আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

জাতির পিতার জাতীয় কবি

রহিম আব্দুর রহিম  

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের সংগ্রাম সৈনিক, উপনিবেশিক শোষণমুক্ত স্বাধীন ভারত বিনির্মাণ এবং বাঙালির জাতিগত জাগরণের অগ্রনায়ক কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রিয় কবি। ক্ষুধা-দারিদ্র, নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধুর জীবন সংগ্রামের মাঝে কবি নজরুলের বিদ্রোহী বীণ বারবার ঝংকৃত হয়েছে। কবি নজরুলের সৃষ্টিশীলতার বাঁক-পরতে বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক চেতনার যে স্রোত বয়েছে তার প্রতিচ্ছবি বঙ্গবন্ধুর জীবন আদর্শে প্রতিফলিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কাছে কবি নজরুলের বিশেষত্ব ছিল,কবির বিদ্রোহী চেতনা।

পিআইবি’র মহাপরিচালক শব্দশিল্পী জাফর ওয়াজেদ তাঁর ফেসবুক ওয়ালে প্রতিদিন যে সমস্ত তথ্য পোস্ট করেছেন তাতে,“বঙ্গবন্ধু কলকাতায় পড়াশোনাকালে তাঁর রুমমেট কবি গোলাম কদ্দুছের কাছে কবি নজরুল সম্পর্কে জেনেছেন। কবি জসিম উদ্দীনের কাছ থেকেও বঙ্গবন্ধু কবি নজরুলকে চেনার এবং জানার সুযোগ পেয়েছেন। অপর শুভানুধ্যায়ী কবি লূৎফুল হায়দার জুলফিকারের সাথে বঙ্গবন্ধুর সখ্যতা ছিল প্রবল। যাঁকে সম্পাদক করে বঙ্গবন্ধু ১৯৬৮, ১৯৬৯, ১৯৭০ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত বের করতেন সাপ্তাহিক নতুনদিন। ট্যাবলেট আকৃতির নতুন দিনের লোগো ছিল লাল রঙের।

পাকিস্তান জাতীয় গণপরিষদেও ৫০ দশকে প্রথম শেখ মুজিব দাবি তোলেন কলকাতায় বসবাসরত কবিকে মাসিক ভাতা প্রদানের। বঙ্গবন্ধুর দাবি গৃহীত হয়। তবে টাকা কেন্দ্রীয় নয় প্রাদেশিক সরকার দেবে। সে অনুযায়ী তৎকালীন কবি পেতেন ১০০ টাকা। ১৯৬৫ সালে ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৮, ৬৯, ৭০ সালে দলের লোক পাঠিয়ে কবি ও তাঁর পরিবারের জন্য কাপড়, খাবার ও টাকা পাঠাতেন। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, কবি নজরুলকে সমাদর-কদর করতেন। কবির বয়স যখন ত্রিশ বছর তখন কবিকে নেতাজি সম্মাননা প্রদান করেন। নেতা সুভাষ চন্দ্র বসু কবির সংবধর্না সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে কবিকে ভারতবর্ষের কবি অভিধা প্রদান করেন। ১৯২৯ সালে এবার্ট হলে কলকাতাবাসীর পক্ষ হতে কবিকে নাগরিক সম্মাননা প্রদান করা হয়। কবি অনুষ্ঠানে নেতাজির প্রিয় গান ‘দুর্গমগিরি কান্তার মরু।’ গানের সাথে গলা মেলান নেতাজি। ৮৯ বছর আগেই কবি নজরুলকে স্বীকৃতি প্রদান করা হয় যার বাস্তব রূপ দেন বাঙালির জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান।

ব্রিটিশ ভারত আইন অনুযায়ী কবি সাহিত্যিকরা সম্মানী পাওয়ার অধিকারী। সে মতে,কবি নজরুল তৎকালীন দুইশ টাকা করে সম্মানী পেতেন। দেশভাগের পর প্রথমে সমস্যা হয়। পরে দুদেশ থেকেই তিনি ভাতা পেতেন। (তথ্যসূত্র হাবিবুল্লাহ বাহারের ভূমিকা) মুজিবনগর সরকার প্রতি মাসে প্রতিনিধি পাঠিয়ে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ২৫০ টাকা করে সম্মানী ভাতা প্রদান করতেন। ১৯৭২ এর বঙ্গবন্ধু সরকার তা বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করে দেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু ইন্দিরাকে অনুরোধ করে কবিকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। ঢাকায় কবির নামে বাড়ি বরাদ্দ দেন। পিজিতে দেওয়া হয় চিকিৎসা।

বঙ্গবন্ধুর পাঠ্য তালিকায় কবি নজরুল ছিলেন অবারিত। জেলখানায় পেয়েছেন নিবিড় করে। জেনেছেন, কবি বাংলার জয় চান। স্বাধীন দেশের রণসংগীত করা হয় কবির গান, ‘চল চল চল’। বঙ্গবন্ধুর নজরুলকে নিয়ে যাঁরা গবেষক তাঁরা পেতে পারেন অন্য এক শেখ মুজিবকে, যিনি সাহিত্য-সংস্কৃতিকে সংগ্রামের সহায়ক করে তুলতে পেরেছেন। এদেশে আসার পর হতে কবি নজরুলকে জাতীয় কবি বলা হয়। নেই কোনো গেজেট।” ২০১৯ সালে প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান এঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাংলা একাডেমির সাধারণ সভায় এক প্রবীণ সদস্য দাবি তোলেন কবি কাজী নজরুলকে জাতীয় কবি হিসাবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করে গেজেট প্রকাশ করার।

রহিম আব্দুর রহিম, শিক্ষক, কলামিস্ট, নাট্যকার ও শিশু সাহিত্যিক। ইমেইল: [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ