প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
দেব দুলাল গুহ | ০১ মে, ২০২০
জাতির এই মহাদুর্যোগের দিনে আরও ২ হাজার ডাক্তারকে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করে সরকার ডাক্তারদের সম্মানিত করেছেন। তারও আগে সরকার প্রণোদনা দিয়েছেন, করোনাকালে ডাক্তারদের সুরক্ষায় বিশেষ বীমার ব্যবস্থা করেছেন। আশা করি ডাক্তাররাও যা আছে তাই নিয়েই করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বেন।
তবুও কিছু কথা থেকেই যায়। ৩৯তম বিশেষ বিসিএসে লিখিত পরীক্ষা না দিয়েই শুধু প্রিলিমিনারি ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে আগে প্রায় ৫ হাজার ডাক্তার নেওয়া হয়েছে। এখন আরও ২ হাজার নেওয়া হলো। পরিস্থিতি ও প্রয়োজনে বিবেচনায় সরকার এটা করতেই পারেন। প্রশ্ন হলো, এই ২ হাজারে অন্তর্ভুক্ত হতে এখন যদি এর আগের কোনো সাধারণ বিসিএস অর্থাৎ ১১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অথচ চূড়ান্তভাবে ক্যাডার না পাওয়া কেউ যদি আইনের দ্বারস্থ হন?
আমার মনে হয় সাধারণ বিসিএসে কৃতকার্য কিন্তু আসনের স্বল্পতায় ক্যাডার হতে না পারারাই বেশি উপযুক্ত। কারণ একজন বিসিএস ক্যাডার হবেন দেশ-বিদেশের সকল বিদ্যায় কমবেশি বিদ্বান। কারণ স্ব স্ব ক্ষেত্রে অবদান রাখার মাধ্যমে দেশ পরিচালনায় ভূমিকা রাখবেন তাঁরা। স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েও তিনি একদিন স্বাস্থ্য প্রশাসনে গিয়ে হাসপাতালের পরিচালক হতে পারেন, যেতে পারেন প্রশাসনেও। শুধু ২০০ নম্বরের টিক মার্কের প্রিলিমিনারি আর ২০০ নম্বরের ভাইভা দিয়ে কি একদম সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব? তবে যদি বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে নিযুক্তরা নন-ক্যাডার হন, তাহলে ভিন্ন কথা। ৩৯-এই ক্রমানুযায়ী পরের দিকের এমন হয়েছেন অনেকে।
বিজ্ঞাপন
লিখিত পরীক্ষায় একজন এমবিবিএস পাস ডাক্তার প্রার্থীর ডাক্তারি বিদ্যার বাইরেও দেশ-বিদেশের সব ধরণের বিস্তর জ্ঞান যাচাই করা হয়, কোথা থেকে কী আসবে ঠিক নেই। একইভাবে অন্যান্য বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে আসা প্রার্থীদেরকেও নিজের বিষয়ের বাইরে ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়। এটা কিন্তু সহজ বিষয় নয়। ৩৫তম বিসিএসে জীবনের প্রথম বিসিএসেই বুঝেছি এই লিখিত পরীক্ষা কতটা জটিল ও কঠিন হতে পারে। অনেকে বলবেন ডাক্তারি পড়াটা অনেক কঠিন। তাদেরকে বলি, আমার বিষয় ফিজিক্সও একেবারে কম কঠিন না। তবুও আমাকে লিখিত পরীক্ষা ঠিকই দিতে হয়েছে। আমার কথা হলো, সবাইকেই একই রকমের পরীক্ষা দিয়ে আসতে হবে, তাতে লিখিত থাকুক আর না থাকুক। তবে লিখিত না থাকলে দুর্নীতির সুযোগ বেশি থাকে, প্রকৃত মেধাবিদের বাছাইয়ের সুযোগও কম থাকে।
আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা হলেও বেঁচে থাকতে সনদের আবেদন করেননি কোনোদিন। তাঁর প্রয়াণের পর আমরা আবেদন করেও বিশেষ কারণে সফল হইনি। হয়তো আমার বাবা একটু চতুর হলে আমিও ৩৫ এর প্রিয় ব্যাচমেট কাজী নাজীব হাসান ভাইয়ের মতো কোটায় ফরেইন/প্রশাসন/পুলিশে যেতে পারতাম। কিন্তু পিএসসির চেয়ারম্যান শ্রদ্ধেয় ড. মোহাম্মদ সাদিক স্যারের কল্যাণে শিক্ষায় এসে বারবার আক্রান্ত হচ্ছি নিরীহ ক্যাডার বলে, বেতন আটকে যাচ্ছে বারবার! এই মহাদুর্যোগের মধ্যেও ৩ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না তাই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে কোটার বৈষম্য যেমন বন্ধ হয়েছে, তেমনি এই বিশেষ বিসিএস নামের বৈষম্যটাও বন্ধ হওয়া দরকার। নাহলে হয়তো আগামীতে ক্যাডার সার্ভিসে অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে, যার প্রভাব পড়তে পারে সেবাপ্রদানের ক্ষেত্রেও।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য