প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
জহিরুল হক বাপি | ১১ মে, ২০২১
কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক নেতারা কেন সরকারি নিয়ন্ত্রণে আসতে চায় না? ইসলামি শিক্ষা ব্যাহত হবে এই জন্য? তাহলে সুন্নিদের, আলিয়া মাদ্রাসাগুলোতে কীভাবে ধর্মশিক্ষা হচ্ছে। কওমি নেতারা কওমি মাদ্রাসাকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে বা মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে নিতে চায় না, লাখ লাখ ছাত্রকে সার্টিফিকেট থেকে বঞ্চিত করছে শুধু মাত্র ব্যক্তিস্বার্থে।
কওমি মাদ্রাসাগুলোকে দেখিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে মোটা অংকের চাঁদা আনা হয় যার কোন হিসাব নাই। পুরোটাই চলে যায় নেতাদের পকেটে। তাছাড়া পুরো বছরই কওমি মাদ্রাসাগুলোতে প্রচুর পরিমাণে দান, ছদকা পড়ে। যাকাত, ফেতরা, কোরবানির চামড়া তো আছেই। সেগুলোরও হিসাব নাই। সরকারি নিয়ন্ত্রণে আসলে এই সব টাকা নেতারা, নেতাদের শিষ্য মাদ্রাসা প্রিন্সিপালেরা মেরে খেতে পারবে না। পাই-পয়সা হিসাব দিতে হবে। মামুনুল হকের ৭৬ কোটি টাকার সম্পদ কিছু না করেও!
তাছাড়া প্রতিটা কওমি মাদ্রাসাই একটা হেরেমখানা। ছোট-ছোট শিশুরা রীতিমত ‘ঘেঁটুপুত্র’। দশ বছরের কম বয়েসি ছেলেদের কে কোন রাতে হুজুরের যৌনসঙ্গী হবে সব থাকে রুটিন করা। সরকারি নিয়ন্ত্রণে আসলে এসব অসামাজিক, নৃশংস কাজ বন্ধ হবে।
এছাড়াও কওমি মাদ্রাসার শিশুরা হচ্ছে কওমি নেতাদের অস্ত্র। তেরো সাল থেকে তারা এই অস্ত্র ব্যবহারের মজা পেয়ে গেছে। তাদের স্বার্থের কারণে এই শিশুগুলোকে রাস্তায় নামিয়ে তাণ্ডব, ধ্বংসলীলা চালাতে বাধ্য করে।
এ প্রসঙ্গে ২০১৩ সালের একটা ঘটনা মনে পড়ল। ৫ মে শাপলা চত্বরের ৯০% ছিল নাবালক। ৬/৭ বছরের শিশুকেও তারা নিয়ে এসেছিল। তখন জুনায়েদ বাবুনগরীর ছেলের বয়স ছিল ১৪। বাবুনগরী তার ছেলেকে শাপলা চত্বরে আনেন নাই। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাবুনগরীর সহজ উত্তর ছিল- ‘পোলার মা আসতে দেয় নাই’। অথচ সেদিন প্রায় সব শিশুকে জোর করে, বাবাকে সমাজ ছাড়া করার ভয় দেখিয়ে, মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আনা হয়েছিল। কওমি মাদ্রাসাগুলো যদি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসে তবে শিশুদেরকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার সহজ হবে না।
কওমিওয়ালা কি ধর্মের কারণে জাতীয় সংগীত গায় না, জাতীয় পতাকা উড়ায় না? যদি তাই হয় তবে মাদ্রাসা, মসজিদের টাকা চুরি করে কীভাবে? কীভাবে কওমি মাদ্রাসাগুলো হেরেমখানা, বলৎকার কেন্দ্র হলো?
এরা জাতীয় পতাকা উড়ায় না, জাতীয় সংগীত গায় না রাজনৈতিক কারণে। এক তো পাকিস্তানপ্রীতি, দ্বিতীয় হলো সরকারকে চাপে রাখার একধরনের কৌশল। এতে সাধারণ মানুষের কাছে তারা বীর হিসাবে যেমন পরিচিত, তেমনি গান বাজনা হারাম প্রচার প্রতিষ্ঠিত করা, তেমনি তাদের মতবাদ ঠিক বলে সরকার কিছু বলতে সাহস পায় না, তেমনি পাকিস্তান আমল ভালো ছিল ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করা। তারা অনেকাংশে সফল।
কওমি মাদ্রাসাগুলোতে এখনই সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনার সময়। কারণ বর্তমানে কিছু ধর্ম ব্যবসায়ীর লোভের বলি হচ্ছে লাখ লাখ দরিদ্র মাদ্রাসা শিক্ষার্থী।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য