প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
আলমগীর শাহরিয়ার | ০১ জুলাই, ২০২০
আজ প্রতিষ্ঠার ৯৯ বছর পেরিয়ে শতবর্ষে পা দিল দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২১ সালের ১ জুলাই উদযাপন করবে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার গৌরবময় শততম বার্ষিকী। একই বছরে আমরা পালন করব স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। ব্রিটিশ ভারতে পূর্ববঙ্গে দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। উদ্দেশ্য ছিল পশ্চাৎপদ, অনগ্রসর একটি জনপদের মানুষকে আলোকিত করা। এখানে একটি শিক্ষিত সচেতন মধ্যবিত্ত শ্রেণি গড়ে তোলা। বঙ্গভঙ্গ রদের ক্ষতিপূরণ হিসেবেও ইংরেজ সরকার ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তৎপর হয়। তা ছাড়া, এ অঞ্চল থেকে কলকাতায় যেয়ে অনেকেরই উচ্চশিক্ষা নেয়া অর্থনৈতিক সামর্থ্যের অনুকূলে ছিল না। তখন ভারতবর্ষে মুসলমান অধ্যুষিত পূর্ববঙ্গ ছিল সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনেক পিছিয়ে। বিশেষ করে অনগ্রসর মুসলমান সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হলেও শুধু মুসলমানদের জন্যই খোলা হয়নি এর দ্বার যেমনটা হয়েছিল কলকাতায় ১৮১৭ সালে শুধু অভিজাত হিন্দুদের জন্য হিন্দু কলেজ(পরবর্তী প্রেসিডেন্সি কলেজ)। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকলেই সূচনালগ্ন থেকে এই প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ শিক্ষা-সুবিধা ভোগ করেছেন। ছিল সকল ধর্ম, মত ও সম্প্রদায়ের জন্য উন্মুক্ত। সে অর্থে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই একটি আধুনিক, উদার, অসাম্প্রদায়িক চরিত্র ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টির। প্রথম উপাচার্য হিসেবে এর হাল ধরেছিলেন ইউরোপের খ্যাতিমান রসায়ন বিজ্ঞানী, শিক্ষা সংস্কারক ও কমনওয়েলথ দেশগুলোর মধ্যে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেষ্ঠ একজন সংগঠক স্যার ফিলিপ জোসেফ হার্টগ। যিনি পিজি হার্টগ নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। জাতিতে ছিলেন একজন ব্রিটিশ, ধর্মীয় পরিচয়ে ইহুদী। কিন্তু মননে, চিন্তায় ও কর্মে— উদার ও অসাম্প্রদায়িক। পৃথিবীর নানা দেশে উচ্চশিক্ষার অনেক প্রতিষ্ঠান বিকাশে যিনি আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। শত প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে রাজনৈতিক ও সামাজিক একটি বৈরি সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিমূল রচনায় তাঁর নিরলস ভূমিকা বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রাগ্রসর শ্রেণির চেয়ে অনগ্রসর শ্রেণির সন্তানেরাই বেশি পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ অঞ্চলে নারীর বিকাশ ও ক্ষমতায়নে অশেষ ভূমিকা রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে সিলেটের মৌলভীবাজারের লীলা নাগ একমাত্র নারী শিক্ষার্থী হলেও পরবর্তী কালে অবরোধবাসিনী নারীদের উচ্চশিক্ষায় ও জাগরণে প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নারী পুরুষ উভয় শ্রেণিই এখানে পরবর্তী কালে একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক জাগরণ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি গড়ে তুলতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে ভাষাভিত্তিক উদার অসাম্প্রদায়িক স্বাধিকার আন্দোলনের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় একটি প্রতিষ্ঠানের এমন উজ্জ্বল ভূমিকার নজির বেশ বিরল। পরাধীন ভূখণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৫০ বছরের মাথায় একটি দেশ বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে।
এখনও আমাদের মত সংখ্যাগরিষ্ঠরাই মফস্বল শহর ও অজপাড়া গাঁ থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে। আমরা জেনে জেনে বড় হই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টির রয়েছে গৌরবময় অতীত। এর ধুলোমাটিতে কান পাতলে জানা যায়, একটি জাতির বাঁক বদলের সাহসী সব গল্প। বিশ্ববিদ্যালয়টি এ অঞ্চলের মানুষের নবজাগরণের প্রতীক। এর শিক্ষকদের বলা হয় জাতির বিবেক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়টি কি গৌরবের সে শিখরে আছে? নাকি অভাবনীয় অবনমন হয়েছে এর? শতবর্ষ পূর্তি উদযাপনকে সামনে রেখে এ প্রশ্ন মোটেই অমূলক নয়। শত বছরে এর অর্জন, অগ্রগতি প্রত্যাশা মাফিক কিনা, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে না হোক দক্ষিণ এশিয়ার এর অবস্থান কেমন— এসব প্রশ্নের চুলচেরা বিশ্লেষণ, জুনিয়র স্কলারদের সঙ্গে সিনিয়র স্কলারদের সম্পর্ক ও শিক্ষা-করণীয় পুনর্বিবেচনা খুব জরুরি। উচ্চশিক্ষার আন্তর্জাতিক নানা র্যাঙ্কিংয়ে হাজারের মধ্যেও খুঁজে পাওয়া যায় না দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের নাম! প্রতিবেশী ভারতের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি পাকিস্তানের মত ভঙ্গুর রাজনৈতিক দেশের বেশ কটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান খুঁজে না পাওয়া আমাদের উচ্চশিক্ষার দৈন্যদশা ও দারিদ্র্যকে তুলে ধরে। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, এফ. সি. টার্নার, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, জি.এইচ. ল্যাংলি, হরিদাস ভট্টাচার্য, ডব্লিউ.এ. জেনকিন্স, রমেশচন্দ্র মজুমদার, এ. এফ. রহমান, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত, জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ প্রমুখের মত খ্যাতিমান শিক্ষক এর গোড়াপত্তনের কালে আলো ছড়িয়েছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য নতুন ও মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টিতে অতুল ভূমিকা রেখেছেন। এখন খুব কম শিক্ষকেরই আন্তর্জাতিক মানের নিয়মিত প্রকাশনা ও গবেষণা আছে। সারা বছরে আন্তর্জাতিক মানের একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় না। পরিবেশ ও মান পড়তি বলে এখন ক্যাম্পাসে বিদেশী শিক্ষার্থী একেবারেই নেই। শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার মূল চেতনা আত্মস্থ করার চেয়ে কোনোমতে পাশ করে একটি চাকরি বাগিয়ে নিতেই বেশি তৎপর। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীরা চাকরির পড়াশোনায় এখন বেশি মনযোগী।
ঢাকা চারশ বছরের পুরনো শহর হলেও এক সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে কেন্দ্র করে এই শহর, জনপদ ও একটি জাতি জেগে উঠেছে। ভারতবর্ষের সেরা সেরা কলেজ যেমন লাহোর, মাদ্রাজ, প্রেসিডেন্সি, ঢাকা, জগন্নাথ কলেজসহ নামকরা অনেক কলেজের সেরা সেরা শিক্ষক তো বটেই ইউরোপের অনেক গুণী শিক্ষকেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিষ্ঠার তিন দশকে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও অনন্য একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। প্রথম উপাচার্য হার্টগ প্রতিষ্ঠানটিকে ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ হিসেবেই গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
সাতচল্লিশের দেশভাগে অনেক মেধাবী শিক্ষকরা ভারতে চলে যান। অনেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ভারতের নানা প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, গোটা পূর্ববঙ্গেই একটা বিরাট শূন্যতা তৈরি হয়। কারণ উনিশ শতকে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসন পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠা পেলে ফার্সির বদলে ইংরেজি রাজ ভাষার মান লাভ করে। একই সঙ্গে ব্রিটিশরা ইংরেজির পাশাপাশি নিজেদের প্রয়োজনে বাংলা ভাষার উন্নতি সাধনেও মনোযোগ দেয়। বাঙালির নবজাগরণের এ কালে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরাই বেশি আধুনিক শিক্ষার সুযোগ পান। যা পরবর্তী কালে একই ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভাজন তৈরি করে। সমান বিকাশ না হওয়ায় এর খেসারত দুই বাংলার মানুষকেই দিতে হয়। মুসলমানরা কয়েকশ বছর ভারতবর্ষে রাজত্ব করার পর ব্রিটিশদের কাছে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরাজয়ে তাদের সঙ্গত কারণেই ইংরেজ বিদ্বেষী মনোভাব জেগে উঠে। হিন্দুদের মধ্যে অনেকেই থাকলেও মুসলিমদের মধ্যে দু একজন ছাড়া তেমন বড় মাপের সমাজ সংস্কারকও ছিলেন না। ফলে আধুনিক শিক্ষা থেকে তারা পিছিয়ে পড়েন। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষার সে প্রকট অভাব পূরণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।
দেশভাগে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে তা ধীরে ধীরে কেটে যায়। অনেক মেধাবীরা তখন শিক্ষকতায় আসেন। যাদের একাডেমিক এক্সিলেন্স ছিল। চিন্তায় ও মননে ছিলেন প্রগতিশীল, উদার ও অসাম্প্রদায়িক। এদের অনেকেই একাত্তরে পাক বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের হাতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। দুঃখজনক হলো, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়টির মান উন্নতির কথা থাকলেও দিন দিন বিশ্ববিদ্যালয়টি তার গৌরব হারায়। ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিলেও শিক্ষক ও ছাত্র রাজনীতি, দলাদলি, স্বজনপ্রীতি, লাল নীল হলুদ রঙের খেলা— এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানকে নিম্নমুখী করে। একাডেমিক উৎকর্ষতা হারানোর সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টি ভৌগলিক ও অবকাঠামোগভাবেও দিনকে দিন শ্রীহীন হয়ে পড়ছে। ৬০০ একরের বেশি জায়গা নিয়ে পরিকল্পিত রমনা উদ্যানের অবারিত সবুজের বুকে নবাবদের বাগান বাড়িতে যে দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক পরিবেশে যাত্রা শুরু করেছিল ক্যাম্পাসটি, ধীরে ধীরে অপরিকল্পিত উন্নয়ন আর ভবনের পর ভবন নির্মাণের তোড়জোড়, শতবর্ষের ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ এক কালের স্নিগ্ধ সবুজ ক্যাম্পাসটি তার সৌন্দর্য হারিয়ে আজ হতশ্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। এর পরিমাণ প্রায় দুই তৃতীয়াংশ। ক্যাম্পাসের জায়গায় অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। একজন শিক্ষক একবার গল্প করেছিলেন, মধুর ক্যান্টিনের পাশে নবনির্মিত সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের সামনে এক রিকশাওয়ালা তাঁকে নামিয়ে দিয়ে বলছে, ‘ইনভার্সিটিতে এত বড় মার্কেট বানাইল স্যার, চইলব তো?’ পুঁজিবাদের করাল আগ্রাসনে মুক্ত নেই কিছুই। বেসাতি আর বিদ্যার্থীর মিলনস্থল একাকার হয়ে গেছে। একজন রিকশাওয়ালারও যে সূক্ষ্ম নন্দনতাত্ত্বিক বোধ সেটাও আজকাল লোপ পেয়েছে কর্তৃপক্ষের।
৩টি অনুষদ, ১২টি বিভাগ, ৬০ জন শিক্ষক, ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী এবং ৩টি আবাসিক হল নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও এখন কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩ টি অনুষদ, ১৩ টি ইন্সটিটিউট, ৮৪ টি বিভাগ, ৬০ টি ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ১৯ টি আবাসিক হল, ৪ টি হোস্টেল ও ১৩৮ টি উপাদানকল্প কলেজ ও ইন্সটিটিউট রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৪৬,১৫০ জন; শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ২,০০৮ জন।
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢাকার আশেপাশে নতুন একটি ক্যাম্পাস চালু করা সময়ের দাবি। যা হোক, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টির শ্রেণি কক্ষের চেয়ে ঢের বেশি আমরা ক্যাম্পাসের পারিপার্শ্বিক নানা অনুষঙ্গ, সাংস্কৃতিক আবহ থেকে শিখেছি। শিখেছি কিছু শিক্ষার্থীবান্ধব পূজনীয় শিক্ষকের সাহচর্যে। শিখেছি যুক্তি তর্ক অর্থাৎ বিতর্ক চর্চার মঞ্চে। শিখেছি দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আবাসিক হলের প্রতিকূল পরিবেশে মিশ্র অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে। যারা এ প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পান তারা সকলেই মেধাবী। প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই আসেন। এরা একদিন দেশের সকল ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেন। তাদের মেধা, মনন ও নৈতিক মানদণ্ডের উপর নির্ভর করবে সমাজ ও রাষ্ট্রের চালচিত্র। সীমাবদ্ধতা ও সমালোচনার পরেও আমার মত সকলেরই শতবর্ষী এ প্রতিষ্ঠানের কাছে ঋণী। বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক কাজ উদার, অসাম্প্রদায়িক, পরমতসহিষ্ণু, বিশ্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গির নাগরিক গড়ে তোলা। আজকাল শিক্ষার্থীদের মধ্যে এসব মানবিক বোধের বড় অভাব পরিলক্ষিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়ায় সহজে সেসব চোখে পড়ে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের যে লক্ষ্য— নতুন জ্ঞান, বিশ্বজনীন মনন তৈরির কথা ছিল মনে হয় সেসব জায়গায় আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। দীর্ঘ ২৮ বছরের অচলায়তন ভেঙে ডাকসু ও হল সংসদ চালু হয়েছে। ক্যাম্পাসে একটি শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক পুনরুজ্জীবন দরকার। শুধু উপমহাদেশে নয় দক্ষিণ এশিয়ায় জ্ঞানভিত্তিক, মানবিক, উদার ও অসাম্প্রদায়িক একটি দেশ গঠনে এ প্রতিষ্ঠান অতীতের ন্যায় গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকায় থাকবে—শতবর্ষের মাহেন্দ্রক্ষণে এ প্রত্যাশা সকলেরই।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য