আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

করোনা সংকট: কিছু স্বপ্ন, কিছু প্রত্যাশা

বদরুল আলম  

স্বপ্ন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। স্বপ্নের কথা কে না বলতে চায়, কে না জানাতে চায় সবাইকে। হ্যাঁ, জানিয়ে দিতে চাইছি স্বপ্নের কথা। জানুক সবাই স্বপ্নের কথা, জানুক সবাই আশাবাদের কথা। ১৯৬৩ সালে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র তাঁর ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ ভাষণে বলেছিলেন, আমার একটি স্বপ্ন আছে যে একদিন, জর্জিয়ার লাল পাহাড়ে, সাবেক দাসের সন্তান আর সাবেক দাস-মালিকের সন্তান একসঙ্গে বসতে সক্ষম হবে ভ্রাতৃত্বের আসনে। তিনি আরও স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমার একটি স্বপ্ন আছে যে আমার ছোট চারটি সন্তান একদিন এমন একটি জাতির মধ্যে বসবাস করবে, যেখানে গাত্রবর্ণ দিয়ে আর তাদের বিচার করা হবে না, করা হবে চরিত্রগুণ দিয়ে। আজ একটু ভিন্ন ফ্রেমে যদি জনাব কিং এর মতো স্বপ্ন দেখি আর স্বপ্নের সত্যতার প্রত্যাশা রাখি। ভয় নেই আলো আসবেই।

প্রসঙ্গ যখন ঈদের শপিং। এবার ঈদে শপিংয়ের কথা না ভেবে না খাওয়া মানুষের কথা ভাবুন। পুরো প্রোগ্রামটা বদলে দিলে কেমন হয়। নির্ধারিত অর্থ বিলিয়ে যদি দেই অনাহারীর তরে। তাহলে বেশ ভালো হবে মনুষ্য জাতির। খবরের কাগজে দেখলাম, আসন্ন ঈদে শপিং না করে গরিব অসহায় ও কর্মহীনদের মাঝে অর্থ বিতরণ করতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মাননীয় মন্ত্রী আপনার মন্তব্যের প্রশংসা করছি। ধন্যবাদও বটে। এবার ঈদ এসেছে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ভিন্ন বাস্তবতায়, দেশ পার করছে সংকটকাল। এ পরিস্থিতিতে আমাদের শপিং না করে এর অর্থ অসহায়, দরিদ্র কর্মহীন জনগণের মাঝে বণ্টনের যদি স্বপ্ন দেখি।

বিজ্ঞাপন


সিলেট বিভাগের প্রচলিত অনেক প্রথার মধ্যে মেয়ের বাবার গলার কাঁটা হয়ে আজও ঝুলে আছে ইফতারের প্রথা। রমজান আসলেই তার দু-তিন মাস আগে থেকে চিন্তা করতে হয়- কী করে মেয়ের বাড়িতে ইফতার পাঠানোর টাকা জোগাড় করতে হবে। অনেক বাবা ইফতারের এই আয়োজনের জন্য নিজের গরু ছাগল এমনকি হাস মোরগও বিক্রি করেন। সুদে টাকা এনে তা মেটাতে বছর পার করেছেন অনেকেই। সিলেটের বাইরে এর প্রচলন কতটুকু ঠিক জানা নেই। এই ইফতার প্রথা পুরাতন এক ঐতিহ্য। বাবার বাড়ি থেকে রমজানে মেয়ের বাড়িতে ইফতার পাঠানো হয় । সে ইফতার শুধু মেয়ের বাড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনা। ছেলের শ্বশুরবাড়ি থেকে যেদিন ইফতার আসবে সেদিন বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত দেওয়া হয়। সেই সাথে একটি নীরব প্রতিযোগিতা চলে- কার শ্বশুরবাড়ি থেকে কত বেশি আইটেমের ইফতার এলো, কে তার শ্বশুরবাড়ির ইফতার কয়শত মানুষকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াল। অন্ধ এক প্রতিযোগিতা। যার শ্বশুরবাড়ি থেকে যত বেশি ইফতার আসে তার তত সুনাম। তেমনি যে মেয়ের বাবার সে সক্ষমতা কম, তিনি ইফতারি দিয়ে খুশি করতে না পারলে- অনেক ক্ষেত্রে কথা শুনতে হয়। এই বছর করোনা সংকটের কারণে প্রথম দিকে এই ইফতার পাঠানো থেকে নিস্তার মিললেও দোকানপাট খোলায় অনেকেই ইফতার পাঠিয়েছেন। এই খবর দেখি। আমরা যদি এমন সমাজের স্বপ্ন দেখি, যেখানে নেই কোন অন্যায়, নেই কোন পাপাচার। আছে শুধু শান্তি। এককথায় মদিনার সমাজের প্রত্যাশা রাখছি। স্বপ্ন দেখছি।


আর ঈদুল ফিতরের পর ঈদুল আযহার শুভাগমন হবে। চলছে রমজানুল মোবারক মাস। সিয়াম সাধনার মাস। রোজা আমাদের প্রেম প্রীতির চেতনাকে জাগিয়ে তুলে । করোনা সংকটে গৃহকর্মীকে পরিবারের নিরাপত্তার জন্য ছুটি দিয়েছেন অথবা আসতে বারণ করেছেন। গৃহকর্মী কাজ করে এই মাইনে দিয়ে পরিবারের ভরণ-পোষণ করেন। এই দিনগুলিতে আপনার গৃহকর্মী কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত বলে লজ্জা করে মাইনে না চাইতে পারে অথবা নিজের বে-খেয়াল যদি বাদ পড়ে (একটু মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য এই প্রয়াস) তাহলে কষ্ট পাবে মানুষ, কষ্ট পাবে মানবজাতি। আমাদের নৈতিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য হলো তাদের পরিবারের কথা বিবেচনা করে তাদের পাশে দাঁড়ানো । চলুন, আমরা নিজে তাদের পাশে দাঁড়াই এবং অন্যকে ও উৎসাহিত করি। খেয়াল করে পরিশোধ করি মাইনেটা।


করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী লকডাউনের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন রাজধানীসহ সকল শহরে বসবাসরত নিম্ন আয়ের মানুষ। মহামারির সময় দু'মাস বা তিন মাস অথবা নিতান্ত এক মাসের বাড়ি ভাড়া মওকুফ করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ রাখছি। চাকরি ও ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হঠাৎ করে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। পরিবারকে খাওয়ানোর মতো পর্যাপ্ত টাকাও নেই অনেকের কাছে। পরিস্থিতি উন্নতির লক্ষণ না থাকায় জীবন-জীবিকার বিষয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। লকডাউনের সময় কাজ হারানো নিম্ন আয়ের মানুষের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। বিশেষ করে রিকশাচালক, পরিবহন শ্রমিক, দিনমজুর, হকার, পরিবহন শ্রমিক, হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বিভিন্ন দোকান, মার্কেটের কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। মহামারির সময় আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-আয়ের মানুষের জন্য বাসা ভাড়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিলে দেশের মানুষ বেশ উপকৃত হবে। বাড়িওয়ালাদের প্রতি অনুরোধ করছি বিষয়টি আমলে নেবেন। স্বপ্নের দেশ গঠনে সামিল হন সবাই। সেই স্বপ্ন দেখছি।

বিজ্ঞাপন


অভিজাত স্কুলের প্রসঙ্গে আসি। এই সংকটকালীন সময়ে স্কুলের বকেয়া চেয়ে আদায় করা সমীচীন মনে করছি না। মালিকপক্ষ বেশ বিত্তবান কিন্তু অভিভাবক পক্ষ বেশ অসহায়। সিলেটের কথা যদি বলি, স্কলার্সহোম, আনন্দনিকেতন, বিবিআইএস, খাজাঞ্চিবাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, কুমারপাড়াস্থ ইংলিশ গ্রামার স্কুলসহ অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অভিভাবকদের কাছে বার বার বেতন পরিশোধের নোটিশ পাঠাচ্ছে। খবরটি বেশ বেদনাদায়ক। আমরা রীতিমত মর্মাহত। কিছুদিন আগে দেখলাম খবরের কাগজে ঝড় বয়ে গেল। গোলটেবিলের আলোচনার বিষয়ও ছিল বিষয়টি। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। মানুষ যখন মানবেতর জীবনযাপন করছে তখন অভিভাবকদের কাছে বেতন চেয়ে নোটিশ দেওয়া ঠিক নয়, এটা অমানবিক। সরকারি নির্দেশনা জারির পূর্বেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিষয়টি উপলব্ধি হলে ভালো। নতুবা জনগণের কথা চিন্তা করে সরকার যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সরকারের সিদ্ধান্তের প্রত্যাশা করছি।


খাবারের কথা ভাবছি। এই সময়ে খাবার বিলিয়ে দিতে পারি সামর্থ্যবানরা। খাবার বিলিয়ে দেবার এক মোক্ষম সুযোগ মনে করছি। ইসলামে অভুক্তকে খাবার খাওয়ানো সীমাহীন পুণ্যের কাজ। চলুন আমরা সবাই সামর্থ্য অনুযায়ী অভুক্তদের পাশে দাঁড়াই। রোজা আমাদের মানবিক গুণাবলি বিকাশে সহায়ক। রোজা পালনের মাধ্যমে ধনীরা গরিবের দুঃখ বোঝে, ক্ষুৎপিপাসার জ্বালা অনুভব করে। বুঝতে পারে অসহায় নিরন্ন মানুষের ও খাদ্যের সম্মান। মর্যাদা দিতে শেখে ক্ষুধাকে ও ক্ষুধার্ত মানুষকে। উপলব্ধি করে, কেন অন্নহীন গরিব মানুষ একমুঠো খাবারের জন্য অন্যের ঘরে কাজ করে। অনুধাবন করে দুস্থ গরিব লোকেরা ধনী হওয়ার লোভে নয়, সম্পদের নেশায় নয়, ভোগ-বিলাসের মোহে নয়, শুধুই জীবন বাঁচানোর তাগিদে সবার অগোচরে দৃষ্টির আড়াল হলে সামান্য বাসি খাবারের প্রতি হাত বাড়ায়। কেন গরিব মা তাঁকে খেতে দিলে নিজে না খেয়ে আঁচলে বেঁধে নেন তাঁর অভুক্ত সন্তানের জন্য। অনুভব করে ক্ষুধায় কাতর মানুষ কেন তার আত্মসম্মান বিসর্জন দেয়,মর্যাদা ভুলে যায়, মান-ইজ্জত বিকিয়ে দেয় খাবারের জন্য। তাদের ঘৃণা ও উপেক্ষা নয়, তাদের জন্য ভালোবাসা ও সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। খাবার বিলিয়ে দিতে হবে।

করোনা সংকট সবাই মিলে কেটে উঠতে হবে আমাদের। পারস্পরিক সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতি ছাড়া করোনা মোকাবেলা করা অসম্ভব। আজ শুভ কামনা করি সবার জন্য। সবার মধ্যে নতুন অনুভূতি হোক 'সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই'। এ সংকট কাটতে পারলে আমাদের ভবিষ্যৎ অনেক সুন্দর হবে। 'আনন্দরূপ’ প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আশা ও আনন্দ জাগিয়ে রাখতে বলেছেন। বলেছেন, ক্ষুদ্র স্বার্থ ভুলে, ক্ষুদ্র অহমিকা দূর করে নিজের অন্তঃকরণকে একবার জাগিয়ে তুলতে। বলেছেন, ‘নিজের এই ক্ষুদ্র চোখের দীপ্তিটুকু যদি আমরা নষ্ট করিয়া ফেলি, তবে আকাশভরা আলো তো আর দেখিতে পারবো না।’ আমরা আকাশভরা আলো দেখতে চাই। প্রিয় শিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবুর মতোই এই আশাবাদ বুকে ধরে রাখি- ‘ভোর হয়নি, আজ হলো না, কাল হবে কি না, তা-ও জানা নেই, পরশু ভোর ঠিক আসবেই'।

বদরুল আলম, প্রভাষক, তাজপুর ডিগ্রি কলেজ, সিলেট; এমফিল গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ