আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

Advertise

জাতির ক্রান্তিলগ্নে ইতিবাচক ছাত্রলীগ

আলমগীর শাহরিয়ার  

ছাত্রলীগকে গালি দেওয়ার কোন একটা মোক্ষম উপলক্ষ পেলেই হয়। রীতিমতো উৎসব শুরু হয়ে যায়। আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ে। কেউ সুযোগ মিস করে না। কিন্তু এই করোনাদুর্যোগে একদম প্রথম থেকে সবাই যখন ঘরে, মাঠে ঘাটে পথে প্রান্তরে মানুষের পাশে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় সংগঠনটির নাম— বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এমনকি মূল দলের চেয়েও বেশি সক্রিয় তাদের তৎপরতা। সক্রিয় তাদের তীব্র সমালোচক রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর চেয়েও। নানামুখী সেবা কার্যক্রম যেমন— মানুষকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি ও বিতরণ, ত্রাণ নিয়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানো থেকে মাঠে কৃষকের পাকা ধান কেটে দেওয়া পর্যন্ত— সর্বত্র তারা সক্রিয়।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু ছাত্রলীগের পান থেকে চুন খসলে যারা তীব্র সমালোচনা করেন আমাদের সেই বুদ্ধিজীবী শ্রেণির কারোর এ মুহূর্তে কোথাও সংগঠনটির এতসব মানবিক উদ্যোগের একটু প্রশংসা চোখে পড়ে না। অন্যায় করলে যেমন ধুয়ে মুছে দেন, ভালো কাজ করলে তার প্রশংসাটুকুও করা উচিত। ভালো কাজের প্রশংসা ও স্বীকৃতি আরও বেশি ভালো কাজের দিকে তাদের উদ্দীপ্ত করবে। কিন্তু ছাত্রলীগের ছিদ্রান্বেষী, কুৎসা ও গালাগালির মহাজনরা মুখে কুলুপ এঁটে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় যখন ঘরে ছাত্রলীগ তখন ঠিকই বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।

ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের অনেক ভুল ত্রুটি আছে। সেসব ভুল ত্রুটি শুধরে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা আছে। যারা অপরাধী তাদের ক্ষমা করা হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠলে তাদের নেতৃত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েও সংগঠনটির অভিভাবক সে প্রমাণ রেখেছেন। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এ সংগঠনটি বাংলাদেশের স্বপ্নের সমান বড় বললে অত্যুক্তি হবে না। মনে রাখতে হবে প্রতিক্রিয়াশীল নয়, মৌলবাদী কোন সংগঠন নয়; শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন, জাতির মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও যৌবনের স্বপ্ন মিশে আছে। যার লক্ষ্য ছিল সোনার বাংলা বিনির্মাণের কর্মী গড়ার পাঠশালা হিসেবে গড়ে তোলা। ছাত্রদের বিদ্যার সঙ্গে বিনয়, শিক্ষার সঙ্গে দীক্ষা, কর্মের সঙ্গে নিষ্ঠা, জীবনের সঙ্গে দেশপ্রেম তাদের ঘোষিত সাংগঠনিক তৎপরতার লক্ষ্য। সে চর্চা ও আন্তরিকতার ধারাবাহিকতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। ব্যর্থতা আছে।

উপমহাদেশের প্রাচীন এ ছাত্র সংগঠনটি অতিক্রম করেছে সত্তর বছরের বেশি সময়। ১৯৪৮ সালের ৪ ঠা জানুয়ারি সময়ের দাবিতেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে জাতিকে মুক্তির লক্ষ্যে সংগঠনটি ছিল তাঁর স্বপ্নসারথি। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতিটি অধ্যায়ে রয়েছে সংগঠনটির অগ্রণী ভূমিকা। মুক্তিযুদ্ধের মন্ত্রবীজ ভাষা আন্দোলনে, বাষট্টিতে আইয়ুব খানের আমলে গণবিরোধী শরিফ কমিশনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা শিক্ষা আন্দোলনে, ছেষট্টিতে মুক্তির সনদ ছয় দফার পক্ষে জনমত গঠনে, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে, সত্তরের নির্বাচনে, মহান মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করা, রণাঙ্গনের অস্ত্র হাতে লড়াই, নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে, এক এগারো পরবর্তী সময়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগ সবসময় ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছে। দেশের রাজনৈতিক নানা ক্রান্তিলগ্ন ছাড়াও, প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিশাল সংগঠন। ব্যক্তির কালিমা মুছেই দীর্ঘ গৌরবোজ্জ্বল তাদের পথচলা। প্রগতিশীল চিন্তা ও চেতনায় সমৃদ্ধ এ সংগঠনটির ইতিহাসকে তাই যথার্থ অর্থেই বলা হয়— বাঙালির ইতিহাস।

বিজ্ঞাপন

প্রশংসার ব্যাপারে আমরা বড়ো অনুদার, বড়ো কৃপণ। যতোটা অকৃপণ হই স্বার্থ আদায়ে নির্লজ্জ তোষামোদি আচরণে। কিংবা ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক বিদ্বেষ প্রকাশে। এই সংকীর্ণতা আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য। বৈশ্বিক মহামারী করোনা সংকটে, জাতির এ কঠিন দুর্যোগ ও দুর্বিপাকে আর্ত মানবতার সেবায় নিয়োজিত এমন ছাত্রলীগকেই ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় দেশের মানুষ সবসময় পাশে দেখতে চায়। তাদের এমন ইতিবাচক ও ভালো কাজ সবসময় অব্যাহত থাকুক। ক্রান্তিলগ্নে শুভেচ্ছা তাদের।

আলমগীর শাহরিয়ার, কবি ও প্রাবন্ধিক। ইমেইল: [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬২ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৫ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ