আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

ডিসেম্বরের গাত্রদাহ কিংবা ধান্দাবাজির কেচ্ছা!

ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ  

ডিসেম্বর মাস আসলে এদেশে একশ্রেণির মানুষের চরমমাত্রায় গাত্রদাহ শুরু হয়। একাত্তরে তাদের কিংবা তাদের পূর্বসূরিদের পরাজয়ের পুরোনো ব্যথাটা এই ডিসেম্বরে আবার নতুন করে চাগিয়ে ওঠে। ব্যথাটা এতোই চাগিয়ে উঠে যে তাদের কেউ কেউ বেসামাল পাগলপ্রায় হয়ে যায়! তেমনই দু'টো কেচ্ছা বলি, শুনুন।

এই ডিসেম্বর মাসের এক সকালে ঘুম থেকে উঠে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কী যেন হলো, তিনি দুম করে বলে বসলেন- 'তারেক রহমান একজন শিশু মুক্তিযোদ্ধা!' তারপরের দিন সকাল পর্যন্তও তার বেসামাল অবস্থা কাটলো না। সেদিন তিনি বললেন- 'খালেদা জিয়া এদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা!' এরপরের দিন সকালেও তার ঘোর কাটলো না। তিনি বললেন- 'তারেক ও কোকোর হাত ধরে খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন!' এরপরের দিন তার ডোজটা এতো বেশি হয়ে গেলো যে তিনি বললেন- 'আওয়ামী লীগই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে!'

বলতে বাধ্য হচ্ছি- দেশে যে এতো মেয়াদোত্তীর্ণ নেশাপণ্য বিক্রি হচ্ছে, 'বিএসটিআই' কী করছে! তারা কি আজকাল পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ করছে না?

যাইহোক, এতো গেলো বিএনপির ফখরুলনামা, এবার আসুন সরকার ও প্রশাসনে লুকিয়ে থাকা কিছু বর্ণচোরাদের কেচ্ছা বলা যাক যারা তলে তলে সিঁদ কেটে নৌকা ফুটো করে দিচ্ছে! গত ২০ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং সিলেট জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো 'বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ'। তো এই অনুষ্ঠানে সামনের সারির সফেদ সাদা কাপড়ে মোড়ানো প্রেস্টিজিয়াস চেয়ারগুলো সংরক্ষিত রাখা হয় রাজনীতিবিদদের জন্য আর পেছনের সারির প্লাস্টিকের মলিন চেয়ারগুলো বরাদ্দ রাখা হয় জাতির শ্রেষ্ঠসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য! যাদের নামে এই আয়োজন তাদেরকেই তুচ্ছতাচ্ছিল্য আর অবহেলা!

বস্তুত: মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এমন আয়োজনে ইদানীংকালে সরকার ও প্রশাসনের যারা সংশ্লিষ্ট হচ্ছেন তারা আদৌ মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন কিনা তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। যদি তারা সত্যিকারার্থেই মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করতেন তাহলে মুজিব শতবর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাজানো বঙ্গবন্ধুর ভাষণে কারিগরি ভুল করা হতো না।

যদি তারা সত্যিকারার্থেই মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করতেন তাহলে এবারের বিজয় দিবসের উৎসবে 'মুজিববর্ষ'কে ভুল করে 'মুজিবর্ষ' লেখা হতো না। যদি তারা সত্যিকারার্থেই মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করতেন তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে আয়োজিত 'বীর মুক্তিযোদ্ধা' সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধাদেরকেই অযত্নে অবহেলায় পেছনের ধুলোমাখা মলিন প্লাস্টিকের চেয়ারে বসিয়ে রাজনীতিবিদদেরকে সামনের রাজসিক চেয়ারে বসানো হতো না।

আসলে 'মুক্তিযুদ্ধ' ব্যাপারটা আমাদের কাছে যেমন এক অবিনাশী চেতনার নাম তেমনি একশ্রেণির অসাধু ফরিয়াদের কাছে এই 'মুক্তিযুদ্ধ' একটি ধান্দার নাম! এই ধান্দা ভাঙিয়ে তারা অবলীলায় ঢুকে যাচ্ছে সরকার ও প্রশাসনের কেন্দ্রে, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের নামে লুটেপুটে খাচ্ছে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা।

ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ, সাবেক সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)।

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ