আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

বাংলাদেশের রাজনীতি: কিছু জরুরী ভাবনা

রণেশ মৈত্র  

দিন গেলে আপনা-আপনি সন্ধ্যা নেমে আসে-পৌঁছে দেয় অন্ধকার রাতের আগমনী বার্তা। আবার রাত গেলে ভোর হয়-সুর্যোদয় ঘটে। আমরা পেয়ে যাই রাতের অন্ধকার বিদায় নিয়ে দিনের আগমনী বার্তা প্রকৃতির এ এক অমোঘ নিয়ম যেন।

সেই যেদিন এ পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছি আজ থেকে ৮৪ বছর আগে - এমন দৃশ্য সেদিনও বুঝে-না-বুঝে যেমন দেখেছি আজ জীবন পরিক্রমার প্রায় নয়টি দশক পেরিয়ে এসেও ঠিক অবিকল তেমনটিই দেখছি। দেখছি এ নিয়মটির কোন পরিবর্তন নেই-কোন ব্যতিক্রম গোটা পৃথিবীর কোথাও।

ঠিক তেমনই যেন চলছে বাংলাদেশের রাজনীতি। কোন প্রচেষ্টা তেমন নেই। কোন সমর্থন বিরোধিতার কার্যকর কোন প্রকাশ নেই-দৃশ্যমান কোন আন্দোলনও নেই। তবু দিব্যি চলে যাচ্ছে আমাদের দেশের রাজনীতি-রাজনৈতিক কার্যকলাপ বিস্ময়কর গতানুগতিকতায় এক অজানা গন্তব্যে।

সংসদ আছে-নামে অনেকগুলি রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব আছে। দল-গুলির কিছু আদর্শিক ঘোষণাও আছে-কিন্তু তা বাস্তবায়নের কোন বালাই নেই। দলের কারও তা নিয়ে মাথা ঘামানোর উদ্যোগও নেই। “নেত্রী বা নেতাই তো আছেন তিনিই সব দেখবেন। তিনি যা বলবেন বা যা করবেন -সেটাই যথার্থ।” বাকীদের কাজ যেন নেত্রীকে/নেতাকে সর্বদা সব কাজে সমর্থন দিয়ে যাওয়া। উচ্চারণ করা “মারহাবা”।

একটুও ভেবে দেখার ব্যাপার নেই যে দলের প্রতিটি সদস্যেরই দায়িত্ব হলো দলীয় আদর্শ ও কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা যৌথভাবে বা ব্যক্তিগত ভাবে। অন্তর থেকেও তাই ধরে নিতে হবে মানুষমাত্রই ভুল হতে পারে-তাই নেতা-নেত্রীরও ভুল হতে পারে। আর তা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সকল স্তরে কমিটি আছে। নেতা-নেত্রীকেও তেমনই ব্যাপারটা বুঝে কমিটিগুলিকে স্ব স্ব দায়িত্ব পালনের অবাধ অধিকার দিতে হবে এবং তাদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে কাজ করতে হবে। কিন্তু আমি জানি, এগুলি লেখা বা বলা, অন্তত: আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে, অরণ্যে রোদন ছাড়া আর কিছুই নয়।

সুতরাং এহেন অগণতান্ত্রিক আচার-আচরণ আমাদের পরিচিত রাজনৈতিক দলগুলিকে দলগুলির আভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রকে তিরোহিত বা সংকটাচ্ছন্ন করে তুলেছে। এবং দিব্যি এই ধরণের আচার আচরণ পাকা-পোক্ত ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে।

ফলে আমরা দেখি দলগুলির উচ্চতম কমিটি থেকে অধস্তন কমিটি সমূহের অগণিত সদস্য দলের গঠনতন্ত্র, আদর্শ, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচীর সম্বলিত পুস্তিকাগুলি পড়ে দেখারও প্রয়োজন বোধ করেন না। তাঁরা জানেনও না যে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁদের অধিকার কি কি এবং দায়িত্বই বা কতটুকু। শুধুমাত্র জেনেছেন নেতা-নেত্রীকে তুষ্ট রাখতে হবে এবং তাঁরা তা দিব্যি করে চলেছেন। ফলে দলের সদস্যরা হাজারো অপরাধ করলেও বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দিব্যি রেহাই পেয়ে যান। সাংগঠনিক ব্যবস্থা তো দূরের কথাÑতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেশের প্রচলিত আইনগুলিও অসহায় হয়ে পড়েছে যেন। স্তাবকতা আজ এক সামাজিক রাজনৈতিক ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে।

দলগুলির কাউন্সিল অধিবেশনও অধিষ্ঠিত হয়-যদিও খুব কম ক্ষেত্রেই তা গঠনতন্ত্রে বর্ণিত সময় সীমার অনুযায়ী। কিন্তু তবুও যখন কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়, বাইরে থেকেই উপলব্ধি করা যায়, গঠনতন্ত্রে বর্ণিত কাউন্সিলারদের অধিকারগুলি তাঁরা জানুন বা না জানুন তাঁদের করণীয় হলো নেতা বা নেত্রী যা বলছেন তাঁদের ভাষণে, চোখ বুজে তার প্রতি সমর্থন ঘোষণা করা-আর মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে হলে এক অসাধারণ উল্লাস সৃষ্টি করা। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখছেন ভালো কাজে সমর্থন জানানো এবং খারাপ কাজের সমালোচনা দ্বারাই একমাত্র নেতা-নেত্রীর ভুল সংশোধনের প্রচেষ্টা নেওয়া তাঁদের অধিকারের আওতায় পড়ে এবং এই অধিকারের সুষ্ঠু প্রয়োগের মাধ্যমেই দলকে বা নেতা-নেত্রীকে ত্রুটিমুক্ত করা সম্ভব। তাতে দল ও দেশের এবং নেতা-নেত্রীরও কল্যাণ হয়।

একই ভাবে আমরা দেখি আগে সভাপতি পদে নির্বাচন করা হয় এবং সেখানে কোন ভোটাভুটির ব্যাপার বা সুযোগ নেই। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বী কোন প্রার্থী থাকার অধিকার থাকেন সভাপতি। অত:পর সকলে মিলে কমিটির অপরাপর কর্মকর্তা ও সদস্য পদের নির্বাচনেরও বালাই নইে। সবাই দায়িত্ব দিয়ে দেন সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়া নেতা/নেত্রীর উপর এবং অত:পর কাউন্সিল অধিবেশন শেষ।

সভাপতি কাউন্সিল অধিবেশন শেষ হওয়ার পর কয়েক দিন বা সপ্তাহ বা মাস ধরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও সদস্য প্রমুখের নাম ঘোষণা করেন। দেখা যায় এই প্রক্রিয়ায় তিন থেকে ছায় মাসও হয়তো লেগে গেল পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে। বলা কি তাহলে যার ঐ কমিটি নির্বাচিত বাস্তবে দেখা যায় ওটা মনোনীত।

কি হলো তবে দলীয় গঠনতন্ত্রের বা আভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের?

দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র না থাকার পরিণামে তার প্রতিফলন সরকারেও দেখতে পাচ্ছি। একজন-অর্থাৎ প্রধান মন্ত্রীই সর্বময় ক্ষমতা-সম্পন্ন। এটা আবার স্বৈরাচার উৎখাতের পর অনুষ্ঠিত প্রথম সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদে দুটি বৃহৎ দলের মতৈক্যের ভিত্তিতে সংবিধানের সংশোধনী এনে তা সন্নিবেশিত এবং পাশ করা হয় সংসদে। বহুদলীয় প্রথা এবং সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কমাতে কমাতে তাঁকে ক্ষমতাহীন করে ফেলা হয়। ফলে সকল ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয় একজনের হাতে। হ্যাঁ, হলো সংসদের ভোটেই কিন্তু সংসদ কি এর দ্বারা গণতন্ত্রকে বিকশিত করলো নাকি স্বৈরতন্ত্রী হয়ে ওঠায় সাংবিধানিক সুযোগ রচনা করলো । প্রকৃতই কি সংসদীয় গণতন্ত্র এতে পুনরুদ্ধার হলো না কি সংসদীয় স্বৈরতন্ত্র গড়ার সুযোগ হলো?

বস্তুত: সংসদীয় গণতন্ত্রে যেটা করা হয়ে তা হলো রাষ্ট্রপতির হাতে সকল ক্ষমতা না রেখে নির্বাহী প্রধান হিসেবে প্রধান মন্ত্রীকে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতাহীন না করে কিছুটা ক্ষমতা তাঁর হাতেও রেখে উভয়ের মধ্যে একটা ভারসাম্য রক্ষা করা । ভারতের সংবিধান তার প্রমাণ। তদুপরি প্রধানমন্ত্রীর হাতে যতই ক্ষমতা থাকুক - তারও জবাবদিহিতা থাকার কথা মন্ত্রী পরিষদ ও সংসদের কাছে। আদৌ কি তা আছে আমাদের সংবিধানকে স্পষ্ট করে লেখা? ফলে গণতন্ত্র এক গোলকধাঁধার সম্মুখীন এবং এ অবস্থা দিনে দিনে স্বৈরতন্ত্রী প্রবণতারও জন্ম দিচ্ছে বা তার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে। দেশের অন্তত: ৩/৪ টি সুপরিচিত প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলই এ রোগে আক্রান্ত।

পরিণতিতে ক্ষমতাই হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রধান এজেন্ডা-কি সরকারী দলের - কি দ্রুত ক্ষমতায় যাবার প্রত্যাশী বিরোধীদলগুলির। দেশের জন্য, জনগণের জন্য দেশবাসীর সামনে কোন লক্ষ্য, আদর্শ তুলে ধরা-মুখ্য ব্যাপার নয়। মুখ্য ব্যাপার ক্ষমতা। তাই আদর্শ পরিত্যাগ করতে হলে তাতে NOC অর্থাৎ বা ঘড় No Objection certificate “অনাপত্তির সার্টিফিকেট” পাওয়া গেছে যেন।

নইলে বাংলাদেশ অর্জিত হলো কয়েকটি সুনির্দিষ্ট আদর্শের ভিত্তিতে। সেগুলি হলো ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্র। বঙ্গবন্ধু তাঁর সহকর্মী ড. কামাল হোসেন সহ অনেককে নিয়ে বাহাত্তরের যে সংবিধান সর্বসম্মতিক্রমে তৎকালীন সংসদে অনুমোদন করিয়ে নিলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন এবং ডান ও কিছু সংখ্যক বামপন্থী নিয়ে গঠিত মহাজোট সরকার কি করে তাকে প্রত্যাখ্যান করে? যখন দেখা গেল জিয়া এবং এরশাদ মিলে ঐ সংবিধানের খোলনলচে পালটে তাতে “বিসমিল্লাহ” জামায়াতে ইসলামী সহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের বৈধতা ও “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” প্রভৃতি সংযোজন করেছিল - আওয়ামী লীগ ও বামপন্থী সকল দল তৎক্ষণাৎ তার তীব্র প্রতিবাদ জানায়। আওয়ামী লীগ ঘোষণা করে, তারা ক্ষমতায় গেলে জিয়া-এরশাদ প্রবর্তিত ঐ বিষয়গুলি বাতিল করে বাহাত্তরের সংবিধান অবিকল পুন:স্থাপন করবে।

আওয়ামী লীগ দফায় দফায় ক্ষমতায় এলো-এখনও আছে। কিন্তু জিয়া এরশাদ প্রবর্তিত সংশোধনীগুলির গায়ে হাত দিল না। মাঝখানে বছর চারেক আগে হাই কোর্ট জিয়া ও এরশাদ কর্তৃক প্রবর্তিত ঐ সংশোধগুলি বাতিল করে দিল। এরশাদ বিরুদ্ধ আপীল বিভাগে আপীল করা হলে সেখানেও হাইকোর্টের রায় বহাল রাখা হয়। ফলে“বিসমিল্লাহ” জামায়াত সহ ধর্মভিত্তিক দলগুলি এবং রাষ্ট্রধর্ম নিষিদ্ধ ও বে-আইনি বলে ঘোষিত হয়ে ৭২ এর সংবিধান চাক্ষুষ সুযোগ সৃষ্টি হয়। একটি মাত্র গেজেট করলেই তা হতে পারত। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই পথে না হেঁটে প্রবল ক্ষমতাকে উপেক্ষা করে এবং পার্লামেন্টে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার অপব্যবহার করে জিয়া-এরশাদের বে-আইনি ও সংবিধান বহির্ভূত বলে ঘোষিত সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রত্যাখ্যান করে “বিসমিল্লাহ” “জামায়াতে ইসলামী ও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলির বৈধতা প্রদান ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সন্নিবেশিত করা হয়। এগুলি করেও সংশোধিত সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ৭২ এর চার মূলনীতিও সন্নিবেশিত করা হয় অত্যন্ত হাস্যকরভাবে। কারণ ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম এবং বিসমিল্লাহ সাংঘর্ষিক।

কিন্তু এর বিরুদ্ধে-বাইরে যতই সমালোচনা হোক, মন্ত্রী সভায় ও সংসদে কিংবা দলীয় ফোরামে সামান্যতম প্রতিবাদ ধ্বনিত হলো না সেটা এ কারণে নয় যে সকল মন্ত্রীয় বা সকল সংসদ সদস্যই ঐ কুখ্যাত পঞ্চদশ সংশোধনীর সাথে একমত। তা নয়। আসল সত্য হলো মন্ত্রিত্ব বা সংসদ সদস্য পদ থাকবে না এমন ভয়েই আপত্তি থাকা সত্বেও কেউ এর বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিবাদ জানান নি।

ক্ষমতা না থাকায় রাষ্ট্রপতিও বিনা বাক্যব্যয়ে এই সংশোধনীতে তড়িঘড়ি স্বাক্ষর করে দেন।

পরিণতিতে কি দাঁড়ালো?

ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধ যে মৌলিক নীতিমালা ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বা বাহাত্তরের সংবিধানে যে চার মূলনীতি তৎকালীন সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়েছিল তা কার্যত প্রত্যাখ্যান করে জিয়া ও এরশাদের অবৈধ পঞ্চম ও অষ্টম সংশোধনী নতুন করে গৃহীত হলো যার ফলে মুক্তিযুদ্ধের মৌল আদর্শগুলি প্রত্যাখ্যাত হলো। জিয়া ও এরশাদের আদর্শ ভিত্তিক অবৈধ ঘোষিত সংবিধান সংশোধনীগুলিকে নতুন করে অনুমোদন করিয়ে নিল। বিস্মিত হতে হয় এই ভেবে যে বাহাত্তরের সংবিধানে খোদ বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সহকর্মীরা যে আদর্শিক মূলনীতিগুলি গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনকে মহিমামন্ডিত করেছিলেন-তা পালটে তাঁর ও মওলানা ভাসানীর গড়া ঐতিহ্যমন্ডিত দলটি আজ জিয়া এরশাদের আদর্শিক ধারা গ্রহণ করেছে। একেই বলা হয় পাকিস্তানী ধারায় রাজনীতির প্রত্যাবর্তন ঘটানো। প্রশ্ন হলো কোন মরীচিকার পেছনে ছুটছে এ দেশের হাল আমলের রাজনীতি?

আজকের এই পরিবর্তিত রাজনীতির দিকে তাকিয়ে যে কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়-তা হলো এ থেকে পরিত্রাণের পথ কি? কারণ বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের নির্যাস খুঁজলে দেখা যাবে মুসলিম লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর কুখ্যাত ধর্মোম্মাদ দ্বিজাতিতত্ত্বকে প্রত্যাখ্যান।

তেমনি আবার মুক্তিযুদ্ধের সুমহান চেতনা ও আদর্শের প্রণীত বাহাত্তরের সংবিধানে চার মূলনীতি তো সগর্বে ঘোষণা করেছিল কোন বিশেষ ধর্মীয় নীতির ভিত্তিতে নয়-ধর্মনিরপেক্ষতা বহুদলীয় গণতন্ত্র, সকল সংস্কৃতির সমন্বয় বা সহাবস্থান, সকল বৈষম্যের অবসান এবং শোষণমুক্ত একটি দেশ গঠন।

কিন্তু আজকের ময়দানের দিকে তাকালেই চোখে পড়ে , বাংলাদেশের রাজনীতি ছুটছে তার বিপরীত মুখে - সম্পূর্ণ বিপরীত ধারায়, বিপরীত আদর্শের ভিত্তিতে। সংবিধান ও আইনকানুন সেই নিরিখেই প্রণীত হচ্ছে সুচিন্তিত ভাবে।

কিন্তু কেন? কোন মোহে?

স্পষ্ট উচ্চারণে উদাত্ত কণ্ঠে তাই বলতে হবে “NO” বলতে হবে, “না, তা আমরা হতে দেব না।” “না” বলতে তো আমরা সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে ১৯৪৮সালেই শিখেছি। সে আজ ৬৯ বছর আগের কথা। আর ঐ “না” তো কোন নেতিবাচক “না” ছিল না-ছিল স্পষ্টত:ই ইতিবাচক যা রচনা করেছিলো মহান মুক্তিযুদ্ধের শক্তিশালী অদম্য এক প্রেরণা।

তাই আজ আবারও “না” বলে নতুন ইতিবাচক পথে আমাদের রাজনীতিকে ফিরিয়ে আনার জরুরী প্রয়োজনীয়তা নতুন প্রজন্মের সামনে উপস্থিত হয়েছে-উপস্থিত হয়েছে সমগ্র জাতির সামনে।

রাজনীতির এমন চেহারা হতে পারলো দলীয় ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রগুলিতে গণতন্ত্রে অভাবের কারণে এবং তারই পরিণতিতে স্বৈরতন্ত্রী প্রবণতা অবাধে গড়ে ওঠার কারণে।

বিশ্বাস করি, এই ধারা বদলাতে হলে, দেশ ও জনগণের স্বার্থেই এবং রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শমালাকে পুনর্বাসিত করার জন্য জরুরী প্রয়োজন হলো প্রত্যয় ও আদর্শনিষ্ঠ রাজনৈতিক বিকল্প দ্রুততার সাথে গড়ে তোলা এবং তাকে জনতার গভীরে নিয়ে যাওয়া। কাজটি কঠিন কিন্তু তা আজ অপরিহার্য। এই অনিবার্য পথে অবিলম্বে যাত্রা শুরু করার কোন বিকল্প নেই।

রণেশ মৈত্র, লেখক, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক; মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। ইমেইল : [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ