আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

এলএসডি মাদক: ট্রল নয়, দায়িত্বশীল হোন

জহিরুল হক বাপি  

এলএসডি ড্রাগ নিয়ে বেশিরভাগ মানুষ এমনভাবে আলোচনা করছে যে এই ভয়াবহ মাদক ‘রাজকীয়’ পরিচয় পেয়ে গেছে নিজের অজান্তেই। অপেক্ষা করেন। অপেক্ষা করেন। অপেক্ষা করেন। আমাদের অবচেতন মনের ভুলে এলএসডি যেভাবে প্রচার পেয়েছে শীঘ্রই এটা ‘ফ্যাশন, ক্রেজ’ হতে যাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ছাত্রটি নিজের গলায় দা চালিয়েছে সে যতক্ষণ পেরেছে দৌড়াতে-দৌড়াতে নিজের গলায় দা চালিয়েছে। কোন ব্যথা তাকে স্পর্শ করেনি। কি ভয়ংকর অবস্থা!

একবার চিন্তা করুন ছেলেটা যদি ওই দিনের আসক্ত অবস্থায় দৌড়াতে-দৌড়াতে নিজের গলার বদলে অন্যকে কোপানো শুরু করতো? কতজন আহত হতো? কতজন নিহত হতো? কি নৃশংস অবস্থা... জলজ্যান্ত একটা ছেলে নিজের গলায় নিজেই একের পর এক কোপ মেরে গেছে যতক্ষণ হাতে দা ধরে রাখতে পেরেছে।

এরমধ্যে পুলিশের হাতে ধরা পড়া চার এলএসডি ব্যবসায়ী ও আসক্তদের প্রতি ফেইসবুকে অনেক মেয়ে ক্রাশ খেয়েছে। নিজের অজান্তেই এলএসডিকে এমনভাবে গ্লোরিফাই করা হচ্ছে যে এর প্রতি একটা শ্রেণির হঠাৎ আগ্রহ বাড়বেই। কেউ টেস্ট করার জন্য আর কেউ হিরোইজম, স্মার্টনেস দেখানোর জন্য এই মাদক খুঁজবে।

ধরা পড়া ছেলেগুলোকে নিয়ে ট্রলের পরিবর্তে আমরা যদি মাদকের ফলে তার মানসিক অবস্থা, আচরণ ফোকাস করতাম তবে কিছুটা হলে উপকার হতো। নিজের গলায় একের পর এক দা চালানো ঢাবির ছাত্রটি ও গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের ভেতর পার্থক্য কী? ড্রাগস ব্যবসায়ী হিসাবে ধরা খেয়েছে। টিভি ক্যামেরার সামনে এসে হ্যালো বলছে হাত নেড়ে, চুলের স্টাইল করছে, হাসছে। পরিবার, সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বন্ধুবান্ধব পরিচিত সবাই টিভি দেখবে মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী হিসাবে; কিন্তু কোন বিকার নাই, উল্টা হাসিখুশি। জেল খাটার, পুলিশি জেরারও কোন ডর নাই। যেন তারা গৌরবের কাজ করেছে। তাদের এ অবস্থার কারণ এলএসডি। এর ছিল ড্রাগ নিয়ন্ত্রিত বায়োবোট। আমরা এ বিষয়টা প্রায় ফোকাস করিনি। উল্টা ট্রল করতে গিয়ে এলএসডির মার্কেটিং করেছি।

অনেকেই এলএসডির জন্ম পরিচয় নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। কারো কারো পোস্ট থেকে এলএসডি তৈরির সূত্র সম্বদ্ধে ধারণা পাওয়া যায়। এতে সুবিধা হয়েছে যে এলএসডি বানাতে না পারলেও ঐসব ফেবু, ব্লগ পোস্টের কারণে কেউ কেউ এলএসডির কাস্টমাইজ বা বাংলা ভার্সন তৈরি করবে। কি দরকার ছিল এলএসডির ঠিকুজি বা তৈরির সূত্র নিয়ে পোস্ট দেওয়ার?

এই ড্রাগ একবার নিলেও স্থায়ী মানসিক বিকারগ্রস্ততা দেখা দিতে পারে। এই ড্রাগস এতই ভয়াবহ যে পৃথিবীর সব দেশেই কঠিনতম ভাবে নিষিদ্ধ- এ সব নিয়ে পোস্ট দিলে ভালো হতো। এলএসডি একবার খেলেই নাকি কেউ কেউ সারা জীবনের জন্য ঘোরে ঢুকে, মনোজগতে কখনও কখনও স্থায়ী পরিবর্তন আসে। আমরা এসব নিয়ে পোস্ট দিলে ভালো হতো। ভালো না হলেও অন্তত খারাপ হতো না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে অনেকেই ফালতু মনে করেন। এটা তাদের অজ্ঞতা। বা নিজেকে বাস্তবতা, বর্তমান থেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই ২০১৩-এর গণআন্দোলন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জঙ্গিবাদের উত্থানের বড় হাতিয়ার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে অনেক অপরাধী ধরা পড়ছে। অনেক ক্ষমতাবান অপরাধ করে আগের মতো পার পাচ্ছে না।

সামাজিক মাধ্যমে স্পর্শকাতর সামাজিক, রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে লেখার আগে কিছুটা ভাবলে লেখাগুলো নিজ চরিত্রে রাখা যায় আর তা না হলে ভালো লেখাও কখনও কখনও বিপরীত ফল দেয়। যেমন চলমান এলএসডি ইস্যু।

জহিরুল হক বাপি, লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ