প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
খুরশীদ শাম্মী | ০৩ জুলাই, ২০১৬
আইএস (ইসলামিক স্টেট) জঙ্গিরা এখন বিশ্বের একটি প্রধান শত্রু। তারা সন্ত্রাসী। তারা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। বিশ্বের প্রায় সবগুলো দেশেই তারা এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে। প্যারিস, ইউএস, টারকিতে আক্রমণ করার পর এবার বাংলাদেশে তারা তাদের আক্রমণ স্বীকার করেছে।
যেহেতু তাদের অপকর্ম দিন দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে এবং বিশ্বে অশান্তি সৃষ্টি করছে। তাই এই আগাছা পরিষ্কার করাটা খুব জরুরী হয়ে পড়েছে। বিশ্বের সকল দেশের সাধারণ মানুষদের রক্ষা করতে কিন্তু সাধারণ জনগণই এগিয়ে আসতে পারে। এর জন্য দরকার হয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তোলা এবং পারস্পরিক সম্মান এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শন। ব্যাঙেরছাতার মতো বেড়ে ওঠা এই আগাছাকে দমন করতে বিশ্বের সকল দেশের নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের পাশাপাশি পারিবারিক পর্যায়েও এগিয়ে আসতে হবে।
এরা যেহেতু একটা ধর্মকে আশ্রয় হিসেবে বেছে নিয়েছে এবং তা সামনে রেখে নিজেদের মানসিক অসুস্থতাকে বৈধ করার চেষ্টা করছে এবং অনেকক্ষেত্রে সফল হয়েছেও। এই পর্যায়ে সাধারণ মানুষদের ধর্মের নামে অতিরিক্ত কোন কিছু করাই ঠিক হবে না। মনে রাখবেন ওরা ধর্মের দোহাই দিয়ে সকল ধর্ম ভীরু মানুষদের বোকা বানিয়ে নিজেদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছে।
প্রধানমন্ত্রীর মতো করেই যদি একবার ভাবুন, দেখবেন যে ওরা এশার আযানের সময় নামাজ রেখে তারা মানুষ মারতে গিয়েছে। এটা কি করে ধর্ম হয়? উত্তর অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
হ্যাঁ, আপনারা যদি আরো বেশী করে নিজের মতো করে ভাবুন, দেখবেন, রোজার মাসে ধর্মীয় মতে তাদের ওই সময় রোজা খুলে নিজ পরিবারের সাথে ইফতার করার কথা। অথবা তারাবীহ পড়ে পরের দিনের রোজার জন্য প্রস্তুত হওয়ার কথা। তারা দু’টোর একটিও করেনি। আরো একটু বেশী ভাবলে দেখবেন, দেশে ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে। পরিবার এবং গরীবদের জন্য ঈদের কেনাকাটা করে ঈদ পালনের প্রস্তুতি করার কথা। তাও তারা করেনি। তারা গেছে মানুষের গলা কাটতে। এরা কি করে ধার্মিক হয়?
তাদের সামাজিক দায় এবং দেশপ্রেম নিয়েও যদি একবার ভাবুন, দেখবেন, যে দেশে খেয়ে, পরে বড় হয়েছে সে দেশের সম্মান ক্ষুণ্ণ করতে উঠে পড়ে লেগেছে এরা। এরা দেশের কেমন নাগরিক? আমি তো মনে করি এরা দেশের শত্রু এবং এরা সমাজের কালিমা। সারাজীবন জেনে এসেছি পশুরা পেটের ক্ষুধায় আক্রমণ করে মানুষ এবং অন্যান্য জীব খায়। এখানে মানুষ ধর্মের নামে মানুষই মারে। তবে মানুষ-ই-বা কিভাবে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হয়? হিসেব তো মিলে না।
আমাদের মধ্যে যারা এদের বিভিন্ন প্রকার মাসালা এবং ওয়াজের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজেদের পোষাক, খাবার, কথা এবং আচরণ পরিবর্তন করে অন্যান্য ধর্মের মানুষদের থেকে আলাদা করে বিভাজন শুরু করেছেন। তাদেরকে অনুরোধ করছি, দয়া করে মানুষের তৈরি বিভাজনের একটি ধর্ম রক্ষা করতে গিয়ে সত্যিকার মানব ধর্মকে হারিয়ে ফেলবেন না।
বিভাজিত সমাজ আমাদের শান্তি দিতে পারবে না কখনো। ঈদের ছুটিতে প্রায় সকলেই পরিবারের সাথে কিংবা কাছাকাছি অবস্থানে আছেন। একটু সময় করে কথা বলুন পরিবারের কাছের সকল সদস্যদের সাথে। যদি মনে করেন ব্রেন ওয়াশ হচ্ছে কিংবা হয়ে গিয়েছে, দয়া করে তাকে প্রতিরোধ করতে নিজে চেষ্টা করুন এবং সরকারী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নিন। দেখুন হিজাব, নিকাব, ইয়া লম্বা পোষাক আর টুপি না পরেও ধর্ম পালন করা যায়। অন্যের বিশ্বাসকে ব্যথা না দিয়েও ধর্ম পালন করা যায়। সেটা কেবল সম্ভব মানব ধর্মে। তাই আসুন সবার আগে মানব ধর্ম পালন করার চেষ্টা করি। পর্দা দরকার হয় মানুষের কলুষিত মন ঢাকতে, কলুষিত কামনা এবং ঘুণধরা চিন্তাধারা ঢাকতে।
দেশ, সমাজ এবং বিশ্বকে যুদ্ধ এবং অশান্তির হাত থেকে রক্ষা করতে আসুন আমরা সবাই লক্ষ্য রাখি; ধর্মের নামে আমি, আপনি অথবা কারো পরিবারের কেউ যেন না হয় বোকা!
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য