আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

দানব ফ্রাঙ্কেনস্টাইন ও দেবী আইসিস

নাজমুল হাসান  

ফ্রাঙ্কেনস্টাইন মেরি উল্‌স্টোনক্রফট শেলি রচিত ফ্রাঙ্কেনস্টাইন: অর দ্য মডার্ন প্রমিথিউস উপন্যাসের একটি বিখ্যাত চরিত্র। উপন্যাসটি ফ্রাঙ্কেনস্টাইন নামেই সমধিক পরিচিত। মেরি শেলি উনিশ শতকের ইংরেজ সাহিত্যিক। তিনি একাধারে একজন ঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, জীবনীকার এবং ভ্রমণকাহিনী লেখিকা হলেও রোমান্টিক এবং গথিক ধারার উপন্যাস রচনায় বেশি খ্যাতি অর্জন করেন। ফ্রাঙ্কেনস্টাইন এর রচনাকাল ১৮১৮।

মূল গল্পটা এরকম- ফ্রাঙ্কেনস্টাইন নামক এক জার্মান গবেষক নিরলস গবেষণার মাধ্যমে একটি বিশেষ ধরনের বিজ্ঞান আয়ত্ত করতে সমর্থ হয়, যার মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির মধ্যে প্রাণসঞ্চার করা সম্ভব। সে তার এই পরীক্ষাটি এক মৃত ব্যক্তির উপর করলে মৃত ব্যক্তি ঠিকই বেঁচে উঠে, কিন্তু পরিণত হয় এক ভয়ঙ্কর দানবে। প্রচণ্ড শক্তিশালী এই দানবটি দেখতে কুৎসিত। ফ্রাঙ্কেনস্টাইন ভয় পেয়ে এই দানবের প্রতি অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করলে দানবটি হিংস্র হয়ে ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের প্রতি প্রতিশোধ গ্রহণের সংকল্প করে । তার প্রতিশোধ সে শুরু করে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন এর সহকারী ড. নীল ও একজন আয়া হত্যার মাধ্যমে। এরপর সে হত্যা করে তার সৃষ্টিকর্তার ভাইকে। তখন সে বনে আশ্রয় নেয় এবং শত শত সাধারণ লোক হত্যা করে। ফ্রাংকেন এর বিয়ের রাতে সে আবারো হত্যা করে তার স্ত্রীসহ তার পরিবারের বাকী সদস্যদের। এমনকি সে এক পর্যায়ে স্বয়ং তার সৃষ্টিকর্তা ফ্রাঙ্কেনস্টাইনকে ও হত্যা করে। শেষ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে দানবটির মৃত্যু হয়!

আইসিস একইসাথে ইসলামি উম্মাহর জন্য একটি বিতর্কিত ও সমর্থিত নাম। বিতর্কের বিষয়টি তেমন প্রচারিত নয় বরং সমর্থনের বিষয়টি বহুল প্রচারিত। কোন ইসলামি দেশ বা সম্প্রদায় বা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের পক্ষ থেকে এর কার্যক্রমকে কার্যকরভাবে অনৈসলামিক বলে বিরোধিতার নজির খুব একটা দৃশ্যমান নয়। উপরন্তু যারা এটার বিরোধিতা করে তারা পরিবেশের সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়ে চলার জন্য অনেকটা মিনমিনেয়ে বিরোধিতা করে, যার দ্বারা প্রতীয়মান হয়, তারা আসলে বিরোধিতা করে না বরং তলে তলে সমর্থনই করে এবং এদের সাফল্যে মনে মনে সন্দেশ খায়। তুরস্ক এবং সৌদি আরব মার্কিন পা চাটক হিসেবে এর প্রত্যক্ষ সমর্থক ও পৃষ্ঠপোষক। মার্কিন কৌশলগতভাবে ইজরাইলের দ্বারা এটাকে পরিচালনা করে।

আইসিসের পুরো নামের অর্থ কী সেটাও একটা কনফিউশনের ব্যাপার। কোথাও বলা হচ্ছে এর অর্থ ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড সিরিয়া। আবার কোথাও বলা হচ্ছে এর অর্থ ইজরাইলি সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেস। ইজরাইলি সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেস মোসাদের দ্বারা পরিচালিত হবার কারণে হয়তবা দ্বিতীয় নামকরণ করা হয়েছে।

তবে নাম হিসেবে আইসিস শব্দটি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোন বিতর্ক নেই। আইসিস একজন গ্রীক দেবীর নামের গ্রীক সংস্করণের ইংরেজি প্রতিরূপ। প্রাচীন মিশরীয় ধর্মবিশ্বাসে আইসিস হচ্ছেন মাতৃত্ব, যাদু এবং উর্বরতার দেবী। লিখিত ভাবে দেবী আইসিসের উপাসনার উল্লেখ পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ এর অল্প কিছু কাল পরেই, পঞ্চম রাজবংশের সময়ে। শুরুর দিকে, মিশরীয় পুরাণ অনুসারে আইসিস হলেন নুট ও গেবের প্রথমা কন্যা এবং হোরাসের মা। দেবী আইসিসের ওসাইরিস নামে একজন ভাই ছিলেন যিনি পরে তাঁর স্বামী হন এবং হোরাস নামে এক সন্তানের জন্ম দেন।

সেতের নামক এক দেবতার হাতে দেবী আইসিসের স্বামী তথা ভাই ওসাইরিসের মৃত্যু হয়। দেবী আইসিস নিজের যাদু ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সেই মৃতদেহের সমস্ত বিচ্ছিন্ন অংশ গুলো জড়ো করেন এবং তাতে প্রাণ সঞ্চালন করেন। পরবর্তীতে পুরাণের এই ঘটনা মিশরীয়দের ধর্মবিশ্বাসের উপর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। পরের দিকে মিশরীয় পুরাণে এই বিশ্বাস দেখা যায় যে, স্বামী ওসাইরিসকে হারানোর শোকে ক্রন্দনরতা দেবী আইসিসের অশ্রু থেকেই নীল নদ প্লাবিত হয়। প্রাচীন মিশরীয় ধর্মবিশ্বাসে প্রতি বছর ওসাইরিসের মৃত্যু এবং পুনর্জাগরণকে বিভিন্ন রকম আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করা হত।

ঘটনা যা-ই হোক না কেন পুরাণীয় বিশ্লেষণ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এই নামটিকে ইসলামী পূণর্জাগরণের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্লেষণ থেকে এটাও পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে, এই নামটির মধ্যেও ব্যাপক অপরিচ্ছন্নতা লুকিয়ে আছে। গ্রিক দেবী থেকে প্রাচীন মিশরীয় ধর্ম চর্চা, তার সাথে যাদুবিদ্যার সমাবেশ নামের উৎপত্তিগত ধূম্রজাল সৃষ্টি করে। আবার এর আধুনিক বাস্তবায়নে আছে ধান্দাবাজ মার্কিন, অনৈসলামিক দেশ ইজরাইল এবং ইসলামিক দেশ সৌদি আরব ও তুরস্কে, সব মিলিয়ে এখানেও এক মহা-অপরিচ্ছন্নতার জটলা।

ইসলাম প্রসারে এর কার্যক্রম পরিচালিত হলেও মুসলমানদেরকে মেরে-ধরে, মুসলিম নারীদেরকে দিয়ে যৌন ব্যবসা করিয়ে, সারা বিশ্ব জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে এরা যে মহা-কুকর্ম করছে তারসাথে না মেলে ইসলাম, না মেলে অনৈসলাম, না মেলে মানবিকতা। বরং এটা এক নিষ্ঠুর মানবতা ধ্বংসের জীবন্ত প্রতীক ও কিংবদন্তী। ইসলাম ধর্মানুসারীর দেশেই এর আকাম সবচেয়ে বেশি। তারমানে এর ভূমিকা আসলে ফ্রাঙ্কেনস্টাইনও বটে।

আইসিস ২০১৪ সালের মাঝামাঝি থেকে সৌদি আরবে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে আসছে। এ হামলায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই শিয়া মতাবলম্বী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। গত বছর আইসিসের আত্মঘাতী বোমা হামলায় সৌদি আরবের কাতিফে শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয় এবং এর পর থেকে ওই এলাকার মসজিদগুলোর নিরাপত্তা বাড়ায় পুলিশ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা। বছর খানেক আগে একটি মসজিদে আরেকটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৫ জন নিহত হয়।

গত ৩রা জুলাই ২০১৬তে মক্কার কা’বা শরীফের পরে মুসলমানদের কাছে দ্বিতীয় পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত মসজিদে নববীতে হামলা চালিয়ে আইসিস চারজন মানুষকে হত্যা করে। একই দিনে ওই হামলার কাছাকাছি সময়ে মদিনার পূর্বাঞ্চলীয় শহর কাতিফের একটি শিয়া মসজিদের কাছে আবারও বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সেখানে একজনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এই দুটি হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে সৌদি আরবের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র কনস্যুলেটের কাছে বিস্ফোরণে এক আত্মঘাতী নিহত এবং দুজন আহত হন।

ইরাক, ইরান, সিরিয়া, ইয়েমেন, ওমান ইত্যাদি মুসলিম দেশসহ এমন কোন মুসলিম দেশ নাই যেখানে এরা হামলা চালাচ্ছে না। ইসলামী দেশগুলির বাইরেও এদের আক্রমণের কোন শেষ নাই। মুসলমান ধর্মের অনুসারীদের এমনিতেই একটা বড় দোষ হচ্ছে এরা নিজের অনুসৃত বিষয়টিকেই একমাত্র সঠিক পথ মনে করে এবং আর কারও কোন মতকে একেবারেই গ্রহণ করতে পারে না। এদের সহ্য ক্ষমতা খুবই কম, সমাজে মিলেমিশে থাকতে হলে যে মানবিক ও মানসিক গুণাবলী দরকার তা এদের নেই। নিজের মত ও পথকে আরেকজনকে গেলানোর জন্য এরা সদা ব্যস্ত। ধর্ম সম্পর্কে জানো, বেশি করে ধর্ম পড়, ধর্ম এ বলে নাই, ধর্ম তা বলে নাই- এ সমস্ত নিয়ে সর্বদাই তাদের মাথায় জট পাকিয়ে থাকে। সমাজ-সংসারে মানবিক ও মানসিক গুণাবলী নিয়ে বাঁচতে হলে ধর্ম লাগে না- এ কথা এদের বোঝানো যাবে না, এরা বুঝবেও না। বুঝতে গেলেই এদের অহংবোধে গুঁতা লাগে এবং মারমুখী হয়ে ওঠে।

মারামারি করে বেড়ানো এদের স্বভাব- অন্য ধর্মের মানুষ পেলে তাদের মারে, না পেলে নিজেরা নিজেরা মারামারি করে। সেজদায় গেলে নাক ভূমি স্পর্শ করবে কী করবে না তা নিয়ে এদের গ্রুপিং হয়। অজু করতে গেলে কব্জি পর্যন্ত ধোবে নাকি কব্জিসহ ধোবে তা নিয়েও এদের ক্যাচালের শেষ নাই। এমন কোন যায়গা নাই যেখানে এরা একমত পোষণ করতে পারে। একজন একটা বললে আরেকজন আরেকটা। একসাথে পাঁচজন আলেমকে একত্রে বসিয়ে দিলে ক্ষুদ্র কোন বিষয়েও তারা একমত হতে পারেন না। কোথাও কোন স্পষ্টতা নেই। একগুঁয়েমি স্বভাবের কারণে আবার যে যেটা বোঝে সে সেটাকেই একেবারে সঠিক মনে করে, ফলে এদের ব্যাখ্যারও শেষ নাই, বিতর্কেরও অবসান নাই, মারামারিরও শেষ নাই।

সহি তরিকা নির্ধারণ করে নিজেরা পরিবর্তিত হতে না পারলে এসব করতে করতেই এরা ডাইনোসরের মতো এক সময়ে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এরা ফ্রাঙ্কেনস্টাইন এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ। মানুষ মানুষকে শ্রদ্ধা, সম্মান করে সুন্দরভাবে পৃথিবীতে বেঁচে থাকুক সেটাই প্রত্যাশিত। মানুষ যেন কোনভাবেই কোন বিশ্বাস থেকে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন না হয় সেটাই কাঙ্ক্ষিত।

নাজমুল হাসান, লেখক, গবেষক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ