আজ মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

বর্ষবিদায়-বর্ষশুরু : মেলবোর্নে দুদিন

রণেশ মৈত্র  

অবশেষে ঘটন-অঘটন পটীয়সী ৩৬৬ দিনের বৃহত্তর বছর ২০১৬ কে বিদায় জানিয়ে ২০১৭ সালের গ্রীষ্মকালে অতি আপনজনদের সাথে নিয়ে নববর্ষের স্বাগত অনুষ্ঠানমালা বর্ষবিদায়-বর্ষশুরুর মধ্যরাত থেকে অস্ট্রেলিয়ার চিত্তাকর্ষী নগরী মেলবোর্নের রাজপথে উপভোগ করার সুযোগ পেয়ে গভীর বিস্ময়, তৃপ্তি, ফেলে আসা বেদনার দিনগুলি এবং নববর্ষের রাশি রাশি প্রত্যাশা নিয়ে লেখাটির সূচনা ঘটলো।

লিখতে বসেছি মেলবোর্ন নগরীর অন্যতম খ্যাতনামা আধুনিক ও উন্নত মানের সকল সুযোগ সমৃদ্ধ ইবিস (ibis) হোটেলের একটি কক্ষে বসে। ডান পাশে দিব্যি চলছে অন করা টেলিভিশন-দেখাচ্ছে বিশাল অস্ট্রেলিয়ার নানা রাজ্যে (প্রদেশ) থার্টি ফার্স্ট নাইট বিভাবে উদযাপিত হলো-কোথায় কত বিচিত্র ধরণের আলোকসজ্জা নানা ধরণের রং-বেরং এর আলোকমালায়-আলোকছটায় আকাশটাকে রাঙিয়ে তুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানালো।

২০১৭ সালকে স্বাগত সু-স্বাগত জানাতে শতবর্ষী বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থেকে যৌবন-তারুণ্যে মেতে ওঠা হাজার হাজার তরুণী সেই মধ্যরাতে কি অপূর্ব অসাধারণ আনন্দে মেতে উঠেছিল। ছোট খাটে একটি বা দুটি (আদৌ তার বেশী নয়) দুর্ঘটনা যে চোখে পড়ে নি তা নয়। একজন পথক্লান্ত বৃদ্ধকে পথপার্শ্বে এবং পর একজন তরুণীকে প্রায় ঘুমন্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি। হতে পারে আনন্দের তরঙ্গে ভাসতে ভাসতে পরিমাণে কিছুটা বেশী ড্রিংক করার ফলে সাময়িকভাবে ব্যাল্যান্স হারিয়ে পড়ে আছে। কিন্তু দৈহিক কোন অত্যাচার বা নির্যাতনের শিকার সে হচ্ছে না।

অপরাপর দোকান-পাট এতরাতে স্বাভাবিকভাবেই যদিও বন্ধ কিন্তু খোলা রয়েছে রেস্তোরাঁ-হোস্টেল ও সকল প্রকার খাবার-দাবারের প্রতিষ্ঠানগুলি। হঠাৎ কদাচিৎ দু‘চারটি প্রাইভেট কারের সাক্ষাত মিলেছে যদিও যাত্রী সংখ্যা সেগুলিতে গড়ে দুই-তিন জনের বেশী না। কিন্তু রাস্তায় উদ্দামতায় ভরা অগণিত নারী পুরুষ।

অবাক হয়ে দেখেছি, রাতভর বেশ কিছু ট্রাম চললেও সেগুলির কোনটাতেই যাত্রী সংখ্যা বেশী নয় অধিকাংশ আসন খালি। অর্থাৎ আমি বুঝতে চাইছি যে, দেশের মানুষেরা কার বা গাড়ী ছাড়া এক পাও চলতে পুরোপুরি অনভ্যস্ত-সেই দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নগরীর হাজার হাজার মানুষ দিব্যি পায়ে হেঁটে নানা স্থানে আলোর মেলা দেখছেন-জানাচ্ছেন নববর্ষকে স্বাগত। সামান্যতম দুর্ঘটনায় কোন খবর টেলিভিশনেরও নেই। বরং টেলিভিশনের খবরে রাতভর যে মানুষগুলি আনন্দে উত্তাল হয়ে রাস্তায় নাচে-গানে আর ছবি তোলায় ব্যস্ত থাকলো-তাদের শৃংখলাবোধকে পুলিশ-বাহিনীর প্রধান অভিনন্দন জানালেন।

হোটেলের তিনটি কক্ষে আমরা সাতজন। তিন নাতি-নাতনী অনির্বাণ, ইহিতা ও মধুমিতা (আমি ডাকি মধুর বরা বলে), অপরটিতে বড় ছেলে প্রবীর ও পুত্রবধূ অপর্ণা এবং অন্যটিতে সহধর্মিণী পূরবী সহ দু’রাত কাটালাম। মজার ব্যাপার হলো সন্ধ্যারাতে যখন আমরা জেট-স্টার বিমানে সিডনি থেকে মেলবোর্নে এসে পৌঁছালাম ৩১ ডিসেম্বরে তখন থেকে সবার অনুভূতিই এক কারও চোখেই কোন খারাপ কিছু ধরা পড়ে নি।

আরও আশ্চর্যের ব্যাপার কোথাও কোন পুলিশকে বা পুলিশ ভ্যান দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখি নি। পুলিশের কাজ চালায় সর্বদা চালু থাকা সি.সি ক্যামেরাগুলি যা সর্বত্র সচল এবং তার মনিটরিংও ক্লান্তিহীন। কোথাও সামান্যতম ঘটনা ঘটেছে খবর পেলেই বা ঐ গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ামাত্র মুহূর্তে চলে আসে পুলিশের গাড়ী। কেউ বলছেন না, “থানায় তো কেউ এখনও কোন লিখিত অভিযোগ করে নি-তাই পুলিশ সেখানে যায় নি।” সি.সি. ক্যামেরাগুলিই ইনফর্মার সেগুলির ছবি চোখে দেখেই পুলিশ ছোটে লিখিত অভিযোগের তোয়াক্কা না করেই।

সে রাতে আমরা যে খুব বেশী হেঁটেছি তা নয়। তবে যেটুকু দেখেছি তাতে মুগ্ধ হয়েছি অনুষ্ঠানমালার বৈচিত্র্যে এবং বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণপ্রাচুর্য। ধর্ম? না-তার কোন বহি:প্রকাশ কোথাও নেই। কেউ “হরে কৃষ্ণ”, “বিসমিল্লাহ্‌” বা “ওহগড” এ জাতীয় কোন কিছু বলে শুরু করছে না-শেষও করছে না। নারী-পুরুষের পেশাকেও পার্থক্য বড়ই কম। যেমন মেয়েরাও কি দিনে, কি রাতে বাইরে বেরুচ্ছে প্যান্ট ও স্যান্ডো গেঞ্জি পরে গ্রীষ্মকালে পরিবর্তন সবারই ঘটে শীতকালে এবং তখন সবার পরনেই তখন কোট-প্যান্ট-স্যুট। কিন্তু কাউকেই দেখলাম না ঐ গভীর রাতেও মেয়েদের গ্রীষ্মের স্যান্ডো গেঞ্জি ও ফুল বা হাফ প্যান্ট পরে চলাফেরায় কারও তির্যক দৃষ্টি পড়তে। এগুলি সবই অস্বাভাবিক লাগে যেন। বুঝে নিতে কষ্ট হলো না, অতি নগণ্য সংখ্যক জনাকয়েক বাদে পোষাকে ধর্মের অস্তিত্ব আছে বলে কেউই মনে করে না কেউ মনে করানও না। বিশ্বাস করেন সবাই নিজ নিজ রুচি অনুযায়ী পোষাক পরবে তাতে ধর্মহানি ঘটে না।

শুনেছি আর দেখছি নিজ দেশে বিগত দু‘তিনটি দশক ধরে ধর্মের বাহ্যিক ব্যবহার এবং তাতেই না কি বেহেশতে বা স্বর্গে যাওয়া যাবে। তাই মেলবোর্নে সিডনিতে, ক্যানবেরায়, সিঙ্গাপুরে, মস্কোতে, ফ্রুনজেতে (কিরঘিজিয়া), বুলগেরিয়ায় রাজধানী মোফিয়াতে এবং আমাদের দেশেও আশির দশকের আগ পর্যন্ত (বৃটিশশাসিত ভারতে, পরবর্তীতে পাকিস্তানে এবং সর্বশেষ বাংলাদেশও) তাতে তো বলতেই হয় যে যাঁদের কথা বললাম তাঁরা সবই নির্ঘাত নরকে বা দোজখে যাবেন।

এই দোজখ যাত্রীদের মধ্যে প্রথমেই মনে পড়ে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ মাইকেল মধুসূদন, সেক্সপিয়ার, কিটস, এঙ্গেলস, লেনিন, মাও, হোচিমিন, দেশে বঙ্গবন্ধু, মওলানা ভাসানী, মনি সিং, মহাত্মা গান্ধী, জওয়াহের লাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী প্রমুখকেও।

বিশ্বের যাদেরকেই কোটি কোটি মানুষ ভালোবাসেন, অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করেন, জনগণের জন্য যাঁরাই জীবন উৎসর্গ করেছেন ২০১৬ সাল পর্যন্ত তাঁদের স্থান (আমাদের মা-বাবা-দাদা-নানা সহ) যদি নরক বা দোজখে নির্ধারিত হয় তবে সগর্বে ঘোষিত হোক-আমরাও তাঁদেরই সহযাত্রী হতে চাই। মানুষের জন্য জীবন দিলে যদি দোজখে যেতে হয় - তবে কোটি কণ্ঠে চিৎকার করে বলি-আমরাও তাঁদের পথেই চলতে চাই। যাক না স্বর্গে বা বেহেস্তে গোলাম আযম, নিজামী, বোকো হারাম, আই.এস, তালেবানপন্থীরা বা যে কোন ধর্মের নামে উগ্রপন্থী খুনি-ধর্ষকেরা। ২০১৬ তেই যেন তার ইতি ঘটে।

“কোথায় স্বর্গ-কোথায় নরক-কে বলে তা বহুদূর? মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক- মানুষেতেই সুরাসুর” বিদ্রোহী কবি, আমাদের জাতীয় কবি নজরুলের এই অমর বাণীকে যারা মিথ্যা বানাতে চায়-কোন প্রকৃত মানুষ কি তার বা তাদের সাথে একমুহুর্তের জন্যও একমত হতে পারে? কি করে মেনে নেওয়া যাবে “সবার উপরে মানুষ সত্য-তাহার উপরে নাই” এই দুর্লভ, বহুল পঠিত সত্য-কথনকে প্রত্যাখ্যান করার জঙ্গি প্রচেষ্টাকে?

এসব নানাবিধ মিথ্যাচার, অসত্য-কথন অনাচার, ধর্মান্ধতা, কুশিক্ষা, কূপমণ্ডূকতা, বিভেদাত্মক আচার-আচরণকে যারা প্রশ্রয় দেয়, লালন করে, প্রচার করে-২০১৬ সালের সাথে তাদের সবাইকেও বিদেয় জানাতে সার্বিক ঐক্যের সূচনা ও বিকাশ ঘটুক।

মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, ব্লগার, কথিত নাস্তিক, বিশেষ ধর্মের অবমাননার মিথ্যা অজুহাতে যারা মানুষ হত্যা করে, গ্রামকে গ্রাম পুড়িয়ে দেয়, হাজার হাজার মানুষকে ঠাণ্ডা মাথায় গৃহহীন, সহায় সম্বলহীন এক অসহায় জনগোষ্ঠীতে পরিণত করে, লুঠপাট, অপহরণ-ধর্ষণ করে তারা নিশ্চিতভাবেই গণতন্ত্র ও মানবতার সবচেয়ে বড় শত্রু-বড় শত্রু সভ্যতার ও বাংলাদেশের।

বিদায়; এই অপশক্তিগুলিকে বিদায়।

একটি নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটুক-নতুন পৃথিবী বিনির্মাণের সূচনাও ঘটুক। হৃদয়ে গেঁথে নেওয়া যাক - ২০১৭ এর পহেলা জানুয়ারির সূর্যোদয়ের শুভ লগ্নে “সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই” এটাই সত্য-এটাই সর্বাধিক সত্য।

মস্কোতে দেখেছিলাম, ব্রেঝনেভের গাড়ী কাউকে ওভারটেক না করে রাজপথে ট্রাফিক নিয়ম মেনে দাঁড়িয়ে থাকতে সাধারণ মানুষদের মত, এখানে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী মালকম টার্নবুলকেও একইভাবে চলাফেরা করতে দেখা যায়। ফলে পথ-দুর্ঘটনার সংখ্যা অত্যন্ত অল্প যদিও গাড়ী সংখ্যা এদেশে কল্পনাতীতভাবে বেশী জনপ্রতি এখন গড়ে দুটি করে কার। এ ছাড়াও ট্যাকিস ক্যাব তো আছেই। অর্থাৎ বুঝতে চাইছি যে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলির মত এখন কোন কোন পুঁজিবাদী দেশও (আমেরিকা বাদে) মানুষের মর্যাদার স্বীকৃতি দেয়। আর এই তত্ত্বের প্রবক্তা হয়েও বাংলাদেশে তা আজও আমরা তা দিতে শিখিনি।

২০১৭ আমাদেরকে সেই শিক্ষায় শিক্ষিত করুক।

সারাদিনের ঘোরাঘুরি শেষের দিকে যখন মেঘাচ্ছন্ন মেলবোর্নের আকাশ থেকে দু’চার ফোঁটার বৃষ্টি হয়ে নেমে এল-আমরা সবাই রাস্তায় এসে দাঁড়ালাম। হঠাৎ দেখি বেশ কয়েকটি ঘোড়ার গাড়ি, অনেকটা উন্নতমানের, রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। ভাবলাম প্রাচীনকালের এই নিদর্শন অতীতে পাবনা শহরে দেখেছি, কলকাতাতেও ছোটবেলায় দেখেছি কিন্তু আজ ঐ উপমহাদেশে আর ঐ প্রাচীন যানটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু প্রযুক্তিগত এত উন্নতির যুগেও এরা এই প্রাচীন যানটি দিব্যি ধরে রেখেছে এই মেলবোর্ন সিটিতে।

আমরাও ৩০ মিনিটের জন্য একটি ঘোড়ার গাড়ি ভাড়া করলাম শুধুমাত্র বেড়ানোর জন্য। দুটি স্বাস্থ্যবান ঘোড়া টানলো সাতজন যাত্রী ও দুজন চালককে। সবাই এই সেকালের ভ্রমণ উপভোগ করা গেল মেলবোর্নের দৌলতে। আর সম্ভবত: ইংল্যান্ডে এটা আংশিক চালু থাকতে পারে।

আর একটি অজানা ব্যাপার জানলাম এখানকার ট্রাম মার্ডিম সম্পর্কে। অনেক ট্রাম অনেক লাইনে দিনরাত চলে। তবে একটি বিশেষ ধরণের ট্রাম আছে যা সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় গোটা শহরের দর্শনীয় স্থানগুলিতে বহন করে। মেলবোর্ন ছাড়া এমন একটি ট্রাম সার্ভিস পৃথিবীর আর কোন নগরীতে চলে না বলেই আমার ধারণা। এটা পর্যটকদের জন্যই শুধু।

মেলবোর্নে যে আন্তর্জাতিক মানের বহুতল বিশিষ্ট হোটেলে আমরা থাকলাম সেখানে আমাদের কক্ষেই অকস্মাৎ পরিচিত হলাম বাংলাদেশের ময়মনসিংহের এক উচ্চশিক্ষিত মহিলার সাথে। সামান্য আলাপ শুরু করতেই ভদ্রমহিলা বাংলা কথা বলে তিনিও যে বাঙালি তা বুঝিয়ে দিলেন। জানালেন তিনি ময়মনসিংহের মেয়ে এম.এ.পাশ। তাঁর স্বামী এখানে এসেছেন ১২/১৩ বছর আগে। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে এখন ডক্টরেট করছেন। তাঁর স্ত্রী এই হিসেবেই বছর ছয়েক আগে তিনি এসেছেন। হোটেলে পরিচারিকার কাজ করেন তিনি। তাঁর বাবা-মা জীবিত-শিক্ষকতা করতেন এখন অবসর নিয়ে দেশেই আছেন। চেষ্টা করছেন মা-বাবাকে এনে দেশটি দেখাবেন। একটি সন্তান সহ ছোট খাট সংসার নিয়ে তিনি খুব তৃপ্ত-একথাও জানালেন। সর্বাধিক কারণ হিসেবে বললেন, এদেশে মানুষের মর্যাদা আছে- কে ছোট কাজ করেন কে বড় কাজ তা বিবেচনা না করে সকলকে সম্মান মর্যাদা দেওয়া হয় যা আমাদের দেশে আমরা কল্পনাও করতে পারি না। আরও জানলাম তাঁর পরিবারের একজন ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজে অধ্যাপনা করেন। যা হোক, অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে এই মহিলার সাথে আমরাও সহমত পোষণ করি।

সিডনিতে ২ জানুয়ারি রাত দশটার দিকে ফিরে এসে বারবার বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনের কর্মী ও সংগঠক এবং আজীবন বামধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার নানা উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ জীবনের বার্ধক্যে দাঁড়িয়ে ২০১৭ সালের প্রত্যাশাগুলি এক এক করে মনকে আচ্ছন্ন করে ফেললো যাকে কিছুতেই ভুলে থাকতে পারছি না।

প্রত্যাশাগুলি মোটা দাগে এবং সংক্ষেপে হলো:
এক. সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে অনাকাংখিতভাবে ২০১২ সালে “বিসমিল্লাহ” জামায়াত সহ ধর্মভিত্তিক দলগুলিকে দেওয়া বৈধতা এবং “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” তুলে দিয়ে পরিপূর্ণভাবে ১৯৭২ এর সংবিধানের চার মৌল নীতিতে ফিরে যেতে নতুন সংশোধনী এনে তা সংসদে পাস করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মর্যাদার আসনে পুন:অধিষ্ঠিত করা হোক;
দুই. শিক্ষাকে বিজ্ঞান-ভিত্তিক এবং পরিপূর্ণ অসাম্প্রদায়িক করা হোক প্রাথমিক থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত;
তিন. নারী-পুরুষের মধ্যে বিরাজিত সকল বৈষম্য রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও পারিবারিক পরিমণ্ডল থেকে কার্যকরভাবে দূর করা হোক।
চার. বেকারত্বের অবসান ঘটাতে অর্থপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সেলক্ষ্য পরিপূর্ণ অর্জন করা পর্যন্ত উপযুক্ত পরিমাণে বেকার ভাতা চালু করে মানুষের অর্থনৈতিক জীবনকে নির্বিঘ্ন করা হোক; এবং
পাঁচ. ধর্মশিক্ষার দায়-দায়িত্ব শতভাগ পরিবারের উপর অর্পণ করা হোক এবং সেই সাথে ঐ শিক্ষাও বিজ্ঞানভিত্তিক এবং মাতৃভাষার মাধ্যমে চালু করে ধর্ম সম্পর্কে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য প্রচারের পথ রুদ্ধ করা হোক।

রণেশ মৈত্র, লেখক, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক; মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। ইমেইল : [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ