প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
রেজা ঘটক | ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১
ব্রিটিশদের ১৯০ বছর, পাকিস্তানের ২৪ বছর আর বাংলাদেশের ৫০ বছরের শাসনের ইতিহাসকে খুব সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, এই মাটিতে বারবার কেবল শাসকের পরিবর্তন হয়েছে, এদেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর আমরা যতগুলো সরকার পেয়েছি, তারাও আদতে শাসক।
খেয়াল করুন- আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কি জানতো না যে, বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৫ ডিসেম্বর থেকে রাজধানী ঢাকার প্রধান প্রধান রাস্তাগুলো অনেকটাই দেশি-বিদেশি ভিভিআইপি, ভিআইপি অতিথিদের কারণে ব্যস্ত থাকবে! অথচ সেদিন তারা এইচএসসি পরীক্ষার সিডিউল রেখেছে। শিক্ষার্থীদের এভাবে একটা ভোগান্তি ও দুর্ভোগ দেওয়ার মানে কী? এর নাম স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন?
ঢাকার ২৮১টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৮৬ হাজার ৪০৭ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেবার কথা। ১৫ ডিসেম্বর পরীক্ষা দিতে পেরেছে ৮৫ হাজার ৪০৭ জন শিক্ষার্থী। এক হাজার শিক্ষার্থী ১৫ ডিসেম্বর পরীক্ষা দিতে পারেনি। কেন পারেনি? এটা নিয়ে দেশের সংবাদ মাধ্যম পর্যন্ত দিবানিদ্রায় ছিল। ১৫ ডিসেম্বর পরীক্ষার সিডিউল রাখা হয়েছিল সকাল ১০ টা থেকে সকাল ১১.৩০ টা পর্যন্ত।
সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিমানবন্দর থেকে ভিআইপিদের যাতায়াতের কারণেই অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে পারেনি। এই দায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের, শিক্ষা বোর্ডের। একজন শিক্ষার্থীর এইচএসসি পরীক্ষা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অদূরদর্শিতার কারণে এখন এই এক হাজার শিক্ষার্থীর জীবনে কী হবে? একটা বছর যে তারা জীবন থেকে পিছিয়ে গেল এটা শিক্ষাবোর্ডের নজরে থাকল না কেন?
তারা কীসে ব্যস্ত ছিল যে তারা সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানসূচির সাথে তাল মিলিয়ে পরীক্ষার সিডিউল করতে ব্যর্থ হয়েছে? বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ঠিক আগ মুহূর্তে এই এক হাজার শিক্ষার্থীর কী অপরাধ? তারা কেন পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে না? শিক্ষা বোর্ডের এই অবজ্ঞার জন্য এদেশে কি আদৌ কোনো জবাবদিহির ব্যবস্থা হবে?
মাত্র দেড় ঘণ্টার পরীক্ষার জন্য ঢাকার ৮৬ হাজার ৪০৭ জন শিক্ষার্থীর ১৫ ডিসেম্বর জীবন থেকে কত ঘণ্টা নষ্ট হয়েছে? রাষ্ট্রের কেউ খোঁজ নিয়েছে? স্বাধীনতার ৫০ বছর হয়ে গেলেও এসব আদতে মানা যায় না। এটা ঠাণ্ডা মাথায় ক্রাইম।
আমি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের (যারা পরীক্ষার সিডিউল করেছিলেন) তাদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি। আর এইচএসসি শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে এধরনের ছিনিমিনি খেলার জন্য তাদের প্রতিবাদ জানাই।
জয় বাংলা
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য