আজ সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪

Advertise

অশান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি: আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের দায় আমাদেরও

এখলাসুর রহমান  

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ১১.২৮ পার্সেন্ট ভোটার ভোট কেন্দ্রে গেল। আওয়ামী লীগের প্রার্থী পেলেন ৯ পার্সেন্ট ভোট। কেন এই আসনে কি আওয়ামী লীগের মাত্র এই পরিমাণ ভোটই ছিলো? এরপর এরপর হল চট্টগ্রাম-১০। মাইকিং করা হলো ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে তবু ভোটার উপস্থিতি হল ১১ শতাংশ। বাকি ৮৯ শতাংশ কেন ভোট কেন্দ্রে গেলো না? নেত্রকোনা-৪ এ উপনির্বাচন। কোন দল ও স্বতন্ত্র কেউ প্রার্থী হলো না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেল প্রার্থী। এসব উপনির্বাচন গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

উপনির্বাচনে বিজয়ী এমপিরা একাদশ সংসদের সদস্য। অক্টোবরে দ্বাদশ সংসদের তফসিল ঘোষণা হলে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ঝাঁপ শুরু হবে। এবারের জাতীয় নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের যে কড়া দৃষ্টি থাকবে তা নিশ্চিত। কথা হচ্ছে জাতিসংঘ কর্তৃক নির্বাচনী শান্তিরক্ষী মিশন পাঠানোরও। কেউ চাচ্ছে কেয়ারটেকার সরকার, কেউ চাচ্ছে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার, কেউ চাচ্ছে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন। চলছে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি। এখন আবার সক্রিয় হচ্ছে ১৪ দল। যে ১৪ দলকে আওয়ামী লীগ একবার বলেছিল বিরোধী দল হয়ে যেতে। সরকার পরিচালনায় তারা এক দলীয় সিদ্ধান্তে চলেছে। মন্ত্রিসভা হতে ১৪ দলের শরীকদের বাদ দিয়েছে। ১৪ দলের কোন বৈঠকও হতো না।

আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ সোচ্চার হলেই ১৪ দল শরীকদের কদর বাড়ে। কদর বাড়ে প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হলে। যেমন কদর ছিল চারদলীয় জোট সরকারের আমলে। শরীকরাও পড়েছে মহা বিপাকে। প্রতিপক্ষ বিএনপি এলে জেগে উঠবে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি, জেগে উঠবে জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্তায়নের কালো অধ্যায়। আওয়ামী লীগ সেটা জানে তাই শরীকদের নিয়ে ভাবে তোমাদের মূল্যায়ন করলেই কি? না করলেই কি? তোমরা যাবে কোথায় আমাদের সাথেই থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের একগুয়েমি, ঔদ্ধত্য, দলান্ধ হয়ে দুর্বৃত্তায়ন প্রশ্রয়, আমলা ও স্তুতিকার নির্ভরতার কারণেই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির এই শাসনকাল আজ দেশে বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

১৪ দল দলগত ভাবে সরকার পরিচালনা করলে আজ তাকে একদলীয় ফ্যাসিস্ট সরকার বলতে পারতো না। আর সব বিষয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোহাই দেয়া হয়। বিএনপি সমাবেশ ডেকেছে ডাকুক। পাল্টাপাল্টি এই দিনেই কেন সমাবেশ ডাকতে হবে? আর বক্তারা বক্তৃতায় বলে শেখ হাসিনার নির্দেশে এই শান্তি সমাবেশ। এভাবেই সবক্ষেত্রেই শেখ হাসিনার দোহাই দিয়ে দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু যে একজনের হাতে তাই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ১৪ দল সবসময় সক্রিয় থাকলে এই বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। সবাই প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে না থেকে সিদ্ধান্ত নিতো যদি মন্ত্রীসভা তাহলেও এমন বৈরি পারিপার্শ্বিকতার সৃষ্টি হতো না।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হওয়া গৌরবের নয়, লজ্জার। তারা কিসের জনপ্রতিনিধি তাদের জনপ্রতিনিধি হওয়ার পেছনে কি জনগণের কোন ভূমিকা আছে? তাদের জনপ্রতিনিধি না বলে সুযোগ প্রতিনিধি বলা যায়। ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ১১ শতাংশকে ক্রস করতে পারলো না। এগুলো কি গণতন্ত্রের লজ্জা নয়? এক্ষেত্রে বিজয়ী ঘোষণার আগে ন্যুনতম একটা ভোটার উপস্থিতির শর্ত দেয়া উচিত নয় কি? বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা প্রার্থীর বেলায় ভোটারদের ভূমিকা ০ পার্সেন্ট আর নামকাওয়াস্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বেলায় ১১ ও ১১.২৮ পার্সেন্ট। গণতন্ত্রের এমন দুর্বলতা চরম অমঙ্গলের বার্তাই বয়ে আনে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘকে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ এসব দুর্বলতাই করে দিয়েছে। গোটা আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনের দিকে। যারা বিদেশী হস্তক্ষেপের সমালোচনা করছেন তারা কি অভ্যন্তরীণ চরম দুর্বলতার দায় এড়াতে পারেন? জাতিসংঘ যদি সত্যি সত্যি শান্তিরক্ষী মিশন পাঠায় সেটা কি আমাদের জন্য চরম লজ্জার হবে না? হবে না চরম ব্যর্থতার কুফল? ২০০৬ সালেও এমন দ্বিপক্ষীয় চরম বিরোধিতাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। ফল হয়েছিল নির্বাচন ভণ্ডুল। এবারও কী হয় কী হয় এনিয়েও জনমনে দেখা দিয়েছে দারুণ শঙ্কা।

এখলাসুর রহমান, লেখক ও কলামিস্ট

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৮ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০৩ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৭ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ