আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

Advertise

কী হবে আর নূর হোসেন, মিলন, বসুনিয়া হয়ে?

সঙ্গীতা ইমাম  

৬ ডিসেম্বর। ১৯৯০-এর বহু আত্মত্যাগের সফলতার দিন। নূর হোসেন, ডা. মিলন ট্রাকের তলায় পিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এমন বহু বিস্মৃতের আত্মদানের ফসল ঘরে তুলেছিল এদেশ। বিশ্ব বেহায়া এক ভণ্ড কবিকে ক্ষমতার মসনদ থেকে টেনে নামাতে পেরেছিল।

কিন্তু তারপর থেকে সেই স্বৈরাচার নিজে ক্ষমতায় যেতে না পারলেও অন্য দুটি বড় দলের ক্ষমতায় যাবার কড়ি হিসেবে বিক্রি করেছেন এ ঘরে নয়তো সে ঘরে। তারাও বেহায়ার চেয়ে বেশি বেহায়া হয়ে ক্ষমতায় যাবার সিঁড়ি কিনেছেন আদর্শ বিবর্জিত হয়ে।

সেদিনের সেই স্বৈরাচার জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন রাজনৈতিক আঁতাতে। যুগে যুগে বিরোধী দল হয়েছেন। সংসদে গেছে তার দল বিরোধী দল হয়ে।

কিছুই হারায় নি তার। আমরা বিস্মৃতি প্রবণরা ভুলে গেছি এই স্বৈরাচারের কৃতকর্মে মানুষের অশ্রু। মাসের পর মাস বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন কেড়ে নেয়া। টোকাইকে পথকলি নাম দিয়ে ভণ্ডামি করে উন্নয়নের নামে তাদেরকে আরো আশ্রয়হীন করে দেয়া।

এ এমন দুরাচার যে, বিশ্বাসী মানুষের ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে খেলা করেছে। প্রতি জুম্মার আগের রাতে তিনি স্বপ্নে গায়েবি ইশারা পেতেন কোন মসজিদে নামাজ আদায় করবেন। সেখানে গিয়ে নামাজ আদায়ের সাথে নানা মিথ্যায় নষ্ট করতেন উপাসনালয়ের পবিত্রতা।

সেই সৎ পুলিশ কনস্টবলের কথা আমরা আজ ভুলে গেছি যিনি এক সপ্তাহ আগে রাষ্ট্রপ্রধানের আগমনের ডিউটির নির্দেশ পেয়েছিলেন এক মসজিদে। ডিউটিরত অবস্থায় তিনি শোনেন নামাজ শেষে রাষ্ট্রপ্রধান বলছেন গতরাতের স্বপ্নের নির্দেশে তিনি সেখানে গিয়েছেন। তখন সেই সরল পুলিশভাই সিদ্ধান্ত নেন এই মিথ্যুকের চাকরি তিনি আর করবেন না।

তাই আজ নূর হোসেন বুকে পিঠে স্বৈরাচার নিপাত যাক লিখে জিরো পয়েন্টে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে দেখে না একটাও স্বৈরাচার পতন দিবসের মিছিল। ডা. মিলন পত্রিকার পাতায় উলটান দৃষ্টির পরম তৃষ্ণায়, টিভির রিমোর্ট চাপেন এলোপাথাড়ি পান না কোন খবর যেখানে বলা হয়, আজ স্বৈরাচার পতন দিবস। কিংবা মনে করা হয় তাঁদের ত্যাগ। ট্রাকের তলায় পিষ্ট ছাত্র সামাজিক যোগাযোগে চোখ রাখে খোঁজে আজ কোথাও তার কথা আছে কিনা! দৃষ্টি ঝাপসা হয়, মন হয় হতাশ।

নূর হোসেনরা তাই আজকের প্রজন্মকে ভগ্ন হৃদয়ে বলে আর কেউ গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য সাধের জীবন দিও না।

ডা. মিলন বলেন কেউ সুখের গৃহকোণ ছেড়ে রাজপথে আসবেন না দেশোদ্ধার করতে। কারণ এদেশের আফিম খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা জনতা, রাষ্ট্র ক্ষমতা, বড়ই আঁতাত প্রিয়। আদর্শের বালাই নেই। তাই গড্ডালিকায় এখানে চোখে কানে ঠুলি পরা সুবোধরাই আদর্শ নাগরিক।

দ্রোহে উদ্দীপ্ত নূর হোসেনের উত্তরসূরিরা এখানে রাষ্ট্রদ্রোহী, বিচ্ছিন্নতাবাদী, অরাজকতা সৃষ্টিকারী নানা নামে ভূষিত। তাদের জন্য আছে জল কামান, রাবার বুলেট,লাঠিচার্জ, গ্রেফতার,হাজতবাস।

তাই হে প্রজন্ম, কী হবে আর নূর হোসেন, বসুনিয়া কিংবা ডা. মিলন হয়ে!

সঙ্গীতা ইমাম, শিক্ষক, সংগঠক ও সংস্কৃতি কর্মী

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬২ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৫ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ