প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
ফরিদ আহমেদ | ০৩ নভেম্বর, ২০১৫
পূর্নেন্দু পত্রীর জনপ্রিয় কাব্য 'কথোপকথন' এর নায়িকা নন্দিনী ক্রমাগত বন্ধুদের মৃত্যু সংবাদ শুনতে শুনতে বিমর্ষ হয়ে তার প্রেমিক শুভংকরকে বলেছিলো যে, 'লোকাল ট্রেনের মত বেশ ঘন ঘন মৃত্যু আসছে যাচ্ছে আজকাল।' নন্দিনীর বলা সেই কথার মতো করে ঘন ঘন করে মৃত্যু নেমে আসছে আজ বাংলাদেশে।
জন্ম নিলে, মৃত্যু হবে একদিন। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু, বাংলাদেশে এই মৃত্যুর মিছিল প্রাকৃতিকভাবে আসছে না। আসছে একদল উন্মত্ত, বিকৃতরুচির, বীভৎসপ্রিয়, রক্ত-পিপাসু ধর্মান্ধদের হাত ধরে। তাদের চাপাতির এলোপাতাড়ি কোপে মুক্ত চিন্তার মানুষগুলো হারিয়ে যাচ্ছে দূরের সমুদ্রে একে একে । আকাশের তারাগুলো আলোহারা হয়ে নিভে যাচ্ছে একে একে অকালে।
এই তো মাত্র সেদিন অভিজিৎ গেলো, তারপর একে একে গেলো বাবু, অনন্ত, নীল। এদের যাবার মিছিল শেষ না হতেই দীপন গেলো। এখানেই শেষ নয়, আসছে দিনগুলোতে আরো যাবে। আরো অসংখ্য রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত, শোকাতুর বিদায় দেখতে হবে আমাদের। আরো অসংখ্য প্রিয় মানুষ হারিয়ে যাবে কুয়াশার আড়ালে, আরো অসংখ্য সৃষ্টিশীল সজীব মানুষ নিমেষেই পরিণত হবে নির্জীব লাশে। মৃত্যু উপত্যকা আজ আমার দেশ। বাতাসে মৃত্যুর ভয়াল ফিসফিসানি, আঁধার ঘেরা আকাশে উড়ছে অসংখ্য শকুন, জনারণ্যে নির্ভয়ে ঘুরছে একদল হিংস্র হায়েনা, তাদের সম্মিলিত অট্টহাসিতে প্রকম্পিত বাংলাদেশের স্থবির হৃৎপিণ্ড।
গত আটমাসে বাংলাদেশে চাপাতির আঘাতে মারা গিয়েছে পাঁচজন, গুরুতরভাবে আহত হয়েছে চারজন। এটি একটি বিস্ময়কর এবং গভীর বেদনার বিষয়। প্রতিটা হত্যাকাণ্ডের পরেই সুস্থবুদ্ধিসম্পন্ন, মানবিক মানুষেরা নানাভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কেউ এর জন্য রাস্তায় নেমেছেন, কেউ কলম হাতে তুলে নিয়েছেন শক্ত করে, অসির বিরুদ্ধে মসির শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে নেমেছেন কলম দিয়ে, কেউ বা থানা-পুলিশ, আদালতে ছুটোছুটি করেছেন এর সমাধানের জন্য। এগুলোই হচ্ছে সুসভ্য প্রতিবাদের ভাষা।
যে নৃশংসতা আজ বাংলাদেশে ঘটছে, তাকে বন্ধ করার জন্য এগুলোই যথেষ্ট হওয়া উচিত ছিলো। কিন্তু, হয় নি। আমাদের দুর্ভাগ্য, এই প্রতিবাদগুলোকে যথেষ্ট বলে মনে হয় নি রাষ্ট্রের কাছে। উন্নাসিক এক উদাসিনতা প্রদর্শন করে গিয়েছে সরকারের হর্তাকর্তা ব্যক্তিরা, আইন শৃঙখলায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গরা। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটা, এবং সেগুলোর ব্যর্থ প্রতিবাদ জানাতে জানাতে যখন সবাই ক্লান্ত, বিধ্বস্ত, বিপর্যস্ত, বিমর্ষ এবং বিতশ্রদ্ধ, ঠিক তখনি সবচেয়ে সঠিক এবং সময়ের সেরা প্রতিবাদটি জানিয়েছেন একজন শোকাহত পিতা।
গত শনিবার (৩১ অক্টোবর) দিনের বেলায়, আজিজ মার্কেটের মতো কর্মব্যস্ত এবং জনবহুল এলাকায়, প্রকাশনী সংস্থার অফিসে ঢুকে, জোর করে চেপে ধরে জবাই করা হয়েছে এর স্বত্ত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপনকে। ব্যক্তিগতভাবে দীপন কোনো অন্যায় করেন নি। সজ্জন মানুষ ছিলেন তিনি। তাঁর একমাত্র অপরাধ তিনি অভিজিৎ রায়ের লিখিত বই 'বিশ্বাসের ভাইরাস' প্রকাশ করেছিলেন।
বই প্রকাশ করার 'অপরাধ' করে হত্যার শিকার হবার ঘটনা এই উপমহাদেশে এটি দ্বিতীয়। বাংলাদেশে এ নজীর এই প্রথমবারের মতোন। উপমহাদেশে প্রথম হত্যার শিকার হয়েছিলেন রাজপাল মালহোত্রা নামের একজন প্রকাশক। সেটা সেই ঊনিশ শ' পয়ত্রিশ সালে। 'রঙ্গিলা রাসুল' নামের একটা বই প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এ ‘অপরাধে’ তাঁকে ছুরি মেরে হত্যা করেছিলো ইলমুদ্দিন নামের এক তরুণ ধর্মান্ধ জঙ্গি। বাংলাদেশে ছুরির বদলে চাপাতি ব্যবহৃত হয়েছে, এই যা পার্থক্য।
দীপনের হত্যার পরেই সবাইকে অবাক করে দিয়ে তাঁরা বাবা জানান যে, এই হত্যার বিচার তিনি চান না। কারণ, এই হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক। এদেশে সুবিচার বলে কিছু নেই। নিয়ম রক্ষার জন্য ছেলের হত্যার জন্য মামলা হয়তো তিনি করবেন, কিন্তু কারো কাছ থেকে কোনো প্রত্যাশা তাঁর নেই। অভিনব এই প্রতিবাদটিই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে যে বর্বর কর্মকাণ্ড ঘটছে তার বিরুদ্ধে সেরা প্রতিবাদ।
দীপনের বাবার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন এই ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের প্রথম দিককার শিকার অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী বন্যা আহমেদও। বন্যা নিজেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। জানে বেঁচে গেছেন তিনি গুরুতরভাবে আহত হবার পরেও। তিনিও এই সরকারের কাছে অভিজিৎ হত্যার বিচার চান না বলে জানিয়েছেন। তবে, অধ্যাপক হক যেখানে বিচার না হবার সংস্কৃতির কারণে বিচার চাইতে অনিচ্ছুক, সেখানে বন্যা আহমেদ আরো এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে এই সব হত্যাকাণ্ডের জন্য সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছেন। ফলে, এদেরই কাছে বিচার চাইতে তাঁর তীব্র অনীহা। তিনি লিখেছেন, ‘এই সরকারের কাছ থেকেও কিছু চাওয়ার নেই আমাদের, একটাই অনুরোধ ওনাদের কাছে, দয়া করে দিনরাত আর ‘আমরা সেক্যুলার পার্টি’ বলে গলা ফাটিয়ে নিজেদের এনার্জি নষ্ট করবেন না। আপনারা আপনাদের লক্ষ্য পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত চুপ করেই থাকুন; অভিজিৎ, অনন্ত, রাজিব, নিলয়, বাবু, দীপনরা আপনাদের জন্য একেকটা স্কোর কার্ড। আপনারা বুক ফুলিয়ে বলে যান যে সবই ‘রাজনৈতিক খেলা’ সবই ‘পারসেপশান’। মৌলবাদীদের চাপাতিতে নিশ্চুপভাবে তেল দিয়ে যান, না হলে আপনাদের ভোট কমে যেতে পারে। আপনারা খুব ভালো করে জানেন যে আপনাদের মৌনতাই ওদের অস্ত্রে শান দিতে সহায়তা করে যাচ্ছে। হয়তো আমরা দিনের বেলায় ভুল করে একে নিশ্চুপতা ভাবি। কে জানে, রাতের অন্ধকারে আপনারা হয়তো মুখর হয়ে ওঠেন, ভোট ভাগাভাগি করে নেওয়ার খেলায় যোগ দেন তাদের সাথে।'
আমি অবশ্য এই বিচার চাওয়ার বিষয়টা ঠিক বুঝি না। কোনো একটা দেশে অপরাধ সংগঠিত হলে বা কেউ আহত হলে বা খুন হলে, এটি সরকারেরই দায়িত্বের মধ্যে পড়ে তার প্রতিকারের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার, সেই অপরাধের সাথেও সংশ্লিষ্টদের খুঁজে বের করে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা। এর জন্য বিচার চাওয়া বা বিচার দাবি করার কিছু নেই। বিচার চাইতে হলে বা দাবি করতে হলেই বুঝতে হবে যে সেই দেশে আইনের শাসন অনুপস্থিত রয়েছে। বাংলাদেশে যে ঘন ঘন বিচার চাওয়া হয় বা বিচার দাবি করা হয়, তা এই আইনের শাসনের অনুপস্থিতির জন্যই করা হয়।
বন্যা আহমেদ হত্যাকাণ্ডের জন্য সরকারের দিকে যে অঙুলি তুলেছেন, তার সত্যতা এই মুহুর্তে যাচাই করাটা অত্যন্ত দুরূহ একটা কাজ। এই বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রমাণের জন্য আমাদের হয়তো অপেক্ষায় থাকতে হবে অনেকগুলো দিন, অনেকগুলো মাস, বা অনেকগুলো বছর। হত্যাকাণ্ডে সরকারের কোনো একটা অংশের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হলেও, এই ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডে সরকারের দায়কে অস্বীকার করা যায় না কিছুতেই। সেই শুরু থেকেই সরকার এক ধরনের নির্লিপ্ততা দেখিয়েছে এতে। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে তাঁরা চরমভাবে, কিংবা বুঝলেও, সেটাকে থামানোর কোনো ইচ্ছা বা আগ্রহ তাঁদের ছিলো না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও এখন পর্যন্ত বুঝতে অক্ষম হচ্ছেন যে, এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, একটি মহা পরিকল্পনার অংশ হিসাবে এই সব হত্যাকাণ্ড একের পর এক সংঘটিত হচ্ছে। এই পাঁচ খুনেই সমাপ্তি ঘটবে না এই হত্যা উৎসবের, এই মহাযজ্ঞের। আগামী এক মাস বা দুই মাসের মধ্যেই ঘটবে আরো একটি হত্যাকাণ্ড, তারপর আবার প্রায় সমান ব্যবধান রেখে বা তারও আগে রক্ত এবং জীবন ঝরবে অন্য কোনো তরুণ বা যুবকের কিংবা তরুণী অথবা যুবতীর।
যাঁরা খুন হচ্ছেন, তাঁদের গায়ে নাস্তিকতার ছাপ মারা দেখেই হয়তো সরকারী দলের এই দ্বিধাদ্বন্দ্ব, এই মৌনতা, এই পিছনে হটে যাবার প্রানান্তকর প্রচেষ্টা। এদের সমর্থনে কথা বলতে গেলে গায়ে নাস্তিকতার ট্যাগ লেগে যেতে পারে, ফলশ্রুতিতে ধর্মীয় ভোটের জায়গাতে ভাটা লাগতে পারে, এই হিসাব হয়তো ক্ষমতাসীনদেরকে ভীত করে রেখেছে। আমরা দেখেছি, যখন রাজীব হায়দারকে হত্যা করা হলো তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের শহীদ হিসাবে অভিহিত করেছিলেন। কিন্তু, এর পরই সেই অবস্থান অত্যন্ত থেকে দ্রুতগতিতে সরে আসে সরকারী দল।
প্রধানমন্ত্রী তনয় সজীব ওয়াজেদ জয় রয়টার্সকে বলেন যে, “আমরা (আওয়ামী লীগ) নাস্তিক হিসেবে পরিচিত হতে চাই না। তবে এতে আমাদের মূল আদর্শের কোনো বিচ্যুতি হবে না। আমরা ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী।” যদিও সজীব ওয়াজেদ জয় আওয়ামী লীগের কোনো গুরুত্বপুর্ণ পদে বহাল নেই, কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর সন্তান হিসাবে তিনি বিশেষ ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন। তাঁর বক্তব্যই যে আওয়ামী লীগের সরকারী ভাষ্য, তাতে কোনো সন্দেহ থাকার কারণ নেই।
এক সময়কার ধর্ম নিরপেক্ষ আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের এই গা বাঁচানোর প্রচেষ্টাই খুব সম্ভবত সবকিছুকে এতোখানি খারাপ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। জঙ্গিরা জয়ের এই বক্তব্যে ভয় পাবার বদলে উৎসাহিত হয়েছে। অধ্যাপক জাফর ইকবাল যেমন বলেছেন, “হত্যাকাণ্ডকে স্পর্শকাতর বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যে স্টেইটমেন্ট দিয়েছেন, তা মৌলবাদীদের জন্য একটা গ্রিন সিগনাল। “মনে হচ্ছে, তোমরা (জঙ্গিরা) এভাবে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাও, সরকার কিছুই করবে না। একজন একজন করে মারা হবে, সরকার কোনো কথা বলবে না।”
পুলিশ আসামী ধরার ক্ষেত্রে কিংবা এই হত্যাকাণ্ডের যে শিকড়, সেই শিকড় উপড়ে ফেলতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়েছে। গত আট মাসে ছয় ছয়টা আক্রমণ হয়েছে একই কায়দা একই ধরনের মানুষের উপরে। বাংলাদেশের পুলিশ বা গোয়েন্দা বিভাগ এর কোনো হদিস করতে পারছে না, এটা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। হ্যাঁ, এটা সত্যি যে বাংলাদেশের পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলি উন্নত বিশ্বের মতো সুপ্রশিক্ষিত নয় বা তাদের লজিস্টিক সাপোর্টও সুউন্নত নয়। কিন্তু, বাংলাদেশের এই সংস্থাগুলোর এরকমও দৈন্যদশা নয় যে, স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ধারাবাহিকভাবে এতোগুলো হত্যাকাণ্ড হলেও, এর কোনো সুরাহা তারা করতে পারবে না। তাহলে, বিষয়টা কি এমন যে, তারাও সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার জন্যই অপেক্ষমান? সরকারের কোনো রাজনৈতিক সদিচ্ছামূলক সিদ্ধান্ত নেই বলেই এই নিমীলিত নয়ন, এই নিঝুম নীরবতা, এই নিষ্করুণ নিষ্ক্রিয়তা?
শুধু নিষ্ক্রিয় থাকলেও কথা ছিলো। ধর্মান্ধদের চাপাতির বদলে অনেকেই হাতে তুলে নিয়েছিলো কলম এবং কিবোর্ড। এই দুই অস্ত্র ব্যবহার করে জঙ্গিদের সাথে লড়াইয়ে নামতে চেয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু সেই তাদেরকেও থামিয়ে দিয়েছে সরকার আইসিটি এক্ট সাতান্ন করে। এই ধারা অনুযায়ী ধর্ম নিয়ে সামান্যতম সমালোচনা করলেই, যে কাউকেই ধরে নিয়ে যেতে পারে পুলিশ। জঙ্গি মোল্লা এবং নাস্তিকদের লড়াইয়ে এমনিতে নাস্তিকরা কোণঠাসা, সেই কোণঠাসাকে অবস্থানকে এই ধারার এবং এর তড়িৎ প্রয়োগের মাধ্যমে আরো দুর্বল করে দিলো বা বলা চলে ধ্বংস করে দিলো
একের পর এক হত্যাকাণ্ড এবং তার সুরাহা না হবার জন্য সরকারকেই সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে। সরকারেরই দায়িত্ব তার সকল নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশের যে বিশাল জনগোষ্ঠী, সেই জনগোষ্ঠীকে নিরাপত্তা দেওয়া আক্ষরিক অর্থেই সম্ভব নয়। সেই অসম্ভব জিনিস কেউই আমরা আশাও করছি না। কিন্তু, সদিচ্ছাটা দেখার খুব ইচ্ছা আমাদের সকলেরই। সরকারের এই দায়মুক্তি ঠিক তখনই ঘটবে যখন আমরা দেখতে পাবো যে, তারা আন্তরিকতা এবং সততা নিয়ে এগিয়ে আসছে সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে। সমস্যার সমাধান না করতে পারলে ঘোর দুর্দিন অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য।
অভিজিৎ, অনন্ত, বাবু, নীলয়, দীপনদের লম্বা লাইন আরো লম্বা হবে, মৃত্যু আসবে লোকাল ট্রেনের মতো স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ঘন ঘন, তারপর হারিয়ে যাবে এক গাদা শব নিয়ে দূরের কোনো সমুদ্রে। একটা প্রগতিশীল প্রজন্মকে চাপাতির আঘাতে ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে তাদের কণ্ঠনালীকে চেপে ধরার কদর্য এই খেলার দায়দায়িত্ব আওয়ামী লীগকেই বইতে হবে আকণ্ঠ, আগামী দিনে, অনাগত সময়ে।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য