আজ বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪

Advertise

আমেরিকার ভিসানীতি: বিএনপির খুশি ও আওয়ামী লীগের শঙ্কার কারণ দেখি না

ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ  

আমেরিকার ভিসানীতি নিয়ে বেশ খোশ মেজাজে আছে বিএনপি- বামসহ সকল বিরোধীপক্ষ। তাদের এতো খুশির কারণ কী সেটাই বোধগম্য হচ্ছে না।

আমেরিকা বলছে যারা সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অন্তরায় হবে তাদের বিরুদ্ধেই ভিসানীতি কার্যকর হবে। আমেরিকার এই বক্তব্য যদি সঠিক হয়, যদি অন্তরালে তাদের অন্যকোন কূটনীতি বা অন্যকোন কারসাজি না থাকে তাহলে তো বিএনপির এতো খুশি হওয়ার কোন কারণ দেখি না, আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই ভিসানীতি নিয়ে আওয়ামী লীগেরও শঙ্কার কোন কারণ দেখি না।

বিএনপি যদি আসন্ন নির্বাচন ভণ্ডুল করতে চায়, তাহলে তাদেরকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে থেকেই বিশৃঙ্খলা বা অরাজকতা করে সারাদেশে একটি ভয়াবহ প্রশাসনিক সঙ্কট তৈরি করতে হবে যেটা তারা বিগত নির্বাচনগুলোর প্রাক্কালে করেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থই হয়েছে। সুতরাং বিএনপি'র দৌড় আমাদের জানা হয়ে গিয়েছে। তারপরও যদি প্রশাসনিক সঙ্কট তৈরির প্রয়াসে বিএনপি আবারও এমন বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা করে তাহলে তো তাদেরই বরং আমেরিকার ভিসানীতির আওতায় পড়ার কথা।

আবার যদি তারা বিশৃঙ্খলা অরাজকতা (বা জনবান্ধব আন্দোলন যেটাই হোক) করে সরকারকে টলাতে না পারে, তাহলে নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে যথানিয়মেই অনুষ্ঠিত হবে। সুতরাং বিএনপির তো 'ডাঙায় বাঘ জলে কুমির'র মতো অবস্থা। সুতরাং আমেরিকার ভিসানীতি নিয়ে তো তাদেরই বিচলিত হওয়ার কথা।

অন্যদিকে, সংবিধান অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সরকার যদি একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন করতে পারে, তাহলে আওয়ামী লীগের শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ দেখি না। যদি নির্বাচন সুষ্ঠু না হয়, যদি নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে, যদি নির্বাচনে কারচুপির কোন প্রমাণ মেলে শুধুমাত্র তখনই আওয়ামী লীগের নেতাদের উপর আমেরিকার ভিসানীতির খড়গ নেমে আসবে। হিসেবমতে তার আগে তাদের উপর ভিসানীতি আসার কথা নয়। কারণ নির্বাচনে উপরোল্লিখিত অনিয়মগুলো হয়েছে কিনা, তা নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগেই বলা সম্ভব নয়। সুতরাং নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের জন্য আমেরিকার ভিসানীতি কোনভাবেই প্রযোজ্য হওয়ার কথা নয়। নির্বাচনের আগে আমেরিকার ভিসানীতি আওয়ামী লীগের উপর নাল অ্যান্ড ভয়েড।

কিন্তু চিত্র যদি উল্টো হয়, যদি নির্বাচনের আগেই আমেরিকা আওয়ামী লীগের নেতাদের উপর ভিসানীতি প্রয়োগ করে তাহলে বুঝতে হবে তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন; সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন তাদের উদ্দেশ্য নয়। তখন বুঝতে হবে নির্বাচনকে সামনে রেখে 'সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন' শব্দগুলোকে তারা আসলে মোড়ক হিসেবে ব্যবহার করছে, অন্তরালে তারা অন্য খেলা খেলতে চাইছে।

যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের জাতীয় সংবিধানে নির্বাচন সংক্রান্ত সর্বশেষ সংবিধি কোন কারণে পুনঃপরিবর্তিত হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এই সংবিধির বাইরে যাওয়ার সুযোগ আওয়ামী লীগ সরকারের নেই; এটাই সত্য, সত্য এবং সত্য।

বিএনপির দাবি অনুযায়ী আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পথে না হাঁটলেও আমেরিকার কিছু করার নেই, তাদেরকে ভিসানীতির ফাঁদে ফাঁসানোরও সুযোগ নেই। কারণ আমার দেশের নির্বাচন আমার দেশের সংবিধান অনুযায়ীই হবে, এখানে আমেরিকা কেন পৃথিবীর কোন দেশেরই আওয়ামী লীগের উপর খবরদারি করার সুযোগ নেই।

তারপরও যদি আমেরিকা নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগের নেতাদের উপর কিংবা প্রশাসনিক মেশিনারির উপর সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দোহাই দিয়ে ভিসানীতি প্রয়োগ করে তবে নিশ্চিতভাবেই ধরে নেওয়া যাবে যে আমেরিকার উদ্দেশ্য সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নয়, তাদের উদ্দেশ্য যেকোনো উপায়ে শেখ হাসিনার সরকারকে হটানো!

এটাই যদি হয় আমেরিকার উদ্দেশ্য তাহলেও বিএনপি'র এতো খুশি হওয়ার কোন কারণ দেখি না, কারণ একাত্তরেও আমেরিকা পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশ তথা আওয়ামী লীগের বিপক্ষে খেলেছিলও এবং সেই খেলায় তারা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছিলো, এবারো তারা নিশ্চিতভাবেই পরাজিত হবে, ইনশাল্লাহ।

বিএনপিকে ভুলে গেলে চলবে না, কোন মেজরের বন্দুকের নলের ডগায় আওয়ামী লীগের জন্ম হয়নি, বরং এদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের তৃণমূল মানুষের রক্ত ঘাম আর শ্রমের বিনিময়েই আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে।

এখন পর্যন্ত এদেশের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া আর রূপসা থেকে পাথুরিয়া প্রতিটি গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-নগরে, পথে-ঘাটে, হাটে-বাজারে ও মাঠে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে বিপুল বিধ্বংসী নিঃস্বার্থ ও ত্যাগী রিজার্ভ ফোর্স রয়েছে তা শুধু আমেরিকার ভিসানীতি নয় বরং যে কোন ষড়যন্ত্রই ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিতে যথেষ্ট।

ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ, সাবেক সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)।

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৮ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০৪ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৮ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ