প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
আজম খান | ০৮ আগস্ট, ২০১৫
বাংলাদেশে দুর্নীতি করলে সম্মান বাড়ে!
খাবারে ভেজাল দিলে আয় বেশী, ঝামেলা কম!
ভেজাল ঔষধ খাইয়ে মানুষ মারলে কোটিপতি!
সরকারী চেয়ারে বসে লুটপাট করলে পদোন্নতি। ১৮ হাজার টাকা দিয়ে চাকুরী শুরু করে ৮০ হাজার টাকা মাইনেতে রিটায়ারমেন্ট। কিন্তু চাকুরি জীবন শেষে দেখা গেলো তার সম্পত্তির পরিমাণ ২০০ কোটি টাকার!
অন্যের জমি জোর করে দখল করলে লোকে প্রথম প্রথম ভুমিদস্যু বলবে। কয়দিন পর থেকে বিজনেস টাইকুন হিসেবে সম্মান করবে।
দেশের টাকা মেরে বিদেশে পাঠিয়ে কেউ মিস্টার টেন পার্সেন্ট হিসাবে খ্যাতি লাভ করলে শস্তিস্বরূপ লন্ডনে নির্বাসিত করা হবে। তখন তার কাজ হবে রূপকথার আদলে ইতিহাস লেখা।
মাদ্রাসা খুইলা মধ্যপ্রাচ্য থেকে কোটি কোটি টাকা আইনা বিত্তের পাহাড় জমাইবেন। দ্বীনি শিক্ষার নাম করে লাখ লাখ ছেলেদের মানবেতর জীবন যাপন করাইবেন। তাদের ধর্ম শিক্ষার পাশাপাশি বাস্তবমুখী শিক্ষা দেওয়ার কথা বললে তেলে বেগুনে জ্বইলা উঠবেন, ইসলাম ধ্বংসের অভিযোগ কইরা বলবেন, ‘আমরা শক্তি, আমরা বল, আমরা কওমি হুজুরের দল’। মাঝখানে হুজুর বনগায়া কোটিপতি। ছাত্ররা যেভাবে খুশী ব্যবহারের বেহেস্তি গেলমান।
শেয়ার বাজারে লুটপাট, অনিয়ম করলে হইবেন দরবেশ। এই দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে দাড়ায়ে মিলিয়ন মানুষ হত্যা করার পুরস্কার হচ্ছে স্বাধীন দেশে মন্ত্রী হয়া।
ব্যাপক বিত্ত থাকলে থাকলে নুলা রাজাকার হয়ে যায় প্রিন্স মুসা বিন শমসের। সেই রাজাকার আবার তার পোলারে বিয়া দেয় মুক্তিযুদ্ধের কঠোর চেতনাধারীর মহামহিমের কন্যার কাছে। কয়েকদিন আগে এক বড় ভাই জানালেন এটা নাকি প্রেমের বিয়া, কিছু করার ছিলো না। কিন্তু কথা হচ্ছে রাজাকার এবং তাদের ছানাপোনারা যে পরিত্যাজ্য এটা সেই ‘শেখ’ টাইটেলধারী মহিম তার সুন্তানদের শিক্ষা দিতে পারেন নাই। এই মহামহিম মাঝে-মধ্যেই আবার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিষয়ক শিক্ষা দিতে এখানে সেখানে বয়ানবাজ করেন।
সারাজীবন ঘুষ খেয়ে কোটি কোটি টাকা লোপাট করে একটা মাদ্রাসা, মসজিদ দিলে হয়ে যাবেন ঈমানদার, দানবীর।
সিন্ডিকেট ব্যবসা করে দ্রব্যমুল্যের দাম বাড়িয়ে আম জনতার পকেট কাটলে হবেন সফল ব্যবসায়ী।
সেকেন্ডে একশ’ মাইল বেগে মিথ্যাচার করতে পারলে সুনজরে থাকবেন রাজনীতিক দলসমুহের। সাথে যদি চোখ পোল্টি যোগ করতে পারেন চরিত্রে তাইলে আপনে এরশাদ। কে পায় আর আপনারে।
রাজাকার মরলে হয় শহীদ।
এখানে সফল ধর্ম ব্যবসায়ী হইলে নামের আগে যুক্ত হয় মুফতি কিংবা আল্লামা। ধর্মের মান-ইজ্জত, ধর্মানুভুতি কারোরই কিছু হয় না তখন।
উপরে লেখা নানা প্রজাতির টাউট বাটপারদের লুঙ্গি নিয়ে আপনি যখন লেখালেখি করবেন তখন আপনি আর আশরাফুল মাখলুকাত নন। একজন ব্লগার। আপনি খুন হবেন। পথে ঘাটে, ঘরে বাইরে। দুই চারটা ধর্মভিত্তিক পোষ্ট দেখাইতে পারলে যাদের খুনকে সহিহ বলে রায় দিবে। নইলে বলবে আমি খুন করা সমর্থন করি না কিন্তু এমন লেখালেখিও না। ইনিয়ে-বিনিয়ে গলায় একটা চুকচুক করে এমন একটা পরিবেশ তৈরী করবে যেন খুন হওয়াটাই ছিল যৌক্তিক পরিণতি।
অথচ এসব সাথে হওয়া বৈষম্য, লুটপাট আর অন্যায়ের জায়গাগুলো নিয়েই লড়ে খুন হওয়া আর খুনের ঝুঁকিতে থাকা মানুষগুলো। কি অদ্ভুত অকৃতজ্ঞ এরা।
কবি ঠিকই বলেছিলেন, এমন দেশটি কোথাও তুমি পাবে নাকো খুজেঁ। আমি বলি, এমন কৃতঘ্ন শ্রেণীর মানুষও পাবেন না দুনিয়ার কোন তেপান্তরে।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য