আজ বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

তবু সাম্য, গাহি সাম্যের গান!

দেবজ্যোতি দেবু  

‘ঈশ্বর থাকেন ওই গ্রামে, ভদ্রপল্লিতে। এখানে তাহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না।’

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজের তথাকথিত ‘ভদ্র’ লোকদের হাতে হতদরিদ্র মানুষদের নির্যাতিত হবার চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে তাঁর ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসে এই উক্তিটি করেছিলেন। তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন গরীবের জন্য কোন ঈশ্বর নাই! কারণ গরীব আজীবনই গরীব থাকে আর বড়লোকদের হাতে নির্যাতিত হয়। গরীব মানেই দুর্বল আর ধনী মানেই সবল। দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার আদিকাল থেকেই চলে আসছে। বর্তমান একবিংশ শতাব্দীর তথাকথিত সভ্য সমাজেও তা চলমান।

ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, বরাবরই কথিত সভ্যরা নিজের দাস ভেবে এসেছে হতদরিদ্র জনতাকে। দুর্বলের প্রতি সবলের কিংবা সংখ্যালঘুর প্রতি সংখ্যাগুরুদের নির্যাতন ইতিহাসে নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। যদিও কোন সভ্য সমাজে এটা গ্রহণযোগ্য নয়, তবুও বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোতে কখনো বর্ণবাদের নামে তো কখনো ধর্মের নামে সংখ্যায় লঘুরা বা দুর্বলরা অত্যাচারের শিকার হয়ে আসছে। বাংলাদেশের সাথে তাদের পার্থক্য শুধু এইটুকুই যে, বড় বড় দেশগুলোতে এই সমস্যাকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হয় আর বাংলাদেশে এটাকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখানেও ঈশ্বর সেই সবলদের পল্লীতেই বসত স্থাপন করে থাকেন!

বাংলাদেশ নামক এই ভূ-খণ্ডটার অতীত ঘাঁটলে দেখা যায়, সংখ্যায় লঘুরা বরাবরই এই ভূ-খণ্ডে নির্যাতিত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে।

১৯৪৬ সালের ১০ অক্টোবর। তৎকালীন ব্রিটিশ-ভারতের পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলায় হিন্দুদের উপর স্থানীয় মুসলিমদের দ্বারা চালানো মাসব্যাপী ধারাবাহিক গণহত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, হিন্দুদের জোরপূর্বক ধর্মান্তর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের নাম নোয়াখালী গণহত্যা। এতে নোয়াখালী জেলার রামগঞ্জ, বেগমগঞ্জ, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর, ছাগলনাইয়া ও সন্দ্বীপ থানা এবং ত্রিপুরা জেলার হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর, লাকসাম ও চৌদ্দগ্রাম থানার অধীনে সর্বমোট প্রায় ২০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে প্রায় ৫০০০ হিন্দু হত্যা, কয়েক হাজার হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করা, অগণিত হিন্দু নারীকে ধর্ষণ করা হয় মাস জুড়ে।

১৯৫০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বা পূর্ববঙ্গ বর্তমানে বাংলাদেশের বাঙালী হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায়ের চালিত বিরামহীন ধারাবাহিক একটি গণহত্যা যা বরিশাল গণহত্যা নামে পরিচিত। এই গণহত্যায় হিন্দু জনগোষ্ঠীর উপর মুসলিম জনগোষ্ঠী এবং পাকিস্তানি পুলিশ, প্যারা মিলিটারি বাহিনী ইচ্ছাকৃত ভাবে হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, অপহরণ, ধর্ষণ চালায়। ১৯৫০ সালের ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাস জুড়ে এই গণহত্যা চলতে থাকে।

আগস্ট ১৯৪৯ থেকে জানুয়ারি ১৯৫০ পর্যন্ত চালানো কালশিরা গণহত্যা, নাচোলের গণহত্যা ইতিহাস খ্যাত। এছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, যশোর পর্যন্ত চলমান গণহত্যার কথা লিপিবদ্ধ আছে বিভিন্ন জায়গায়। প্রতিটি জায়গাতেই দুর্বল হিন্দুদের উপর সংখ্যাগুরু মুসলিমদের নির্যাতনের চিত্র আঁকা। প্রত্যেকটি হামলার নেপথ্য নায়ক ছিল "ধর্মীয় গুজব"। ১৯৫০ সালে এসেই এই নির্যাতন থেমে যায়নি কিংবা এটা ২-৩ বছরে সীমাবদ্ধ কোন ঘটনা ছিল না। ৬২, ৬৪, ৭১, ৯০, ২০০০, ২০১৩, সকল সময়েই পূর্ববঙ্গে এবং বর্তমান বাংলাদেশে হিন্দুরা নির্যাতিত হয়েছে, হচ্ছে। এখনো সেই নির্যাতন হচ্ছে কখনো গুজব ছড়িয়ে তো কখনো অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার নাম করে। হামলার ধরণ একই আছে, শুধু কৌশলটা পাল্টেছে।

কেন হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে সস্তা কিছু উত্তর সামনে আসে। কিন্তু এই সমস্যার সমাধানে কেউই উপযুক্ত কোন পদক্ষেপ নেন না বা নিতে চান না। রাজনীতিবিদদের সমাধান দেয়ায় অনীহা থাকার কারণ হিসেবে ধরে নেয়া যায় ভোটের রাজনীতি। সমাজসেবীদের অনীহার কারণ হিসেবে ধরা যায় সমাজের মাথাওয়ালাদের চাটুকারিতা। আর মানবাধিকার সংগঠন নামক সুবিধাবাদীদের অনীহা থাকার কারণ সম্ভবত ফায়দা না হবার সম্ভাব্যতা। এই সুযোগে দুর্বল আরো দুর্বল হচ্ছে আর সবলদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।

খেয়াল করে দেখলাম অধিকাংশ নির্যাতনের খবর আসে গ্রাম থেকে। জোর করে দুর্বল সংখ্যালঘুর জমি দখল করে নেয়া, সংখ্যালঘু পরিবারের মেয়েদের উপর নির্যাতন করা, মন্দিরে হামলা করা, পূজানুষ্ঠানে বাধা দেয়া প্রভৃতি ঘটনা যতোটা শহর অঞ্চলে হয় তারচেয়ে অনেক বেশি হয় গ্রামাঞ্চলে। যার কারণে শহুরে শিক্ষিত সংখ্যাগুরুদের চোখে সেটা লাগে না। তারা 'সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ছেয়ে আছে বাংলাদেশ' বলে ধোয়া তুলে নির্যাতনের ভয়াবহতাকে আড়াল করতে চান। অনেকাংশে সফলও হয়ে যান তারা। কারণ শহুরে মোডারেটদের মতই শহুরে কথিত শিক্ষিত অন্ধরা গ্রামের মানুষকে অবজ্ঞা করে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা এটা ভুলে যান বাংলাদেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ এখনো গ্রামে এবং মফঃস্বল এলাকাতে বাস করেন। যেখানে অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা তো দূরের কথা ঠিকমত নাগরিক সুযোগ সুবিধাও পৌঁছায়নি এখনো। এখনো সেখানে স্কুলের শিক্ষকের চেয়ে পীর-ফকিরের মর্যাদা বেশি। এখনো সেখানে গ্রাম্য সালিসের নামে ধর্ষকের শাস্তি হয় ধর্ষিতাকে বিয়ে করা! এখনো সেখানে বে-আইনি ভাবে মোল্লারা বিভিন্ন ফতোয়া দেয় এবং সকলে তা শ্রদ্ধাভরে মান্য করে! ফলে শহরের কাছাকাছি হয়েও তারা শহর থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে।

প্রশ্ন জাগতে পারে নির্যাতনের সাথে শহর-গ্রামের কি সম্পর্ক? উত্তরে বলবো, সম্পর্ক অবশ্যই আছে। বাংলাদেশে যারা গ্রামে বাস করে তাদের কাছে সহজে পৌঁছে যাওয়ার মাধ্যম হচ্ছে 'ধর্ম'। ধর্মের নামে যা-ই এদের বলা যায় তাই তারা বিশ্বাস করে। এখনো গ্রামের চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রার্থীর কর্মদক্ষতার চেয়ে তার ধর্মীয় পরিচয়কেই বড় করে দেখা হয়। শহুরে রাজনীতিবিদরা ভোটের রাজনীতি খেলতে গ্রামের ধর্মগুরুদেরই হাত করেন সবার আগে। আর সেই ধর্মগুরুদের কাজ হচ্ছে গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ধর্মের আফিম খাইয়ে মাতাল করে রাখা। বাজারের ওয়াজের সিডি থেকে শুরু করে বাসে পাশের সিটে বসা লোকটার মোবাইলে বাজা ওয়াজ শুনলে বুঝা যায় এক ওয়াজের নাম করে এদের মগজে কি বিষ ঢুকানো হচ্ছে। সাঈদীর মত কুখ্যাত রাজাকারও এই ওয়াজের জোরে ধর্মীয় নেতা হয়ে যায়! ফলে সাঈদীর মামলার রায়ের পরে গ্রামের পর গ্রাম ধ্বংস করে দিতেও এরা কুণ্ঠাবোধ করে না। শহরে হোক আর গ্রামেই হোক, ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে প্রকাশ্যে ওয়াজের নামে অকথ্য ভাষায় ভিন্ন ধর্মের মানুষদের গালিগালাজ করা হয়। তাদের লুট করা, হত্যা করাকে জায়েজ আখ্যায়িত করা হয় এবং অন্ধবিশ্বাসী মানুষ সেটাকেই সত্য বলে ধরে নেয়। কারণ তাদের ধারণা, মিথ্যা হলে প্রকাশ্যে এমন কথা কেউ বলতো না কিংবা কেউ না কেউ অবশ্যই এর প্রতিবাদ করতো। যেহেতু সেটা করা হচ্ছে না, সেহেতু এটাই সত্যি এবং এটাই তাদের করতে হবে! কোন না কোন সময় এরাই শহরে আসে, স্থায়ী হয়। তাদের মগজে ঢুকে যাওয়া বিষ এরা তখন শহুরে সমাজে ছড়াতে শুরু করে। ধীরে ধীরে শহুরে বকধার্মিকরাও ঐ বিষ পান করে বাতাসকে বিষাক্ত করা শুরু করে। একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না, মানুষ যতই বড় হয়ে যাক না কেন, তার শেকড়টা কিন্তু সেই গ্রামেই। তাই সে চাইলেও গ্রামের সেই অন্ধত্ব/সংকীর্ণতা থেকে বের হয়ে আসতে পারে না।

আরো গভীরে যেতে হলে যেতে হয় সেই ইংরেজ আমলে, যখন ব্রিটিশরা এই ভূ-খণ্ডে রাজত্ব করতো। রাজত্ব হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে দেখে তারা হিন্দু-মুসলিম বিভেদ তৈরির ষড়যন্ত্র শুরু করলো। অনেকটাই সফল হয়েছিল তারা। তারা এতোটাই সফল ছিল যে, তারা বিশ্বাস করতো হিন্দু-মুসলিম কখনোই এক হতে পারবে না। অবশেষে যখন রাজত্ব হাতছাড়া হয়েই গেল তখন লর্ড মাউন্টব্যাটেন বলেছিল, "হিন্দু-মুসলমানদের ভেতর ঐক্যের গ্রন্থি ছিল একটাই, সেটা হলো ব্রিটিশদের প্রতি ঘৃণা। ঐ ঘৃণাই তাদেরকে পরস্পরকে ঘৃণা করা থেকে নির্বৃত্ত করেছে। আমরা চলে যাচ্ছি। এখন থেকে একে অপরকে ঘৃণা করা ছাড়াতো তাদের আর কিছুই করার থাকবে না।" তার কথা এতোটাই বাস্তবসম্মত ছিল যে, সত্যি সত্যি এই দ্বন্দ্ব দিন দিন বাড়তে থাকে। অবশেষে ভারত-পাকিস্তান নামে দুই দেশের জন্ম হয়। বিষয়টা অনেকটা এমন ছিল যে যারা হিন্দু তাদের জন্য হিন্দুস্তান মানে ভারত আর যারা মুসলমান তাদের জন্য পাকিস্তান!

ব্রিটিশদের পুঁতে যাওয়া বীজ সকলের মগজে ধীরে ধীরে মহীরুহে রূপ নিতে থাকে। তখন মাউন্ট ব্যাটেনের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নেয় ‘জিন্নাহ’। তার দ্বি-জাতি তত্ত্ব মানুষকে পরস্পর থেকে আরো দূরে সরিয়ে দিতে থাকে। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ স্বাধিকার আন্দোলনের মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়ে গেল ঠিকই কিন্তু তাদের মগজে পুঁতে দেয়া সাম্প্রদায়িকতার বীজ ত্যাগ করতে পারলো না। এখনো শুনতে হয় “বাংলাদেশ নামক এই ভূ-খণ্ড হিন্দুদের না। হিন্দুরা যাবে ভারতে। এই দেশ কেবলই মুসলমানদের!” যার প্রতিফলন আমরা পাই বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে রাষ্ট্রকে একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় রূপ দেয়া হয়। এখন রূপ পাল্টে আবার ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র করতে গেলেই তেড়ে আসে সংখ্যাগুরুরা। ফলে রাষ্ট্রের ঈশ্বর সরকার সেই সবলদের দলেই বসতি স্থাপন করে থাকেন।

বাংলাদেশের মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে পাল্লা দিয়ে তারা এগুচ্ছে। কিন্তু শতবছর পূর্বের পুঁতে যাওয়া বীজ থেকে এখনো তারা বের হতে পারছে না। এখনো অনেক পরিবারে শিশুদের শেখানো হয়, "ওরা হিন্দু, ওরা কাফের। ওদের সাথে মিশতে নেই"। কিংবা "ওরা হিন্দু, ওদের দেশ ভারত"। ফলে হিন্দুদের দমিয়ে রাখতে, দেশ ছাড়া করতে হত্যা, লুট, নির্যাতনকে তারা একমাত্র উপায় বলে ধরে নিচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বাড়ছে আর সেই সুযোগে সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে ধর্ম ব্যবসায়ীরা। মাউন্ট ব্যাটেন, জিন্নাহর মতো এই ধর্ম ব্যবসায়ীরাও মানুষকে ভাঙ্গছে দুই ভাগে, তিন ভাগে, বহু ভাগে।

বাবা-ঠাকুরদা'র মুখে এদেশের মানুষের মাঝে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনেক গল্প শুনি। কিভাবে সকলে মিলে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোকে উৎসবে পরিণত করেছেন, তার গল্প শুনি। কিভাবে একে অপরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দিন কাটিয়েছেন, রাত জেগেছেন তার গল্প শুনি। পাশাপাশি এটাও দেখি, কিভাবে ভারতের বাবরী মসজিদে হামলার কারণে বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর হামলা হয়। কিভাবে হিন্দু মেয়েদের গনিমতের মাল বলে ধর্ষণ করাকে জায়েজ আখ্যা দেয়া হয়। কিভাবে প্রকাশ্যে হামলা করে হিন্দু ঘরবাড়ী, মন্দির ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়। যারা ঐ ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে থাকে, তারাই শুধু জানে ঐ "সম্প্রীতি" শব্দটা কতোটা ভয়ংকর!

আমরা আর এভাবে বিভক্ত হতে চাই না। এই দেশটা মানুষের। এখানে সকল মানুষের সমান অধিকার আছে থাকার। এই দেশটাকে শুধুমাত্র ধর্মের নামে আর বিভক্ত দেখতে চাই না। এই দেশের মানুষ যেমন গাজা, সিরিয়ায় মানুষের উপর হয়ে যাওয়া অত্যাচার দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে, তেমনি বাংলাদেশের মানুষের উপর অত্যাচার হলেও সেই ক্ষোভ দেখতে চাই। অসাধু, সুবিধাভোগীদের ধর্মের নামে চালানো সহিংসতাকে রুখে দিতে এই দেশের ষোল কোটি মানুষকে একই প্ল্যাটফর্মে দেখতে চাই। এই দেশের মানুষকে ধর্ম পরিচয়ে নয়, মানুষ পরিচয়ে দেখতে চাই। যদি নিজেকে সত্যিকারের মানুষ ভাবতে পারেন তাহলে মানুষকে মানুষ বিবেচনায় পাশে দাঁড়ান, ধর্ম পরিচয়ে নয়। ঐসব অসাধু ধর্ম ব্যবসায়ী মৌলবাদীদের রুখে দাঁড়ান।

দেশের সরকারপ্রধানের প্রতি অনুরোধ থাকবে, ভদ্র পল্লীর ঈশ্বর হয়ে নয় বরং দেশের মানুষের বন্ধু হয়ে পাশে দাঁড়ান। রাষ্ট্র যেমন সকলের তেমনি সরকারও সকলের। তাই দয়া করে রাজনীতি বাদ দিয়ে মানুষকে নিয়ে ভাবুন। সমাজে সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানো বিষবৃক্ষকে চিহ্নিত করে সমূলে উপড়ে ফেলুন। দেশটা দানবের নয়, মানুষের।

"গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহিয়ান।
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,
সব দেশে সব কালে ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।"

দেবজ্যোতি দেবু, সংস্কৃতি কর্মি, অনলাইন এক্টিভিস্ট

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ