আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

বিজয়ের মাস: একগুচ্ছ প্রত্যাশা

রণেশ মৈত্র  

বছরের শেষে পুনরায় এসে গেল বিজয়ের মাস- বাঙালি জীবনে সর্বসেরা অর্জনের মাস। আমরা যদি আমাদের মাটি, মানুষ ও সংগ্রামের দীর্ঘ স্মৃতিতে অসংখ্য মানুষে দৃপ্ত মিছিল আর অঙ্গীকারের দফাওয়ারি বর্ণনা চোখের সামনে এসে আছড়ে পড়ে।

আজ সেই গৌরবোজ্জ্বল বিজয়ের ৪৫ তম বছরের ডিসেম্বরে প্রবেশের লগ্নে সেই কাহিনীগুলি বড্ড বেশী ধাক্কা দিচ্ছে যেন। সেই অগণিত শহীদের আত্মত্যাগ তাঁদের প্রিয়জনদের আহাজারি - মাঠে-ঘাটে পুতে রাখা কংকালের সারি শহরে নগরে আগুন, পেট্রোল ও কেমিক্যালে পোড়ানো লক্ষ লক্ষ ঘর-বাড়ি-শস্যহীন মাঠ-জীবিত বিজয় নর-নারীর কোটরাগত চোখ ও কংকালসার দেহ ঐ একাত্তরের ডিসেম্বরে ছিল এক সাধারণ (Common) দৃশ্য। আবার সেই দৃশ্যের মুখোমুখি হয়েছি দুই হাজার ষোলতে বাঙালিজাতির একটি অংশ। প্রতিকারের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা। তাঁরা নাসিরনগরে, গোবিন্দগঞ্জে, পাহাড়ী অঞ্চলে চরম অবহেলা-নির্যাতন-অবিচারের শিকার।

ডিসেম্বর ১৯৭১ থেকে ডিসেম্বর ২০১৬। সুদীর্ঘ নয় বটে-তবে দীর্ঘ অবশ্যই বাঙালির পথচলা। আমরা যদি এই ৪৫ বছরের স্মৃতির রোমন্থন করি, মোটা দাগে অনেক আনন্দময় স্মৃতির মুখোমুখি হই যেমন, বহু বেদনাময় স্মৃতিতে বেদনার্ত করে তোলে জাতির হৃদয়। আনন্দ যেখানে বেদনাও সেখানে আবার বেদনা যেখানে আনন্দও তো সেখানে অবস্থান। ইংরেজিতে আমরা তো কবেই পড়েছি “If writer comes can spring be far behind? ” অর্থাৎ “শীত এলে বসন্ত কি অনেক দূরের ব্যাপার হতে পারে?” এখানেই ভরসার কথা।

১৯৭১ এর ডিসেম্বর বিজয় বয়ে আনে গোটা বাঙালি জাতির জন্যে সূচিত করে নয় মাসের সশস্ত্র লড়াই এর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তি টেনে। বেদনা ভারাক্রান্ত স্বজন হারানো সম্পদ হারানো বাঙালি সেদিন হৃদয় দিয়ে স্বাগত জানায় কুণ্ঠাহীনভাবে ঐ দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষিত বিজয় কি বিজয়ের শ্রেষ্ঠতম রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একটি তাৎপর্য্যময়, গৌরব মণ্ডিত বিজয় অর্জিত হলো ১৬ ডিসেম্বর - দেশী-বিদেশী অশুভ শক্তিকে পরাজিত করার মাধ্যমে।

মুক্তিযুদ্ধের মহান পরিচালক তাজউদ্দিন আহমেদ তাঁর মুজিবনগরস্থ সহকর্মীদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র অধ্যায় শুরুর প্রাক্কালে লড়াকু মনের সর্বোচ্চ নিষ্ঠা নিয়ে মুজিবনগরে ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১, তাঁরা সহকর্মীদের নিয়ে তাঁর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীসভার শপথ গ্রহণ কালে যে ঐতিহাসিক ঘোষণা দিয়েছিলেন-তার মধ্যে যে সকল প্রত্যয় উচ্চারিত হয়েছিল তার মধ্যে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করে অত:পর দেশটাতে নিখাদ গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সমগ্র বিশ্ব তাতে চমৎকৃত হয়ে একে একে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সাহায্যের হাত, সহযোগিতার হাত- উদারভাবে এগিয়ে দিতে থাকেন। ভারত সরকার এ ব্যাপারে সর্বাধিক ত্যাগ স্বীকার করে এক কোটি শরণার্থীর জন্য অসংখ্য শরণার্থী শিবির গড়ে তুললেন। গোটা পশ্চিম বাংলাব্যাপী ঐ শিবিরগুলিতে শরণার্থীদের থাকার ব্যবস্থা, তাঁদের রেশন কার্ড দিয়ে নিয়মিত বিনামূল্যে প্রচুর পরিমাণে চাল-ডাল-তেল-নুন-জ্বালানি, পরনের বস্ত্রাদি সরবরাহ করে নির্যাতিত দেশ ত্যাগে বাধ্য হওয়া শরণার্থীদের আহার-বস্ত্র-আশ্রয় দিয়ে জীবনের নিরাপত্তা বিধান করে বিশ্বে এক অনন্য নজির স্থাপন করেন।

ভারতবাসীকে এর দায়ভার বহন করতে হয়েছিল। খাম-পোস্টকার্ডের (তখন এগুলির প্রচলন ছিল ব্যাপক) মূল্যবৃদ্ধি করে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন সরকার ভারত সরকারের শরণার্থী-খাতে ব্যয়িত বিপুল অর্থের খানিকটা পুষিয়ে নেন। শরণার্থীরা তো শুধুমাত্র তাঁদের জন্য বরাদ্দকৃত শিবিরেই সর্বদা আবদ্ধ থাকেন নি-বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা। তারা ট্রেনে-বাসে করে তাঁদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব প্রভৃতির সাথেও নানা প্রয়োজনে দেখা সাক্ষাত করেছেন। কিন্তু তাতেও তাঁদের একটি পয়সাও ভাড়া দিতে হয় নি। “জয় বাংলা” বললেই শত খুন মাফ। ফলে ট্রেনে বিনাটিকেটে চলার ফলে সরকারের-আবার বাসে বাস-মালিকদের লোকসান গুণতে হয়েছে।

শুধু শরণার্থীদের কথাই বা বলি কেন? মুক্তিযুদ্ধে যাবার আগে তাদের যে অস্ত্র প্রশিক্ষণের প্রয়োজন ছিল ভারত সরকারের সাথে তাজউদ্দিন সরকার আলোচনা করে তার ব্যবস্থা করবেন। এই মুক্তিযোদ্ধা তরুণেরা তো নানা যুব শিবিরে অপেক্ষা করছিলেন-তাঁদের সংখ্যাও লক্ষাধিক এবং প্রতিষ্ঠিত যুব শিবিরের সংখ্যাও কমপক্ষে শ’দুয়েক ছিল সমগ্র সীমান্ত অঞ্চল জুড়ে। এই যুবকদেরও রেশন ও অন্যান্য সকল কিছু ভারত সরকার বহন করেছে। যুবকেরাও যখন প্রশিক্ষণের জন্য নির্ধারিত স্থানগুলিতে গিয়েছিল-ওখানকার সামরিক বাহিনী তাদেরকে তাদের বাড়ীতে, কখনও ট্রেনে, বাসে, বিমানে করেও নিয়ে গেছে, প্রশিক্ষণ দিয়েছে নানা মেয়াদে সম্পূর্ণ নি:খরচায়।

আবার যে যুবকেরা যুব-শিবিরে অপেক্ষমাণ থাকলো তারাও নানা স্থানে প্রয়োজনে বাস বা ট্রেনে যাতায়াত করেছে-সেগুলির বাবদও কোন টাকা পয়সা লাগেনি। এভাবে ভারতের বাস্তব সাহায্য সহযোগিতার পরিমাপ করা অত্যন্ত দুরূহ। মন্ত্রী এম.পি. তাঁদের পরিবার পরিজন সকলকেই সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা করতে হয়েছে ভারত সরকারকে।

এই কথাগুলি বললাম এ কারণে যে এইসব অবদান - যে অবদানের ফলে বাঙালি জাতি সফল একটি মুক্তিযুদ্ধ করতে পেরেছে তার অনেকটাই যেন আজ আমরা বিস্মৃত হয়েছি। ভুলেই গেছি ভারতের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী তাঁদের সকল ডিপ্লোম্যাটিক বা কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে নানা দূত ও প্রতিনিধিদের ব্যাপক যোগাযোগ প্রভৃতির মাধ্যমে যে বিপুল ভাবে আন্তর্জাতিক জনমত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে সক্রিয়ভাবে সংগঠিত হয়েছিল তাও বহুলাংশে তুলনাহীন ঘটনা।

তদুপরি অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি এবং কমরেড মনি সিং এর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির বিশেষ উদ্যোগ ও তৎপরতার বিশ্ব শান্তি পরিষদ, আফ্রো-এলিয় সংহতি পরিষদ এবং সর্বোপরি চীন ব্যতিরেকে সমগ্র সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব শুধুমাত্র আমাদের নৈতিক সাহায্য বা সমর্থনই দেয় নি, বিপুল পরিমাণ বৈষয়িক সহযোগিতা এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সীমাহীন সমর্থন জুগিয়ে ভারতের অব্যাহত সমর্থনকে বিপদমুক্ত রাখতে পেরেছে।

বস্তুত: তৎকালীন দুই সুপার পাওয়ারের একটি আমেরিকা এখন তার সকল শক্তি দিয়ে পাকিস্তানকে মদদ দিচ্ছিল, চীন ও আরব বিশ্বের মুসলিম দেশগুলিও পাকিস্তানের প্রতি ক্রমাগত সমর্থন জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় বিরোধিতায় মেতে উঠেছিল- তখন অপর সুপার-পাওয়ার সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব ইউরোপের সকল সমাজতান্ত্রিক দেশ সহ এগিয়ে না এলে ভারতের পক্ষে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি বেশীদিন সমর্থন জুগিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না।

মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রান্তে এসে যখন আমেরিকা তার যুদ্ধ জাহাজ সপ্তম নৌ-বন্দর বঙ্গোপসাগরের দিকে যাত্রা করিয়েছিল-সোভিয়েত রাশিয়ার একটি হুংকার তখন আমেরিকাকে তার ঐ জাহাজ বঙ্গোপসাগরের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিতে শতভাগ ভূমিকা রেখেছিল। আবার এই মুহূর্তে, যখন পাকিস্তানের পরাজয় নিশ্চিত হয়ে উঠলো, বাঙ্গালির বিজয়ও দৃশ্যমান হয়ে উঠছিল, সেই সন্ধিক্ষণে এসে পাকিস্তানের সৈন্যবাহিনী ও তার দোসর আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনী বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে শুরু করে-যাতে স্বাধীন যদি হয়ও তবুও বাংলাদেশ যেন মেধা ও বুদ্ধিবৃত্তিক জগতে শূন্যতার সম্মুখীন হয় এমন একটি দুঃসহ পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে। অজস্র এমন হত্যালীলার স্বাক্ষর রায়ের বাজারের বধ্যভূমিতে অজস্র মানুষ প্রতিবছর ১৪ডিসেম্বর পুস্পার্ঘ্য প্রদান করে থাকে।

আবার রাষ্ট্রীয় বৈধতা এবং নানা অনুকূল পরিস্থিতির সুযোগে সেই হত্যা লীলা আজও তারা ব্লগার হত্যা, বিদেশী নাগরিক ও পুরোহিত হত্যা, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুর উপর নিরস্তর নির্যাতনের মাধ্যমে দেশে এক অরাজক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে চলেছে-তাতে বুঝতে কষ্ট হয় নি যে তারা একান্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমাদের আইনের শাসনের নিদারুণ অভাব ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি তাদেরকে দিন দিনই আরও বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠতেই সক্রিয়ভাবে সহায়তা করছে মাত্র। নইলে পুলিশের কাছে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পরও নাসিরনগরের রসরাজের জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয় কি ভাবে? উপরে বর্ণিত হত্যাকাণ্ডসমূহের একটারও বিচার না হওয়া সাম্প্রদায়িক হামলায় দায়ী অপরাধীরা একজন ও শাস্তি না পাওয়ার ঘটনা সমূহ বাংলাদেশে আইন প্রয়োগ সংবিধান ও গণতন্ত্রের নীতি মালার প্রতি সরকারী অশ্রদ্ধার ভয়াবহ নজির বিশ্বের সামনে তুলে ধরে দেশের ভাবমূর্তিকে ক্রমাগতভাবে লণ্ঠন করেই চলছে।

নারীর সংখ্যা আজ বাংলাদেশে আট কোটি। মোট জনসংখ্যার তাঁরা একাংশ। এদেরও বিপুল ত্যাগ এবং অবদান রয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সমূহে। কিন্তু প্রাপ্তিতে তারা কোথায়? আজও তারা সরাসরি নির্ধারণে যেতে পাবেন না বা সে অধিকার তাঁদেরর সংরক্ষিত কোটায় দেওয়া হলো না। জেলা ও উপজেলা পরিষদে সার্বজনীন ভোটে নির্বাচন আজও অস্বীকৃত। ফলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা নাম সর্বস্ব। যাহোক, বস্তু না-বেদনার তালিকা আর দীর্ঘ করবো না। কারণ সব কিছুর পরেও ডিসেম্বর মাস আমাদের বিজয়ের মাস। আনন্দের মাস।

এ পর্যায়ে প্রথমে শত্রু নিধনের কথাই সর্বাগ্রে মনে পড়ে। বর্তমান সরকার তার প্রতিশ্রুতি মোতাবেক জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিশেষ আদালতে বিচার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন। কাজটি অত্যন্ত কঠিন কারণে বহু শক্তিশালী দেশ প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করেছে। কিন্তু মাওলানা নিজামীর রায় কার্যকর করার পর বিচার প্রক্রিয়া কেমন যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। কারণটা অস্পষ্ট। আরও বেশ কয়েকজনের বিচার চলছিল-আপিলও চলছিল বলে মনে পড়ে। কিন্তু সবই কেন যেন স্থগিত আছে। দ্রুত এগুলি শুরু হলে জনমনের সন্দেহ-সংশয় দূর হতে পারে।

দ্বিতীয় যেটি গৌরবের তা হলো-বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুতি অর্থ না দিলেও নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা যার জন্যে সরকার বস্তুত:ই ধন্যবাদার্হ।

এ ছাড়াও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে বেশ কিছু উন্নয়ন ঘটেছে তবে সম্পদ কেন্দ্রীভূতও কম হয় নি। দুর্নীতি কালোটাকার উৎপাত প্রবল। রয়েছে বেকারত্ব এবং উপযুক্ত শিকার অভাব।

স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বিস্তর বেড়েছে-যেমন বেড়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যাও। ফলাফলের দিকে তাকালে অবাক হতে হয়। জিপিএ-৫ গোল্ডেন জিপিএ এর ছড়াছড়ি উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত। ফেলের হার ৫ থেকে ১০ ভাগ মাত্র। কিন্তু শিক্ষার মান? তার ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। যখন ছেলেমেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয় তার ফলাফল আমার এই বক্তব্যকে শতভাগ সভ্য বলে প্রমাণ করে। অবিলম্বে শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত না করলে দেশের এবং শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি অনিবার্য।

নারী জীবনের দুঃসহ যাতনা-নারী নির্যাতন প্রভৃতি এক সভ্যতা-বর্জিত জাতিতে পরিণত করেছে। এর সাথে যদি ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘূদের প্রতি কয়েকটি দশক ধরে যে ক্লান্তিহীন বিরতিহীন নির্যাতন চলছে তাতে কেউ আমাদেরকে বর্বর জাতি বললে বলার কিছু থাকে না। সর্বোপরি এই সব মারাত্মক অপরাধীদের কাউকে সামান্যতম শান্তি না দেওয়ার যে রেওয়াজ চালু করা হয়েছে তাতে দেশের দুই কোটি ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু স্বদেশে বিদেশীতে পরিণত হয়েছেন। বিজয়ের মাসে তাই উত্তরণের নিম্নবর্ণিত পথ অবলম্বনের বিকল্প দেখি না।

এক. অবিলম্বে সংবিধান থেকে “বিসমিল্লাহ” অপসারণ, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, আওয়ামী ওলামা লীগসহ সকল ধর্মাশ্রয়ী দলগুলিকে নিষিদ্ধ করা ও “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” তুলে দিতে সংবিধান সংশোধন করা হোক;

দুই. অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন দ্রুত কার্যকর করা হোক;

তিন. বাহাত্তরের সংবিধান পুনরুজ্জীবন করা হোক;

চার. বার্ধক্য ভাতা, বেকারভাতা, বিধবা ভাতা পর্য্যপ্ত পরিমাণে বৃদ্ধি এবং তা সকলের পাওয়ার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক;

পাঁচ. আত্মকর্মসংস্থানের সুবিধার্থে ব্যাপকভাবে কারিগিরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উপজেলা পর্যায় পর্য্যন্ত প্রসারিত করা হোক এবং সকল বেসরকারী স্কুল-কলেজ জাতীয়করণ করা, মাদ্রাসা শিক্ষায় বাংলা ও বিজ্ঞান শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হোক শিক্ষাখাতে সরকারী ব্যয় যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি করা হোক।

রণেশ মৈত্র, লেখক, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক; মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। ইমেইল : [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ