ঠাশীল।

এবার ৩ নভেম্বরে তাই ভাবার প্রয়োজন-নেতাদের এবং শহীদদের স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা কিভাবে গড়ে তুলবো? সে সোনার বাংলার রূপই বা কি হবে? জবাবে নিশ্চয় আমরা সমস্বরে বলবো:

এক. বাহাত্তরের সংবিধান অবিকল পুন:স্থাপন করে ধর্মনিরপেক্ষ, বাঙালি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ, গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সর্বশক্তি নিয়োগ;

দুই. নারী অধিকার, সর্বক্ষেত্রে নারীর সম মর্যাদা, প্রতিষ্ঠা এবং নারী নির্যাতন কঠোর হস্তে দমন;

তিন. দেশকে কঠোরভাবে দুর্নীতিমুক্তকরণ;

চার. শিক্ষাকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত করে এক মুখী, বিজ্ঞান-ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন;

পাঁচ. দেশের সকল নাগরিক ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে যাতে সকল ক্ষেত্রে সমানাধিকার ভোগ করতে পারেন তা নিশ্চয়তা নিধান;

ছয়. বর্তমান ও বিগত দশকে সংঘটিত সকল সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিচার ও দায়ী অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতকরণ;

সাত. শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি জনগণের যৌক্তিক সকল দাবী পূরণ, বেকার সমস্যার সমাধান ও দেশে নতুন নতুন শিল্প কারখানা স্থাপন প্রভৃতি। ইতিহাস থেকে যদি এমন মিছিল নিয়ে কাজে লাগাতে পারি তবেই নেতাদের প্রতি যথার্থ সম্মান প্রয়োজন করা হবে নয়তো সবই হবে নিজস্ব আনুষ্ঠানিকতা।

রণেশ মৈত্র, লেখক, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক; মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। ইমেইল : [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬২ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ১৯ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৮৯ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৫ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ