আজ বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫

Advertise

তাঁরাও কি বিচার পাবে?

এস এম নাদিম মাহমুদ  

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) তথ্যমতে প্রাণক্ষয়ী আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত ৩২৭ জন এবং ৪ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫৪৮ জনসহ মোট ৮৭৫ জন নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী, সাংবাদিক, পেশাজীবী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, শিশু ও নারীসহ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা রয়েছে।

আমি নিশ্চিত নই, তারা কেন নিহতের সংখ্যা ১৬ জুলাই-৩ আগস্ট এবং ৪ আগস্ট থেকে চলমান সময় পর্যন্ত একটা টাইমলাইন ধরেছে। কেন ১৬ জুলাই থেকে আগস্ট ৫ কিংবা শেখ হাসিনা ক্ষমতা ত্যাগের আগে ঠিক কতজন মানুষ মরেছে, সেই হিসেব কষতে কেন কষ্ট হচ্ছে?

কারণটি যাই হোক, প্রথম আলোর গত ১২ আগস্ট একটি প্রতিবেদনের তথ্য বলছে ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ৪৩৩ জন মানুষ নিহত হয়েছে। এইচআরএসএস সাথে হিসেব কষলে ৪৪২ জন মানুষ মরেছে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ত্যাগের পর।

পত্রিকার খবর অনুযায়ী, ৪ থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ৮৭ জন এবং বিএনপির ১২ জন মারা গিয়েছে। আর পুলিশ ওই দুদিনে ৩৬ জন।

আমরা যদি কেবল এই হিসেবটুকুকে সামনে আনি তাহলে দেখা যাচ্ছে যে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনার আজ্ঞা পেয়ে পুলিশ, র‍্যাব কিংবা তার দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা নিশ্চয় ৮৭৫ জনের মধ্যে এই ৪৪২ জন খুনের ঘটনা ঘটেনি?

তর্কের খাতিরে যদি আমরা ধরেও নিই গুলিবিদ্ধ আহতদের মধ্যে আরো ১৪০ জন মারা গিয়েছে, তাহলে বাকি এইসব খুনের দায়ভার কার কাঁধে উঠবে? মোট হত্যাকাণ্ডের যদি অর্ধেক শেখ হাসিনা সরকার করে তাহলে বাকি অর্ধেক কারা করেছিল? পুলিশের গুলিতে যারা মারা গেছেন তারা যদি শহিদ হয় তাহলে বিক্ষুব্ধ জনতার নামে সন্ত্রাসী কায়দায়, উলঙ্গ করে, পা ঝুলিয়ে যাঁদের মেরে ফেলা হয়েছে, গর্ভের সন্তানসহ যাকে পিটিয়ে মারা হলো তারা কি শহিদের হিসেবের খাতায় থাকবে?

এই খুনগুলো যারা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করেছে? ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ কর্মীদের পরিবার কিংবা নিহত পুলিশ সদস্যের পক্ষে কেউ কি মামলা করতে পেরেছে? কিংবা কাউকে গ্রেপ্তার করা গেছে?

যদি না পারে, তাহলে প্রাণের মূল্যের উচ্চবিত্ত-নিম্নবিত্ত চলে আসবে। একদল মানুষ বিচারের জন্য আদালতে যাবে আর একদল যেতে পারবে না, যা রাষ্ট্রের দ্বিচারিতার সামিল।

সারাদিন যারা ইনসাফের কথা বলে, যারা সাম্য ও ন্যায়ের গীত শোনান তারা কি পুলিশ হত্যার বিচার চায়? কিংবা কতৃত্ববাদী সরকারের অনুসারীদের হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি দেখতে চায়?

নাকি চারশো হত্যার জন্য বাকি চারশো হত্যাকে বিজয় উদযাপনের নামে চালিয়ে দেয়া যেতে পারে।

আপনি যখন জুলাই আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছেন, শেখ হাসিনা ও তার সাগরেদদের ফাঁসি দাবি করছেন, দয়া করে আপনার/আমার মাঝে লুকিয়ে থাকা এইসব ফাঁসি দাবির অন্তরালে থাকা খুনিগুলোর বিচার চান। গণপিটুনির হত্যা আর গুলিতে হত্যার কোন তফাত নেই, কারণ দুটোতে প্রাণ থাকে, প্রাণের সাথে জড়িয়ে থাকে পরিবার ও কিছু স্বপ্ন।

প্রতিটি হত্যার বিচার হোক, খুনিদের চিহিৃত করে শাস্তির আওয়তায় আনা হোক।

এস এম নাদিম মাহমুদ, গবেষক, ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অধ্যাপক ডা. শেখ মো. নাজমুল হাসান ২৭ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৮ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৫ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৪ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৮ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১১০ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪৫ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩২ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪৩ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯৪ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ২৫ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ শাখাওয়াত লিটন শাবলু শাহাবউদ্দিন