আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

সেই ফাগুনের আগুনঝরা স্মৃতি

ইনাম আহমদ চৌধুরী  

একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২। সেদিন যাদের প্রত্যয়দীপ্ত কণ্ঠে মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি উঠেছিল, যাদের সর্বোচ্চ ত্যাগে সেদিনটি ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে উঠল, তারা বা অন্য কেউ ভাবতে পারেননি, আন্দোলনের যে শুভ-উন্মেষ সেদিন হলো, তা শুধু ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সাফল্য অর্জন করবে না- তার ফলশ্রুতিতে সৃষ্টি হবে মানব ইতিহাসের এক ব্যতিক্রমধর্মী রাষ্ট্র- ভাষার ওপর ভিত্তি করে যার অস্তিত্ব।

মনে পড়ে, আমরা তখন ম্যাট্রিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। সরকারি কার্যব্যাপদেশে বাবার উপর্যুপরি কর্মস্থলের পরিবর্তনের কল্যাণে দু'বছর দু'স্কুলে পড়তে হলো স্কুলজীবনের শেষ প্রান্তে এসে। ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ আর ময়মনসিংহ জিলা স্কুল। টেস্ট পরীক্ষা দিয়ে আবার চলে যেতে হলো বরিশাল। নতুন জায়গা বলে পরিচিতির সংখ্যা ছিল খুব সীমিত। গণযোগাযোগের মাধ্যমও তো এখনকার মতো এত ব্যাপক ছিল না। সেদিন সংক্ষিপ্ত খবর পেলাম, আন্দোলনকারী ছাত্রদের ওপর গুলি হয়েছে। পরের দিন পেলাম বিস্তারিত খবর। ছাত্রদের রক্তে রক্তাক্ত হয়েছে ঢাকার রাজপথ, দাবি আদায়ে দেশে এই-ই প্রথম আত্মাহুতি। দাবানলের মতো এ খবর ছড়িয়ে পড়ল সারাদেশে। পরীক্ষার সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি ছেড়ে বেরিয়ে এসে রাস্তার মোড়ে দাঁড়ালাম। জটলা, মাঝে মাঝে স্লোগান ছাত্রদের, পথচারী জনতার। স্তম্ভিত, বিক্ষুব্ধ, শোকাহত। ক্ষীণদেহী দু-একটি পত্রিকা হাতে হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ম্যাট্রিকের রেজাল্ট বেরুলো। ভর্তি হলাম ঢাকা কলেজে। কয়েক মাসের মধ্যেই কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ নির্বাচনে জেনারেল সেক্রেটারি নির্বাচিত হলাম। আর জড়িয়ে পড়লাম ছাত্ররাজনীতির কর্মকাণ্ডে। কয়েক মাস পরে ফেব্রুয়ারির সূচনা থেকেই শুরু হলো প্রথম শহীদ দিবস পালনের প্রস্তুতি। ছাত্র সংসদ থেকে আমরা গোপনে স্থির করলাম সিদ্দিক বাজারে কলেজের চত্বরে শহীদ মিনার তৈরি করা হবে, একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে। কিছুদিন পরেই করব বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যার মুখ্য উপজীব্য হবে ভাষা-সংগ্রাম।

তখন ইডেন কলেজের ছাত্রীরা ঘোড়ার গাড়ি চড়ে আসতেন ঢাকা কলেজে বিজ্ঞানের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করার জন্য। কলেজ কর্তৃপক্ষের সম্ভাব্য বাধা পরিহার করার জন্য স্থির করলাম মেয়েদের সহায়তা নিয়েই এই শহীদ মিনার তৈরি কাজ শুরু করা হবে। গোপনে ইট-সুরকি-সিমেন্ট সংগ্রহ করে রাখা ছিল। স্থানীয় কয়েকজন, বিশেষ করে সমাজপতি মতি সরদার সাহেবের আনুকূল্যে। সকালবেলা ছাত্রীরা আসতেই অনুরোধ জানালাম, তারা সোৎসাহে রাজি হলেন। ছাত্ররা ইট-সুরকি এগিয়ে দিলেন। আর মেয়েরা প্রতিস্থাপন শুরু করলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দারোয়ান বেয়ারারা বাধা দিতে এলো। কিন্তু মেয়েদের রুখবে কী করে? ঘণ্টা দুইয়ের ভেতরে বেশ সুন্দর একটি শহীদ মিনার দাঁড়িয়ে গেল। পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মিনারের আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করলাম। ঘটনার আকস্মিকতায় কলেজ কর্তৃপক্ষ কিছুটা বিমূঢ় হয়ে পড়ল। সম্ভবত সারাদেশে কোনো সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে এটাই ছিল প্রথম প্রতিষ্ঠিত শহীদ মিনার।

ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই প্রিন্সিপাল সাহেব নেতৃস্থানীয় আমাদের দু-তিনজনকে ডেকে পাঠালেন। ইতোমধ্যে ইডেন কলেজের প্রিন্সিপাল মহোদয়া এসে ছাত্রীদের নিয়ে গেছেন। আমাদের প্রিন্সিপাল ছিলেন দর্শনের অধ্যাপক শামসুজ্জামান চৌধুরী। সজ্জন, উদারমনা, কিন্তু ওই আমলের নিয়মতান্ত্রিক কঠোর শৃঙ্খলাপরায়ণ সরকারি কর্মকর্তা। তিনি একটি লিখিত নির্দেশনামা আমার হাতে তুলে দিয়ে বললেন- সরকারি কলেজ চত্বরে অননুমোদিত নির্মাণ করে তোমরা কলেজের শৃঙ্খলাবিরোধী বেআইনি কাজ করেছ। এই স্তম্ভ তোমরা নিজেরা সরিয়ে না নিলে সরকারি আইন প্রয়োগকারীরা এসে ভেঙে দেবে। আমরা বললাম, স্তম্ভটি শহীদ স্মৃতিস্মারক। আইনের সঙ্গে এর কোনো বিরোধ নেই। তা ছাড়া কলেজের কোনো কাজে এই স্তম্ভটি কোনো বিঘ্ন ঘটাচ্ছে না। সুতরাং এটাকে সরিয়ে নেওয়ার বা ভেঙে দেওয়ার কোনো প্রশ্ন নেই। পরে তিনি আমাকে একা ডেকে পাঠালেন। বললেন, 'দেখো, তুমি ভালো ছাত্র। তোমার চেষ্টা করা উচিত আইএতে ফার্স্ট হতে। এসব বেআইনি কাজে জড়িয়ে পড়লে পুলিস কেস হবে। কলেজ থেকেও তোমাদের কয়েকজনকে এক্সপেল বা রাসটিকেট করতে হবে। সরকারের বিরাগভাজন হলে ভবিষ্যতে চাকরিবাকরি বা স্কলারশিপ পেতে অসুবিধা হবে। তা ছাড়া, তোমার নিউ ইয়র্ক হেরাল্ড ট্রিবিউনের একটি ইয়ুথ প্রোগ্রামে যোগদানের প্রস্তাব বিবেচনাধীন আছে। ওসব আর হবে না। তুমি একটি গোপনীয় লিখিত বিবৃতি দাও এই মর্মে যে, এই নির্মাণের সঙ্গে কলেজ ছাত্র সংসদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি বললাম, 'এটা তো হতে পারে না। ছাত্র সংসদের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না হলেও আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এটা করেছি। আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুষ্পস্তবক দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা করেছি। এটার দায়দায়িত্ব আমরা অস্বীকার করি কী করে? এটা ভেঙে দিলে নিশ্চয়ই আমাদের ঘোরতর আপত্তি থাকবে।' প্রিন্সিপাল সাহেব বললেন, 'তা হলে তো তোমাদের বাঁচাবার কোনো পথই আমি দেখতে পাচ্ছি না।' তারপর কলেজ কর্তৃপক্ষ-ছাত্র সংসদের সম্পর্কের মধ্যে একটি অস্বস্তিকর পরিবেশ নেমে এলো। খবরটি ঢাকার, এমনকি দেশেরও ছাত্রমহলে রটে গেল। অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারাও আমাদের অভিনন্দন জানালেন, যোগাযোগ স্থাপিত হলো কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির সঙ্গে।

শহীদ মিনার নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দিন এসে গেল। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমাকে একটি প্রধান ও উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হলো। গুলিস্তানের কাছাকাছি তখন ব্রিটানিয়া নামের একটি সিনেমা হলে (বহুযুগ হলো ওটা নেই) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন হলো। ২ এপ্রিল, ১৯৫৩। আমাদের উদ্যোগ-আয়োজন দেখে প্রিন্সিপাল সাহেব আমাদের ডেকে পাঠালেন। বললেন, 'তোমাদের এই শহীদ মিনার নিয়ে গভর্নমেন্টকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছি। তবে আমার একটি চিন্তা এসেছে। শিক্ষা সচিব জনাব এসএম ফজলী একজন শিক্ষা ও সংস্কৃতানুরাগী সংগীতপ্রেমী লোক। তাকে এবং তার সঙ্গে ডিপিআই এবং স্বরাষ্ট্র বিভাগের দু-একজন কর্মকর্তাকেও দাওয়াত করতে চাই। প্রধান অতিথি ফজলী সাহেবের ভালো লাগলে তার মাধ্যমে এই শহীদ মিনার নির্মাণঘটিত সমস্যাকে সমাধানের পথে নিয়ে যাব।' আমরাও বললাম, আমরা একটি উঁচুমানের অনুষ্ঠান পরিবেশন করব।

অনুষ্ঠানের সূচির প্রথম পৃষ্ঠায়ই ছিল মায়াকফস্কির কবিতা থেকে একটি উদ্ধৃতি। অনুষ্ঠানের প্রত্যেকটি পরিবেশনা, নৃত্য, গান আর গীতিনাট্য ছিল প্রগতিবাদী ও গণস্বার্থনিষ্ঠ। গীতিবিচিত্রা 'আমার দেশ' মুখ্যত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও শহীদ স্মৃতিতর্পণকেন্দ্রিক ছিল। মূলত সতীর্থ বন্ধুবর আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর রচনা। ছিল নজরুলের 'কারার ঐ লৌহ কপাট'। আবদুল লতিফ গাইলেন 'ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়্যা নিতে চায়'। ছিল আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও হাসান হাফিজুর রহমানের কবিতা। 'কিষাণের কাহিনী' ধূমকেতুর পরিচালনায় এই নৃত্যনাট্য ছিল দেশের বঞ্চিত কৃষক শ্রেণির স্বার্থ এবং অধিকার রক্ষার সংগ্রামের আহ্বান। বন্ধুবর আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর রচিত 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি' এই অমর গানটি অনুষ্ঠানের দশম ক্রমিকে আলতাফ মাহমুদ কর্তৃক জনসমক্ষে প্রথম গীত হয়। (শহীদ) আলতাফ মাহমুদ এবং ছাত্র-শিল্পী সতীর্থ (মরহুম) আতিকুল ইসলাম (জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই) এই অনুষ্ঠান পরিচালনায় প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেন। সংগ্রামী ও গণমুখী এ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা ও উপস্থাপনায় আমাকে সহায়তা করেন ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক (মরহুম) এনায়েত উল্লাহ খান (সাবেক মন্ত্রী ও সাংবাদিক), ছাত্রনেতা হেনরী ইকবাল আনসারী খান এবং কমনরুম সম্পাদক ফতেহদাদ খান গজনভী।

অনুষ্ঠানের প্রথম দিকে মনে হলো, প্রধান অতিথি খুব উপভোগ করছেন। 'সিডিশাস' কবিতা-গানের পরে মনে হলো, তারা আর থাকতে পারছেন না। বিচলিতভাবে তারা অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই গাত্রোত্থান করলেন। বিমর্ষভাবেই প্রিন্সিপাল রাগে-রোষে হলেন তাদের অনুগামী। কয়েক মিনিটের মধ্যেই একজন অধ্যাপক একটি লিখিত নির্দেশ আমাকে পৌঁছে দিলেন- 'সংসদের সভাপতি এবং কলেজের প্রিন্সিপাল হিসেবে আমি নির্দেশ দিচ্ছি আইন ও শৃঙ্খলাবিরোধী এই অনুষ্ঠান এখনই বন্ধ করা হোক।' অনুষ্ঠান অবশ্য যথারীতি সম্পন্ন হলো দর্শক ও শ্রোতৃবৃন্দের তুমুল করতালির মধ্যে। পরের দিনই আমরা কয়েকজন 'শোকজ' নোটিশ পেলাম। আমরা অবিলম্বে জানালাম, আমাদের বিবেচনায় আমরা কোনো শৃঙ্খলা বা আইনভঙ্গ করিনি। দু'দিন পরেই কলেজের অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি জারি হলো। গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভিপি মশির হোসেন, জেনারেল সেক্রেটারি (অর্থাৎ আমি), (গায়ক) আতিকুল ইসলাম, (কবি) আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী ও (ছাত্রনেতা) হেনরী ইকবাল আনসারী খানকে কলেজ থেকে বহিস্কারাদেশ দেওয়া হলো।

গর্জে উঠল সারা কলেজ। বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ধর্মঘট পালনের আহ্বান দিয়ে শুরু হলো বিক্ষোভ, সমাবেশ। অনির্দিষ্টকালের জন্য কোনো সরকারি কলেজে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে বোধ হয় এই হলো প্রথম আহূত ধর্মঘট। শহরের অন্যান্য শিক্ষায়তনেও পালিত হলো সহানুভূতিসূচক ধর্মঘট। জনাব এএমএ মুহিত (তৎকালীন ছাত্রনেতা এবং পরবর্তীকালে সচিব, অর্থমন্ত্রী) তার একটি গবেষণাধর্মী রচনায় এই মর্মে উল্লেখ করেছেন যে, ইনামদের বহিস্কারাদেশকে কেন্দ্র করেই বিস্তৃততর পরিসীমায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম প্রতিবাদী ধর্মঘট পালিত হয়েছিল।

মনে আছে, এ সময় আমরা সম্ভবত চারজন- ইকবাল আনসারী খান, মশির হোসেন, আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী এবং আমি তখনকার রমনা ডাকবাংলোয় গিয়ে দেখা করেছিলাম সরকারবিরোধী প্রধান নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে। যদ্দূর মনে পড়ে, সব শুনে তিনি বলেছিলেন, প্রথমে সরকারের যথাযোগ্য কর্তৃপক্ষের কাছে বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য 'পিটিশন' দিতে। তা ফলপ্রসূ না হলে কোর্টে যেতে। তাকে সশ্রদ্ধ ধন্যবাদ দিয়ে বেরুবার সময় আকস্মিকভাবেই দেখা হলো একজন দীর্ঘদেহী সুদর্শন নেতৃসুলভ ব্যক্তিত্বের সঙ্গে, যা হয়ে দাঁড়াল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম সাক্ষাৎকার। সম্ভবত ইকবাল আনসারীই বললেন- ইনি হচ্ছেন শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের একজন হোতা। চলো, তার কাছে ব্যাপারটি বলি। এখন ভাবলে বিস্ময়াবিষ্ট অনুভূতি জাগে। তিনি দাঁড়িয়েই ধৈর্যসহকারে আমাদের বৃত্তান্ত শুনলেন। বললেন- হ্যাঁ, আমি শুনেছি। এখন বিস্তারিত শুনলাম। তোমাদের ঐক্যবদ্ধ জোরালো আন্দোলন ছাড়া এটা প্রত্যাহার হবে না। তাতে আমাদের সমর্থন পাবে অবশ্যই। আমরা বিরাটভাবে উৎসাহিত, উদ্দীপিত বোধ করলাম। জোরালো আন্দোলন চলতে থাকল। পরবর্তীকালে বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহূত হলো।

এখন ভাবলে গৌরব-মিশ্রিত একটি পরম সশ্রদ্ধ অনুভূতির সৃষ্টি হয়, বঙ্গবন্ধুর ওই কথাগুলো আমাদের মাঝে কী আশ্চর্য অনুপ্রেরণার সৃষ্টি করেছিল।

'৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারি কতিপয় তরুণের আত্মাহুতি রচনা করেছিল অদূর ভবিষ্যতে এক নতুন রাষ্ট্র স্থাপনের সুদৃঢ় ভিত। আর সেই ক্ষণে আমাদের পরম সৌভাগ্য হয়েছিল পরবর্তীকালে সে রাষ্ট্রের স্রষ্টা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ সাক্ষাতে অনুপ্রাণিত হওয়ার।

বায়ান্ন থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো। আর মাত্র দু'দশকে বঙ্গবন্ধুর অতুলনীয় নেতৃত্বে সৃষ্টি হলো ভাষাভিত্তিক অসাম্প্রদায়িক উন্নয়ন-প্রত্যাশী নতুন এক রাষ্ট্র, অস্তিত্ব-অন্বেষী এক নতুন জাতি। শহীদ বরকত, রফিক, সালাম, জব্বার- কী প্রবল শক্তি ছিল, কী পরাক্রমী তেজ ছিল তোমাদের রক্তে। মুক্তি-সংগ্রামের রক্তের পারাবারে স্নান করে ওঠা একুশের সূর্যোদয়ের রাঙা অনুরাগে দেখি তোমাদের আত্মাহুতির গভীর চুম্বন। বাংলাদেশে প্রত্যেক বছরের প্রত্যেক একুশের আবেদন তাই মৃত্যুহীন, তাই এত অর্থবহ।

ইনাম আহমদ চৌধুরী, সাবেক সচিব; আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ